<p>রাশিয়ার সঙ্গে বন্দিবিনিময় করল পশ্চিমা দেশগুলো। সেখানে প্রধান ভূমিকা পালন করেছে জার্মানি। রাশিয়া পশ্চিমা দেশগুলোর ১৬ জন বন্দিকে মুক্তি দিয়েছে, অন্যদিকে পশ্চিমা দেশগুলো আটজন রাশিয়ার নাগরিককে মুক্তি দিয়েছে।</p> <p>রাশিয়া যে বন্দিদের মুক্তি দিয়েছে, তার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ছিলেন জার্মানিতে বন্দি ভাদিম ক্রাসিকভ। বার্লিনে এক সাবেক চেচেন বিদ্রোহীকে হত্যা করার জন্য যার শাস্তি হয়েছিল।</p> <p>২০২২ সালে রাশিয়া যুক্তরাষ্ট্রকে প্রস্তাব দেয় ক্রাসিকভকে ছাড়া হলে তারা আমেরিকার বন্দিদের মুক্তি দেবে। কিন্তু যেহেতু ক্রাসিকভ জার্মানিতে বন্দি ছিলেন, তাই যুক্তরাষ্ট্র ওই প্রস্তাবকে অতটা গুরুত্ব দেয়নি।</p> <p>সম্প্রতি পুতিন একটি টক শোতে বলেন, ক্রাসিকভসহ অন্যদের ছাড়া হলে তিনি বন্দিবিনিময়ে রাজি। তবে ক্রাসিকভকে ছাড়া জার্মানির পক্ষে সহজ ছিল না। কারণ, দিনের বেলায়, পার্লামেন্টের খুব কাছে একটি পার্কে ক্রাসিকভ চেচেন বিদ্রোহী নেতাকে হত্যা করেছিল। তারপর আদালত তাকে শাস্তি দেয়।</p> <p><strong>জার্মানি কেন ক্রাসিকভকে মুক্তি দিল?</strong></p> <p>জার্মান চ্যান্সেলর শলৎস বলেছেন, ‘হত্যার দায়ে যার জেল হয়েছে, এমন অপরাধীকে ছেড়ে দেওয়ার কাজটা সহজ ছিল না। বিশেষ করে মাত্র কয়েক বছরই জেলের সাজা খেটেছেন ক্রাসিকভ।’</p> <p>শলৎস জানিয়েছেন, ‘জার্মানির স্বার্থ ছিল, ক্রাসিকভের বিনিময়ে রাশিয়া বেশ কিছু নিরপরাধ বন্দিকে মুক্তি দিয়েছে, যাদের রাজনৈতিক কারণে বন্দি করা হয়েছিল।’</p> <p>জার্মান চ্যান্সেলর বলেছেন, ‘তাই জার্মান নাগরিকদের স্বার্থে ও আমেরিকার প্রতি সংহতি দেখাতে আমরা এই সিদ্ধান্ত নিই। আমার সঙ্গে বিরোধী নেতা ফ্রেডরিখ মার্জও একমত হন।’</p> <p>রাশিয়া যাদের মুক্তি দিয়েছে, তাদের কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলেন শলৎস। তিনি বলেছেন,  ‘ঠিক সিদ্ধান্তই নেওয়া হয়েছে। না হলে যারা এখন মুক্তি পেয়েছেন, তাদের আমরা হারাতাম। অনেক বন্দিই তাদের স্বাস্থ্য ও জীবন নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিলেন।’</p> <p><strong>‘শয়তানের সঙ্গে চুক্তি’</strong></p> <p>জনপ্রিয় সংবাদপত্র বিল্ডের এক নিবন্ধে বলা হয়েছে, ‘রাশিয়ায় আটক জার্মানির নাগরিক ও মানবাধিকারকর্মীদের মুক্তি অবশ্যই স্বাগতযোগ্য। কিন্তু রাশিয়ার মানুষের কাছে পুতিনকে হিরো বানিয়ে দেওয়া হলো। তিনি খুনিদেরও রক্ষা করতে পারলেন।’</p> <p>জার্মানির সরকারি মুখপাত্র ক্রাসিকভকে মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত সমর্থন করেছেন। তিনি বলেছেন, গুপ্তচরবৃত্তির সঙ্গে জড়িতদের ইউরোপ থেকে রাশিয়ায় পাঠানোর ফলেই বন্দিবিনিময় সম্ভব হয়েছে।</p> <p>জার্মানির পার্লামেন্টে পররাষ্ট্রবিষয়ক কমিটির প্রধান মাইকেল রথ বলেছেন, ‘কখনো কখনো মানবিকতার জন্য শয়তানের সঙ্গেও চুক্তি করতে হয়।’</p> <p><strong>বাইডেনের প্রতিক্রিয়া</strong></p> <p>মার্কিন নাগরিকদের বহনকারী বিমানটি রাশিয়া-পশ্চিম বন্দি অদলবদল করে মেরিল্যান্ডে অবতরণ করে। মুক্তিপ্রাপ্ত ইভান গার্শকোভিচ, পল হুইলান, আলসু কুরমাশেভাকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং ভিপি কমলা হ্যারিস অভ্যর্থনা জানিয়েছেন। গার্শকোভিচকে তার পরিবার স্বাগত জানিয়েছে। যারা তার মুক্তির জন্য ৪৯১ দিন অপেক্ষা করেছে। বাইডেন তার সহযোগীদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন। </p> <p>মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জানিয়েছেন, জার্মানি এই ছাড় দিয়েছে বলেই বন্দিবিনিময় সম্ভব হয়েছে। তিনি শলৎসের প্রতি কৃতজ্ঞ।</p> <p>বাইডেনের নিরাপত্তা উপদেষ্টা সুলিভান বলেছেন, ‘প্রথমে জার্মানি বলেছিল, তারা ওই বন্দিকে ছাড়তে পারবে না। গত জানুয়ারিতে বাইডেন ব্যক্তিগতভাবে শলৎসকে এই অনুরোধ করেন। তখন শলৎস জানান, আপনার জন্য আমি এই কাজ করব।’</p>