দেশে কন্যাশিশু যৌন নিপীড়নের হার বাড়ছে। গত মার্চ মাসে ধর্ষণের শিকার ১৬৩ জনের মধ্যে ১২৫ জন কন্যাশিশু। অর্থাৎ এ সময় কন্যাশিশু ধর্ষণের হার ৭৬.৬৯ শতাংশ। বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানা যায়।
দেশে কন্যাশিশু যৌন নিপীড়নের হার বাড়ছে। গত মার্চ মাসে ধর্ষণের শিকার ১৬৩ জনের মধ্যে ১২৫ জন কন্যাশিশু। অর্থাৎ এ সময় কন্যাশিশু ধর্ষণের হার ৭৬.৬৯ শতাংশ। বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানা যায়।
নারী ও শিশু মানবাধিকার সংস্থার ২০২১ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত বার্ষিক প্রতিবেদন বিশ্লেষণে জানা যায়, ধর্ষণের শিকার মোট ভুক্তভোগীর দুই-তৃতীয়াংশ বা ৬৬ শতাংশ কন্যাশিশু, যাদের বয়স ১৮ বছরের নিচে। এই হার প্রতিবছর উদ্বেগজনকভাবে বাড়ছে। বিগত চার বছরে শিশু ধর্ষণের হার ১৩.৪০ শতাংশ বেড়েছে।
অপরাধ বিশ্লেষকদের মতে, শিশুরা অবুঝ ও প্রতিবাদ করতে পারে না বলে তারাই বেশি যৌন নিপীড়নের ঝুঁকিতে।
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের প্রতিবেদন বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২০২৪ সালে ধর্ষণ, দলবদ্ধ ধর্ষণ ও ধর্ষণের পর হত্যাসহ ধর্ষণের কারণে আত্মহত্যা করা ভুক্তভোগীদের ৭১.১২ শতাংশ কন্যাশিশু, যা ২০২৩ সালে ছিল ৬৭.৪৫ শতাংশ, ২০২২ সালে ৬৮ শতাংশ এবং ২০২১ সালে ছিল ৫৭.৭৩ শতাংশ।
নারী ও শিশু অধিকার নিয়ে কাজ করা বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম কালের কণ্ঠকে বলেন, দেশের ১৪টি জাতীয় পত্রিকা থেকে তথ্য নিয়ে প্রতিবেদনগুলো প্রকাশিত হয়। এর মধ্য দিয়ে ধর্ষণের প্রকৃত সংখ্যা পাওয়া যায় না। তবে বর্তমান সমাজে নারী ও শিশুদের প্রতি যে নির্যাতন করা হচ্ছে, এর একটি প্রতিচ্ছবি পাওয়া যায়।
তিনি বলেন, ‘ধর্ষণ শূন্যে নামিয়ে আনতে প্রথমে এই অপরাধকে সামাজিক অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করতে হবে। এটি শুধু একজন নারী বা শিশুর জীবন নয়, বরং একটি সমাজকে ধ্বংস করে দেয়। ফলে শুধু নারী সমাজ নয়, এর বিরুদ্ধে পুরো সমাজকে কঠোর ভূমিকা পালন করতে হবে। আমাদের যে শিশু অধিকার সনদ আছে, এ বিষয়ে সমাজের কোনো ধারণা নেই। অভিভাবকরাও এ বিষয়ে জানেন না, রাষ্ট্র্রও এটা জানানোর চেষ্টা করে না। এতে প্রতিকারও পাওয়া যাচ্ছে না। ধর্ষণ রোধে শুধু আইন করলেই হবে না, দ্রুততম সময়ে বিচার করতে হবে। বিচারে প্রাপ্ত সাজা সমাজে ছড়িয়ে দিতে হবে। এতে একদিকে বিচারের ফল ভুক্তভোগীর জীবনকে পাল্টে দিতে পারে, একই সঙ্গে সমাজে এ ধরনের অপরাধের হার অনেকাংশে কমিয়ে আনতে সাহায্য করবে।
জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক তহবিল ইউনিসেফের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্বে জীবিত প্রতি আটজন নারী ও শিশুর মধ্যে অন্তত একজন ১৮ বছর বয়স হওয়ার আগেই ধর্ষণ বা যৌন নিপীড়নের শিকার হয়েছে।
বাংলাদেশে এই সমীক্ষায় দেখা গেছে, শিশু ধর্ষণের ক্ষেত্রে অপরাধীরা বেশির ভাগ ভুক্তভোগীদের পরিচিত। চলতি বছর জানুয়ারি থেকে ১৬ মার্চ পর্যন্ত সংবাদমাধ্যম ও স্থানীয় মানবাধিকার সংগঠনগুলো শিশু ধর্ষণের প্রায় ৫০টি ঘটনা রেকর্ড করেছে। আর এই প্রবণতা যেন দিন দিন আরো ভয়ংকর রূপ নিচ্ছে। শুধু ১০ মার্চ, এই এক দিনে সাতজন শিশু ধর্ষণ-হত্যার শিকার এবং ছয়জন শিশুর ক্ষেত্রে সহিংসতার ঘটনার বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
