গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ সপ্তাহে ঢাকা আইনজীবী সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটির নির্বাচনের রেওয়াজ রয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম বারখ্যাত এই সমিতির নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সম্ভাব্য পদপ্রার্থীরা নানাভাবে প্রচার শুরু করেছেন। অনেক সম্ভাব্য প্রার্থী ছোট ছোট দলবদ্ধ হয়ে মিছিল করছেন। কেউ কেউ প্রচারপত্র বিতরণ, পোস্টার-ব্যানার টাঙিয়ে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরছেন ও সদস্য সংগ্রহ কার্যক্রম চালাচ্ছেন।
ঢাকা বারের নির্বাচন
সরব তিন পক্ষের পদপ্রার্থীরা মাঠে নেই আওয়ামী লীগ
মাসুদ রানা

এভাবে নির্বাচন ঘিরে প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন বিএনপি, জামায়াত ও গণ অধিকার পরিষদপন্থী আইনজীবীরা। তবে আওয়ামীপন্থী প্রভাবশালী আইনজীবীরা নির্বাচনের মাঠে নেই। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর তাঁরা আত্মগোপনে চলে গেছেন। সেই সুযোগে নির্বাচন ঘিরে আদালত প্রাঙ্গণে সরব হয়েছে আওয়ামীপন্থী ছাড়া আইনজীবীদের তিনটি পক্ষ।
ওই তিন পক্ষের আইনজীবীরা বলছেন, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ঢাকা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনকে বিতর্কিত করা হয়েছে। আওয়ামীপন্থী আইনজীবীরা ভোটে অনিয়ম করাসহ সাধারণ আইনজীবীদের ভোট দিতে বাধা দিয়েছেন।
ঢাকা আইনজীবী সমিতির নির্বাচিতরা আদালতে না আসায় এবং সমিতির সব কার্যক্রম বন্ধ হওয়ার উপক্রম হওয়ায় গত ১৩ আগস্ট অ্যাডহক কমিটি গঠন করেন বিএনপি-জামায়াতপন্থী আইনজীবীরা। বর্তমানে তাঁরা দায়িত্ব পালন করছেন।
ঢাকা বার আইনজীবী অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মো. মুমিনুল ইসলাম মমিন বলেন, ‘আমরা বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলন করেছি।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম ঢাকা বার ইউনিটের সদস্যসচিব অ্যাডভোকেট নিহার হোসেন ফারুক বলেন, ‘নির্বাচনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি। আলোচনাসাপেক্ষে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
ঢাকা আইনজীবী সমিতির অ্যাডহক কমিটির সহসভাপতি ও জামায়াত সমর্থক আইনজীবীদের সংগঠন বাংলাদেশ ল ইয়ার্স কাউন্সিলের নেতা অ্যাডভোকেট আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘নির্বাচনে আমরা প্যানেল বা কোন পদ্ধতিতে অংশ নেব, সে বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি। বিগত সময়ে আমরা নির্বাচিত হলেও আমাদের পক্ষে ফল ঘোষণা করা হয়নি। সুষ্ঠু নির্বাচন চেয়েছি, এখনো একই প্রত্যাশা করছি।’
সমিতির অ্যাডহক কমিটির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আমরা দায়িত্ব গ্রহণ করেছি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার আগ পর্যন্ত অ্যাডহক কমিটি দায়িত্ব পালন করবে এমন রেগুলেশন করা হয়েছে। সেক্ষেত্রে আইনজীবীরা সিদ্ধান্ত নেবেন কবে নির্বাচন হবে। আমরা শিগগিরই বসে সিদ্ধান্ত নেব।’
সমিতির অ্যাডহক কমিটির সভাপতি অ্যাডভোকেট খোরশেদ মিয়া আলম বলেন, নির্বাচন পরিচালনার সব প্রস্তুতি রয়েছে। সার্বিক পরিস্থিতি অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন গঠন করা হবে। এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দোসরদের অংশ নেওয়ার অধিকার নেই। তারা অন্যভাবে নির্বাচনে আসবে কি না অস্পষ্টতা রয়েছে।
সম্পর্কিত খবর

পদযাত্রা


আন্দোলন ছেড়ে বেতন-বোনাসের অপেক্ষায় পোশাক শ্রমিকরা
নিজস্ব প্রতিবেদক

বেতন-বোনাসের দাবিতে রাস্তায় নেমে আসেন পোশাক কারখানার শ্রমিকরা। রাস্তা অবরোধ করে টানা কয়েক দিন আন্দোলনের পর এক ঘোষণায় রাস্তা ছাড়তে বাধ্য হন ঢাকার আশুলিয়ার একটি পোশাক কারখানার আন্দোলনরত কর্মীরা। সেদিন এক সেনা কর্মকর্তা হ্যান্ড মাইকে ঘোষণা দিলেন, ‘আপনাদের জন্য সময় হচ্ছে সাত মিনিট। সাত মিনিটের ভেতরে আপনারা সাইডে গিয়ে দাঁড়াবেন।
সেনা কর্মকর্তা আরো বলেন, ‘সাত মিনিট পরে এখানে যাঁরা থাকবেন, তাঁরা আমার ডিরেক্ট আদেশ ভঙ্গ করছেন এবং জনভোগান্তি ক্রিয়েট করেছেন। এই পানিশেবল ক্রাইমের আন্ডারে আপনারা জেলে যাবেন।
ঈদ বোনাস, ২৫ শতাংশ উৎপাদন বোনাস, নাইট বিল, টিফিন বিলসহ আরো কয়েকটি দাবিতে গাজীপুরের তেলিপাড়া এলাকায় ইস্মোগ সোয়েটার নামের একটি কারখানার শ্রমিকরা গত শুক্রবার ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছিলেন।
শ্রমিকরা বলছেন, ইস্মোগ সোয়েটার কারখানায় এক হাজার ২০০-এরও বেশি শ্রমিক কাজ করছেন। দীর্ঘদিন কাজ করলেও তাঁদের ওভারটাইম বিল, নাইট বিল, মাতৃত্বকালীন ছুটি, বার্ষিক প্রণোদনার টাকা পান না বলে দাবি তাঁদের। এ ছাড়া তাঁদের প্রডাকশন রেট সঠিকভাবে দেওয়া হয় না বলেও অভিযোগ রয়েছে। তাই মোট ১৪ দফা দাবি আদায়ের জন্য আন্দোলন করছিলেন তাঁরা।

