<p>সিরিয়া যুদ্ধে ক্লান্ত এবং দেশটি প্রতিবেশী বা পশ্চিমাদের জন্য হুমকি নয় বলে মন্তব্য করেছেন সিরিয়ার কার্যত নেতা (ডি ফ্যাক্টো) নেতা আহমেদ আল-শারা। দামেস্কে বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেন। এ ছাড়া সিরিয়ার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি। বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানায়। </p> <p>সাক্ষাৎকারে তিনি আরো বলেন, ‘এখন, এত কিছু হওয়ার পরে, নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা উচিত। কারণ নিষেধাজ্ঞাগুলো ছিল পুরনো শাসনব্যবস্থার বিরুদ্ধে। শোষক ও শোষিত উভয় পক্ষের সঙ্গে একই আচরণ করা সংগত নয়।’</p> <p>মাত্র দুই সপ্তাহ আগে বিদ্রোহীদের এক আকস্মিক সশস্ত্র অভিযানে আসাদ সরকারের পতন হয়। সেই অভিযানে সশস্ত্র বিদ্রোহীদের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন আল-শারা। বিদ্রোহী জোটের সবচেয়ে শক্তিশালী সংগঠন হায়াত তাহরির আল-শামের (এইচটিএস) প্রধান তিনি। পূর্বে আল-শারা পরিচিত ছিলেন ‘আবু মুহাম্মদ আল-জোলানি’ নামে।</p> <p>আল-কায়েদার একটি শাখা সংগঠন হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছিল এই দলটি। ফলে জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্যসহ আরো কয়েকটি দেশ ও সংস্থার সন্ত্রাসী তালিকায় দলটির নাম অন্তর্ভুক্ত আছে। পরে ২০১৬ সালে তারা আল-কায়েদার সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে সম্পর্ক ছিন্ন করে, কিন্তু অনেক পশ্চিমা বিশ্লেষক তাদের দাবিকে সন্দেহের চোখেই দেখে আসছেন।   </p> <p>সাক্ষাৎকারে এইচটিএসকে সন্ত্রাসী সংগঠনের তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার দাবি জানান আল-শারা। তিনি বলেন, ‘এইচটিএস কোনো সন্ত্রাসী দল নয়। তারা কখনো বেসামরিক বা বেসামরিক এলাকাকে টার্গেট করেনি। বরং তারা নিজেদের আসাদ সরকারের অপরাধের শিকার বলে মনে করত।’</p> <p>তিনি আফগানিস্তানের আদলে সিরিয়াকে গড়ে তোলার সম্ভাবনার বিষয়টি উড়িয়ে দিয়েছেন। শারা বলেন, ‘দেশ দুটি খুবই ভিন্ন এবং ভিন্ন ঐতিহ্যের। আফগানিস্তান একটি উপজাতীয় সমাজ বা গোষ্ঠীভিত্তিক সমাজব্যবস্থা।’ তিনি বলেন, ‘সিরিয়ায় মানুষের চিন্তাধারা ভিন্ন।’</p> <p>তিনি আরো বলেন, তিনি নারীশিক্ষায় বিশ্বাসী। ২০১১ সাল থেকে বিদ্রোহীদের দখলে থাকা সিরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশের কথা উল্লেখ করে শারা বলেন, ‘আট বছরেরও বেশি সময় ধরে ইদলিবে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। আমি মনে করি, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ৬০ শতাংশের বেশি নারী রয়েছে।’</p> <p>আল-শারাকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, সিরিয়ায় মদ্যপান অনুমোদন করা হবে কি না? জবাবে তিনি বলেন, ‘অনেক বিষয় নিয়ে আমার মন্তব্য করার অধিকার নেই। কারণ, এগুলো আইনি ব্যাপার।’</p> <p>তিনি আরো বলেছেন, ‘সংবিধান লেখার জন্য আইন বিশেষজ্ঞদের একটি সিরিয়ান কমিটি থাকবে। তারা সিদ্ধান্ত নেবে এবং যেকোনো শাসক বা রাষ্ট্রপতিকে আইন মেনে চলতে হবে।’</p> <p>শারা পুরো সাক্ষাৎকারজুড়ে বেশ স্বাভাবিক ছিলেন। বেসামরিক পোশাক পরেছিলেন এবং এইচটিএসের অতীত কট্টরপন্থা পেছনে ফেলে আসার বিষয়ে সবার আস্থা অর্জনের চেষ্টা করেছেন। তবে অনেক সিরীয় তার বক্তব্যে আস্থা রাখতে পারছেন না। আগামী কয়েক মাসে সিরিয়ার নতুন শাসকদের কর্মকাণ্ড নির্দেশ করবে, আসলে তারা সিরিয়াকে কোন রূপে দেখতে চায় এবং শাসন করতে চায়।</p> <p>সূত্র : বিবিসি</p>