ইউক্রেনে বহুতল ভবনে রাশিয়ার ড্রোন হামলায় নিহত ৬

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
ইউক্রেনে বহুতল ভবনে রাশিয়ার ড্রোন হামলায় নিহত ৬
ছবিসূত্র : স্টেট ইমারজেন্সি সার্ভিস।

ইউক্রেনে একটি বহুতল ভবনে ড্রোন হামলা চালিয়েছে রাশিয়ার সামরিক বাহিনী। পূর্ব ইউরোপের এই দেশটির সুমি অঞ্চলে চালানো এই হামলায় ৬ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরো ৯ জন।

গতকাল বৃহস্পতিবার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রাতের বেলায় উত্তর-পূর্ব ইউক্রেনের একটি অ্যাপার্টমেন্ট ভবনে রাশিয়ার একটি ড্রোন হামলায় কমপক্ষে ছয়জন নিহত এবং নয়জন আহত হয়েছে।

 

সুমি আঞ্চলিক প্রশাসন জানিয়েছে, রাত ১টার পর শাহেদ ড্রোনটি সুমি শহরের একটি দেয়াল এবং আশেপাশের জানালা উড়িয়ে দেয়। ধ্বংসস্তূপ থেকে চারজনকে উদ্ধার করা হয়েছে এবং আহতদের মধ্যে একটি শিশুও রয়েছে। এতে আরো বলা হয়েছে, ১২০ জনকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

সুমি আঞ্চলিক প্রসিকিউটর অফিস জানিয়েছে, নিহতদের মধ্যে বয়স্ক ব্যক্তিরাও রয়েছেন।

আঞ্চলিক প্রশাসন শহরে দুই দিনের শোক ঘোষণা করেছে। জেলেনস্কি তার রাতের ভিডিও ভাষণে বলেছেন, ‘ঘণ্টায় ঘণ্টায় আমরা সুমির পরিস্থিতির আপডেট পাচ্ছি। রাশিয়ান ‘শাহেদ’ (ড্রোন) এর হামলার প্রভাবে সেখানে কাজ চলছে।’ তিনি এটিকে একটি ‘ভয়াবহ ট্র্যাজেডি, একটি ভয়াবহ রুশ অপরাধ’ বলে অভিহিত করেছেন।

রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধ প্রায় তিন বছর আগে শুরু হয়েছিল এবং যুদ্ধ শেষ হওয়ার কোনো লক্ষণও দেখা যাচ্ছে না। জাতিসংঘের মতে, ১০ হাজারের বেশি ইউক্রেনীয় বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে এই যুদ্ধে। বিদ্যুৎ গ্রিডে রুশ আক্রমণের ফলে বেসামরিক নাগরিকরা দুর্ভোগের সম্মুখীন হচ্ছেন। এই ঠাণ্ডা আবহাওয়ায় গরম পানি সরবরাহ ব্যাহত হচ্ছে।

আরো পড়ুন
অবশেষে ভিক্ষাবৃত্তিকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করল পাকিস্তান

অবশেষে ভিক্ষাবৃত্তিকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করল পাকিস্তান

 

ইউক্রেনের রাষ্ট্রপতি কার্যালয়ের প্রধান আন্দ্রি ইয়েরমাক টেলিগ্রামে বলেছেন, ‘রাশিয়ান বাহিনী হতাহতের সংখ্যা বাড়ানোর জন্য ৯০ কিলোগ্রাম (২০০ পাউন্ড) বিস্ফোরক এবং শাহেদ ড্রোন ব্যবহার শুরু করেছে।

’ ইয়ারমাকের দাবি অনুসারে, শাহেদ যুদ্ধাস্ত্রের ছবি প্রকাশ করা হয়েছে। যার একটি ছবিতে ধাতব সিলিন্ডারের আবরণের ভিতরে ছোট ছোট ধাতুর টুকরো দেখা যাচ্ছে।

