<p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">গুম কমিশন বিভিন্ন বাহিনীর আট </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আয়নাঘর</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> বা গোপন বন্দিশালার খোঁজ পেয়েছে। বন্দিশালাগুলো পরিচালিত হতো গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তর (ডিজিএফআই), র‌্যাব ও পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের মাধ্যমে। যেসব বন্দিকে তুলে আনা হতো তাদের কাউকে কাউকে সাধারণ বন্দিদের সঙ্গেও রাখা হতো। গুম কমিশনের প্রতিবেদনে এসব জানানো হয়েছে।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">গত শনিবার বিকেলে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার কাছে </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আনফোল্ডিং দ্য ট্রুুথ</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> শিরোনামের প্রতিবেদনটি জমা দেয় গুম কমিশন। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">প্রতিবেদনে একটি ঘটনায় বলা হয়েছে, সাদা পোশাকধারী কয়েকজন ব্যক্তি ধানমণ্ডি এলাকা থেকে এক যুবককে তুলে নিয়ে তার ঠোঁট অবশ করা ছাড়াই সেলাই করে দেয়। আরেকটি ঘটনায় বলা হয়েছে, একটি ব্যক্তিকে আটক করে যৌনাঙ্গ ও কানে বৈদ্যুতিক শক দেওয়া হয়। এ ছাড়া ভিকটিম নদীতে ঝাঁপ দিয়ে পালানোর চেষ্টা করলে তাকে উদ্ধার করে সেখানেই হত্যা করা হয়। সেই প্রতিবেদনের কিছু অংশ গণমাধ্যমকে সরবরাহ করেছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং।  </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">প্রতিবেদনে বলা হয়, অনুসন্ধানকালে গোপন বন্দিশালা দেখতে কমিশন সদস্যরা ডিজিএফআই, সিটিটিসি, ডিএমপির ডিবির প্রধান কার্যালয়, চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের ডিবি, র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) ইউনিট ২, ৪, ৭ ও ১১, র‌্যাব ২, সিপিসি ৩, র‌্যাবের সদর দপ্তর, চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার এবং এনএসআইয়ের চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয় পরিদর্শন করেছেন। বন্দিদের যেসব কক্ষে আটকে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করা হতো, নির্যাতনের জন্য যেসব যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা হতো, কমিশনের কর্মকর্তারা সেসব জায়গা পরিদর্শনেও গিয়েছিলেন। তাদের লক্ষ্য ছিল, ঘটনাস্থলে গিয়ে তথ্য-প্রমাণ জোগাড় করা। তারা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী এবং নিরাপত্তা বাহিনীর জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের সঙ্গেও কথা বলেছেন বলে কমিশন সূত্র জানায়। বন্দিশালা থেকে ফেরা ব্যক্তিদের সাক্ষাৎকার থেকে কমিশন বন্দিশালার ওই সব এলাকা চিহ্নিত করতে পেরেছে, যেখানে গুমের শিকার ব্যক্তিদের সঙ্গে সাধারণ বন্দিদেরও রাখা হতো। একই বন্দিশালায় এভাবে অবৈধ ও বৈধ বন্দিদের পালা করে রাখার বিষয়টি কমিশন গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এটা ইচ্ছাকৃতভাবে অবৈধভাবে আটক ব্যক্তিদের আড়াল করার প্রচেষ্টা ছাড়া কিছু নয় এবং এ বিষয়ে পরবর্তীকালে আরো তদন্তের প্রয়োজন।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কাউকে গুম করার ক্ষেত্রে দুই ধরনের পদ্ধতি ব্যবহার করা হতো। অনেক সময় প্রথমে কাউকে আটক করে নির্যাতন করে অন্যদের নাম আদায় করা হতো। এরপর তাদেরও ধরে এনে নির্যাতন করা হতো। পরে এদের সবাইকে গুম করা হতো। এ ছাড়া রাজনৈতিক প্রভাবশালী ব্যক্তি বা নেতার নির্দেশেও গুম ও নির্যাতন করা হতো।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">প্রতিবেদনে বলা হয়, অপহরণের ঘটনা ঘটত সাধারণত রাতের বেলা। ভিকটিমের বাড়ি বা রাস্তা থেকে তাদের জোর করে হায়েস ধরনের বড় গাড়িতে তুলে নেওয়া হতো। গাড়িতে তোলার পরপরই ভিকটিমদের চোখ বাঁধা হতো এবং হাতকড়া পরানো হতো। আটক করার পর ভুক্তভোগীদের সাধারণত গোপন অন্ধকার কক্ষে রাখা হতো এবং সেখানেই তাদের ওপর নানা ধরনের নির্যাতন চালানো হতো বলে অভিযোগ করেছে কমিশন। আটকের সময় কখনো ৪৮ ঘণ্টা থেকে কয়েক সপ্তাহ, এমনকি কয়েক মাস পর্যন্ত হতো বলে কমিশনের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। কয়েকজন ভুক্তভোগীর সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে কমিশন বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে এমন আটটি গোপন কারাগারের সন্ধান পাওয়ার কথা জানিয়েছে, যেগুলো ডিজিএফআই, র‌্যাব, সিটিটিসি পরিচালনা করত।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সাধারণত র‌্যাব ও ডিজিএফআইয়ের বিভিন্ন স্থাপনায় এসব নির্যাতনের সব বন্দোবস্ত ছিল বলে প্রতিবেদনে জানানো হয়। বিশেষ করে সেনাবাহিনীর পরিচালিত বন্দিশালাগুলোয় নির্যাতনের জন্য বিশেষ যন্ত্রপাতি ব্যবহৃত হতো। এর মধ্যে ছিল সাউন্ডপ্রুফ কক্ষ এবং শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের জন্য ডিজাইন করা বিভিন্ন যন্ত্র। প্রতিবেদনে বলা হয়, ফিরে আসা ভুক্তভোগীদের অনেকে জানিয়েছেন, গুম, নির্যাতন ও বন্দি রাখার পর তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে।</span></span></span></span></span></p>