<p>মুন্সীগঞ্জের সরকারি হরগঙ্গা কলেজের ইংরেজি সম্মান শ্রেণির দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী জারিন তাসনীম খান প্রিয়ন্তীর স্বপ্ন পূরণ হলো না। কানাডা থেকে আসা বোনের সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে আগুনে পুড়ে লাশ হয়ে বাড়ি ফিরলেন তিনি। প্রিয়ন্তী সদর উপজেলার পঞ্চসার ইউনিয়নের বিনোদপুরের অ্যাডভোকেট আওলাদ হোসেন খানের মেয়ে।</p> <p>প্রিয়ন্তীর বড় বোন তাসনোভা খান সুহা গত বুধবার সন্তানসহ কানাডা থেকে ফেরেন। তাই বাবা, মা মেহেরুন্নেসা ও বড় ভাই সাজেদ হোসন পিয়ালের সঙ্গে রাজধানীর ইস্কাটনে বোনের সঙ্গে দেখা করতে যান প্রিয়ন্তী। গত বৃহস্পতিবার রাতে রেস্তোরাঁয় খেতে যান তাঁরা। সুহার মেয়ে ও মামি শাশুড়িও সঙ্গে ছিলেন। রেস্তোরাঁটিতে আগুন লাগার পর অন্য তিনজন বের হতে পারলেও পারেননি প্রিয়ন্তী।</p> <p>প্রিয়ন্তীর ভাই সাজেদ হোসন পিয়াল জানান, আগুন লাগার পর রেস্তোরাঁটি ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়ায় কিছু দেখা যাচ্ছিল না। তাঁর দুই বোন ঘাবড়ে গেলেও ঘটনার পরপরই সাড়ে চার বছরের সায়মাকে নিয়ে দ্রুত বেরিয়ে যান সুহার মামি শাশুড়ি। আর সুহা ছোট বোন প্রিয়ন্তীকে হাতে ধরে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করেন। কিন্তু ভবনের ওপর থেকে সিঁড়ি দিয়ে হুড়োহুড়ি করে লোকজন নামছিল আর ধোঁয়ার মধ্যে এক পর্যায়ে প্রিয়ন্তীর হাতটি ছুটে যায়। হারিয়ে যান অন্ধকারে। পরে তিনি আর বেরোতে পারেনি। প্রিয়ন্তীকে রেখেই সুহা বেরিয়ে আসেন। গতকাল শুক্রবার রাত ৪টার দিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তাঁর মরদেহ শনাক্ত করে স্বজনরা। পরে সকালে মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।</p> <p>গতকাল শুক্রবার জুমার নামাজের পর জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে লাশ দাফন করা হয়। এর আগে দুপুর ১টার দিকে তাঁর মরদেহ মুন্সীগঞ্জ সদরের পঞ্চসার এলাকায় পৌঁছায়। বিশ্ববিদ্যালয়ছাত্রী প্রিয়ন্তীর মৃত্যুতে শোকাচ্ছন্ন পুরো গ্রাম। স্বজনদের আহাজারিতে ভারী হয়ে ওঠে পরিবেশ। প্রিয়ন্তীকে শেষবারের মতো দেখতে বাড়িতে ভিড় জমান সহপাঠীরা। নিহত প্রিয়ন্তী পঞ্চসার ইউনিয়নের বিনোদপুরো এলাকার আওলাদ হোসেনের মেয়ে।</p>