মাসখানেকের প্রস্তুতি শেষ। ঈদের নামাজের জন্য প্রস্তুত শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠ। ঐতিহ্যবাহী এ ঈদগাহ মাঠে এবারও অনুষ্ঠিত হবে দেশের সবচেয়ে বড় ঈদের জামাত। ঈদুল ফিতরের ১৯৮তম জামাতকে ঘিরে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।
দেশের বড় ঈদ জামাত শোলাকিয়ায়
শফিক আদনান, কিশোরগঞ্জ

ঈদগাহের নিরাপত্তা এ বছরও রয়েছে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকারে। জেলা পুলিশ মুসল্লিদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে কঠোর নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। ঈদের দিন নিশ্চিদ্র নিরাপত্তাবেষ্টনীতে থাকবে শোলাকিয়া ঈদগাহ দমাঠ ও আশপাশের এলাকা। প্রথমবারের মতো নিরাপত্তাব্যবস্থায় যুক্ত হচ্ছে সেনাবাহিনী।
এদিকে শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠের ইমাম নিয়ে দীর্ঘদিনের বিতর্কের অবসান করেছে পরিচালনা কমিটি। ১৫ বছর আগে রাজনৈতিক কারণে বাদ দেওয়া ইমাম মুফতি আবুল খায়ের মুহাম্মদ ছাইফুল্লাকে পুনর্বহাল করা হয়েছে। তিনি এবার জামাতে ইমামতি করবেন।
এদিকে গতকাল শনিবার সকাল ১১টার দিকে জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খান, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরী ও র্যাব-১৪-এর কমান্ডিং অফিসার নাইমুল হাসান শোলাকিয়া মাঠ পরিদর্শন করেছেন। এ সময় জেলা প্রশাসন ও জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। পরে তারা মাঠে শোলাকিয়ার ঈদ জামাতের প্রস্তুতি নিয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
ঈদগাহ পরিচালনা কমিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দূর-দূরান্তের মুসুল্লিদের যাতায়াতের জন্য শোলাকিয়া স্পেশাল নামে দুটি বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থাও করেছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছে, মুসল্লিদের খাওয়ার পানি সরবরাহ করবে জনস্বাস্থ্য বিভাগ। এ ছাড়া বহুসংখ্যক স্বেচ্ছাসেবক, কয়েকটি মেডিক্যাল টিম ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যদের সেখানে মোতায়েন রাখা হবে।
জেলা পুলিশ জানিয়েছে, ২০১৬ সলের ঈদুল ফিতরে রক্তাক্ত জঙ্গি হামলার পর থেকে শোলাকিয়ার ঈদের জামাতে নিরাপত্তার দিকটি সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হয়ে থাকে। যেন লোকজনের মধ্যে নিরাপত্তা নিয়ে কোনো অস্বস্তি বা ভীতি না থাকে।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরী জানিয়েছেন, নিরাপত্তার দিক থেকে কোনো ঝুঁকি না থাকলেও নিরাপত্তাব্যবস্থাকেই শোলাকিয়ায় প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। শোলাকিয়া মাঠ ও আশপাশের কয়েক কিলোমিটার এলাকা নিরাপত্তা চাদরে ঢেকে ফেলা হবে।
তিনি বলেন, আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে, উৎসবমুখর ও শান্তিপূর্ণ ঈদ জামাত। তা করতে গিয়ে যা করা দরকার সবই কিছুই করা হচ্ছে।
তিনি জানান, এরই মধ্যে মাঠসহ পুরো এলাকা সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। মাঠে বিপুল সংখ্যক পুলিশ, র্যাব. আনসার সদস্যের সমন্বয়ে নিশ্চিদ্র ও কঠোর নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হবে। পাশাপাশি সাদা পোশাকে নজরদারি চালাবে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা। এ ছাড়া শহরসহ মাঠের প্রবেশ পথগুলোতে
থাকছে একাধিক নিরাপত্তা চৌকি। নামাজ শুরুর আগে পুরো মাঠ তল্লাশি করা হবে মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে। থাকবে পাঁচটি আর্চওয়ে। দেহ তল্লাশির পর এগুলোর ভেতর দিয়ে মুসল্লিরা মাঠে ঢুকবে। শোলাকিয়া মাঠ ও শহরের যত অলিগলি আছে, সবখানে বসানো হবে নিরাপত্তা চৌকি। নিরাপত্তার স্বার্থে জায়নামাজ ও মোবাইল ফোন ছাড়া অন্যকিছু নিয়ে মাঠে না নেওয়ার অনুরোধও করেছেন তিনি।
