জাহান শান্ত স্বভাবের মেয়ে। স্বামী শিহাবকে নিয়ে তার সংসার। পোস্ট ট্রমাটিক ডিস-অর্ডারের কারণে প্রায়ই কল্পনা আর বাস্তব গুলিয়ে ফেলে। একদিন একটা দুর্ঘটনা ঘটিয়ে ফেলে জাহান।
সেটার সুরাহা কিভাবে হয়, তা নিয়েই ওয়েব ছবি ‘জাহান’।
গত বছর মার্চে আশফাক নিপুণের ওয়েব সিরিজ ‘সাবরিনা’র নাম ভূমিকায় মেহজাবীন ও অর্ষা বেশ আলোচিত হয়েছিলেন। মুক্তির পর হঠাৎ ডুব দিয়েছিলেন অর্ষা। ডুবেছিলেন আতিক জামানের ‘জাহান’-এ।
এই ছবির শুটিংয়ের আগে প্রায় ছয় মাসের প্রস্তুতি নিয়েছিলেন অভিনেত্রী।
অর্ষা বলেন, ‘চরিত্রটার জন্য ওজন বাড়িয়েছি। যতগুলো সাইকোলজিক্যাল ডিস-অর্ডার আছে, এগুলোর অসুস্থতায় বিভিন্ন ধরনের লেয়ার থাকে। জাহান আসলে কোন জনরার পেশেন্ট।
এর কাছাকাছি যত সিনেমা বা টেক্সট আছে সেগুলো স্টাডি করার চেষ্টা করেছি। স্ক্রিপ্টের অনেক ড্রাফট হয়েছে। ফাইনালি আমরা সবাই মিলে একটা স্ক্রিপ্ট পছন্দ করেছি। মোটা দাগে যেন মনে না হয় জাহান রোগী। খুবই কন্ট্রোলড ওয়েতে চরিত্রটি করার চেষ্টা করেছি। একজন সাইকোলজিক্যাল ডিস-অর্ডার ব্যক্তি পাগলামি করবে, উল্টাপাল্টা কথা বলবে—এটা চাইনি। তার যে অস্বাভাবিকতা, সেটা কী। সেটা জানতে হলে ছবিটা দেখতেই হবে।’
তবে এই ‘চ্যালেঞ্জিং’ ছবিটি ঘিরে অর্ষার কোনো প্রত্যাশা নেই, আছে শুধু আবদার। অর্ষা যা বললেন, ‘কাজটি করতে আমার বেশ কষ্ট হয়েছে। জাহান চরিত্রটির ইনার সাইট ডার্ক, আবার কিছুটা ইনোসেন্ট। জাহান অনেক কিছু ইনোসেন্সের জায়গা থেকে করে বসে, তবে সচেতন অবস্থায় তা ব্যালান্স করতে পারে না। ছবিটি নিয়ে দর্শকের কাছে তেমন প্রত্যাশা নেই আমার, গল্প সহজে সবাই বুঝবে কি না সেটাও একটা ব্যাপার। যে ওয়েতে গল্পটা উপস্থাপন করা হয়েছে সেটা ডিফারেন্ট। আমি চাই সবাই যেন কনটেন্টটা দেখে তারপর প্রতিক্রিয়া জানায়।’
‘জাহান’-এ অর্ষার স্বামীর চরিত্রে অভিনয় করেছেন মোস্তাফিজ নূর ইমরান। এর আগে ‘সাহস’ ছবিতেও স্বামী-স্ত্রীর চরিত্রে অভিনয় করেছেন দুজন। এবার কাজ করে কেমন লাগল?
অর্ষা বলেন, ‘পেশাদারির জায়গায় সহকর্মীদের আমরা সব সময় কমফোর্ট জোনে রাখার চেষ্টা করি। চ্যালেঞ্জিং ক্যারেক্টার এলে সেটাকে কিভাবে পোট্রে করব সেটা নিয়ে সহকর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করতে হয়। উনি সেই সময়টা দেওয়ার চেষ্টা করেন। উনি তো মেথড অ্যাক্টিংয়ের প্র্যাকটিস করেন। সব সময় চরিত্রের মধ্যে থাকার চেষ্টা করেন। আমিও চেষ্টা করি শুটিংয়ের সময় চরিত্রের মধ্যে থাকতে। এমন ভালো বন্ডিং আছে বলেই আমরা উত্তর মেরু, দক্ষিণ মেরু দুই ধরনের দুই কাজ করতে পারলাম।’
জাহান-এর শুটিংয়ের পর অভিনয় থেকে কিছুটা ‘বিরতি’ নিয়েছিলেন অর্ষা। কারণ বললেন, ‘আমার বিশ্রাম নিতে হয়েছে। শুটিং করার পর ভয়ংকর মানসিক প্রেসার তৈরি হয়েছিল। এত ডার্ক শেড চরিত্রটাতে, সেটার সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত অবস্থাও কখনো ম্যাচ হয়, কখনো হয় না। বিরতি নিয়ে চরিত্রটা থেকে বের হতে হয়েছে আমাকে।’
‘জাহান’-এর পর করেছেন দুটি কাজ। একটি পঙ্কজ চৌধুরীর ‘বনফুল’। আগামীকাল মাছরাঙা টেলিভিশনে প্রচারিত হবে নাটকটি। এখন অর্ষা ব্যস্ত রয়েছেন আবু হায়াত মাহমুদের পরিচালনায় ওটিটি প্ল্যাটফরম দীপ্ত প্লের সিরিজ ‘হৃদমাঝারে’ নিয়ে।