<p>দখলকৃত পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীরা প্রায় ২০টি গাড়িতে আগুনে পুড়িয়েছে। স্থানীয় সময় সোমবার ভোরে আল-বিরেহ শহরে এ ঘটনা ঘটে। ফিলিস্তিনি সিভিল ডিফেন্স ও একটি ইসরায়েলি নিরাপত্তা সূত্রের বরাত দিয়ে এএফপি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে। এ ছাড়া এএফপির একজন সাংবাদিক কয়েকটি গাড়িকে পুরোপুরি পুড়ে যেতে দেখেন এবং পাঁচতলা একটি ভবনের কালো হয়ে যাওয়া সামনের অংশটি দেখতে পান, যার সামনে গাড়িগুলো রাখা ছিল।</p> <p>স্থানীয় সিভিল ডিফেন্স অফিসের প্রধান রামি ওমর বলেন, রাত ৩টা ৩০ মিনিটে একটি সতর্কবার্তায় জানা যায়, বসতি স্থাপনকারীরা এলাকা প্রবেশ করে ভাঙচুর করেছে। অন্যদিকে একজন ইসরায়েলি নিরাপত্তা কর্মকর্তা এএফপিকে জানান, ভোর ৪টায় ঘটনাটি সম্পর্কে জানার পর ঘটনাস্থলে সেনা পাঠানো হয়। তবে তারা পৌঁছনোর আগেই বসতি স্থাপনকারীরা পালিয়ে যায়।</p> <p>এ ঘটনায় ১৯টি গাড়িতে আগুন দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে ওই কর্মকর্তা বলেন, ইসরায়েলি পুলিশ, সেনা এবং নিরাপত্তা সংস্থা শিন বেটের কর্মকর্তারা আল-বিরেহতে তদন্তের জন্য আলামত সংগ্রহ করেছেন।</p> <p>এদিকে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ এখনো জানে না, বসতি স্থাপনকারীরা কোথা থেকে এসেছিল এবং তাদের উদ্দেশ্য কী ছিল। ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের বাসিন্দা ইহাব আল-জাবিন এএফপিকে জানান, তিনি অগ্নিসংযোগকারীদের কাছের ইসরায়েলি বসতি বেইত এলের দিকে পালিয়ে যেতে দেখেছেন। তিনি প্রায় ১০ জনকে দেখেছেন, যাদের তিনি বসতি স্থাপনকারী হিসেবে শনাক্ত করেছেন।</p> <p>তিনি আরো বলেন, ‘তারা ভবনের সামনে থাকা গাড়িগুলোর ওপর তরল পদার্থ ঢেলে আগুন লাগায়। আমি আমার অ্যাপার্টমেন্ট থেকে চিৎকার করি, তখন তারা পালিয়ে যায়। আমি যখন আমার প্রতিবেশীদের নিয়ে আগুন নেভাতে নিচে যাই, তখন বসতি স্থাপনকারীরা আমাদের দিকে গুলি চালায়।’</p> <p>ফিলিস্তিনি কমিশন এগেইনস্ট সেটলমেন্টসের আবদুল্লাহ আবু রহম এএফপিকে বলেন, এই হামলাকারীরা আগেও পার্শ্ববর্তী গ্রামগুলোতে হামলা চালিয়েছে এবং তারা একটি অগ্নিসংযোগকারী দলের সদস্য।</p> <p>ক্ষতিগ্রস্ত ভবনটিতে ৬০ জনের বেশি মানুষ বাস করত বলে বাসিন্দারা জানিয়েছে। রামাল্লা ও আল-বিরেহের গভর্নর লায়লা গান্নাম ঘটনাস্থলে উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, ‘এই ভবনে একটি হত্যাকাণ্ড ঘটতে পারত। আক্রমণ বাড়ছে, কারণ হামলাকারীদের জন্য কোনো শাস্তির ব্যবস্থা নেই।’</p> <p>গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের নজিরবিহীন হামলার পর গাজা উপত্যকায় যুদ্ধ শুরু হলে পশ্চিম তীরেও সহিংসতা বেড়েছে। জাতিসংঘের মানবিক বিষয়ক সমন্বয় দপ্তর (ওসিএইচএ) আগস্টে জানায়, ১ অক্টোবর থেকে ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত তারা প্রায় ২৭০টি বসতি স্থাপনকারী সম্পর্কিত ঘটনা নথিভুক্ত করেছে, যা ফিলিস্তিনিদের ও তাদের সম্পত্তির ওপর প্রভাব ফেলেছে।</p> <p>প্রায় চার লাখ ৯০ হাজার বসতি স্থাপনকারী পশ্চিম তীরে বসবাস করে, যা আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে অবৈধ বলে বিবেচিত। ইসরায়েল ১৯৬৭ সাল থেকে এই অঞ্চলটি দখল করে রেখেছে। এই অঞ্চলে প্রায় ৩০ লাখ ফিলিস্তিনি বাস করে।</p>