প্রেমিকার আমন্ত্রণে খুলনায় এসে ত্রিভুজ প্রেমের বলি হয়েছেন ঢাকার শিক্ষার্থী তাজকির আহম্মেদ (২৬)। গত ২১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা থেকে খুলনা এসে নিখোঁজ হন তাজকির। ২৭ ফেব্রুয়ারি ভৈরব নদ থেকে তাঁর বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে পুলিশের তদন্তে বেরিয়ে এসেছে লোমহর্ষক হত্যার ঘটনা।
নিহত তাজকির নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার ঝউডাঙ্গা গ্রামের মুরাদ হোসেনের ছেলে। তিনি ঢাকার প্রাইম ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী ছিলেন। গতকাল সোমবার দুপুরে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের সদর দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য তুলে ধরে হয়।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, খালিশপুরের বিআইডিসি রোডের মো. জলিল হাওলাদারের মেয়ে সুরাইয়া আক্তার সীমার বছর তিনেক আগে পরিবারের অমতে হাউজিং এলাকার মন্টু মিয়ার ছেলে ইসমাইল হোসেন অভির সঙ্গে বিয়ে হয়।
কিন্তু অল্প সময়ে তাঁদের ছাড়াছাড়ি হয়ে য়ায়। এরপর অভি দেশের বাইরে চলে যায়। এ অবস্থায় তাজকির আহম্মেদের সঙ্গে সুরাইয়া আক্তার সীমার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এদিকে ডিভোর্সের সাত-আট মাস পর অভিও দেশে ফিরে এসে সাবেক স্ত্রী সীমার সঙ্গে পুনরায় সম্পর্ক স্থাপন করেন। শুরু হয় ত্রিভুজ প্রেম। দুই প্রেমিককে বুঝতে না দিয়ে সীমা একই সঙ্গে দুটি মোবাইল ফোনসেট ব্যবহার করতেন। পারিবারিকভাবে সীমা ও অভির বিষয়টি সবাই জানলেও তাজকিরের বিষয় কেউ জানত না। কিন্তু হঠাৎ সাবেক স্বামী অভি সীমার সঙ্গে তাজকিরের সম্পর্কের বিষয়টি জেনে যায়। তাই তাজকিরকে শায়েস্তা করার ফন্দি আঁটে অভি। সে সীমার ব্যবহৃত ফোন থেকে হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে তাজকিরকে খুলনা আসার আমন্ত্রণ জানায়। তাজকির ২১ ফেব্রুয়ারি খুলনার গোয়ালখালীতে আসার পর নিখোঁজ হন।
পুলিশ জানায়, তাজকির খুলনা এলে অভি পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী তাঁর বন্ধুদের সহায়তায় তাঁকে অপহরণ করে নিজ বাসায় নিয়ে যান। সেখানে নির্যাতনের এক পর্যায়ে ফাঁস দিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করেন। পরে চার বন্ধু মিলে তাজকিরের মরদেহ ভৈরব নদে ফেলে দেন। গত ২৭ ফেব্রুয়ারি পুলিশ সেটি অজ্ঞাত হিসেবে উদ্ধার করে।