সাম্প্রতিক সময়ে পূর্ব দোনেৎস্ক অঞ্চলে যুদ্ধক্ষেত্রের লড়াই বিশেষভাবে তীব্র হয়েছে। এলাকাটি রাশিয়ান বাহিনী আংশিকভাবে দখল করেছে এবং তা সম্পূর্ণরূপে দখল করার জন্য তারা মরিয়া হয়ে উঠেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। 

ডোনেটস্কের ক্রামাটোর্স্ক শহরে রাশিয়ার কামান হামলায় ১৩ জন আহত হয়েছেন, যার মধ্যে দুটি ছোট শিশুও রয়েছে। দোনেৎস্কের আঞ্চলিক প্রধান ভাদিম ফিলাশকিন বৃহস্পতিবার তার টেলিগ্রাম চ্যানেলে এ কথা লিখেছেন।

বিমান বাহিনীর প্রতিবেদন অনুযায়ী, রাশিয় ইউক্রেনে ৮০টিরও বেশি ড্রোন হামলা চালিয়েছে। বেশিরভাগ ড্রোনই গুলি করে ভূপাতিত করা হয়েছে। ইউক্রেনের দক্ষিণ ওডেসা অঞ্চলে রুশ ড্রোন একটি হাসপাতাল এবং দুটি অ্যাপার্টমেন্ট ভবন ক্ষতিগ্রস্ত করেছে বলে আঞ্চলিক প্রধান ওলেহ কিপার টেলিগ্রামে লিখেছেন। তিনি আরো বলেছেন, তবে কেউ আহত হয়নি। 

সূত্র : এপি

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

আফগানিস্তানের দুই প্রদেশে শিলাবৃষ্টি-ভারী বর্ষণ, নিহত অন্তত ২৯

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
আফগানিস্তানের দুই প্রদেশে শিলাবৃষ্টি-ভারী বর্ষণ, নিহত অন্তত ২৯
প্রতীকী ছবি : এএফপি

আফগানিস্তানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের দুটি প্রদেশে শিলাবৃষ্টি ও ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে অন্তত ২৯ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন দেশটির কর্মকর্তারা।

দেশটির পশ্চিমাঞ্চলের ফারাহ প্রদেশের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রধান মোহাম্মদ ইসরায়েল সায়ার জানিয়েছেন, ওই প্রদেশে শিলাবৃষ্টির কারণে ২১ জন মারা গেছেন এবং ৬ জন আহত হয়েছেন।

কান্দাহার প্রদেশের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, প্রদেশের কয়েকটি স্থানে ভারী বর্ষণে অন্তত ৮ জনের প্রাণহানি হয়েছে। তাদের মধ্যে নারী ও শিশুও রয়েছে।

সূত্র : এএফপি

মন্তব্য

নেদারল্যান্ডসে ২০ হাজারের বেশি স্বল্প দক্ষ ওয়ার্ক পারমিট ইস্যু

ইনফোমাইগ্রেন্টস
ইনফোমাইগ্রেন্টস
শেয়ার
নেদারল্যান্ডসে ২০ হাজারের বেশি স্বল্প দক্ষ ওয়ার্ক পারমিট ইস্যু
নেদারল্যান্ডসের পতাকা। ফাইল ছবি : এএফপি

নেদারল্যান্ডস কর্তৃপক্ষ ২০২৪ সালে স্বল্প দক্ষ ক্যাটাগরিতে দেশটিতে যাওয়া আশ্রয়প্রার্থী ও অভিবাসীদের মোট ২০ হাজার ১৭২টি ওয়ার্ক পারমিট বা কাজের অনুমতি দিয়েছে, যা ২০২৩ সালের তুলনায় ১২ শতাংশ বেশি। ডাচ জাতীয় কর্মসংস্থান সংস্থা (ইউডব্লিউভি) এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। সংস্থাটির মতে, এই সংখ্যার মধ্যে ৯ হাজার ২৮১টি ওয়ার্ক পারমিট আশ্রয়প্রার্থীদের দেওয়া হয়েছে।

নেদারল্যান্ডসে যাওয়া আশ্রয়প্রার্থীদের পক্ষে কাজের অনুমতি পাওয়ার সংখ্যা অত্যন্ত সীমিত।

