<p>শয়তান মানুষকে বিপথগামী করতে বিভিন্ন পথ অবলম্বন করে। তার মধ্যে অন্যতম একটি হলো চেহারা বিকৃতি। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ এ ব্যাপারে বলেন, ‘আল্লাহ তাকে (শয়তানকে) অভিসম্পাত করেছেন এবং সে (শয়তান) বলেছে, আমি তোমার দাসদের এক নির্দিষ্ট অংশকে (নিজের দলে) গ্রহণ করবই। এবং তাদেরকে পথভ্রষ্ট করবই, তাদের হৃদয়ে মিথ্যা বাসনার সৃষ্টি করবই, আমি তাদেরকে নিশ্চয় নির্দেশ দেব, ফলে তারা পশুর কর্ণচ্ছেদ করবেই এবং তাদেরকে নিশ্চয় নির্দেশ দেব, ফলে তারা আল্লাহর সৃষ্টি বিকৃত করবেই। আর যে আল্লাহর পরিবর্তে শয়তানকে অভিভাবকরূপে গ্রহণ করবে, নিশ্চয় সে প্রত্যক্ষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’<br /> (সুরা : নিসা, আয়াত : ১১৮-১১৯)<br /> উপরোক্ত আয়াতে শয়তানের প্ররোচনায় পড়ে মানুষের যে কয়টি কাজে লিপ্ত হওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে, তার মধ্যে একটি হলো আল্লাহর সৃষ্টি বিকৃত করা। বিভিন্ন কৃত্রিম উপায়ে চেহারা বা শরীরের সৃষ্টিগত সুন্দর রূপকে পরিবর্তন করে ফেলা, যা মূলত বিভিন্ন পৌত্তলিক শয়তানের পূজা করতে গিয়ে তারা করত। বর্তমান যুগে তা অনেকে ফ্যাশনের উদ্দেশ্যে বা শখের বসে করে।<br /> অনেকের মনে হতে পারে, মানুষ তার শরীরের মালিক, তার শরীর সে যেভাবে ইচ্ছা সেভাবে বিকৃত করতে পারে, সাজাতে পারে, এটা একান্তই তার অধিকার। যুগের সঙ্গে তাল মেলাতে গিয়ে হয়তো আরো অনেকেই বিভিন্ন প্রাণীর অবয়ব গ্রহণের চেষ্টা করতে পারে। কিন্তু ইসলাম বলছে, মানুষ চাইলে তার শরীরে বিকৃতি ঘটাতে পারে না। এটা শয়তানের কাজ। এর জন্য মহান আল্লাহর দরবারে কঠিন শাস্তির সম্মুখিন হতে হবে। তাদের ওপর আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের অভিসম্পাত রয়েছে।<br /> আবদুল্লাহ (রা.) বলেন, আল্লাহ অভিসম্পাত করেছেন ওই সব নারীর প্রতি, যারা অন্যের শরীরে উল্কি অঙ্কন করে, নিজ শরীরে উল্কি অঙ্কন করায়, যারা সৌন্দর্যের জন্য ভ্রু-চুল উপড়িয়ে ফেলে এবং দাঁতের মধ্যে ফাঁক সৃষ্টি করে। সেসব নারী আল্লাহ‌র সৃষ্টিতে বিকৃতি আনয়ন করে। (বুখারি, হাদিস : ৪৮৮৬)<br /> অন্য হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, আবদুল্লাহ (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) যে নারী উল্কি আঁকে, দাঁতে ফাঁক সৃষ্টি করে এবং যে মুখের চুল তুলে ফেলে, আর এভাবে আল্লাহ‌র সৃষ্টিকে পরিবর্তন করে, তাদের ওপর অভিসম্পাত করেছেন। (নাসায়ি, হাদিস : ৫২৫৩)<br /> অতএব, মুমিনের উচিত, এমন কাজ বর্জন করা, যার কারণে মহান আল্লাহর কাছে অভিশপ্ত হতে হয়। মহান আল্লাহ সবাইকে তাওফিক দান করুন।</p>