<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী নিয়ে দীর্ঘ জটিলতার অবসান হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের বিচারকদের বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগ তদন্ত ও অপসারণ সংক্রান্ত বিষয়ে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের ক্ষমতা ও পরিধি বহাল রয়েছে। সর্বোচ্চ আদালত সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিল করে দেওয়া রায়ই বহাল রেখেছেন। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সাত বছর আগে এই রায় দিয়েছিলেন আপিল বিভাগ। পরে এই রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) করতে আবেদন করেছিল রাষ্ট্রপক্ষ। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন ছয় বিচারপতির আপিল বেঞ্চ গত রবিবার সেই রিভিউ আবেদন নিষ্পত্তি করে এই রায় দিলেন।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনীর আগে সুপ্রিম কোর্টের কোনো বিচারক বা বিচারকদের বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগ উঠলে তা তদন্ত করা এবং অভিযোগ প্রমাণ সাপেক্ষে ওই বিচারক বা বিচারকদের অপসারণ করার বিষয়ে দায়িত্ব পালন করেছে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল। ১৯৭৭ সালে সামরিক শাসক জিয়াউর রহমানের সময় এই সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল ফিরিয়ে আনা হয়েছিল। পরবর্তীকালে বিচারকদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদের হাতে ফিরিয়ে নিতে ২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর সংসদে সংবিধানের ৯৬ অনুচ্ছেদ সংশোধনের প্রস্তাব পাস করা হয়, যা ষোড়শ সংশোধনী হিসেবে পরিচিত। এর বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের ৯ জন আইনজীবী রিট আবেদন করেন। আবেদনের শুনানি করে হাইকোর্ট ২০১৬ সালের ৫ মে ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করেন। এরপর রাষ্ট্রপক্ষ ওই বছরের ৮ মে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে। ২০১৭ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি আপিল শুনানিতে অ্যামিকাস কিউরি নিয়োগ দেন আপিল বিভাগ। ওই বছরের ৮ মে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে আপিল শুনানি শুরু হয়, চলে ১১ দিন। শুনানির পর রাষ্ট্রপক্ষের আপিল খারিজ করে এবং হাইকোর্টের রায় বহাল রেখে ৩ জুলাই রায় দেন সর্বোচ্চ আদালত। এর মধ্য দিয়ে সংবিধানের ৯৬ অনুচ্ছেদের ছয়টি উপ-অনুচ্ছেদ পুনরুজ্জীবিত করেন সর্বোচ্চ আদালত। ২০১৭ সালের ১ আগস্ট পূর্ণাঙ্গ রায়টি প্রকাশ পেলে ওই বছরের ২৪ ডিসেম্বর রাষ্ট্রপক্ষ রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন করে। এরপর বিভিন্ন সময় এই আবেদন আপিল বিভাগের কার্যতালিকায় এলেও রাষ্ট্রপক্ষ ও রিটকারীপক্ষের আবেদনে শুনানি পিছিয়ে যায়। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে। গত ৮ আগস্ট নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান উপদেষ্টা করে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করা হয়। সরকার গঠনের পর ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করেন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানসহ আপিল বিভাগের পাঁচ বিচারপতি। পরে ১০ আগস্ট দেশের ২৫তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান সৈয়দ রেফাত আহমেদ। এ অবস্থায় ষোড়শ সংশোধনী মামলার রিভিউ আবেদনের শুনানি করতে আপিল বিভাগে আবেদন করে রিটকারীপক্ষ। ষোড়শ সংশোধনী বাতিল করায় সংবিধানের ৯৬ অনুচ্ছেদের ছয়টি ধারা পুনর্বহাল হয়। কাউন্সিলের দায়িত্ব সম্পর্কে ৪ নম্বর ধারায় বলা আছে, বিচারকদের জন্য পালনীয় একটি আচরণবিধি কাউন্সিল নির্ধারণ করে দেবে এবং একজন বিচারকের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেলে সে বিষয়ে তদন্ত করবে। আদালতে রিভিউ আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা (অ্যাটর্নি জেনারেল) মো. আসাদুজ্জামান। রিটকারীর পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। এ ছাড়া সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির পক্ষ থেকে রিভিউ শুনানিতে অংশ নেন সাবেক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস কাজল।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">অতীতে বিচার বিভাগকে নিয়ন্ত্রণ করার অনেক অপচেষ্টা হয়েছে বলে অভিযোগ আছে। আমরা আশা করি, বর্তমান রায়ের মাধ্যমে বিচার বিভাগ আরো স্বাধীন, শক্তিশালী ও গতিশীল হবে।</span></span></span></span></p>