শরণার্থী মর্যাদা পাওয়ার আগে আশ্রয়প্রার্থীরা সাধারণত ওয়ার্ক পারমিট পান না। নিয়মিত ও অনিয়মিত অভিবাসন মিলিয়ে নেদারল্যান্ডসে কঠোর আইন থাকায় দেশটির বিভিন্ন খাতে তীব্র শ্রমিক সংকটও রয়েছে। এসব ওয়ার্ক পারমিট এমন লোকদের দেওয়া হয়, যাদের ইতিমধ্যে নেদারল্যান্ডসে থাকার অনুমতি রয়েছে, যেমন বিদেশি শিক্ষার্থী কিংবা রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থীদের। এ ছাড়া তিন মাসেরও কম সময়ের কাজের ভিসা নিয়ে নেদারল্যান্ডসে যাওয়া অভিবাসীদেরও উল্লেখিত ওয়ার্ক পারমিট প্রদান করা হয়।

জাতীয় কর্মসংস্থান সংস্থার মতে, কাজের অনুমতি প্রদানের হার ২০২২ সালের তুলনায় ২৬ শতাংশ বেশি। ২০১৯ সাল থেকে এই হারে টানা বৃদ্ধি লক্ষ করা যাচ্ছে।

২০২৪ সালে জারি করা ২০ হাজার ১৭২টি পারমিটের মধ্যে প্রায় অর্ধেক, অর্থাৎ ৯ হাজার ২৮১টি আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য জারি করা হয়েছিল। এটি ২০২৩ সালের তুলনায় পাঁচ গুণ বেশি।

এ ছাড়া রাজনৈতিক আশ্রয়ের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় থাকা এক হাজার ৮৪০ জন ব্যক্তিকেও কাজের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

ডাচ সংবাদমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তাদের বেশির ভাগই সরকারি কর্মসংস্থান সংস্থায়, ক্যাটারিং ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা সেক্টরে কাজ করেন। যেগুলো মূলত কম বেতনের চাকরি।

ইউডব্লিউভির পরিসংখ্যান অনুসারে, প্রতি পাঁচটি ওয়ার্ক পারমিটের মধ্যে একটি পরিচ্ছন্নতা খাতের সঙ্গে সম্পর্কিত। ৮ শতাংশ ক্যাটারিং খাত ও লজিস্টিক কাজের সঙ্গে যুক্ত।

 

আগে নেদারল্যান্ডসে আশ্রয়প্রার্থীরা বছরে মাত্র ২৪ সপ্তাহ কাজ করার অধিকার পেতেন। এই বিধি-নিষেধ তুলে নেওয়ার পর থেকে দেশটিতে ওয়ার্ক পারমিটের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০২৩ সালের শেষের দিকে এই ব্যবস্থাটি প্রত্যাহার করা হয়েছে।

ইউডব্লিউভির পরিচালক জুডিথ ডুভিন টেলিগ্রাফকে বলেন, ‘এই কাজটি আশ্রয়প্রার্থীদের ডাচ সমাজে একীভূত করতে সাহায্য করবে। এটির ফলে রেসিডেন্স পারমিট পাওয়ার আগের তাদের কাজের অভিজ্ঞতা থাকবে। যদিও এগুলো কম বেতনের চাকরি। উচ্চ দক্ষতাসম্পন্ন আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য এটি বেশ কঠিন হতে পারে। এ ছাড়া কিছু পেশা, যেমন টেকনিশিয়ান ও নার্সদের যোগ্যতা যাচাই করতে কিছুটা সময় লাগে। কখনো কখনো তাদের অতিরিক্ত প্রশিক্ষণের প্রয়োজন হয়।’

মন্তব্য
পারমাণবিক ইস্যু

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সরাসরি আলোচনার সম্ভাবনা নাকচ ইরানের

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সরাসরি আলোচনার সম্ভাবনা নাকচ ইরানের
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি ২৫ ফেব্রুয়ারি তেহরানে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভের সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন। ছবি : এএফপি

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি মঙ্গলবার তার দেশের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সরাসরি আলোচনার সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়েছেন।

