<p style="text-align:justify"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আবার আসিব ফিরে ধানসিঁড়িটির তীরে - এই বাংলায় </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:justify"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">হয়তো মানুষ নয় - হয়তো বা শঙ্খচিল শালিখের বেশে;</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:justify"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কবি জীবনানন্দ দাশ তাঁর </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আবার আসিব ফিরে</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> কবিতায় এভাবেই শঙ্খচিল বা শালিখের বেশে বাংলায় ফিরে আসতে চেয়েছিলেন।    </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:justify"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">রূপসী বাংলার আকাশের নীল ছুঁয়ে ঘুড়ির মতো পাখা মেলে উড়ে বেড়ানো সুপরিচিত পাখি শঙ্খচিল। এদের ধারালো ঠোঁট ও নখ রয়েছে। </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কাইই কাইই</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> শব্দ করে ডাকে বলেই হয়তো এর ইংরেজি নাম </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">Brahminy Kit</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">। পাখিটির বৈজ্ঞানিক নাম </span></span><em><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">Halias tur indus</span></span></em><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:justify"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আমাদের দেশে নদী-নালা, ধানক্ষেত, জলাভূমি, হাওর-বাওর ও বিলে এরা একা বা জোড়ায় অথবা ছোট ছোট দলে ঘুরে বেড়ায়। সুন্দরবনে বড় বড় ঝাঁকে বাস করে। নারী ও পুরুষ পাখি দেখতে একই রকম। এর দৈর্ঘ্য ৪৮ সেমি ও ওজন সর্বোচ্চ ৬০০ গ্রামের মতো হয়ে থাকে। বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত, নেপাল, মালয়েশিয়া, চীন, অস্ট্রেলিয়া, ইন্দোনেশিয়া প্রভৃতি দেশে পাখিটি বেশ সুপরিচিত। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:justify"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">শঙ্খের মতো ধবধবে সাদা এদের মাথা, ঘাড় ও বুক। পেটের তলার পালকে মরিচা ধরা খাড়া ছোট রেখা থাকে। ডানার পালক কালো, লেজ গোলাকার ডগাযুক্ত। এদের লেজ ও ডানার দৈর্ঘ্য সমান। লম্বায় এর ডানা ৩.৬ থেকে ৪.১ ফুট হয়ে থাকে এবং ওজন ৩২০ থেকে ৬৭০ গ্রাম পর্যন্ত হয়। অপ্রাপ্তবয়স্ক পাখির দেহের রং বাদামি। স্ত্রী পাখি পুরুষ পাখির তুলনায় আকারে বড় হয়। পাঁচ থেকে ৩০ মিটার উচ্চতায় বাসা বাঁধে এরা। তবে সহজে বাসা পরিবর্তন করে না। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:justify"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">শঙ্খচিল আকাশে উড়তে উড়তে নিচে থাকা শিকারের দিকে তীক্ষ নজর রাখতে পারে। এদের প্রধান খাদ্য খলিসা, পুঁটি, চেলা, মলা, ঢেলা প্রভৃতি প্রাকৃতিক ছোট মাছ, কাঁকড়া, ব্যাঙ, টিকটিকি, ইঁদুর ও মেটেসাপ। মাঝে মাঝে হাঁস-মুরগির ছোট ছানা তীরবেগে ছোঁ-মেরে তুলে নিয়ে যায়। ডিসেম্বর-এপ্রিল মাস এদের প্রজনন মৌসুম। বড় গাছের ওপর পুরনো কাপড়, ডালপালা, পাতা বিছিয়ে বাসা বানায়। মা পাখি দুটো করে ডিম দেয় এবং নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত তা দেয়। ২৬-২৯ দিনে ডিম ফুটে বাচ্চা বের হয়।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:justify"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বছর পঞ্চাশ আগেও আমাদের দেশে এদের প্রচুর পরিমাণে উড়ে বেড়াতে দেখা যেত। কিন্তু বর্তমানে এদের সংখ্যা ধীরে ধীরে কমছে। এর প্রধান কারণ খাদ্য ও প্রজনন সংকট। আগের মতো নেই প্রাকৃতিক জলাশয়, যেখানে তারা দলগতভাবে মাছ শিকার করে বেঁচে থাকতে পারে। বাসা বাঁধতে পারবে এমন বড় বড় গাছের সংখ্যাও দিনকে দিন কমে যাচ্ছে।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:justify"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">অলকানন্দা রায়</span></span></span></span></p>