<p>ষাটোর্ধ্ব জরিনা বেগম। দুই চোখই অন্ধ। শরীরজুড়ে ক্লান্তি ও বার্ধক্যের ছাপ। একটু হাঁটলেই হাঁসফাঁস লাগে; শক্তি পান না। নেই স্বামী-সন্তান। থাকেন ঝুপড়ি ঘরে। অন্ধ জরিনার তিন বেলা খাবারের জন্য অপেক্ষায় থাকতে হয়, দয়া করে কখন কে তাকে খাবার দিয়ে যাবে। তা খেয়েই বাঁচবে জীবন। সব সময় তিন বেলা ভরপেট খাবার জোটে না জরিনা বেগমের।</p> <p>জরিনা বেগম খুলনার কয়রা উপজেলার সদর ইউনিয়ন ৩ নম্বর কয়রা গ্রামের মৃত লোকমান সরদারের সহধর্মিণী। তিনি থাকেন কয়রা সদর ইউনিয়নের ১ নম্বর কয়রা গ্রামে তার স্বামীর রেখে যাওয়া ৩ শতাংশ জমির ছোট্ট একটা ঝুপড়ি ঘরে।আজ বুধবার (৩০ অক্টোবর) দুপুরে জরিনা বেগমের সঙ্গে তার নিজ বাড়িতে কথা হয়। আলাপচারিতায় উঠে আসে তার অসহায়ত্বের কাহিনি ও জীবন-সংগ্রামে গল্প।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="সিঁধ কেটে ঘরে ঢুকে হত্যার পর নারীকে ধর্ষণ, গ্রেপ্তার ৩" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/10/30/1730285132-0fe2139b6f9163c35648cb82bdd0a4d0.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>সিঁধ কেটে ঘরে ঢুকে হত্যার পর নারীকে ধর্ষণ, গ্রেপ্তার ৩</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/country-news/2024/10/30/1440841" target="_blank"> </a></div> </div> <p>জরিনা বেগম জানান, তার শরীরে বাসা বেঁধেছিল নানা রোগ। তাই সন্তানও হয়নি। ১৫ বছর আগে হঠাৎ টাইফয়েড জ্বরে আক্রান্ত হয়ে তার স্বামী লোকমান সরদার মারা যান। স্বামী বেঁচে থাকতে বসন্ত রোগে দুই চোখই হারান জরিনা। বয়সের ভার ও দুই চোখ অন্ধের কারণে অন্যের বাড়িতে কাজ করতে পারেন না। কাজে নিতেও চায় না কেউ।</p> <p>দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে জরিনা বলেন, ‘আমার জীবনটাই গেল দুঃখে দুঃখে। সেই ছোড কালে বাপ-মা হারাইছি। তারপর হারায়ছি চোখ, হারাইছি স্বামী, অল্প বয়স থেকেই আমি জীবনের সুখ বলে কী জিনিস তা পাইনি। এখনো পাড়ার মানুষ দিলে খাই, নয়তো খাই না। ঝড়-বৃষ্টির সময় ঘরে থাকতে পারি না, পানি পড়ে। সবাই-ই তো ভালো ঘরে থাকতে চায়, কয়জনের সাধ্য আছে! তবু আমার কাছে আমার ভাঙা ঘরটিই আমার প্রাসাদ। তিন বেলা পেট ভোরে না হয় আধা পেট করে খেয়ে বাঁচতে চাই।’ জরিনা একটি ভিজিডি কার্ডের দাবি জানান।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="পদ্মায় ‘জেলেদের হামলায়’ নিখোঁজ আরো ১ পু‌লিশ সদস্যের মরদেহ উদ্ধার" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/10/30/1730270628-7151184986aed9f8f418938930271d37.