তার এই মন্তব্য এসেছে এমন এক সময়ে, যখন এক দিন আগে ওয়াশিংটন তেহরানের ওপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় ৩০টিরও বেশি জাহাজ ও ব্যক্তিকে লক্ষ্য করা হয়েছে, যার মধ্যে জাতীয় তেল কম্পানির প্রধানও রয়েছেন। তাদের বিরুদ্ধে ইরানি তেল বিক্রি ও সরবরাহে জড়িত থাকার অভিযোগ আনা হয়েছে।

এই নিষেধাজ্ঞা ছিল যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘সর্বোচ্চ চাপ’ নীতির অংশ, যা তার প্রথম মেয়াদে কার্যকর করা হয়েছিল।

আরাগচি এদিন বলেন, ‘যতক্ষণ পর্যন্ত এভাবে সর্বোচ্চ চাপ প্রয়োগ অব্যাহত থাকবে, ততক্ষণ আমাদের মধ্যে সরাসরি কোনো আলোচনার সম্ভাবনা নেই।’

আরো পড়ুন
‘ইসরায়েল-যুক্তরাষ্ট্র কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ইরানকে মোকাবেলা করবে’

‘ইসরায়েল-যুক্তরাষ্ট্র কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ইরানকে মোকাবেলা করবে’

 

রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভের সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরো বলেন, ‘পারমাণবিক আলোচনা বিষয়ে ইরানের অবস্থান খুবই স্পষ্ট। আমরা কোনো চাপ, হুমকি বা নিষেধাজ্ঞার অধীনে আলোচনা করব না।

এর আগে লাভরভ মঙ্গলবার তেহরানে পৌঁছন। সেখানে তিনি আরাগচি ও অন্য শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। আলোচনায় দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক, আঞ্চলিক পরিস্থিতি ও ২০১৫ সালের পারমাণবিক চুক্তি ছিল মূল বিষয়। ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্র ঐতিহাসিক এই চুক্তি থেকে সরে আসে, যেখানে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিতে সীমাবদ্ধতা আরোপের বিনিময়ে নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা হয়েছিল।

আরো পড়ুন
যুক্তরাষ্ট্র ইরানিদের মৌলিক চাহিদা থেকে বঞ্চিত করছে : পেজেশকিয়ান

যুক্তরাষ্ট্র ইরানিদের মৌলিক চাহিদা থেকে বঞ্চিত করছে : পেজেশকিয়ান

 

এ ছাড়া ইরান সোমবার জার্মানি, ফ্রান্স ও ব্রিটেনের সঙ্গে নতুন দফায় আলোচনা করে। ইউরোপের এই তিন দেশের (ই৩) সঙ্গে ইরানের এই সংলাপ নতুন করে শুরু হয় গত বছর। আরাগচি জানান, লাভরভকে তিনি সর্বশেষ আলোচনার বিষয়ে অবহিত করেছেন। তিনি আরো বলেন, ‘পারমাণবিক ইস্যুতে আমরা রাশিয়া ও চীনের সহযোগিতা ও সমন্বয়ের ভিত্তিতে এগিয়ে যাব।’

সিরিয়া নিয়ে ঘনিষ্ঠতা
এদিকে ইউক্রেনে যুদ্ধের কারণে রাশিয়ার ওপরও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।

এই প্রেক্ষাপটে তেহরান ও মস্কো তাদের সহযোগিতা আরো জোরদার করেছে। ইউক্রেন ও তাদের পশ্চিমা মিত্ররা রাশিয়াকে অস্ত্র সরবরাহের জন্য ইরানকে অভিযুক্ত করেছে, যা তেহরান বারবার অস্বীকার করেছে।

জানুয়ারিতে মস্কো সফরকালে ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে একটি কৌশলগত অংশীদারি চুক্তি স্বাক্ষর করেন, যার মধ্যে অর্থনৈতিক ও সামরিক সহযোগিতা জোরদার করা হয়। তবে ডিসেম্বর মাসে সিরিয়ায় উভয় দেশই একটি বড় ধাক্কার সম্মুখীন হয়, যখন ইসলামপন্থী বিদ্রোহীরা বাশার আল-আসাদের সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেয়। আসাদ সরকারকে রক্ষায় ইরান ও রাশিয়া দীর্ঘ এক দশক ধরে প্রচুর বিনিয়োগ করেছিল।