গত ২৩ মার্চ ইউনিসেফের প্রতিনিধি রানা ফ্লাওয়ার্স এক বিবৃতিতে বলেন, ‘বাংলাদেশে গত কয়েক সপ্তাহে শিশুদের ওপর, বিশেষ করে কন্যাশিশুদের ওপর যৌন সহিংসতার খবর উদ্বেগজনকভাবে বেড়ে যাওয়ায় আমি গভীরভাবে আতঙ্কিত। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মতো যেসব জায়গায় শিশুদের সুরক্ষিত পরিবেশে বেড়ে ওঠার কথা, সেসব জায়গাসহ অন্যত্র শিশু ধর্ষণ ও শিশুদের ওপর যৌন সহিংসতার ভয়ানক ঘটনাগুলো সম্প্রতি যেভাবে বেড়েছে, তা নিয়ে আমি বিশেষভাবে উদ্বিগ্ন।’
সাম্প্রতিক কয়েকটি ঘটনা : গত বুধবার নেত্রকোনার আটপাড়ায় ১২ বছরের এক শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। জানায়, শিশুটিকে বাসায় একা রেখে বাবা কাজে গেলে প্রতিবেশী যুবক ভয় দেখিয়ে তার ওপর যৌন নির্যাতন চালায়।
গত ৮ এপ্রিল নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে ১২ বছরের আরেক শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। পরিবারের অভিযোগ, মা-বাবা কাজে গেলে পাশের বাড়ির ভাড়াটিয়া শিশুটিকে যৌন নির্যাতন করে।
গত ৭ এপ্রিল ভোলার তজুমদ্দিন উপজেলায় সাড়ে চার বছরের এক শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। পুলিশ জানায়, টাকা ও মুঠোফোনের প্রলোভন দেখিয়ে প্রতিবেশী যুবক শিশুটিকে ডেকে নিয়ে এই নির্যাতন চালায়।
সম্প্রতি সবচেয়ে আলোচিত ঘটনার মধ্যে রয়েছে মাগুরায় আট বছরের শিশু ধর্ষণ। গত ৬ মার্চ বোনের শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে গিয়ে নির্যাতনের শিকার হয় শিশুটি। নির্যাতনের অভিযোগ ওঠে বোনের স্বামী, শ্বশুর ও তাঁর দেবরের বিরুদ্ধে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. রবিউল ইসলাম কালের কণ্ঠকে বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে অনেকে পরিবার বা বাইরে থেকে নির্যাতিত হলেও অভিযোগ করতে চান না। শিশুরা আরো বেশি নীরব থাকে। এ কারণে শিশুরাই বেশি ভুক্তভোগী হয়।
ধর্ষণ রোধে বিভিন্ন সীমাবদ্ধতার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ভুক্তভোগীরা পুলিশের কাছে গিয়ে খুব বেশি সহযোগিতা পায় না। অনেক ঘটনায় পুলিশ মামলা নিতে আগ্রহ দেখায় না। সাধারণ ডায়েরি করার পরামর্শ দেয়। অভিযোগ করার পর দোষীদের সঙ্গে দেনদরবারের মাধ্যমে ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চলে। হয়তো রাজনৈতিক বা অর্থনৈতিক প্রভাব বা সামাজিক শক্তি সেখানে কাজ করে। আবার মামলা নেওয়ার পর আদালতেও বিভিন্ন সমস্যা দেখা যায়। বিচারে দীর্ঘসূত্রতা তৈরি হয়। এসব থেকে পরিত্রাণ পেতে দ্রুততম সময়ে বিচারকাজ শেষ করার মতো পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।
সম্পর্কিত খবর
নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি আলোচিত-সমালোচিত সেই জাকির খান কারামুক্তি লাভ করেছেন। গতকাল রবিবার সকাল ১১টায় নারায়ণগঞ্জ কারাগার থেকে তিনি মুক্তি লাভ করেন।
এর সত্যতা নিশ্চিত করে নারায়ণগঞ্জ জেলা কারাগারের জেল সুপার মোহাম্মদ ফোরকান ওয়াহিদ বলেন, সকালে তিনি নারায়ণগঞ্জ কারাগার থেকে বের হয়েছেন। তিনি মার্চের ১৯ তারিখ কাশিমপুর কারাগার থেকে নারায়ণগঞ্জ কারাগারে অবস্থান করছিলেন।