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>পদ্মায় ‘জেলেদের হামলায়’ নিখোঁজ আরো ১ পু‌লিশ সদস্যের মরদেহ উদ্ধার</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/country-news/2024/10/30/1440757" target="_blank"> </a></div> </div> <p>তিনি জানান, ২০০৮ সালের শেষের দিকে এলাকাবাসীর অনুরোধে তৎকালীন ইউপি সদস্য শেখ রোকনুজ্জামান জরিনাকে প্রতিবন্ধী-ভাতার অন্তর্ভুক্ত করেন। কিছুদিন আগেও ছিল না রাতে ঘুমানোর জায়গা। বৃষ্টির পানি বাইরের আগে যেন জরিনার ঘরের মধ্যে পড়ে। নড়বড়ে খুঁটি আর জরাজীর্ণ ছাউনি বৃষ্টির সময় পলিথিন মুড়ে থাকতেন জরিনা বেগম। তবে প্রতিবেশীরা ছোট্ট দুই-চাল বিশিষ্ট একটি ঘর তৈরি করে দেন। বর্তমানে তার বসবাসের ঘরটিও নড়বড়ে হয়ে পড়েছে।</p> <p>প্রতিবেশী সাংবাদিক আব্দুল্লাহ বলেন, ‘কোনো সন্তান না থাকায় রান্নাবান্না থেকে সব কাজেই সহযোগিতা করতেন জরিনার স্বামী লোকমান সরদার। সকাল থেকে মহাজনের বাড়ি হাড় ভাঙা পরিশ্রম আবার বাড়িতে রান্নাবান্না থেকে জরিনার গোসল, সব কাজ করতেন তিনি। দরিদ্রতার চাদরে মোড়ানো লোকমান ও জরিনা বেগমের সংসার ভালোই ছিল। তবে ১৫ বছর আগে হঠাৎ টাইফয়েড জ্বরে আক্রান্ত হয়ে লোকমান সরদার মারা যান, সেই থেকে শুরু হয় জরিনা বেগমের দুঃখ-দুর্দশা। পরে লোকমানের চাচাতো ভাই রূপচাঁদ সরদার ও তার স্ত্রী খাদিজা জরিনাকে দেখভালের দ্বায়িত্ব নেন।’</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="গ্রাম পুলিশের ৬৬ সদস্যের কষ্টে গাঁথা জীবন" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/10/30/1730263317-d99119ca42e35bfa7fbc7fba9ab1d88a.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>গ্রাম পুলিশের ৬৬ সদস্যের কষ্টে গাঁথা জীবন</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/country-news/2024/10/30/1440750" target="_blank"> </a></div> </div> <p>তিনি আরো বলেন, ‘ভাগ্যের নির্মম পরিহাস, কয়েক বছর পর রূপচাঁদ সরদারও মারা যায়। সেই থেকে অন্ধ জরিনার ৩ বেলা খাবারের জন্য অপেক্ষায় থাকতে হয়, দয়া করে কখন কে তার খাবার দিয়ে যাবে। এতটা করুণ দুঃখ-দুর্দশার জীবনযাপন তবু স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা যেন অন্ধ।’</p> <p>স্থানীয় ইউপি সদস্য শেখ সোহরাব হোসেন বলেন, ‘বিষয়টি দুঃখজনক জরিনার ঘর ও একটি ভিজিডি কার্ডের জন্য তার দপ্তরে কথা বলবেন।’ একই সঙ্গে কিভাবে জরিনা যেন ভালোভাবে তিন বেলা খেতে পারেন, সে বিয়য়টিও তিনি দেখবেন বলে জানান।</p> <p>উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুলি বিশ্বাস জানান, প্রতিটি মানুষের বাঁচার অধিকার রয়েছে তবে জরিনা বেগমের বসবাসের ও তিন বেলা পেট ভোরে খাওয়ার ব্যবস্থা করার চেষ্টা করবেন বলে জানান তিনি।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="সাবেক এমপি আক্তারুজ্জামানের বিরুদ্ধে যত অভিযোগ" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/10/30/1730262420-e06d061a77a7bde916b8a91163029d41.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>সাবেক এমপি আক্তারুজ্জামানের বিরুদ্ধে যত অভিযোগ</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/country-news/2024/10/30/1440746" target="_blank"> </a></div> </div>