প্রশ্ন : সত্তরে গণপরিষদ নির্বাচন হয়েছে, তারই ধারাবাহিকতায় এবারও জাতীয় জাতীয় নির্বাচনের পাশাপাশি গণপরিষদ নির্বাচনে যেন হয়ে যায়, এ বিষয়টি নিয়ে কী বলবেন? বলা হচ্ছে, সত্তরে গণপরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
উত্তর : বলা হবে কেন, যা হয়েছে তা তো চোখের সামনেই হয়েছে। ওটা ছিল পাকিস্তানি নির্বাচন। পাকিস্তানের ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি নির্বাচন এবং পূর্ব পাকিস্তানের প্রাদেশিক অ্যাসেম্বলি নির্বাচন। তার পরে দেশে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়ে যায় এবং মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে লাখো শহীদের বিনিময়ে আমরা স্বাধীন দেশ পেয়েছি। স্বাধীন দেশে ঘোষণার মাধ্যমে জাতীয় সংসদকে সেই সময় ঘোষণা দেওয়া হয়, এটি হচ্ছে গণপরিষদ। এখানে কোনো গণপরিষদে নির্বাচন হয়নি। এটা ভুল বোঝানো হচ্ছে। কেননা বর্তমানে যে নির্বাচন কমিশন আছে, তাদের যে দায়িত্বগুলো আছে, তাতে গণপরিষদ নির্বাচনের কোনো বিধান নেই।
প্রশ্ন : একসময় আন্দোলনের মিত্র ছিল জামায়াতে ইসলামী। সেই জায়গায় এখন অনেকটা টানাপড়েন দেখা যাচ্ছে। এ বিরোধের কারণে তৃতীয় পক্ষ কোনো সুবিধা নিচ্ছে কি না?
উত্তর : এখানে কোথায় টানাপড়েন হচ্ছে, আমি দেখতে পাচ্ছি না, কেননা জুলাই-আগস্ট আন্দোলন পর্যন্ত আমরা এই ছাত্র-জনতার সঙ্গে একতা ঘোষণা করে স্বৈরাচারী ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন এবং দেশে শান্তি-শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায়, দুর্নীতি ঘুষ অন্যায় অত্যাচার নির্যাতন বন্ধ করার জন্য আন্দোলন করেছি। সে আন্দোলনে আমরা এখনো আছি। একটি সরকারের পতন হয়েছে, আরেকটি নতুন সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এই আন্দোলনে আমার বিশ্বাস, আমরা সবাই একমত আছি। তবে আমরা এটা বলতে চাই না, নতুন দলটি সরকারের প্রতিষ্ঠিত একটি দল।
প্রশ্ন : বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন বিতর্কে জামায়াতের নামে বক্তব্য আসছে, আবার জামায়াতও বিএনপির নামে বক্তব্য দিচ্ছে, এ বিষয়টিকে কিভাবে দেখছেন?
উত্তর : বিএনপির নামে কিছু বলছে, এটা আমরা বলব না। বিএনপি কোনো দলের বিরুদ্ধে বলে না। আমরা আমাদের দলের যে আদর্শ, সে ব্যাপারে কথা বলি। বাংলাদেশে বর্তমান পর্যন্ত যারা আন্দোলনে আছে, তাদের অনেকেই জাতীয়তাবাদী ধারণায় বিশ্বাস করে না। তার মানে এই নয় যে সব দল যারা আন্দোলনে আছে, তাদের বাংলাদেশের জাতীয়তাবাদে বিশ্বাস করতে হবে।
প্রশ্ন : সাম্প্রতিক সময়ে শোনা যাচ্ছে, বিএনপিতে অনুপ্রবেশের ঘটনা ঘটছে। আপনারা কী ভাবছেন?
উত্তর : এটা হতেই পারে। একটি পতিত দল বাংলাদেশে আছে, অনেকে বিদেশে পালিয়ে গেছে। তারা দেশে অশান্তি সৃষ্টি করছে। এটা যেমন জনগণ বুঝছে এবং এই সরকারও তা প্রকাশ করেছে। অশান্তি সৃষ্টির জন্য তারা বিভিন্ন দলে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করবে। যারা নতুন দল করেছে সেই দলে এরই মধ্যে প্রমাণ হয়েছে যে সেখানে অনুপ্রবেশ হয়েছে। আমরা এ ধরনের সংবাদ পেলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিচ্ছি।
প্রশ্ন : ছাত্রদের জন্য বিএনপি কী প্রতিশ্রুতি দেবে?
উত্তর : আমাদের প্রতিশ্রুতি হচ্ছে সবার জন্য। কারণ আমরা গণতন্ত্রে বিশ্বাসী দল। অতএব আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে যারা নির্বাচনে আসবে, আমরা তাদের স্বাগত জানাব। জনগণের ওপর নির্ভর করবে জনগণ কাদের নির্বাচিত করবে। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে যে সরকার প্রতিষ্ঠা হয়েছে, এ সরকার নানাভাবে দুর্বলতা দেখাচ্ছে।
প্রশ্ন : আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কোনো জোট করার পরিকল্পনা আছে কি?
উত্তর : এখন পর্যন্ত এ ধরনের আলোচনা নিজেদের মধ্যে হয়নি। তবে অতীতে যে নির্বাচনগুলো হয়েছে, নির্বাচনের আগে যখন রোডম্যাপ ঘোষণা করা হবে, তার পরে আলাপ-আলোচনা হতেও পারে, না-ও হতে পারে। এ সম্পর্কে এখনই কিছু বলা যাবে না।