<p>যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারণার শেষ দিকে ভোটারদের উদ্দেশে সমাপনী বক্তব্য প্রদান করেছেন ডেমোক্রেটিক দলের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী কমলা হ্যারিস ও রিপাবলিকান পার্টির প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। ওয়াশিংটনে সমাপনী বক্তব্য দেওয়ার সময় রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প কমলাকে আক্রমণ করে বলেন, তার নেতৃত্ব দেওয়ার যোগ্যতা নেই।</p> <p>ট্রাম্প তার ভাষণ শুরু করেন একটি সহজ প্রশ্ন দিয়ে। ভোটারদের তিনি জিজ্ঞাসা করেন, ‘চার বছর আগের তুলনায় আপনি কি এখন ভালো অবস্থায় আছেন?’ এরপর একে একে তিনি তার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিগুলো পুনরাবৃত্তি করেন। সেগুলোর মাঝে রয়েছে–মূল্যস্ফীতি কমানো এবং যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসীদের অনুপ্রবেশ বন্ধ করা।</p> <p>কমলা হ্যারিসের নিন্দা করে তিনি বলেন, ‘কমলা আমাদের লজ্জিত করেছেন। তার মাঝে নেতৃত্বের যোগ্যতা নেই।’ ডোনাল্ড ট্রাম্প জনগণকে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানান এবং কোনো প্রমাণ ছাড়াই দাবি করেন, তার প্রতিদ্বন্দ্বীরা নির্বাচনে ‘কারচুপি’ করবেন, ইতোমধ্যে তেমন ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে।</p> <p>এরপর তিনি পেনসিলভেনিয়ার ল্যাংকস্টার কাউন্টির একটি ঘটনার কথা উল্লেখ করেন। সেখানকার কর্মকর্তারা এই সপ্তাহের শুরুতে বলেছিলেন, তারা ভোটার নিবন্ধন ফর্ম তদন্ত করছেন, যা জাল হতে পারে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। </p> <p>যদিও নির্বাচনী কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন, কাউন্টির নির্বাচন সুরক্ষিত রয়েছে এবং সন্দেহভাজন প্রতারণার বিষয়টি চিহ্নিত করা তাদের ‘সিস্টেমের কার্যকারিতার’ একটি লক্ষণ। ট্রাম্প পেনসিলভানিয়ার অ্যালেন্টাউনেও একটি প্রচারণা সমাবেশ করেছেন। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে এটি এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজ্য, যেটির ফল প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।</p> <p>এদিকে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কমলা হ্যারিস তার বক্তব্য এমন স্থানে দিয়েছেন, যেখানে প্রায় চার বছর আগে ক্যাপিটল দাঙ্গার ঠিক আগে আসন্ন নির্বাচনে রিপাবলিকান পার্টির প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পও বক্তব্য রেখেছিলেন।</p> <p>কমলা হ্যারিস বলেন, ‘এই নির্বাচন সম্ভবত আপনার জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভোট’ এবং এটির মানে ‘স্বাধীনতা ও বিশৃঙ্খলার মধ্য থেকে একটিকে বেছে নেওয়া’। এ নির্বাচনে মার্কিন ভোটাররা ‘সবচেয়ে অসাধারণ কাহিনির পরবর্তী অধ্যায়টি লিখতে পারেন’।</p> <p>তিনি তার এই সমাপনী বক্তব্যে আসন্ন নির্বাচনের প্রার্থী ও দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকেও আক্রমণ করতেও ভোলেননি। তিনি বলেন, ‘প্রায় চার বছর আগে এই স্থানে ডোনাল্ড ট্রাম্প দাঁড়িয়েছিলেন এবং জনগণের ইচ্ছাকে দমন করার জন্য সশস্ত্র জনতাকে পাঠিয়েছিলেন।’ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেও মূল্যস্ফীতি এখন বড় একটি সমস্যা। এ বিষয়ক তার বক্তব্য হলো, ‘এখন আমাদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো খরচ কমানো, যা মহামারির আগেও বাড়ছিল এবং এখনো অনেক বেশি।’ জীবনের ব্যয় সংকট নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি বুঝতে পারি।’</p> <p>তিনি তার এই সমাপনী বক্তব্য গর্ভপাতের অধিকার রক্ষারও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘মানুষ তাদের নিজের শরীরের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার মৌলিক স্বাধীনতা রাখে।’ এর আগে বক্তব্যের শুরুতেই কমলা হ্যারিস বলেছিলেন, ডোনাল্ড ট্রাম্প ‘আমেরিকার নারীদের গর্ভধারণ করতে বাধ্য করবেন…আপনারা প্রজেক্ট ২০২৫ গুগল করুন।’ যদিও ট্রাম্প এই ধরনের কিছু করার পরিকল্পনা করছেন, সে রকম কোনো প্রমাণ এখনো মেলেনি।</p> <p>কমলা হ্যারিস যে প্রজেক্ট ২০২৫-এর কথা উল্লেখ করেছেন, তা থিংক ট্যাংক হ্যারিটেজ ফাউন্ডেশন দ্বারা পরবর্তী রিপাবলিকান প্রেসিডেন্টের জন্য তৈরি একটি অতিরক্ষণশীল নীতি প্রস্তাবের তালিকা। যদিও ডোনাল্ট ট্রাম্প ‘প্রজেক্ট ২০২৫’ থেকে বারবার নিজেকে দূরে রাখার চেষ্টা করেছেন ও বলেছেন, ‘প্রজেক্ট ২০২৫ সম্পর্কে আমার কিছু জানা নেই। <span style="display:none"> </span>এর পেছনে কে আছে, তা নিয়েও আমার ধারণা নেই।’</p> <p>সূত্র : বিবিসি</p>