আজ শুক্রবার একটি জাতিগত সশস্ত্র গোষ্ঠীর আক্রমণে মায়ানমারের একদল সেনা থাই সীমান্ত পেরিয়ে পালিয়ে গেছে। ওই সেনাদের ঘাঁটি থেকে উৎখাত করা হলে তারা সীমান্তে পালিয়ে যায় বলে থাইল্যান্ডের সেনাবাহিনী জানিয়েছে। ২০২১ সালের অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সামরিক বাহিনী ক্ষমতা দখলের পর থেকে মায়ানমার গৃহযুদ্ধে বিপর্যস্ত, জান্তা বিভিন্ন সশস্ত্র জাতিগত সংগঠন এবং গণতন্ত্রপন্থী সমর্থকদের সঙ্গে লড়াই করছে।
কারেন ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি (কেএনএলএ)-এর যোদ্ধারা শুক্রবার ভোরে পুলু তু সীমান্ত সামরিক ঘাঁটিতে আক্রমণ করে বলে থাই সেনাবাহিনী জানিয়েছে।
এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘মায়ানমারের সেনাবাহিনী ঘাঁটিটি রক্ষা করেছিল, কিন্তু শেষ পর্যন্ত কেএনএলএ সফলভাবে তার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে। বেশ কয়েকজন মায়ামারের সেনা নিহত হয়েছে এবং কিছু সীমান্ত পেরিয়ে থাইল্যান্ডে পালিয়ে গেছে।’
বিবৃতিতে কতজন মায়ানমারের সেনা সীমান্ত অতিক্রম করে থাইল্যান্ডের তাক প্রদেশে প্রবেশ করেছে, তা নির্দিষ্ট করে বলা হয়নি। তবে বলা হয়েছে, তাদের ‘মানবিক সহায়তা প্রদান করা হয়েছে’।
সংগঠনের রাজনৈতিক শাখা কারেন ন্যাশনাল ইউনিয়নের একজন মুখপাত্রের মতে, কেএনএলএ বাহিনী ভোর ৩টার দিকে (বৃহস্পতিবার) ঘাঁটিটি দখল করে। এতে বলা হয়েছে, মায়ানমারের সেনারা তাদের বন্দুক ফেলে থাইল্যান্ডে পালিয়ে যাওয়ার পর কেএনএলএ যোদ্ধারা ঘাঁটিটি দখল করে নেয়। মায়ানমার জান্তার একজন মুখপাত্রের মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
আরো পড়ুন
গভীর রাতে ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল লাদাখের কারগিল
পুলু তু ঘাঁটিটি সীমান্তবর্তী শহর মায়াওয়াদ্দি থেকে প্রায় ৮০ কিলোমিটার (৫০ মাইল) উত্তরে অবস্থিত।
এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যকেন্দ্র, যা গত বছর জান্তা-বিরোধী যোদ্ধা এবং সেনাবাহিনীর মধ্যে যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত হয়েছিল। এই অঞ্চলটি মায়ানমারে জালিয়াতি-কেন্দ্রের উত্থানের কেন্দ্রস্থলও।
কেএনএলএ কয়েক দশক ধরে মায়ানমারের দক্ষিণ-পূর্ব সীমান্তে বসবাসকারী কারেন জনগণের জন্য বৃহত্তর স্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই করে আসছে। এটি অভ্যুত্থানের আগে থেকেই সক্রিয় কয়েক ডজন জাতিগত সশস্ত্র সংগঠনের মধ্যে একটি, যা জান্তার বিরুদ্ধে সবচেয়ে কার্যকর লড়াইকারী বাহিনী হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে।
যদিও সেনাবাহিনীর যথেষ্ট আঞ্চলিক ক্ষতি হয়েছে, বিশ্লেষকরা বলছেন, তারা মায়ানমারের প্রাণকেন্দ্রে এখনো শক্তিশালী, তাদের বিমানবাহিনী তাদের প্রতিপক্ষের ওপর প্রতিশোধমূলক ক্ষতি করতে সক্ষম।
সূত্র : এএফপি