শোলাকিয়া ঈদগাহ কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খান বলেছেন, এবারেই প্রথমবারের মতো শোলাকিয়ার জামাতে নিরাপত্তাব্যবস্থায় যুক্ত হচ্ছে সেনাবাহিনী। তারা স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে মোতায়েন থাকবে। তাছাড়া মোতায়েন থাকবে পাঁচ প্লাটুন বিজিবি। তারা পুলিশসহ অন্যান্য বাহিনীর পাশাপাশি মাঠের নিরাপত্তা দেবে।
তিনি বলেন, সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে এবারও বিপুলসংখ্যক মুসল্লির আগমন ঘটবে শোলাকিয়ায়। উৎসবমুখর ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে।
দীর্ঘ ১৫ বছর পর শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠের ইমাম হিসেবে পুনর্বহাল হয়েছেন মুফতি আবুল খায়ের মুহাম্মদ ছাইফুল্লাহ। ২০০৪ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত শোলাকিয়া ঈদগাহের ইমাম হিসেবে তিনি দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৯ সালের ২ সেপ্টেম্বর জেলা প্রশাসন তাকে ইমাম পদ থেকে সরিয়ে দেয়। তখন তার বদলে ইমাম নিয়োগ দেওয়া হয় বেসরকারি সংস্থা ইসলাহুল মুসলিমিন পরিষদের চেয়ারম্যান মাওলানা ফরীদ উদদীন মাসউদকে। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আবার জেলা প্রশাসন আবুল খায়ের মুহাম্মদ ছাইফুল্লাহকে ইমাম হিসেবে পুনর্বহাল করে। গত ২ মার্চ শোলাকিয়া ঈদগাহ পরিচালনা কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। উল্লেখ্য, তার বাবা মাওলানা আবুল খায়ের মুহাম্মদ নুরুল্লাহ ৩০ বছর শোলাকিয়া ঈদগাহের ইমাম ছিলেন।
এ বিষয়ে আবুল খায়ের মুহাম্মদ ছাইফুল্লাহ বলেন, দীর্ঘ ১৫টি বছর তার প্রতি অন্যায় করা হয়েছে। ইমামতি ফিরে পেয়ে তিনি খুশি হয়েছেন। এর প্রভাব পড়বে এবারের জামাতেও। এবারের জামাতে কম করে হলেও লক্ষাধিক নতুন মুসল্লির আগমন ঘটবে।
কিশোরগঞ্জ শহর থেকে পূর্ব দিকে নরসুন্দা নদীর তীরে অবস্থিত শোলাকিয়া মাঠ। এর আয়তন ৭ একর। প্রায় ২০০ বছর ধরে এই মাঠে বিশাল ঈদের নামাজের জামাত হয়ে আসছে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, শোলাকিয়ার সাহেববাড়ির সুফি সৈয়দ আহম্মদ ১৮২৮ সালে তার নিজ জমিতে ঈদের জামাতের আয়োজন করেন। এতে তিনি ইমামতি করেন। বাংলাদেশ সরকারের জাতীয় তথ্য বাতায়নের তথ্য বলছে, ঈদের প্রথম জামাতে সোয়া লাখ মুসল্লি অংশগ্রহণ করেন। পরে উচ্চারণ বিবর্তনে সোয়া লাখ থেকে সোয়ালাখিয়া এবং সেখান থেকে শোলাকিয়া শব্দটি প্রচলিত হয়েছে। ঈদগাহ মাঠে মোট ২৬৫টি সারি আছে। প্রতি সারিতে ছয় থেকে সাতশো মুসল্লি দাঁড়াতে পারে। সে হিসাবে মাঠের ভেতরেই এক লাখ ৮৫ হাজারের বেশি মানুষ একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারে। বর্তমান শোলাকিয়া নামে পরিচিত এই এলাকাটির প্রাচীন নাম ছিল রাজবাড়ীয়া।
দীর্ঘদিনের রীতি অনুযায়ী শোলাকিয়ার ঈদ জামাত শুরুর পাঁচ মিনিট আগে শটগানে তিনটি, তিন মিনিট আগে দুটি ও এক মিনিটি আগে একটি গুলির আওয়াজ করা হয়। এটি নামাজ শুরু করার সংকেত বলে সংশ্লিষ্টরা বলছেন। কিশোরগঞ্জ জেলা ছাড়াও সারা দেশ থেকে অসংখ্য মানুষ শোলাকিয়ার ঈদের নামাজে অংশ নেন। যা দিন দিন বেড়েই চলছে। এ কারণে মাঠের বাইরে বিস্তৃত এলাকায় এই জামাত ছড়িয়ে পড়ে। ২০১৬ সালের ৭ জুলাই ঈদুল ফিতরের দিন জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটেছিল শোলাকিয়ায়। করোনা মহামারির কারণে ২০২০ ও ২০২১ সালে ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার জামাত অনুষ্ঠিত হয়নি।
সম্পর্কিত খবর