জাকির খানের আইনজীবী অ্যাডভোকেট রাজিব মন্ডল বলেন, দীর্ঘদিন পর জাকির খান মুক্ত বাতাসে ফিরেছেন। তাঁকে পেয়ে বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উজ্জীবিত হয়ে পড়েছেন। তাঁরা অনেক বেশি আনন্দিত।
মুক্তি পেয়ে জাকির খান বলেন, তারেক রহমানের ৩১ দফা দাবি আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে ওয়াদা করছি, আমরা তা বাস্তবায়ন করবই করব।
এদিকে জাকির খানের কারামুক্তি উপলক্ষে সকাল থেকেই বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার লোকজন নারায়ণগঞ্জ কারাগারের সামনে ভিড় করতে থাকে। সকাল ১০টা নাগাদ বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী জড়ো হন।
নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) সোহেল রানা বলেন, সকাল থেকেই একজনের কারামুক্তিকে ঘিরে সড়কে মানুষের প্রচুর চাপ ছিল। পরে তারা বিশাল র্যালি করে। এর ফলে যানজটের সৃষ্টি হয়। তবে ঘণ্টাখানেক পরই লিংক রোডে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়ে যায়।
আদালত সূত্রে জানা যায়, চারটি হত্যা মামলাসহ মোট ৩৩টি মামলার আসামি ছিলেন জাকির খান। দীর্ঘদিন পলাতক থাকার পর ২০২২ সালের ৩ সেপ্টেম্বর র্যাব-১১-এর একটি অভিযানে ঢাকার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর ধাপে ধাপে বিভিন্ন মামলায় জামিন পান তিনি। চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি সাব্বির আলম হত্যা মামলার রায়ে তিনি এবং মামলার অন্য আসামিরা খালাস পান।
সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে খাসজমি দখল নিয়ে যুবদল নেতার লোকজনের হামলায় এক আওয়ামী লীগ সমর্থক নিহত ও অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। এ সময় হামলাকারীরা অন্তত ১০টি বসতবাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাট করে বলে অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার রুপবাটি ইউনিয়নের বড়ধুনাইল গ্রামে গত শনিবার ও গতকাল রবিবার এসব ঘটনা ঘটে। এদিকে এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ইউনিয়ন বিএনপির দুই নেতা এবং যুবদল ও ছাত্রদলের দুই নেতার পদ স্থগিতের নির্দেশনা দিয়েছে জেলা বিএনপি।
নিহত ব্যক্তির নাম মদিন মোল্লা (৫৫)। তিনি বড়ধুনাইল গ্রামের মৃত সগির মোল্লার ছেলে ও আওয়ামী লীগের জাফর মোল্লা পক্ষের লোক।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বড়ধুনাইল গ্রামে একটি সরকারি খাসজমি আওয়ামী লীগ সমর্থক জাফর মোল্লার দখলে ছিল। গত ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর যুবদল নেতা আব্দুর রাজ্জাক সেখের পক্ষ ওই জমি দখলে নেওয়ার চেষ্টা চালান।
শাহজাদপুর থানার ওসি আসলাম আলী বলেন, ‘আমরা ঘটনাস্থলে পৌঁছার আগেই হামলাকারীরা পালিয়েছে। মদিন মোল্লাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।’
চার নেতার পদ স্থগিত : এসব ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে রুপবাটি ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর হোসেন লিটন ও যুগ্ম সম্পাদক আব্দুল হালিম সেখ, ইউনিয়ন যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক সেখ ও ইউনিয়ন ছাত্রদলের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ইনজাজাম সেখের দলীয় পদ স্থগিতের জন্য জেলা যুবদল ও ছাত্রদলকে নির্দেশনা দিয়েছে জেলা বিএনপি। এ ছাড়া ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। গতকাল দুপুরে জেলা বিএনপির দপ্তর সম্পাদক তানভীর মাহমুদ পলাশ স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