আরো পড়ুন
ইরানকে নতজানু করতে চান ট্রাম্প, অভিযোগ পেজেশকিয়ানের

ইরানকে নতজানু করতে চান ট্রাম্প, অভিযোগ পেজেশকিয়ানের

 

আরাগচি জানান, সিরিয়া নিয়ে ইরান ও রাশিয়ার অবস্থান খুবই ঘনিষ্ঠ। তিনি বলেন, ‘ইরান চায় শান্তি, স্থিতিশীলতা, ভৌগোলিক অখণ্ডতা এবং সিরিয়ার জনগণের ইচ্ছার ভিত্তিতে দেশটির অগ্রগতি নিশ্চিত হোক।’

লাভরভ বলেন, ‘সিরিয়ার জনগণ ও আশপাশের দেশগুলোর জন্য কোনো ধরনের হুমকি যাতে না থাকে, তা নিশ্চিত করতে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করব।’

রাশিয়ার পাশে যুক্তরাষ্ট্র
অন্যদিকে রাশিয়ার এই কূটনীতিকের সফরের এক সপ্তাহ আগে তিনি সৌদি আরবের রিয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর সঙ্গে ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে বৈঠক করেন।

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ ও নিরাপত্তা পরিষদে সোমবার দুই দফা ভোটে যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার পক্ষে অবস্থান নেয়। পাশাপাশি ইউক্রেনে আক্রমণের নিন্দা করতে অস্বীকার করে ওয়াশিংটন, যা ট্রাম্প প্রশাসনের অবস্থানে একটি বড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেয়।

লাভরভ তেহরানে বলেন, ‘জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ ও নিরাপত্তা পরিষদে গতকালের ঘটনাগুলো একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় স্পষ্ট করেছে : এই সংকটের মূল কারণগুলো দূর করার জন্য যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, তার কোনো বিকল্প নেই।’

সূত্র : এএফপি

আরো পড়ুন
এক সপ্তাহে যেভাবে বিশ্বরাজনীতি বদলে দিলেন ট্রাম্প-পুতিন

এক সপ্তাহে যেভাবে বিশ্বরাজনীতি বদলে দিলেন ট্রাম্প-পুতিন

 
মন্তব্য

গাজায় প্রচণ্ড শীতে ৬ নবজাতকের মৃত্যু

আলজাজিরা
আলজাজিরা
শেয়ার
গাজায় প্রচণ্ড শীতে ৬ নবজাতকের মৃত্যু
একজন ফিলিস্তিনি তিন সপ্তাহ বয়সী ভাতিজি সিলা আল-ফাসিহর হাত ধরে আছেন, যে প্রচণ্ড ঠাণ্ডায় মারা গেছে। ২৫ ডিসেম্বর গাজার খান ইউনিসে নাসের হাসপাতালের মর্গ থেকে ছবিটি তোলা। ছবি : এএফপি

গাজা উপত্যকায় প্রচণ্ড শীতের মধ্যে অন্তত ছয় ফিলিস্তিনি নবজাতক হাইপোথার্মিয়ায় মারা গেছে। স্থানীয় চিকিৎসা কর্মকর্তারা মঙ্গলবার এ তথ্য জানিয়েছেন।

গাজা সিটির ফ্রেন্ডস অব দ্য পেশেন্ট চ্যারিটেবল হাসপাতালের মেডিক্যাল ডিরেক্টর ডা. সাঈদ সালাহ জানান, এক থেকে দুই দিন বয়সী তিন নবজাতককে হাসপাতালে ভর্তি করার কিছুক্ষণের মধ্যেই মারা যায়। তার আগে মঙ্গলবার সকালে আরো দুই শিশু মারা যায় এবং দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসে ছয় নম্বর মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।

