রাজধানীর মিরপুর-২ নম্বরের শিয়ালবাড়ী বস্তিবাসী ও আশপাশের শ্রমজীবী মানুষের মাঝে ইফতারি বিতরণ করেন বসুন্ধরা শুভসংঘের সদস্যরা। এ ছাড়া রংপুরে বসুন্ধরা শুভসংঘের উদ্যোগে কোরআন শরিফ বিতরণ করা হয়েছে মাদরাসার ছাত্রদের মাঝে। প্রতিনিধিদের পাঠানো সংবাদে বিস্তারিত—
ঢাকা : রাজধানীর মিরপুর-২ নম্বরের শিয়ালবাড়ী বস্তিবাসীর পরিচিত মুখ বসুন্ধরা শুভসংঘের রূপনগর থানার সদস্যরা। গত মঙ্গলবার ইফতারের পূর্বমুহূর্তে শিয়ালবাড়ী বস্তিতে ইফতারি নিয়ে হাজির হয়েছিলেন বসুন্ধরা শুভসংঘের রূপনগর থানার সদস্যরা।
তাঁদের দেখেই ছুটে এসেছে শিশু থেকে বৃদ্ধ। শুভসংঘের বন্ধুরা পরম মমতায় তাদের হাতে তুলে দিয়েছেন ইফতারসামগ্রী ও পানির বোতল। ইফতারসামগ্রীতে ছিল বিরিয়ানি, খেজুর, মাল্টা, জিলাপি ও সালাদ। এ সময় বস্তির আশপাশের সড়কেও শ্রমজীবী মানুষের মাঝে ইফতারি বিতরণ করা হয়।
রুনা নামের এক নারী এসেছেন তাঁর দুই বছরের শিশুকে কোলে নিয়ে। তিনি বসুন্ধরা শুভসংঘের দেওয়া ইফতারি পেয়ে বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ। ভালা খাওন দিয়া ইফতার করনের সামর্থ্য নাই। তয় বসুন্ধরা শুভসংঘের মামারা সব সময় ভালা ভালা জিনিস নিয়া আহে।
আইজকা ইফতারি পাইয়া খুব খুশি লাগতাছে। মজা কইরা ইফতার করবার পারমু।’
রোজা রেখে সারা দিন রিকশা চালিয়েছেন আক্কাস মিয়া। এখন আর যাত্রী টানবেন না। শরীরের ঘাম এখনো শুকায়নি।
ইফতারি জোগাড় করতে যাবেন, এমন সময় বসুন্ধরা শুভসংঘ তাঁর হাতে হঠাৎ ইফতারসামগ্রী ও পানি তুলে দেয়। ইফতারি পেয়ে তিনি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, ‘আইজ আমার টেহা বাঁইচা গেল। খরচের সাথে আর পারা যায় না। আপনেগো খাবার পেট ভইরা খাইতে পারমু। গায়ে শক্তি পামু। ধন্যবাদ আপনেগো।’
ইফতারি বিতরণে উপস্থিত ছিলেন বসুন্ধরা শুভসংঘ রূপনগর থানার সভাপতি শাইমুল আজাদ চয়ন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাদমান তাওছিফ, সমাজকল্যাণ সম্পাদক মাজেদুর রহমান, দপ্তর সম্পাদক আবির হোসেন, সদস্য সায়মন প্রমুখ।
এ সময় রূপনগর থানা শুভসংঘের সভাপতি চয়ন বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য হলো সুবিধাবঞ্চিত মানুষের মুখে হাসি ফোটানো এবং রমজানের আনন্দ তাদের সঙ্গে ভাগ করে নেওয়া। ভবিষ্যতে এমন আরো উদ্যোগ নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।’
রংপুর : রংপুর নগরীর বাহার কাছনা এলাকায় হামিউস সুন্নাহ মাদরাসার শিশুদের হাতে কোরআন শরিফ বিতরণ করেছে বসুন্ধরা শুভসংঘ।
বসুন্ধরা শুভসংঘের রংপুর জেলা শাখার আয়োজনে গতকাল বুধবার দুপুরে ১০ জন শিশুর মধ্যে বিনামূল্যে কোরআন শরিফ বিতরণ করা হয়। কোরআন শরিফ বিতরণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বসুন্ধরা শুভসংঘের রংপুর জেলা শাখার সভাপতি ও রংপুর সরকারি কলেজের দর্শন বিভাগের প্রধান সহকারী অধ্যাপক মো. সাদাকাত হোসেন, হামিউস সুন্নাহ মাদরাসার মুহতামিম মুফতি আরিফ বিল্লাহ, শিক্ষক মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ শাফি, মুহাম্মদ মাসুদুর রহমান, বসুন্ধরা শুভসংঘের রংপুর জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক তানজিম হাসান, বসুন্ধরা শুভসংঘ স্কুলের সমন্বয়ক গোলজার রহমান প্রমুখ। এ সময় নতুন কোরআন শরিফ পেয়ে বুকে জড়িয়ে রাখে শিশুরা। কোরআন শরিফ পেয়ে মুহাম্মদ আবদুল রাহাত বলে, ‘আমি কোরআন শুদ্ধভাবে শিখতে চাই। কোরআন পড়ে আল্লাহর আদেশ-নির্দেশের কথা জানব, অন্যকেও জানাব।’
হামিউস সুন্নাহ মাদরাসার মুহতামিম মুফতি আরিফ বিল্লাহ বলেন, ‘একদিন এই শিশুরাই কোরআনের আলোয় নিজে আলোকিত হবে এবং অন্যকে আলোকিত করবে।’ বসুন্ধরা শুভসংঘের জেলা কমিটির সভাপতি রংপুর সরকারি কলেজের দর্শন বিভাগের প্রধান সহকারী অধ্যাপক সাদাকাত হোসেন বলেন, কোরআন মানবজাতির জন্য পথনির্দেশনা। কোরআন নজিলের মাস পবিত্র মাহে রমজানে মাদরাসার ছাত্রদের মাঝে কোরআন বিতরণের মাধ্যমে আমরা তাদের জ্ঞান ও নৈতিকতায় উদ্বুদ্ধ করতে চাই।’