লোহাগাড়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১০ জনের পরিচয় মিলল
কাউছার আলম, পটিয়া (চট্টগ্রাম)

দক্ষিণ চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় যাত্রীবাহী বাস ও মাইক্রোবাসের ত্রিমুখী সংঘর্ষে নিহত ১০ জনের নাম পরিচয় মিলেছে। নিহতদের মধ্যে ৩ নারী, ২ শিশু ও ৫ জন পুরুষ।
দোহাজারী হাইওয়ে পুলিশ নিহতদের পরিচয় নিশ্চিত করে একটি তালিকা প্রকাশ করেছে বুধবার (২ এপ্রিল) রাতে।
হাইওয়ে পুলিশের তালিকা অনুযায়ী নিহতরা হলেন- ঝিনাইদহের শৈলকুপা এলাকার দুলাল বিশ্বাসের ছেলে দিলীপ বিশ্বাস (৪৩), দিলীপ বিশ্বাসের স্ত্রী সাধনা মন্ডল (৩৭), দিলীপের শ্বশুর আশীষ মন্ডল (৫০)।
ঢাকার ঢাকার মিরপুরের আব্দুল জব্বারের ছেলে রফিকুল ইসলাম শামীম (৪৬), রফিকুল ইসলামের স্ত্রী লুৎফুন নাহার সুমি (৩৫), বড় মেয়ে আনিসা (১৬), ছোট মেয়ে লিয়ানা (০৮), মৃত রফিকুল ইসলামের ভাগিনা তানিফা ইয়াসমিন (১৬), মামা মুক্তার হোসেন (৬০) ও মাইক্রোবাস চালক ঢাকার দক্ষিণ খান এলাকার কালা মিয়ার ছেলে মো. ইউসুফ আলী (৫৫)।
এ ঘটনায় আহত চমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরো তিনজনেরও পরিচয় মিলেছে। তারা হলেন- প্রেমা (১৮), পিতা মৃত রফিকুল ইসলাম শামীম, মিরপুর, ঢাকা। আরাধ্যা বিশ্বাস (৭), পিতা মৃত দিলীপ বিশ্বাস, উত্তর বোয়ালিয়া, থানা শৈলকুপা, জেলা ঝিনাইদহ।
লোহাগাড়া থানার ওসি আরিফুর রহমান বলেন, চট্টগ্রাম কক্সবাজার মহাসড়কের লোহাগড়া চুনতি জাঙ্গালিয়া এলাকায় রাস্তার একটি মোড় এবং লবণবাহী একটি গাড়ির কারণে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। বর্তমানে মরদেহগুলো হাইওয়ে থানা হেফাজতে রাখা হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
লোহাগাড়ার জাঙ্গালিয়ায় বারবার ঘটছে দুর্ঘটনা। ঈদের দিন (৩১ মার্চ) দুই বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে পাঁচজন নিহত হন। পরদিন (১ এপ্রিল) একই স্থানে দুটি মাইক্রোবাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে ৯ জন আহত হন। একাধিক দুর্ঘটনার কারণে এ স্থানটি এখন চিহ্নিত ‘রেড জোন’ হিসেবে।
এদিকে, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার সঙ্গে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার সড়কের বিষয়ে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম বীরপ্রতীক বলেছেন, সড়কে কী অসঙ্গতি আছে তা সড়ক বিভাগের কর্মকর্তাদের দেখতে বলেছি।