গাজার বেসামরিক সুরক্ষা সংস্থাও নিশ্চিত করেছে, গত সপ্তাহের তীব্র শৈত্যপ্রবাহ ও তাপের অভাবের কারণে ছয় নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে।

সালাহ জানান, তার হাসপাতালের নবজাতক বিভাগ সম্প্রতি তীব্র হাইপোথার্মিয়ার আটটি গুরুতর রোগী পেয়েছে, যাদের সবাইকে নিবিড় পরিচর্যায় রাখতে হয়েছে।  

আলজাজিরার প্রতিবেদক হানি মাহমুদ বলেন, ‘চিকিৎসকরা নিশ্চিত করেছেন, এই নবজাতকরা হাসপাতালে আসার সময় কোনো নির্দিষ্ট রোগে ভুগছিল না। তারা শুধু জন্ম নিয়েছে এবং তাদের পরিবার তাদের উষ্ণ রাখার কোনো উপায় খুঁজে পায়নি।

এদিকে হামাস এই মৃত্যুগুলোকে ইসরায়েলের ‘অপরাধমূলক’ নীতির ফলাফল বলে নিন্দা জানিয়েছে। এক বিবৃতিতে তারা মধ্যস্থতাকারী ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে, যেন তারা গাজায় আশ্রয় ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় মানবিক সহায়তার প্রবেশ নিশ্চিত করে।

তবে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি। ইসরায়েল গাজায় অস্থায়ী আবাসনের প্রবেশের অনুমতি দেওয়া সত্ত্বেও তা কার্যত রোধ করে রেখেছে।

ফলে রাফা সীমান্তে হাজার হাজার ভ্রাম্যমাণ ঘর আটকা পড়েছে, যা ইসরায়েলের অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে।  

জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, শুধু ডিসেম্বর মাসেই গাজায় হাইপোথার্মিয়ায় অন্তত আট নবজাতক মারা গেছে এবং ভয়াবহ শীতকালীন পরিস্থিতিতে ৭৪টি শিশু মারা গেছে।  

ইসরায়েলি হামলায় পশ্চিম তীরের স্বাস্থ্য খাত ক্ষতিগ্রস্ত
অন্যদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) পশ্চিম তীরে চিকিৎসা স্থাপনার ওপর ক্রমবর্ধমান হামলা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।  

ডব্লিউএইচওর প্রতিনিধি ডা. রিক পিপারকর্ন মঙ্গলবার গাজা থেকে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের বলেন, তারা পশ্চিম তীরে সহিংসতার নতুন কেন্দ্রবিন্দুতে চিকিৎসা স্থাপনাগুলোর ওপর হামলার ক্রমাগত বৃদ্ধি প্রত্যক্ষ করছে। ২০২৪ সালের এপ্রিল থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ডব্লিউএইচও পশ্চিম তীরে ৬৯৪টি চিকিৎসা স্থাপনার ওপর হামলার ঘটনা নথিভুক্ত করেছে।

সম্প্রতি পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি সামরিক অভিযান আরো তীব্র হয়েছে, বিশেষ করে উত্তরাঞ্চলে। তুলকারেম শরণার্থীশিবিরে টানা ৩০ দিন ধরে অবরোধ অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েলি বাহিনী, যেখান থেকে বাসিন্দাদের জোরপূর্বক সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।  

তুলকারেম ক্যাম্প সার্ভিসের পপুলার কমিটির প্রধান ফয়সাল সালামা ওয়াফা নিউজকে জানান, ইসরায়েলি বাহিনী অন্তত ৪০টি আবাসিক ভবন গুঁড়িয়ে দিয়েছে, যার মধ্যে ১০০টি অ্যাপার্টমেন্ট ছিল। এ ছাড়া আরো ১০টি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে জেনিন শহরে এক মাসব্যাপী অভিযানের মধ্যে ২০ হাজারেরও বেশি মানুষকে জোরপূর্বক সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। জেনিন পৌরসভা এ সপ্তাহে জানিয়েছে, শহরের শরণার্থীশিবিরে ইসরায়েলি বাহিনী অন্তত ১২০টি বাড়ি সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করেছে।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