সালিস থেকে বাবা-ছেলেকে কুপিয়ে হত্যা : ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ায় মাদক ব্যবসার অভিযোগে আয়োজিত একটি সালিস থেকে শত শত লোক বাড়িতে হামলা করে বাবা-ছেলেকে কুপিয়ে হত্যা করেছে। এ ছাড়া আরো চার জেলায় চারজন খুন ও দুজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। প্রতিনিধিদের পাঠানো সংবাদ :
ফুলবাড়িয়া (ময়মনসিংহ) : ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ার নাওগাঁও ইউনিয়নের নাওগাঁও দক্ষিণ পাড়া গ্রামে গতকাল রবিবার মাদক ব্যবসা ও চুরির অভিযোগে সালিস বৈঠক বসানো হয়। সেই সালিস থেকে শত শত মানুষ গিয়ে বাড়িঘর ভাঙচুর করে আ. গফুর (৪০) ও তাঁর ছেলে মেহেদী হাসানকে (১৫) কুপিয়ে হত্যা করে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, গতকাল দুপুরে গফুরের বাড়িসংলগ্ন নাওগাঁও হোসেনীয়া স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসার সামনে গ্রামের শত শত মানুষের সালিস বসে। সালিসকালে আ. গফুর ছেলেসহ উপস্থিত না হয়ে নিজ ঘরে রামদা নিয়ে বসে ছিলেন। এ সময় সালিস থেকে লোকজন তাঁর বাড়িতে গিয়ে দা দিয়ে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করে। পরে শত শত মানুষ রাঙ্গামাটিয়া গ্রামে গিয়ে হারুন অর রশিদ নামের একজনের বাসা, দোকানঘর ও একটি মাজার ভাঙচুর করে।
বিকেলে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন ময়মনসিংহ পুলিশ সুপার কাজী আখতারুল আলম। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তার আতঙ্কে গ্রামটি প্রায় পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে।
ফুলবাড়িয়া থানার ওসি মো. রোকনুজ্জামান বলেন, ‘শতাধিক মানুষের উপস্থিতিতে বাবা-ছেলের বিরুদ্ধে গ্রাম্য সালিস বসেছিল। সালিস থেকে গিয়ে তারা হত্যাকাণ্ড ঘটায়।’
নেত্রকোনা (আঞ্চলিক) : নেত্রকোনার মদনে ছাগলে ধান খাওয়া নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষে ইমাম হোসেন (৫৫) নামের এক কৃষক নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় নারীসহ অন্তত ১৮ জন আহত হয়েছে। শনিবার সন্ধ্যায় উপজেলার নায়েকপুর ইউনিয়নের আখাশ্রী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ জানায়, আখাশ্রী গ্রামের কৃষক সোনাতন মিয়ার একটি বোরো ক্ষেতের ধান খাচ্ছিল একই গ্রামের আকবর মিয়ার ছাগল। এ নিয়ে গতকাল বিকেলে দুই পক্ষের মধ্যে তর্ক-বিতর্ক হয়। এ পর্যায়ে তারা দেশি অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়ায়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া : ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মো. জামাল মিয়া (৪৫) নামের এক ব্যক্তিকে হত্যা করা হয়েছে। শনিবার রাতে সদর উপজেলার বুধল ইউনিয়নের খাঁটিহাতা গ্রামে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
নরসিংদী : নরসিংদীর শিবপুরে পারিবারিক কলহের জেরে স্ত্রী খাদিজা আক্তারকে (৩৫) গলা টিপে হত্যার পর স্বামী তারেক মিয়া (৪০) পালিয়ে গেছেন। পুলিশ জানায়, রবিবার সকালে বাড়ির লোকজন ঘরের দরজা ভেঙে খাদিজার মরদেহ দেখতে পায়।
