মাদারীপুরের কালকিনিতে পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে হাতকড়া পড়া অবস্থায় উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতাসহ দুজন মাদক কারবারিকে ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তাদের সহযোগীদের বিরুদ্ধে। এ সময় ৪ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। আহত পুলিশ সদস্যদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) রাত ৮টার দিকে কালকিনি পৌরসভার মাছবাজার এলাকায় এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ ৩০ জনকে আটক করেছেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে কালকিনির বড়ব্রিজ এলাকা থেকে দুই যুবককে ইয়াবাসহ পুলিশ আটক করে বলে জানিয়েছেন কালকিনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কে এম সোহেল রানা।
আটকরা হলেন- পৌর এলাকার ঠ্যাঙ্গামারা গ্রামের রাশেদুল খান (৩৫) ও আল আমিন সরদার (৩০)। রাশেদুল খান কালকিনি উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি বদিউজ্জামান বাকামিনের ছোট ভাই বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে। শুক্রবার (১১ এপ্রিল) সকাল ১০টা পর্যন্ত পলাতক আসামিদের কোনো সন্ধান পায়নি পুলিশ।
অন্যদিকে হামলায় আহত পুলিশ সদস্যরা হলেন- কালকিনি থানার এসআই আবুল বাশার, এএসএই সোহেল রানা এবং পুলিশ কনস্টেবল কাজী স্বপন ও আতিকুল ইসলাম।
পুলিশ, প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বড়ব্রিজ এলাকায় মাদকবিরোধী অভিযান চালায় পুলিশ। এ সময় ৫টি ইয়াবাসহ আল আমিন ও রাশেদুলকে আটক করা হয়। তাদের হাতকড়া পরিয়ে মাছ বাজারের কাছাকাছি পৌঁছালে পুলিশের ওপর হামলা চালান আটক ব্যক্তিদের স্বজন ও স্থানীয় লোকজন।
এ সময় পুলিশের ওই চার সদস্যকে পিটিয়ে আহত করেন হামলাকারীরা। পরে হাতকড়া পরা অবস্থায় দুই আসামিকে ছিনিয়ে নেওয়া হয়। খবর পেয়ে কালকিনি থানার অতিরিক্ত পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে কালকিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। পরে ওই আসামিসহ হামলাকারীদের ধরতে যৌথ অভিযানে নামে সেনাবাহিনী, কালকিনি থানা ও জেলা পুলিশ।
এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, আটক রাশেদুল কালকিনি উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি বদিউজ্জামান বাকামিনের ছোট ভাই।
ঘটনাস্থলটি তাদের বাড়ির কাছাকাছি এবং পুরো মাছবাজারে তারা এখনো প্রভাব বিস্তার করেন। রাশেদুলের আটকের খবরে সেখানে তার স্বজনরা লোকজন জড়ো করে মব তৈরির চেষ্টা করেন। একপর্যায়ে পুলিশকে ‘ভুয়া, ভুয়া’ বলে তাদের ওপর হামলা চালিয়ে আসামিদের ছিনিয়ে নেওয়া হয়।
কালকিনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কে এম সোহেল রানা বলেন, ‘আমরা সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে স্থানীয় ৩০ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছি। যারা এই হামলার ঘটনায় জড়িত, তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হবে। আর পলাতক ওই দুই আসামিকে ধরতে যৌথ বাহিনীর অভিযান চলছে। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন।’