ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি গতকাল বৃহস্পতিবার বলেছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পাঠানো সাম্প্রতিক চিঠিতে নতুন করে পারমাণবিক আলোচনা শুরুর যে আহবান জানানো হয়েছে তা ‘আসলে হুমকির চেয়েও বেশি’। তেহরান শিগগিরই এর জবাব দেবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
আরাগচি গতকাল ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনকে বলেন, চিঠিতে ইরানকে সুযোগ দেওয়ার কথা বলা হলেও আদতে এটি ‘হুমকির চেয়েও বেশি’। তিনি আরো জানান, ইরান বর্তমানে চিঠির বিষয়বস্তু খতিয়ে দেখছে এবং ‘শিগগিরই’ জবাব দেবে।
এর আগে গত ৭ মার্চ ট্রাম্প দাবি করেন, তিনি ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিকে একটি চিঠি দিয়েছেন। চিঠিতে তিনি ইরানকে আলোচনার আহবান জানিয়েছেন। পাশাপাশি ইরান রাজি না হলে সম্ভাব্য সামরিক পদক্ষেপের হুমকিও দেওয়া হয়েছে। তবে খামেনি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়ে বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশ্য কোনো সমাধান নয়।
তারা আলোচনার নামে এই অঞ্চলে নিজেদের আধিপত্য বিস্তার করতে চায়।’
চলতি বছরের জানুয়ারিতে দ্বিতীয় মেয়াদে হোয়াইট হাউসে ফেরার পর ট্রাম্প তাঁর প্রথম মেয়াদের নীতির প্রতিফলন ঘটিয়ে ইরানের বিরুদ্ধে ‘সর্বোচ্চ চাপ’ প্রয়োগের অংশ হিসেবে ফের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের এই কৌশল ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন থেকে বিরত রাখার লক্ষ্যে নেওয়া হয়েছে, যদিও ইরান বরাবরই দাবি করে আসছে, তারা পারমাণবিক অস্ত্র বানাতে চায় না। দেশটি দীর্ঘদিন ধরে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির ইচ্ছার কথা অস্বীকার করে আসছে।
পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে ৯০ শতাংশ পরিশুদ্ধ ইউরেনিয়ামের প্রয়োজন হয়। তবে তারা ৬০ শতাংশ পর্যন্ত পরিশুদ্ধ ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। এ পরিশুদ্ধতার মান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির কাছাকাছি উল্লেখ করে সতর্ক করেছে আইএইএ।
ইরান ২০১৯ সাল থেকে পারমাণবিক তৎপরতা বাড়িয়ে দিয়েছে। এর এক বছর পর তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ছয় বিশ্বশক্তির সঙ্গে তেহরানের ২০১৫ সালে হওয়া পারমাণবিক চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নেন।
তিনি তখন ইরানের ওপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন। সূত্র : এএফপি