গৌরনদী (বরিশাল) : বরিশালের গৌরনদীর সিংগা গ্রামে জমিজমা নিয়ে বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষের হামলায় দেলোয়ার হোসেন ফকির (৫৫) খুন হয়েছেন।
ধুনট (বগুড়া) : বগুড়ার ধুনট উপজেলায় বাবার ঘর থেকে গতকাল প্রাপ্তি বালা (১১) নামের এক শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। পঞ্চম শ্রেণির এই শিক্ষার্থীর মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জ : নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় ঝুলন্ত অবস্থায় ঝর্না (২৪) নামের এক গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য স্বামী মো. শারফিনকে (৩৪) আটক করেছে পুলিশ।
কুয়েট প্রশাসনের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করেই ক্যাম্পাসে প্রত্যাবর্তন করলেন খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। গতকাল রবিবার দুপুর পৌনে ৩টার দিকে তাঁরা ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেন।
তবে এর আগে কুয়েট শিক্ষকদের একটি প্রতিনিধিদলের পক্ষ থেকে তাঁদের একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হলে ক্যাম্পাসে প্রবেশের অনুরোধ জানালে তাঁরা তা প্রত্যাখ্যান করেন। পরে কুয়েটের মেইন গেটসংলগ্ন পকেট গেট থেকে তাঁরা পরিচয়পত্র প্রদর্শন সাপেক্ষে ক্যাম্পাসে গিয়ে প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নেন।
রাত পৌনে ৯টায় ঘোষণা দেওয়া হয় যতক্ষণ হল খুলে না দেওয়া হবে ততক্ষণ তাঁরা সেখানে অবস্থান করবেন। এ অবস্থায় প্রায় দুই মাসের মাথায় আবারও উত্তপ্ত হয়ে উঠল কুয়েট।
ক্যাম্পাসে প্রবেশের পর প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নেওয়ার পর বিকেল পৌনে ৪টার দিকে কয়েকজন শিক্ষক শিক্ষার্থীদের কাছে গিয়ে জানান, সিন্ডিকেটের সভা ছাড়া একাডেমিক কার্যক্রম ও হল খোলা সম্ভব নয়।
গতকাল রবিবার দুপুর ২টা থেকেই শিক্ষার্থীরা প্রধান ফটকের সামনে জড়ো হতে থাকেন।
উল্লেখ্য, ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবি নিয়ে বিরোধের জের ধরে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েট ক্যাম্পাসে সংঘর্ষ হয়। এতে শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন। এ ঘটনার পর ২৫ ফেব্রুয়ারি পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত একাডেমিক কার্যক্রম ও আবাসিক হলগুলো বন্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। ২৬ ফেব্রুয়ারি সকালের মধ্যে হল ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হলেও বিকেলের মধ্যে শিক্ষার্থীরা হল ত্যাগ করেন।
এদিকে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ঘটনার প্রায় দুই মাস পর মহেশ্বরপাশা উত্তর বণিকপাড়া এলাকার হোচেন আলী নামের এক ব্যক্তি কুয়েটের ২২ শিক্ষার্থীর নাম উল্লেখ করে খুলনা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের আমলি আদালতে এই আবেদন করেন। আদালত খানজাহান আলী থানাকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।
শিক্ষার্থীরা মনে করছেন, এই ঘটনার সঙ্গে কুয়েট প্রশাসনের ইন্ধন থাকতে পারে। অন্যদিকে কুয়েট ছাত্রদের নামে মামলার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছেন খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির নেতারা।