লক্ষ্য কমিয়ে সমঝোতার ছক এনবিআরের

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
লক্ষ্য কমিয়ে সমঝোতার ছক এনবিআরের

দেশে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের ফলে রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার পাশাপাশি দেখা দিয়েছে অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতা। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর নানামুখী চ্যালেঞ্জ সামাল দিয়েছে। তবে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) চলমান ৪৭০ কোটি মার্কিন ডলারের ঋণ কর্মসূচির শর্ত পর্যালোচনার অংশ হিসেবে গত শনিবার দেশে এসেছে দাতা সংস্থাটির প্রতিনিধিদল। আজ সোমবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে রাজস্ব খাতের সার্বিক পরিস্থিতি ও আদায়ের চিত্র পর্যবেক্ষণ করবে তারা।

অন্যদিকে শর্ত পূরণ অসম্ভব জেনে লক্ষ্য কমিয়ে সমঝোতার ছক কষছে রাজস্ব বোর্ড। দায়িত্বশীল সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

এনবিআর সূত্র জানায়, আইএমএফের শর্ত পূরণ করতে হলে আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরে বাড়তি প্রায় ৫৭ হাজার কোটি টাকা আদায় করতে হবে। তবে দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে এই বিশাল রাজস্ব আদায় অসম্ভব।

তাঁরা বলছেন, ভ্যাটের ১২ হাজার কোটি টাকা বাড়তি আদায় করতে গিয়ে তীব্র সমালোচনায় পড়েছিল সরকার। পরে বাধ্য হয়েই কমাতে হয়েছে অনেক পণ্যের ভ্যাটের হার। এখন নতুন করে ভ্যাট আরোপ করার তেমন একটা সুযোগ নেই। এ ছাড়া ট্রাম্প প্রশাসনের পাল্টা শুল্কারোপের কারণে বাড়তি শুল্ক আদায় খুবই কঠিন।
এরই মধ্যে রাজস্ব ঘাটতি ছাড়িয়েছে প্রায় ৫৮ হাজার কোটি টাকা।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে এনবিআরের একাধিক কর্মকর্তা কালের কণ্ঠকে বলেন, দেশের অর্থনীতি একটা চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এর প্রভাব পড়েছে রাজস্ব আদায়ে। রাতারাতি পরিস্থিতির উন্নতি ঘটিয়ে আইএমএফের দেওয়া শর্ত পূরণ করা অসম্ভব। আমরা আইএমএফ প্রতিনিধিদের সামনে দেশের বর্তমান বাস্তবতা তুলে ধরব।

এই মুহূর্তে প্রয়োজন বাস্তবভিত্তিক উপায় লক্ষ্য কমানো। এ বিষয়টি তাদের বোঝাব।

আইএমএফের ঋণের দুটি কিস্তির অর্থ একসঙ্গে পেতে বাংলাদেশকে  মোটাদাগে তিনটি বাধা অতিক্রম করতে হবে। এগুলো হলোমুদ্রা বিনিময় হার বাজারভিত্তিক করা, জিডিপির শতকরা ০.৫০ শতাংশ বাড়তি রাজস্ব আদায় এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানির মূল্য বাড়িয়ে ভর্তুকি কমানো। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ধীরে ধীরে এসব শর্ত বাস্তবায়নের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।

জানতে চাইলে সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিংয়ের (সানেম) নির্বাহী পরিচালক ড. সেলিম রায়হান কালের কণ্ঠকে বলেন, আইএমএফ এর আগেও লক্ষ্য কমিয়েছিল। হয়তো এনবিআর যেটা চায় তার পুরোটা না হলেও কিছুটা কমাতে পারে। এটা নির্ভর করছে আইএমএফের মূল্যায়নের ওপর। বাংলাদেশের ওপর তাদের সার্বিক মূল্যায়নের ওপর নির্ভর করবে তারা কতটা নমনীয় হবে।

তিনি বলেন, এই মুহূর্তে অর্থনীতি চ্যালেঞ্জের মধ্যে আছে। রাজস্ব আদায় প্রত্যাশা অনুযায়ী হচ্ছে না। আশাকরি আইএমএফ সেটা বুঝতে পারবে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে এনবিআরের সংস্কার হচ্ছে কি না। এই সংস্কার না হলে ভবিষ্যতে বড় রাজস্ব আদায়ে আমরা ধাক্কা খাব।

আইএমএফ প্রতিনিধিদল গতকাল অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদের সঙ্গে বৈঠক করেছে। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের অর্থ উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি স্থিতিশীল থাকায় আইএমএফ সন্তোষ প্রকাশ করেছে। তাদের মূল চাওয়া কর-জিডিপি অনুপাত বৃদ্ধি, বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভ আরো স্থিতিশীল করা ও বাজেট ঘাটতি কমানো।

