চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের বনাঞ্চলে একে একে স্বজনহারা হয় তিনটি হাতিশাবক। এর মধ্যে কক্সবাজারের টেকনাফ বনাঞ্চলে জন্মের সময় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে মাকে হারায় সদ্যোজাত একটি পুরুষ শাবক (এখনো নাম রাখা হয়নি)। যার বয়স ২১ দিন পেরিয়েছে। আরেক শাবক (যমুনা) একই বনাঞ্চলে জন্মের কয়েক দিনের মাথায় হারায় মাকে।
ডুলাহাজারার বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক
মানবস্নেহে স্বজনহারা ৩ হাতিশাবক
ছোটন কান্তি নাথ, চকরিয়া (কক্সবাজার)

স্বজনহারা সেই তিন হাতিশাবকের ঠাঁই হয় কক্সবাজারের চকরিয়ার ডুলাহাজারাস্থ বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে।
পার্কের বন্য প্রাণী হাসপাতালের কোয়ারিনটাইন শেড ও তত্সংলগ্ন হাতির ডেরায় গিয়ে দেখা গেছে, খুব অল্প বয়স থেকে এসব হাতিশাবককে নিয়মিত পরিচর্যা, ব্যায়াম করানোসহ নানা কায়দায় প্রশিক্ষিত করে তোলার সময় মাহুতের সঙ্গে শাবকগুলোর খুনসুটি বেশ আনন্দ নিয়ে উপভোগ করছে পার্কে আগতরা।
পার্ক কর্তৃপক্ষ বলছে, পার্কের বন্য প্রাণী হাসপাতালের অভ্যন্তরে পর্যটক-দর্শনার্থীদের গমনাগমের সুযোগ নেই। এর পরও পর্যটক-দর্শনার্থীরা যাতে নিরাপদ দূরত্ব থেকে এসব শাবকের তিড়িংবিড়িং নাচসহ মাহুতের সঙ্গে খুনসুটি উপভোগ করতে পারে সে জন্য বিশেষ ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
ঢাকার কেরানীগঞ্জ থেকে আসা পর্যটক দম্পতি হাবিবুর রহমান ও নিলুফা আক্তার কালের কণ্ঠকে জানান, পার্কের বন্য প্রাণী হাসপাতালের কোয়ারিনটাই শেড ও পাদদেশে মাহুতের সঙ্গে হাতিশাবকের খুনসুটি দেখে মনটা আনন্দে উদ্বেলিত হয়ে ওঠে।
পার্কের মাহুত সুশীল চাকমা ও বীরসেন চাকমা বলেন, ‘নিজের শিশুসন্তানের মতো করে সেবা দিয়েই বড় করে তোলা হচ্ছে শাবকগুলোকে।’
পার্কের বন্য প্রাণী হাসপাতালের চিকিৎসক (ভেটেরিনারি সার্জন) হাতেম সাজ্জাদ মো. জুলকার নাইন বলেন, ‘তিন শাবককে নিয়ম করে খাবার (দুধ, কলাগাছ, কলা, শসা, গাজর, মিষ্টিকুমড়া) ও প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা প্রদানের মাধ্যমে বড় করে তোলা হচ্ছে।’
বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কের ভারপ্রাপ্ত তত্ত্বাবধায়ক মো. মাজহারুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে জানান, শাবকগুলোকে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী বয়স অনুপাতে স্বাভাবিক খাবার ও ল্যাকটোজেন-১ দুধ খাওয়ানো হচ্ছে। আবদ্ধ জঙ্গলে রাখার সময় পরিচর্যাকারী মাহুতকে না দেখলে অবিকল মানুষের বাচ্চার মতোই আচরণ করে শাবক যমুনা ও বীর বাহাদুর।
চট্টগ্রাম বন্য প্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ চট্টগ্রামের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা এবং বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কের প্রকল্প পরিচালক আবু নাছের মো. ইয়াছিন নেওয়াজ কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধারের পর একে একে তিনটি হাতিশাবককে প্রেরণ করা হলে তাদের বড় করে তোলা হচ্ছে মায়ের মমতায় যত্ন-আত্তির মাধ্যমে।’
সম্পর্কিত খবর

পদযাত্রা


আন্দোলন ছেড়ে বেতন-বোনাসের অপেক্ষায় পোশাক শ্রমিকরা
নিজস্ব প্রতিবেদক

বেতন-বোনাসের দাবিতে রাস্তায় নেমে আসেন পোশাক কারখানার শ্রমিকরা। রাস্তা অবরোধ করে টানা কয়েক দিন আন্দোলনের পর এক ঘোষণায় রাস্তা ছাড়তে বাধ্য হন ঢাকার আশুলিয়ার একটি পোশাক কারখানার আন্দোলনরত কর্মীরা। সেদিন এক সেনা কর্মকর্তা হ্যান্ড মাইকে ঘোষণা দিলেন, ‘আপনাদের জন্য সময় হচ্ছে সাত মিনিট। সাত মিনিটের ভেতরে আপনারা সাইডে গিয়ে দাঁড়াবেন।
সেনা কর্মকর্তা আরো বলেন, ‘সাত মিনিট পরে এখানে যাঁরা থাকবেন, তাঁরা আমার ডিরেক্ট আদেশ ভঙ্গ করছেন এবং জনভোগান্তি ক্রিয়েট করেছেন। এই পানিশেবল ক্রাইমের আন্ডারে আপনারা জেলে যাবেন।
ঈদ বোনাস, ২৫ শতাংশ উৎপাদন বোনাস, নাইট বিল, টিফিন বিলসহ আরো কয়েকটি দাবিতে গাজীপুরের তেলিপাড়া এলাকায় ইস্মোগ সোয়েটার নামের একটি কারখানার শ্রমিকরা গত শুক্রবার ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছিলেন।
শ্রমিকরা বলছেন, ইস্মোগ সোয়েটার কারখানায় এক হাজার ২০০-এরও বেশি শ্রমিক কাজ করছেন। দীর্ঘদিন কাজ করলেও তাঁদের ওভারটাইম বিল, নাইট বিল, মাতৃত্বকালীন ছুটি, বার্ষিক প্রণোদনার টাকা পান না বলে দাবি তাঁদের। এ ছাড়া তাঁদের প্রডাকশন রেট সঠিকভাবে দেওয়া হয় না বলেও অভিযোগ রয়েছে। তাই মোট ১৪ দফা দাবি আদায়ের জন্য আন্দোলন করছিলেন তাঁরা।

