ঈদের বাকি চার-পাঁচ দিন। সড়ক-মহাসড়কে বেড়েছে দূরপাল্লা ও আন্ত জেলার বাস ও কোচ গাড়ির চলাচল। এই অবস্থায় রংপুর অঞ্চলের বিভিন্ন সড়ক-মহাসড়কের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা সারি সারি আলু ভর্তি ট্রাক ও ট্রলি আতঙ্ক বাড়াচ্ছে যাত্রী ও চালকদের মাঝে। চাষিরা বলছেন, হিমাগার মালিকরা দ্রুত আলু নিয়ে নিলেই হয়ে যেত।
কিন্তু দিনের পর দিন রাস্তায় অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে। এতে যানজটের সঙ্গে দুর্ঘটনার শঙ্কাও বাড়ছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, রংপুর-ঢাকা মহাসড়কের পাশে দমদমা, বৈরাগীগঞ্জ, শঠিবাড়ী, দর্শনা রেলগেট, হাজিরহাট, তারাগঞ্জ, সৈয়দপুর, কুড়িগ্রাম-রংপুর মহাসড়কে নব্দিগঞ্জ, মীরবাগ, কাউনিয়া এলাকায় হাজার হাজার আলুর বস্তা নিয়ে সড়কের পাশে দাঁড়িয়ে আছে অসংখ্য পিকআপ, ট্রাক, ভ্যানগাড়ি, ট্রলি ও নসিমন। দিনরাত অপেক্ষা করছে গাড়ি, ক্লান্ত শরীরে গাড়িতেই ঘুমিয়ে পড়েছে অনেকে।
রাস্তায় বসেই ইফতার সাড়তে হচ্ছে তাদের। মাঝেমধ্যে পুলিশ সদস্যরা সেখানে গিয়ে সড়ক ফ্রি করার চেষ্টা করলেও কার্যত তাঁদের কিছুই করার থাকছে না।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, আলু ভর্তি পরিবহনগুলো জমি থেকে আলু তুলে তা হিমাগারে রাখার জন্য এনেছিল। কিন্তু জায়গা সংকুলান, শ্রমিক সংকট, কখনো ধীরগতিতে আনলোড করায় এই পরিবহনগুলোকে সড়ক-মহাসড়কের পাশে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে।
এ কারণে সড়কের পাশে যানজট লেগে থাকার পাশাপাশি বাড়ছে দুর্ঘটনার শঙ্কা।
ট্রাকচালক হাশেম আলী বলেন, ‘হিমাগারের লোকজন দ্রুত আলু হিমাগারে ঢোকালেই এই সমস্যার সমাধান হয়ে যায়।’
আলু ব্যবসায়ী মোত্তালেব বলেন, ‘আজ চার দিন ধরে আলু নিয়ে রাস্তায় আছি। হিমাগার কর্তৃপক্ষ সময়মতো আলু তুলতে পারছে না। আমরা তো আর আলু নিয়ে বাড়ি যেতে পারব না।
এ কারণে এখানে আছি।’
হিমাগারের শ্রমিকরা জানিয়েছেন, অনেকে স্লিপসহ আলু রাখতে আসছেন, আবার অনেকে স্লিপ ছাড়া আসছেন। সবাই একসঙ্গে আলু রাখতে এলে তো একসঙ্গে রাখা যাবে না। সে কারণে একটু দেরি হচ্ছে।
রংপুর হাইওয়ে পুলিশ সুপার তারিকুল ইসলাম বলেন, ‘ঈদে মানুষের যাত্রা নিরাপদ ও নির্বিঘ্ন করতে নানা পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোতে উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়েছে। মহাসড়ক এলাকায় যেকোনো সমস্যা সমাধানে পুলিশ কাজ করছে। এ ছাড়া নির্দিষ্ট এলাকার জেলা পুলিশও কাজ করছে। আমরা সমন্বিতভাবে কাজ করছি। আশা করছি কোনো সমস্যাই থাকবে না।’