এনবিআর সূত্র জানায়, আজ সকাল ১১টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান ও শুল্ক-কর-ভ্যাট শাখার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে প্রতিনিধিদলের বৈঠক হবে। এ ছাড়া চলতি মাসের ৯, ১৫ ও ১৬ তারিখ এনবিআরের সঙ্গে প্রতিনিধিদলের বৈঠক রয়েছে। সব শেষে ১৭ এপ্রিল অর্থ উপদেষ্টা ও এনবিআর চেয়ারম্যানের সঙ্গে বৈঠক করবে তারা।

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৩০ জানুয়ারি আইএমএফের সঙ্গে ঋণ কর্মসূচি শুরু হওয়ার পর তিনটি কিস্তির অর্থ পেয়েছে বাংলাদেশ। ২০২৩ সালের ২ ফেব্রুয়ারি প্রথম কিস্তির ৪৭ কোটি ৬৩ লাখ ডলার, ডিসেম্বরে দ্বিতীয় কিস্তির ৬৮ কোটি ১০ লাখ ডলার এবং ২০২৪ সালের জুনে তৃতীয় কিস্তির ১১৫ কোটি ডলার বাংলাদেশ পায়। মোট তিন কিস্তিতে প্রায় ২৩১ কোটি ডলার পেয়েছে বাংলাদেশ। তবে চতুর্থ কিস্তির ২৩৯ কোটি ডলার অর্থছাড় এখনো বাকি। সরকারের আশা, আগামী জুনে চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তির অর্থ একসঙ্গে পাওয়া যাবে।

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

বৈশ্বিক পণ্যবাজার (ডলারে)

শেয়ার

মুদ্রাবাজার

শেয়ার

টবি লুটকে

    প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, শপিফাই
শেয়ার
টবি লুটকে

এআই দিয়ে সম্ভব নয় এমন কাজের জন্যই শুধু কর্মী নিয়োগ দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন শপিফাইয়ের সিইও টবি লুটকে। নতুন কর্মী চাওয়ার আগে বিভাগগুলোকে হাতে-কলমে দেখাতে হবে যে এআই দিয়ে কোন কাজটি তারা করতে পারছেন না। সম্প্রতি কর্মীদের উদ্দেশে লেখা একএক্স পোস্টে এ কথা জানান। টবি লুটকের মতে, সঠিকভাবে এআই ব্যবহার করাও একটি দক্ষতা।

ব্যাপকভাবে এআই ব্যবহারের মাধ্যমে এই দক্ষতা অর্জন করা যেতে পারে।

 

 

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

দেশে আসছে টেকনো ৪০ সিরিজ

বাণিজ্য ডেস্ক
বাণিজ্য ডেস্ক
শেয়ার
দেশে আসছে টেকনো ৪০ সিরিজ

এবার বাংলাদেশে আসছে টেকনোর নতুন স্মার্টফোন ক্যামন ৪০ ও ক্যামন ৪০ প্রো। এই ডিভাইস দুটিতে রয়েছে শক্তিশালী এআই ফিচার, ওয়াটারপ্রুফ রেটিং, ৫২০০ মিলি অ্যাম্পিয়ার আওয়ার দীর্ঘস্থায়ী ব্যাটারি এবং ১২০ হার্জের ব্রাইট অ্যামোলেড ডিসপ্লে। টেকনো ক্যামন ৪০-এর দাম ২৩ হাজার ৯৯৯ টাকা (ভ্যাট প্রযোজ্য)। আর ক্যামন ৪০ প্রোর দাম ২৭ হাজার ৯৯৯ টাকা (ভ্যাট প্রযোজ্য)।

গ্রাহকরা এই ফোন দুটি প্রি-অর্ডার করতে পারবে আগামী ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত। আর প্রি-অর্ডার করলেই থাকছে বিশেষ উপহার। যারা ক্যামন ৪০ প্রি-অর্ডার করবে, তারা পাবে একটি প্রিমিয়াম ব্যাকপ্যাক। আর ক্যামন ৪০ প্রো প্রি-অর্ডার করলে থাকছে টেকনো ওয়াচ ৩।
টেকনো ক্যামন ৪০ ও ৪০ প্রো—দুটি ফোনেই আছে অত্যাধুনিক ফ্ল্যাশস্ন্যাপ ফিচার, যা চালু করার জন্য রয়েছে আলাদা একটি ‘ওয়ান-ট্যাপ ফ্ল্যাশস্ন্যাপ’ বাটন।

 

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