ভারতের নরেন্দ্র মোদি সরকারের তিন ভাষা নীতিকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক বিরোধ ক্রমেই জোরালো হচ্ছে তামিলনাড়ুতে। ওই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী প্রধান এম কে স্ট্যালিন গতকাল বৃহস্পতিবার এই বিষয়ে আবার নিশানা করেছেন কেন্দ্রের ‘হিন্দি চাপিয়ে দেওয়ার নীতি’কে।
নরেন্দ্র মোদি সরকার যে নতুন শিক্ষা নীতি চালু করেছে, তাতে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের তিনটি ভাষা শিখতে হয়। নবম ও দশম শ্রেণিতে দুটি ভাষা শিখলেই চলে।
তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিনের বক্তব্য, তাঁর রাজ্যে দুটি ভাষা শেখার নীতি চালু আছে। তিনি মনে করেন, তিনটি ভাষা শেখাতে বলা হচ্ছে আসলে হিন্দি চাপানোর জন্য।
এ ব্যাপারে তামিলনাড়ুর শিক্ষামন্ত্রী আনবিল মহেশ বলেছেন, তাঁদের কাছে দুটি ভাষা শিক্ষাই যথেষ্ট। দুটি ভাষা পড়েই এই রাজ্যের শিক্ষার্থীরা বিজ্ঞান, কলা, প্রযুক্ত, ইঞ্জিনিয়ারিং, মেডিক্যালসহ সব বিষয়েই ভালো ফল করছে।
তামিলনাড়ু জানিয়ে দিয়েছে, তারা এই তিন ভাষা সূত্র মানবে না। তারা কোনোভাবেই ঘুরপথে হিন্দিকে চাপিয়ে দেওয়ার প্রয়াসকে মেনে নেবে না।
তবে কেন্দ্রীয় সরকারের দাবি, তারা মোটেই ঘুরপথে হিন্দি চাপাচ্ছে না। কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান বলেছেন, কাউকেই ইচ্ছার বিরুদ্ধে হিন্দি নিতে বলা হচ্ছে না।
তৃতীয় ভাষা হিসেবে তারা পছন্দের যে কোনো ভাষা নিতে পারে। তাই তামিলনাড়ু সরকার যে যুক্তি দিচ্ছে তা ধোপে টেকে না। তামিলনাড়ুর নেতাদের যুক্তি, আসলে তৃতীয় ভাষায় যে বিকল্পের কথা বলা হচ্ছে, তা খুবই কম স্কুলে থাকে। কারণ প্রতিটি ভাষার জন্য আলাদা শিক্ষক নিয়োগ করতে হয়। কেউ সেই খরচটা বহন করতে পারে না। তাই শেষ পর্যন্ত হিন্দি নিতে বাধ্য হয় শিক্ষার্থীরা। তা ছাড়া তাদের মতে, দুই ভাষা শেখার নীতি নিয়ে তাদের তো কোনো অসুবিধা হচ্ছে না।
এমনিতে ভারতে শিক্ষা হলো সংবিধানের যুগ্ম তালিকার বিষয়। অর্থাৎ, কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকার দুয়েরই এই বিষয়ে নীতি নেওয়ার অধিকার আছে। কিন্তু কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী জানিয়ে দিয়েছেন, তামিলনাড়ু যদি নতুন শিক্ষানীতি রূপায়ণ না করে, তাহলে কেন্দ্রের কাছ থেকে দুই হাজার চার শ কোটি টাকা পাবে না। স্ট্যালিনের দাবি, কেন্দ্রীয় সরকার এভাবে ব্ল্যাকমেইল করে হিন্দি শেখানো বাধ্যতামূলক করতে চায়। সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা, ডয়চে ভেলে