তিনি বলেন, এখানে যে বেপরোয়া গাড়ি চলছে, এগুলোর স্থান চিহ্নিত করে বিভিন্ন জায়গায় যথাযথ প্রতিবন্ধকতাগুলো দূর করা দরকার। সেটার জন্য সড়ক কর্তৃপক্ষ যেন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে, আমি বলে যাচ্ছি।
বুধবার (২ এপ্রিল) সকালে লোহাগাড়া উপজেলার চুনতি জাঙ্গালিয়া এলাকায় ঘটা দুর্ঘটনাস্থল বিকেলে পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ফরিদা খানমসহ স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।
উপদেষ্টা ফারুকী আজম আরো বলেন, দীর্ঘসময় ধরে বারবার এখানে দুর্ঘটনা হচ্ছে, শুধু এখানে নয়, এই সড়কের অন্য অংশেও। চট্টগ্রাম থেকে আমাদের কক্সবাজার যেতে হলে ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা লাগছে। আর ঢাকার লোকের ফ্লাইটে করে আধা ঘণ্টায় কক্সবাজার পৌঁছাচ্ছে। এটা একটা ডিসক্রিমিনেশনও (বৈষম্য) বটে। এগুলোরও অবসান হওয়া উচিত।
অপরদিকে, দুর্ঘটনায় নিহতদের প্রত্যেককে বিআরটিএর পক্ষ থেকে ৫ লাখ টাকা এবং সরকারিভাবে আরো ৫০ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে বলেও জানান উপদেষ্টা।
এর আগে, বুধবার সকাল ৭টার দিকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের লোহাগাড়া চুনতি বনরেঞ্জ কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে রিলাক্স পরিবহনের যাত্রীবাহী বাসের সঙ্গে মাইক্রোবাসের ভয়াবহ সংঘর্ষে ১০ জনের মৃত্যু হয়।

নান্দাইলে ইটভাটায় জিম্মি থাকা ২০ শ্রমিক উদ্ধার, দুজন আটক
জেলা প্রতিনিধি, ময়মনসিংহ

ময়মনসিংহের নান্দাইলে এসআরবি ব্রিকস ইটভাটায় জিম্মি থাকা ২০ জন শ্রমিককে উদ্ধার করেছে যৌথবাহিনী। বুধবার (২ এপ্রিল) সন্ধ্যায় উপজেলার চন্ডিপাশা ইউনিয়নের বারুইগ্রাম এলাকায় এসআরবি ব্রিকস ইটভাটায় অভিযান চালিয়ে তাদের উদ্ধার করা হয়। এ সময় ইটভাটা থেকে বিল্লাল হোসেন ও জাকারিয়া নামে দুজনকে আটক করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এসআরবি ব্রিকস নামক ইটভাটায় শ্রমিকরা কাজ করে আসছিল।
অভিযোগ পেয়ে বুধবার সন্ধ্যায় যৌথবাহিনী অভিযান চালিয়ে জিম্মি থাকা ২০ শ্রমিককে উদ্ধার ও ইটভাটার মালিক পক্ষের দুজনকে আটক করে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে এসআরবি ব্রিকসের মালিক রুহুল আমিন শ্রমিক জিম্মির বিষয়টি এড়িয়ে যান।

