শরীয়তপুর

ককটেল সন্ত্রাসে আতঙ্কিত বিলাসপুর

  • গত ২৫ বছরে প্রাণ হারিয়েছেন সাতজন
  • চার দশকের পুরনো বিরোধ
  • দুটি পক্ষই আওয়ামী লীগ নেতাদের নিয়ন্ত্রণে
শরিফুল আলম ইমন, শরীয়তপুর
শরিফুল আলম ইমন, শরীয়তপুর
শেয়ার
ককটেল সন্ত্রাসে আতঙ্কিত বিলাসপুর
গত শনিবারের ভয়াবহ সংঘর্ষে শতাধিক ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। ছবি : কালের কণ্ঠ

শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার বিলাসপুর ইউনিয়ন যেন ককটেল বিস্ফোরণের জনপদ। বিগত চার দশক ধরে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে প্রায় প্রতিটি সংঘর্ষেই ব্যবহার করা হচ্ছে ককটেল বোমা। গত ২৫ বছরে ককটেলের আঘাতে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত সাতজন, আহত হয়েছেন কয়েক শতাধিক মানুষ। বর্তমানে দুই বিরোধী পক্ষের নেতৃত্বে রয়েছেন বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান কুদ্দুস বেপারী ও পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী জলিল মাদবর।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পদ্মা নদীর তীরে অবস্থিত বিলাসপুর ইউনিয়নটি নদীভাঙন ও চরাঞ্চলের জমি দখল, মাছ ধরা, বালু উত্তোলন ও নৌপথ নিয়ন্ত্রণসহ নানা ইস্যুতে দুই পক্ষ দীর্ঘদিন ধরে সংঘর্ষে লিপ্ত। ১৯৮৪ সালের ইউপি নির্বাচনের পর থেকে এই বিরোধ শুরু। বর্তমানে নেতৃত্বে আছেন জাজিরা উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও বিলাসপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কুদ্দুস বেপারী ও বিলাসপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক সভাপতি ও পরাজিত চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী জলিল। এই দুই পক্ষ রাজনৈতিক সমর্থনও পেয়ে এসেছে।

সাবেক সংসদ সদস্য বি এম মোজাম্মেল হক ও ইকবাল হোসেন অপু নামক দুই আওয়ামী লীগ নেতার আশীর্বাদে উভয় পক্ষই আরো বেপরোয়া হয়ে ওঠে। দুই পক্ষের সন্ত্রাসী বাহিনী গড়ে ওঠে।

গত বছর ২৭ মার্চ ও ২৪ এপ্রিল সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় প্রাণ হারান বিলাসপুরের সজিব মুন্সি ও কিশোর সৈকত সরদার। দুটি মামলায় কুদ্দুস ও জলিল কারাগারে যান।

কুদ্দুস সম্প্রতি জামিনে মুক্তি পেয়ে আবার সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়লে পুলিশের করা একটি মামলায় র‌্যাব তাঁকে গ্রেপ্তার করে। জলিল এখনো কারাগারে। সর্বশেষ গত শনিবার কুদ্দুস ও জলিল সমর্থকদের মধ্যে ফের ভয়াবহ সংঘর্ষে শতাধিক ককটেল বিস্ফোরণ ঘটে। আহত হয় উভয় পক্ষের ১৫ জন। এতে মারুফ মালের একটি হাতের কবজি উড়ে যায় এবং হাসান মুন্সি মারাত্মক আহত হন।

ককটেল বিস্ফোরণে সন্তান হারানো সজিব মুন্সির মা নুরুন্নাহার বেগম কালের কণ্ঠকে বলেন, কুদ্দুস বেপারী ও তাঁর আত্মীয়রা আমাদের বাড়িতে ককটেল ফেলে আমার ছেলেকে মেরে ফেলেছে। কুদ্দুস বেপারীর আরেক নাম বোমা কুদ্দুস। তিনি তাঁর ভাই ও ভাইয়ের ছেলেদের দিয়ে বোমা তৈরি করেন। এই বোমা কুদ্দুসের কারণে আমার ছেলেকে হারিয়ে ছেলের বউ ও শিশুসন্তান নিয়ে কষ্টে আছি।

ককটেল বিস্ফোরণে নিহত সৈকত সরদারের মা শাহানাজ আক্তার বলেন, এলাকায় জলিল, কুদ্দুসের সমর্থকদের মধ্যে মারামারি প্রায়ই লাগে। তাঁদের এই ককটেল বোমার মারামারিতে আমার ছেলে দূর থেকে ভিডিও করছিল, তখন তার ওপর ককটেল পড়লে সে মারা যায়। জানি না, ওদের কারণে আর কত মায়ের বুক খালি হবে।

বিলাসপুরে ওই দুটি পক্ষের মধ্যে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করেই বোমা বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। এতে সাধারণ গ্রামবাসী আতঙ্কে থাকেন। এত বোমার উৎস কোথায়? এ ব্যাপারে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (নড়িয়া সার্কেল) ড. আশিক মাহমুদ কালের কণ্ঠকে বলেন, বিলাসপুরে আধিপত্য বিস্তারের লড়াই করছে দুটি পক্ষ দীর্ঘদিন ধরে। আপনারা জানেন, আমরা ওই এলাকায় টহল বাড়িয়েছি। আমরা রাতে তল্লাশি কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। দুষ্কৃতকারী যারা আছে তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা এবং আদালতে সোপর্দ করার চেষ্টা করছি।