তিন কম্পানির শেয়ার কারসাজিতে ৮০ কোটি টাকা জরিমানা
নিজস্ব প্রতিবেদক

শেয়ারবাজারে তিনটি তালিকাভুক্ত কম্পানি সোনালী পেপার অ্যান্ড বোর্ড মিলস, ফাইন ফুডস ও ফরচুন শুজ লিমিটেডের শেয়ারের দাম কারসাজির অভিযোগে ১২ ব্যক্তি ও তিন প্রতিষ্ঠানকে মোট ৭৯ কোটি ৯২ লাখ টাকা জরিমানা করেছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
যাঁদের জরিমানা করা হয়েছে, তাঁরা হলেন মো. আবুল খায়ের ১১ কোটি এক লাখ টাকা, আবুল কালাম মাতবর সাত কোটি ২১ লাখ টাকা, কাজী সাদিয়া হাসান ২৫ কোটি দুই লাখ টাকা, কনিকা আফরোজ ১৯ কোটি এক লাখ টাকা, কাজী ফরিদ হাসান ৩৫ লাখ টাকা, কাজী ফুয়াদ হাসান ৩৫ লাখ টাকা, ডিআইটি কো-অপারেটিভ পাঁচ কোটি টাকা, মোহাম্মদ শামসুল আলম ৫৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা, মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম এক লাখ টাকা, সাজিয়া জেসমিন ৪৯ লাখ টাকা, সুলতানা পারভীন ১১ লাখ টাকা, এএএ অ্যাগ্রো এন্টারপ্রাইজ ৭৫ লাখ টাকা, আরবিম টেকনো ২৩ লাখ টাকা এবং মো. ফরিদ আহমেদ এক লাখ টাকা।
।

অবৈধ সম্পদ অর্জন ও অর্থপাচারের অভিযোগ
জি এম কাদেরের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানে দুদক
- ‘অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলায় দুর্নীতির অভিযোগ’
নিজস্ব প্রতিবেদক

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ (জি এম) কাদেরের বিরুদ্ধে বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদ অর্জন এবং বিদেশে অর্থপাচারের অভিযোগ অনুসন্ধানে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানী ঢাকার সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সংস্থাটির নিয়মিত বৈঠকে এই অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কমিশনের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
অভিযোগে বলা হয়, জি এম কাদের ১৯৯৬ সাল থেকে বিভিন্ন আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
অভিযোগে আরো বলা হয়, জি এম কাদের জালিয়াতির মাধ্যমে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হন এবং দলীয় পদ বাণিজ্য ও মনোনয়ন বাণিজ্যের মাধ্যমে বিপুল অর্থ সংগ্রহ করেন।
২০২৪ সালের দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে দাখিলকৃত হলফনামা অনুযায়ী জি এম কাদেরের নামে নগদ ৪৯ লাখ ৮৮ হাজার টাকা, ব্যাংকে ৩৫ লাখ ৯৫ হাজার টাকা এবং ৮৪ লাখ ৯৮ হাজার টাকা মূল্যের একটি জিপ গাড়ি রয়েছে। তাঁর স্ত্রী শরিফা কাদেরের নামে নগদ ৫৯ লাখ ৫৯ হাজার টাকা, ব্যাংকে ২৮ লাখ ৯ হাজার টাকা এবং ৮০ লাখ টাকা মূল্যের একটি জিপ গাড়ি রয়েছে।
এদিকে জি এম কাদের বলেছেন, ‘অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলা শুরু করায়, আমার মুখ বন্ধ করতেই দুর্নীতি ও হত্যা মামলা করা হয়েছে। এটি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের ক্ষেত্রেও ঘটেছিল।
গতকাল ঢাকার কাকরাইলে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জাতীয় পার্টির ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জি এম কাদের এসব কথা বলেন। জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের জন্মদিন উপলক্ষে এই মাহফিলের আয়োজন করা হয়।
জি এম কাদের বলেন, ‘দেশে নব্য ফ্যাসিবাদের উত্থান হচ্ছে। এ কারণে সম্প্রতি বারবার জাতীয় পার্টির কর্মসূচিতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে একটি মহল। কিন্তু বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার এ ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। বলা হচ্ছে, আমি নাকি ২০১৮ সালের নির্বাচনে মনোনয়ন বাণিজ্য করেছি। এ জন্যই আমার বিরুদ্ধে দুর্নীতির তদন্ত হচ্ছে। অথচ এটা আমার বিরুদ্ধে মনগড়া অভিযোগ, এর সঙ্গে আমার কোনো সংশ্লিষ্ট ছিল না।’
জাতীয় পার্টির ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখার আহ্বায়ক আব্দুস সবুর আসুদের সভাপতিত্বে আরো উপস্থিত ছিলেন দলটির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু, পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য জহিরুল ইসলাম জহির, জসীম উদ্দিন ভূঁইয়া, চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা খলিলুর রহমান খলিল প্রমুখ।