তিন কম্পানির শেয়ার কারসাজিতে ৮০ কোটি টাকা জরিমানা
নিজস্ব প্রতিবেদক

শেয়ারবাজারে তিনটি তালিকাভুক্ত কম্পানি সোনালী পেপার অ্যান্ড বোর্ড মিলস, ফাইন ফুডস ও ফরচুন শুজ লিমিটেডের শেয়ারের দাম কারসাজির অভিযোগে ১২ ব্যক্তি ও তিন প্রতিষ্ঠানকে মোট ৭৯ কোটি ৯২ লাখ টাকা জরিমানা করেছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
যাঁদের জরিমানা করা হয়েছে, তাঁরা হলেন মো. আবুল খায়ের ১১ কোটি এক লাখ টাকা, আবুল কালাম মাতবর সাত কোটি ২১ লাখ টাকা, কাজী সাদিয়া হাসান ২৫ কোটি দুই লাখ টাকা, কনিকা আফরোজ ১৯ কোটি এক লাখ টাকা, কাজী ফরিদ হাসান ৩৫ লাখ টাকা, কাজী ফুয়াদ হাসান ৩৫ লাখ টাকা, ডিআইটি কো-অপারেটিভ পাঁচ কোটি টাকা, মোহাম্মদ শামসুল আলম ৫৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা, মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম এক লাখ টাকা, সাজিয়া জেসমিন ৪৯ লাখ টাকা, সুলতানা পারভীন ১১ লাখ টাকা, এএএ অ্যাগ্রো এন্টারপ্রাইজ ৭৫ লাখ টাকা, আরবিম টেকনো ২৩ লাখ টাকা এবং মো. ফরিদ আহমেদ এক লাখ টাকা।
।

অবৈধ সম্পদ অর্জন ও অর্থপাচারের অভিযোগ
জি এম কাদেরের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানে দুদক
- ‘অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলায় দুর্নীতির অভিযোগ’
নিজস্ব প্রতিবেদক

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ (জি এম) কাদেরের বিরুদ্ধে বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদ অর্জন এবং বিদেশে অর্থপাচারের অভিযোগ অনুসন্ধানে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানী ঢাকার সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সংস্থাটির নিয়মিত বৈঠকে এই অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কমিশনের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
অভিযোগে বলা হয়, জি এম কাদের ১৯৯৬ সাল থেকে বিভিন্ন আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
অভিযোগে আরো বলা হয়, জি এম কাদের জালিয়াতির মাধ্যমে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হন এবং দলীয় পদ বাণিজ্য ও মনোনয়ন বাণিজ্যের মাধ্যমে বিপুল অর্থ সংগ্রহ করেন।
২০২৪ সালের দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে দাখিলকৃত হলফনামা অনুযায়ী জি এম কাদেরের নামে নগদ ৪৯ লাখ ৮৮ হাজার টাকা, ব্যাংকে ৩৫ লাখ ৯৫ হাজার টাকা এবং ৮৪ লাখ ৯৮ হাজার টাকা মূল্যের একটি জিপ গাড়ি রয়েছে। তাঁর স্ত্রী শরিফা কাদেরের নামে নগদ ৫৯ লাখ ৫৯ হাজার টাকা, ব্যাংকে ২৮ লাখ ৯ হাজার টাকা এবং ৮০ লাখ টাকা মূল্যের একটি জিপ গাড়ি রয়েছে।
এদিকে জি এম কাদের বলেছেন, ‘অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলা শুরু করায়, আমার মুখ বন্ধ করতেই দুর্নীতি ও হত্যা মামলা করা হয়েছে। এটি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের ক্ষেত্রেও ঘটেছিল।
গতকাল ঢাকার কাকরাইলে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জাতীয় পার্টির ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জি এম কাদের এসব কথা বলেন। জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের জন্মদিন উপলক্ষে এই মাহফিলের আয়োজন করা হয়।
জি এম কাদের বলেন, ‘দেশে নব্য ফ্যাসিবাদের উত্থান হচ্ছে। এ কারণে সম্প্রতি বারবার জাতীয় পার্টির কর্মসূচিতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে একটি মহল। কিন্তু বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার এ ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। বলা হচ্ছে, আমি নাকি ২০১৮ সালের নির্বাচনে মনোনয়ন বাণিজ্য করেছি। এ জন্যই আমার বিরুদ্ধে দুর্নীতির তদন্ত হচ্ছে। অথচ এটা আমার বিরুদ্ধে মনগড়া অভিযোগ, এর সঙ্গে আমার কোনো সংশ্লিষ্ট ছিল না।’
জাতীয় পার্টির ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখার আহ্বায়ক আব্দুস সবুর আসুদের সভাপতিত্বে আরো উপস্থিত ছিলেন দলটির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু, পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য জহিরুল ইসলাম জহির, জসীম উদ্দিন ভূঁইয়া, চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা খলিলুর রহমান খলিল প্রমুখ।