<p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">স্বাধীন বাংলা দলের অধিনায়ক জাকারিয়া পিন্টু আর নেই। গতকাল ৮১ বছর বয়সে বার্ধক্যজনিত রোগ কেড়ে নিয়েছে তার প্রাণ। তবে সব মৃত্যুই শেষ নয়। অনন্য এক অধিনায়কের বাহুবন্ধনী পিন্টুর অমরত্বের প্রতীক হয়ে থাকবে।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">জীবদ্দশায় জাকারিয়া পিন্টু নিজেই বলতেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">অধিনায়ক আমি একজনই। স্বাধীন বাংলা দলের অধিনায়ক। পৃথিবীতে আর কারো কি সৌভাগ্য হয়েছে এই বাহুবন্ধনী পরার?</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> হয়নি। দেশের স্বীধনতাযুদ্ধের প্রচারণায় সারা বিশ্বে একটাই দল</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">—</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল। আর সেই দলের অধিনায়ক জাকারিয়া পিন্টু। মুক্ত বাংলাদেশের জন্য জনমত গড়তে ভারতজুড়ে তখন ম্যাচ খেলে বেড়িয়েছেন স্বাধীন বাংলা দলের ফুটবলাররা, তহবিল গড়েছেন স্বাধীন বাংলাদেশের জন্য। ইতিহাসে অমর সেই দলের অধিনায়ক হিসেবে জাকারিয়া পিন্টু থাকবেন অমর হয়ে।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">জাকারিয়া পিন্টু ইতিহাসে সিংহাসন নিয়ে থাকবেন। বয়স স্বাভাবিকভাবেই থাবা বসিয়েছিল তার শরীরে। শেষ কয়েক বছর খুব একটা বাইরে বেরোতেন না। মোহামেডান ক্লাবে শুধু মাঝে মাঝে দেখা দিতেন। গত পরশু হৃদরোগে আক্রান্ত হলে দ্রুত তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে নেওয়া হয় নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে। রবিবার সন্ধ্যা থেকে </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">অধিনায়কের</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> দ্রুত সুস্থতার জন্য নানাজন ফেসুবকে পোস্ট করতে থাকেন। কিন্তু ফিরলেন না পিন্টু। গতকাল সকালে পাড়ি জমান না-ফেরার দেশে।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">স্বাধীন বাংলা দল নিয়ে গর্বভরা কণ্ঠে তার বলা গল্পগুলো হয়তো আর শোনা হবে না। কিন্তু স্বাধীন বাংলা দলের গল্প যতবারই আসবে, সবার আগে আসবে তার নাম। মোহামেডানের অধিনায়ক ছিলেন ১৯৬৮ সালে। একাত্তরে কলকতায় যখন স্বাধীন বাংলা দল গড়া হয়, তখন সিনিয়র খেলোয়াড় হিসেবে তিনিই হন অধিনায়ক। ২৪ জুলাই নদীয়ায় প্রথম ম্যাচ খেলে বাংলাদেশ। সেই ম্যাচের আগে ভারতের পতাকার সঙ্গে প্রথম স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা ওড়ানো হয়। দেশের বাইরে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীন বাংলাদেশের সেই পতাকা উড়িয়েছিলেন অধিনায়ক পিন্টু। কালের কণ্ঠের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে সেই সময়ের অনুভূতির কথা জানিয়েছিলেন তিনি, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">তখনই মনে হয়েছিল, এই এক জীবনে আর কিছু চাওয়া-পাওয়ার নাই। এই সৌভাগ্য কয়জনের হয়! মনে আছে, আমার সোনার বাংলা গাইতে গাইতে দলের কেউই ধরে রাখতে পারেনি চোখের পানি। বন্দুক হাতে লড়াই করতে না পারার দুঃখ, সেটা কেটে যায় এরপর।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">পিন্টু সম্মুখ সমরে ছিলেন শুরুতে। অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম স্বাধীন বাংলা দলের জন্য ফুটবলারদের ডেকে পাঠানোর আগে ২০০ জনের একটি দলের সঙ্গে যুদ্ধের প্রশিক্ষণে ছিলেন পিন্টু। সেখান থেকেই নতুন রণাঙ্গনে ছুটে যান তিনি। সেটাই ছিল তার জগৎ। মোহামেডানের মতো দেশসেরা দলকে আট বছর নেতৃত্ব দিয়ে জায়গা করে নিয়েছিলেন পাকিস্তান জাতীয় দলে। স্বাধীনতার পর নতুন বাংলাদেশ দলের তিনিই ছিলেন প্রথম অধিনায়ক। জাতীয় পুরস্কারের পাশাপাশি স্বাধীনতা পুরস্কারও পেয়েছেন তিনি। স্টপার হিসেবে ছিলেন দুর্ভেদ্য, সেই সঙ্গে নেতৃত্বগুণ। পিন্টু শুধু ফুটবলার হিসেবেই ইতিহাস আলো করে থাকতে পারতেন। স্বাধীন বাংলা দলের নেতৃত্বে পরিয়েছেন আলোকোজ্জ্বল এক মুকুট, যা ঝলমল করবে অনন্তকাল।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এমন মহীরুহের প্রস্থানে শোকের ছায়া গোটা ক্রীড়াঙ্গনে। শোক জানিয়েছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন, মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড, জাতীয় প্রেস ক্লাব, বাংলাদেশ স্পোর্টস প্রেস অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ স্পোর্টস জার্নালিস্টস অ্যাসোসিয়েশন ও বাংলাদেশ স্পোর্টস জার্নালিস্টস কমিউনিটি।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"> </p>