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

শেরপুরে বালুমহাল বিলুপ্ত ঘোষণা

শেরপুর প্রতিনিধি
শেরপুর প্রতিনিধি
শেয়ার
শেরপুরে বালুমহাল বিলুপ্ত ঘোষণা

শেরপুরে পাহাড়ি জনপদ, নদ-নদী, পাহাড় সুরক্ষায় বালুখেকোদের নিবৃত্ত করতে এবার নালিতাবাড়ী ও ঝিনাইগাতী উপজেলার সব বালুমহাল বিলুপ্ত ঘোষণা করেছে জেলা প্রশাসন। গত মঙ্গলবার জেলা প্রশাসক স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়। এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমান বলেন, আমরা সর্বোচ্চ আন্তরিকতার সঙ্গে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে প্রতিনিয়ত অভিযান পরিচালনা করেছি। এরই মধ্যে দুটি উপজেলার নদী-পাহাড় রক্ষার্থে বালু উত্তোলন স্থায়ীভাবে বন্ধ ঘোষণা করে বালুমহাল বিলুপ্ত করা হয়েছে।

এখন থেকে সব বালু উত্তোলন অবৈধ। জেলা প্রশাসন বালু উত্তোলন বন্ধে কঠোর অবস্থানে থাকবে।

 

মন্তব্য

আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সংঘর্ষ, আহত ৫০

সালথা-নগরকান্দা (ফরিদপুর) প্রতিনিধি
সালথা-নগরকান্দা (ফরিদপুর) প্রতিনিধি
শেয়ার
আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সংঘর্ষ, আহত ৫০

ফরিদপুরের সালথায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষে অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছে। তাদের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গত বুধবার সন্ধ্যা ৭ থেকে ১০টা পর্যন্ত উপজেলার গট্টি ইউনিয়নের বালিয়া বাজারে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরে সেনাবাহিনী ও পুলিশের যৌথ চেষ্টায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।

সংঘর্ষ চলাকালে অন্তত ১২ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়। জানা গেছে, আধিপত্য বিস্তার নিয়ে স্থানীয় নুরু মাতবরের সঙ্গে জাহিদ মাতবরের বিরোধ সৃষ্টি হয়। এরই জেরে বুধবার সন্ধ্যায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সালথা থানার ওসি মো. আতাউর রহমান বলেন, খবর পেয়ে সেনাবাহিনী ও পুলিশ যৌথভাবে সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে আনে।
এলাকা শান্ত রাখতে বালিয়া বাজার এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

মন্তব্য

চট্টগ্রামে অর্ধশতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
শেয়ার
চট্টগ্রামে অর্ধশতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ

চট্টগ্রামে রেলওয়ের জায়গা দখল করে গড়ে তোলা অর্ধশতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। এসব স্থাপনা উচ্ছেদ করে প্রায় দেড় একর জায়গা উদ্ধার করেছে পূর্বাঞ্চল রেলওয়ে। গতকাল বৃহস্পতিবার এই অভিযান পরিচালনা করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পূর্বাঞ্চল রেলওয়ের চট্টগ্রাম বিভাগীয় ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তা দীপংকর তঞ্চঙ্গ্যা।

তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, নগরের সিআরবি এলাকার পাশাপাশি নতুন ও পুরনো রেলস্টেশন এলাকায় সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে অবৈধভাবে থাকা টিনশেডের স্থাপনাগুলো উচ্ছেদ করা হয়। এরপর বিকেলে আমরা পাহাড়তলী এলাকায় অভিযান শুরু করেছি। রেলের জায়গায় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে এই অভিযান অব্যাহত থাকবে।

মন্তব্য

কোটি টাকার চোরাইপণ্য জব্দ

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট
নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট
শেয়ার
কোটি টাকার চোরাইপণ্য জব্দ

সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলার বিভিন্ন এলাকায় পৃথক অভিযান চালিয়ে প্রায় এক কোটি টাকা মূল্যের চোরাইপণ্য জব্দ করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের বিজিবি ৪৮ ব্যাটালিয়ন। চোরাইপণ্যের মধ্যে রয়েছে ওষুধ, খাদ্যদ্রব্য, কাপড়, সালফার, মাদকদ্রব্য। গতকাল বৃহস্পতিবার ভোর পর্যন্ত এসব অভিযান চালানো হয়। বিজিবি জানিয়েছে, সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলার সীমান্তবর্তী এলাকার বাংলাবাজার, বিছনাকান্দি, উত্মা লবিয়া, কারাইরাগ, সোনালীচেলা, সংগ্রাম, তামাবিল এবং প্রতাপপুর বিওপি কর্তৃক অভিযান পরিচালনা করে বিপুল পরিমাণ ভারতীয় ওষুধ, চিনি, সাবান, পাথর, মাল্টা, আঙ্গুর, নারকেল, চকোলেটসহ ৯৫ লাখ ৩৩০ টাকার পণ্য জব্দ করা হয়।

 

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