কুমিল্লায় পূর্ব বিরোধে যুবককে পিটিয়ে হত্যা
কুমিল্লা (উত্তর) প্রতিনিধি

কুমিল্লায় পূর্ব বিরোধের জেরে হামলায় গুরুতর আহত ইউনুস মিয়া নামে এক যুবক মারা গেছেন। বুধবার (২ এপ্রিল) কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
নিহত ইউনুস মিয়া কোতয়ালী মডেল থানার সাহেবনগর উত্তরপাড়া গ্রামের সুলতান আহমেদের ছেলে।
পুলিশ জানায়, প্রতিবেশী ছেতু মিয়ার ছেলে মো. ইউনুসের পরিবারের সঙ্গে নিহত যুবক ইউনুসের পরিবারের দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল।
কোতোয়ালি থানার ক্যান্টনমেন্ট পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. ফারুক হোসেন জানান, উভয় পরিবারের দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। এরই জেরে মঙ্গলবার ইউনুস মিয়াকে বেধড়ক লাঠিপেটা করা হয়।

সিলেটে সাবেক মেয়র ও এমপির বাসায় হামলা-ভাঙচুর
নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট

সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর বাসায় হামলা ও ভাঙচুরে ঘটনা ঘটেছে। এ ছাড়া সাবেক এমপি শফিউল আলম চৌধুরী নাদেলের বাসায়ও হামলা হয়েছে।
এর আগে সিলেটে ফের ঝটিকা মিছিল করেছে নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগ। এবার আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য শফিউল আলম চৌধুরী নাদেলের অনুসারীরা এ মিছিল বের করেন।
বুধবার (২ এপ্রিল) নগরের ধোপাদীঘিরপাড় এলাকায় মিছিলটি বের করা হয়। এ ঘটনার ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর পুলিশ ৪ জনকে আটক করেছে।
ছাত্রলীগের মিছিলের ঘটনার পর সন্ধ্যায় শফিউল আলম চৌধুরী ও সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর বাসায় হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে।
জানা গেছে, বুধবার সকালে নগরের ধোপাদীঘিরপাড় এলাকা থেকে ১৫ থেকে ২০ জনের একটি দল ছাত্রলীগের ব্যানারে মিছিল বের করে।
এ ব্যাপারে সিলেটের মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (গণমাধ্যম) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘মিছিলের ব্যাপারে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জেনেছি। তাদের শনাক্ত করার চেষ্টা করছি।’ তিনি বলেন, ইতোমধ্যে ৪ জনকে আটক করা হয়েছে। বাকীদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
বাসায় হামলা, ভাঙচুর : আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এবং মৌলভীবাজার-২ (কুলাউড়া) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল এবং সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর বাসায় হামলা হয়েছে।
বুধবার (২ এপ্রিল) সন্ধ্যায় এই হামলার ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, নগরের হাউজিং এস্টেট এলাকায় শফিউল আলম চৌধুরী নাদেলের বাসায় সন্ধ্যার পর বেশ কয়েকজন মিছিল সহকারে এসে ঢুকে পড়ে। এসময় তারা বাসার সিসি ক্যামেরা, ল্যাপটপ ভাঙচুর করে।
প্রায় একই সময়ে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে নগরের পাঠানটুলা এলাকায় সাবেক মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর বাসায়ও হামলার ঘটনা ঘটে। একইভাবে হামলাকারীরা বাসার আসবাবপত্র ভাঙচুর করে। পৃথক দু’টি হামলার ঘটনায় কেউ আহত হয়নি।
বিমানবন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ আনিসুর রহমান বলেন, ‘বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা শফিউল আলম চৌধুরী নাদেলের বাসায় হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।
জালালাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হারুনুর রশিদ বলেন, আনোয়ারুজ্জামানের বাসায় হামলার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়েছে। শুনেছি বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা এই হামলা চালিয়েছে।