<p>যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে তার  দুঃসাহসিক পরিকল্পনা তুলে ধরার পর বিশ্বনেতাদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। ট্রাম্প তার মার-এ-লাগো এস্টেটে মঙ্গলবার এক বিস্তৃত সংবাদ সম্মেলনে একাধিক চাঞ্চল্যকর পররাষ্ট্রনীতি পরিকল্পনার কথা তুলে ধরেন।</p> <p>হোয়াইট হাউসের দায়িত্ব গ্রহণের দুই সপ্তাহ আগে দেওয়া এই বক্তব্যে ট্রাম্প ন্যাটো সামরিক জোট ও এতে ইউক্রেনের সম্ভাব্য সদস্য পদ, গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের যুদ্ধ এবং গ্রিনল্যান্ড, কানাডা ও পানামা খাল নিয়ে বিভিন্ন দাবি করেন।</p> <p>অনেকেই বলছেন, ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদের মতোই তার এসব বিতর্কিত ধারণাগুলো কতটা বাস্তবায়িত হবে, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। তবে এ নিয়ে বিশ্বব্যাপী গণমাধ্যমে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে।</p> <p>ট্রাম্পের এ সংবাদ সম্মেলনের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো ও প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া :</p> <p><strong>ন্যাটো ও ইউক্রেন</strong><br /> ট্রাম্প তার বক্তব্যে জানান, তিনি রাশিয়ার সেই অবস্থানকে সমর্থন করেন, যেখানে ইউক্রেনকে ন্যাটোর অংশ না করার কথা বলা হয়েছে।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="মেটার পরিচালনা পর্ষদে ট্রাম্প ঘনিষ্ঠ ডানা হোয়াইট" height="66" src="https://asset.kalerkantho.com/public/news_images/2025/01/07/1736252014-22166c445cedd060e68c4c0dcdb545af.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>মেটার পরিচালনা পর্ষদে ট্রাম্প ঘনিষ্ঠ ডানা হোয়াইট</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/world/2025/01/07/1466093" target="_blank"> </a></div> </div> <p>তিনি বলেন, “সমস্যার একটি বড় দিক হলো, বহু বছর ধরে পুতিনের অনেক আগে থেকেই রাশিয়া বলে আসছে, ‘আপনারা ইউক্রেনকে কখনোই ন্যাটোর সঙ্গে যুক্ত করতে পারবেন না।’ তারা এ বিষয়টি যেন পাথরে খোদাই করে রেখেছে।”</p> <p>“কিন্তু কোনো একসময় বাইডেন বলেছেন, ‘না, তাদের (ইউক্রেন) ন্যাটোর সদস্য হতে দেওয়া উচিত।’ এতে রাশিয়ার ঠিক দরজার সামনে একজন শত্রু দাঁড়িয়ে যাবে এবং তাদের এই উদ্বেগ আমি বুঝতে পারি।”</p> <p>উল্লেখ্য, ২০০৮ সালের বুখারেস্ট সম্মেলন থেকে ন্যাটোর সদস্য দেশগুলো ইউক্রেনের সদস্য পদ সমর্থন করে আসছে এবং বাইডেন প্রশাসনও ইউক্রেনের ন্যাটোতে অন্তর্ভুক্তির পক্ষে রয়েছে।</p> <p>অন্যদিকে ট্রাম্প দীর্ঘদিন ধরেই অভিযোগ করে আসছেন, ন্যাটোর অন্য সদস্য দেশগুলো প্রতিরক্ষা খাতে পর্যাপ্ত ব্যয় করছে না। তিনি মঙ্গলবার বলেন, ন্যাটো সদস্যদের তাদের জিডিপির ২ শতাংশ নয়, বরং ৫ শতাংশ প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয় করতে হবে।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="ট্রাম্পের মিত্র ইলন মাস্ককে নিয়ে উদ্বিগ্ন কিছু দেশ" height="66" src="https://asset.kalerkantho.com/public/news_images/2025/01/06/1736171173-22166c445cedd060e68c4c0dcdb545af.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>ট্রাম্পের মিত্র ইলন মাস্ককে নিয়ে উদ্বিগ্ন কিছু দেশ</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/world/2025/01/06/1465730" target="_blank"> </a></div> </div> <p><strong>মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা</strong><br /> এ ছাড়া ট্রাম্প এদিন সতর্ক করে বলেন, যদি ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে জিম্মিমুক্তি চুক্তি না হয়, তবে সংঘাত ছড়িয়ে পড়বে।</p> <p>তিনি আরো বলেন, ‘এটি হামাসের জন্য ভালো হবে না এবং সবার জন্যই খুব খারাপ হবে।’</p> <p>সিরিয়া নিয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে ট্রাম্প বলেন, ‘আমি এ বিষয়ে কিছু বলব না, কারণ এটি সামরিক কৌশলের একটি অংশ।’</p> <p><strong>কানাডা দখলের হুমকি</strong><br /> ট্রাম্প কানাডার বিরুদ্ধে সামরিক শক্তি প্রয়োগের সম্ভাবনা উড়িয়ে দিলেও অর্থনৈতিক চাপ প্রয়োগের হুমকি দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের উত্তরের প্রতিবেশীর সঙ্গে যে সীমানা রয়েছে, সেটি একটি কৃত্রিমভাবে আঁকা রেখা।’</p> <p>এ বিষয়ে কানাডার প্রতিক্রিয়া ছিল তাৎক্ষণিক। সাবেক প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো এক্সে এক পোস্টে বলেন, ‘কানাডা কখনোই যুক্তরাষ্ট্রের অংশ হবে না।’</p> <p><strong>গ্রিনল্যান্ড ও পানামা খাল</strong><br /> গ্রিনল্যান্ড ও পানামা খাল নিয়ে তার উচ্চাভিলাষের প্রশ্নে ট্রাম্প সামরিক শক্তি প্রয়োগের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেননি।</p> <p>তিনি বলেন, ‘আমি এ বিষয়ে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি না। পানামা খাল আমাদের দেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’</p> <p>১৯৯৯ সাল থেকে পানামা খালের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ পানামার হাতে। পানামার সরকার বুধবার ট্রাম্পের মন্তব্য প্রত্যাখ্যান করে জানায়, ‘আমাদের খালের সার্বভৌমত্ব নিয়ে কোনো আপস হবে না।’</p> <p>পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাভিয়ার মার্টিনেজ-আচা বলেন, ‘পানামা খালের একমাত্র নিয়ন্ত্রক পানামা এবং এটি সেভাবেই থাকবে।’ তিনি আরো বলেন, খালটি বিশ্ব বাণিজ্য ও মানবতার সেবা করে।</p> <p>দীর্ঘদিনের মার্কিন মিত্র ডেনমার্কের স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল গ্রিনল্যান্ডের প্রসঙ্গে ট্রাম্প বলেন, এটি জাতীয় নিরাপত্তার জন্য প্রয়োজন।</p> <p>এদিকে ফ্রান্স বুধবার ট্রাম্পকে সতর্ক করে দিয়ে জানায়, ‘ইউরোপীয় ইউনিয়নের সার্বভৌম সীমান্ত অক্ষত থাকবে।’ ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জ্যঁ-নোয়েল বারো ফ্রান্স ইন্টার রেডিওতে বলেন, ‘ইউরোপীয় ইউনিয়ন কোনো দেশের কাছ থেকে আক্রমণ মেনে নেবে না।’</p> <p>সূত্র : আলজাজিরা</p>