৭৪৫ কর্মী নিয়োগ দেবে ডাক বিভাগ

শেয়ার
৭৪৫ কর্মী নিয়োগ দেবে ডাক বিভাগ
ডাক ভবন ছবি : সংগৃহীত

সম্প্রতি দুটি পৃথক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ডাক বিভাগ (পূর্বাঞ্চল)। বিভিন্ন পদে নেওয়া হবে ৭৪৫ জন কর্মী। এর মধ্যে একটি বিজ্ঞপ্তিতে ৫২৪ এবং অন্যটিতে আছে ২২১ পদ। আবেদনের শেষ তারিখ ৩১ জানুয়ারি ২০২৫।

আবেদন করতে পারবেন শুধু চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের প্রার্থীরা। নিয়োগ পরীক্ষা পদ্ধতি, পরীক্ষার প্রস্তুতি, পদভিত্তিক যোগ্যতা নিয়ে লিখেছেন সাজিদ মাহমুদ

যেমন হবে নিয়োগ পরীক্ষা

লিখিত, মৌখিক এবং প্রযোজ্য ক্ষেত্রে ব্যাবহারিক পরীক্ষার মাধ্যমে প্রার্থী বাছাই করা হবে। যোগ্য প্রার্থীদের প্রথমেই লিখিত পরীক্ষা নেওয়া হবে। লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেই পদভিত্তিক ব্যাবহারিক পরীক্ষার জন্য ডাকা হবে।

ব্যাবহারিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেই জানানো হবে মৌখিক বা ভাইভা পরীক্ষার তারিখ। ব্যাবহারিক পরীক্ষা ছাড়া অন্যান্য পদের ক্ষেত্রে লিখিত ও মৌখিক—দুই পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োগ দেওয়া হবে। ডাক বিভাগ পূর্বাঞ্চল ও পশ্চিমাঞ্চলের বিগত বেশ কয়েক বছরের নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র নিরীক্ষা করে দেখা যায়, লিখিত পরীক্ষায় এমসিকিউ পদ্ধতিতে প্রশ্ন করা হয়। তবে নিয়োগ কর্তৃপক্ষ এবারের প্রশ্নপত্র এমসিকিউ না সংক্ষিপ্ত রচনামূলক পদ্ধতিতে নেবে, তা পরে নির্ধারণ করা হবে।
 

 

বিগত পরীক্ষার আলোকে প্রস্তুতি

ডাক বিভাগের কর্মরত কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, লিখিত পরীক্ষায় বাংলা, ইংরেজি, সাধারণ গণিত ও সাধারণ জ্ঞান—এই চার বিষয়ের ওপর প্রশ্ন করা হয়। স্নাতক ও এইচএসসি পাস চাওয়া পদগুলোর ক্ষেত্রে একাদশ-দ্বাদশ ও নবম-দশম শ্রেণির পাঠ্যবই থেকেই প্রশ্ন আসে। এসএসসি ও অষ্টম পাস চাওয়া পদগুলোর পরীক্ষায় অষ্টম, নবম ও দশম শ্রেণির পাঠ্যবই থেকে প্রশ্ন করা হয়। বাংলা অংশে ব্যাকরণ থেকে বেশি প্রশ্ন করা হয়। গদ্য ও পদ্য থেকে প্রশ্ন কম থাকে।

প্রস্তুতিতে ব্যাকরণ অংশেই বেশি জোর দিতে হবে। ইংরেজিতেও গ্রামার অংশ থেকে বেশি প্রশ্ন করা হয়। তাই ইংরেজি বিষয়েও গ্রামার অংশের গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়গুলোতে ভালো প্রস্তুতি নিতে হবে। গণিত বিষয়ে পাটিগণিত, বীজগণিত—উভয় অংশ থেকেই প্রশ্ন বেশি আসে। জ্যামিতি থেকেও প্রশ্ন আসে। পাটিগণিতে জোর দিতে হবে ল.সা.গু., গ.সা.গু., শতাংশ, গড় নির্ণয়, শতকরা, সুদকষা, অনুপাত ও সমানুপাত অধ্যায়ে। বীজগণিতে উৎপাদক, মান নির্ণয় অধ্যায়টা আয়ত্তে রাখতে হবে। সাম্প্রতিক সময়ের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়সহ সমসাময়িক বিষয়, বিজ্ঞান, কম্পিউটার, ইতিহাস, সংস্কৃতি, বাংলাদেশ প্রসঙ্গ ও বিশ্ব—এসব বিষয়ের ওপর প্রস্তুতি নিতে হবে। ভালো প্রস্তুতির জন্য পদভিত্তিক বিগত নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র সংগ্রহ করতে পারলে ভালো ধারণা পাওয়া যাবে। এ ছাড়া বাজারে বিভিন্ন প্রকাশনীর তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির নিয়োগ পরীক্ষার প্রস্তুতি সহায়ক বই পাওয়া যায়। সেগুলোও বেশ ভালো কাজে দেবে।

 

পদভিত্তিক যোগ্যতা

একটি বিজ্ঞপ্তিতে পদের ধরন ১২টি, পদ ৫২৪টি। এর মধ্যে পোস্টম্যান নেওয়া হবে ১৯০ জন; দ্বিতীয় বিভাগ বা সমমানের জিপিএ পেয়ে এসএসসি বা সমমান পাস। স্ট্যাম্প ভেন্ডার তিনজন; এসএসসি পাস এবং তিন বছরের অভিজ্ঞতা। ওয়্যারম্যান একজন; এসএসসি বা সমমান পাস এবং ইলেকট্রিকের কাজে বি/সি ক্যাটাগরির লাইসেন্সপ্রাপ্ত। আমর্ড গার্ড পাঁচজন; এসএসসি বা সমমান পাস এবং অস্ত্র চালনায় প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। প্যাকার-কাম-মেইল ক্যারিয়ার ১২৩ জন; এসএসসি বা সমমান পাস। অফিস সহায়ক (এমএলএসএস) ২৩ জন; এসএসসি বা সমমান পাস। গার্ডেনার পাঁচজন; অষ্টম বা সমমান পাস এবং বাগান পরিচর্যায় অভিজ্ঞ। পরিচ্ছন্নতাকর্মী (সুইপার) ১১ জন; অষ্টম বা সমমান পাস। বার্তাবাহক দুজন; এসএসসি বা সমমান পাস। রানার ১৩১ জন; এসএসসি বা সমমান পাস। বোটম্যান তিনজন; এসএসসি বা সমমান পাস। নিরাপত্তা প্রহরী ২৭ জন; এসএসসি বা সমমান পাস।

অন্য বিজ্ঞপ্তিতে পদের ধরন ১৫টি, পদ ২২১টি। এর মধ্যে সাঁটমুদ্রাক্ষরিক-কাম-কম্পিউটার অপারেটর (স্টেনোটাইপিস্ট) চারজন, দ্বিতীয় শ্রেণি বা সমমানের সিজিপিএতে স্নাতক বা সমমান পাস এবং নির্ধারিত কম্পিউটার টাইপিং গতি। উচ্চমান সহকারী ১১ জন; দ্বিতীয় শ্রেণি বা সমমানের সিজিপিএতে স্নাতক বা সমমান পাস এবং নির্ধারিত কম্পিউটার টাইপিং গতি। ক্যাশিয়ার একজন; স্নাতক বা সমমান পাস। টেকনিশিয়ান একজন; এইচএসসি বা সমমান পাস এবং সংশ্লিষ্ট ট্রেড কোর্স সনদপ্রাপ্ত। কম্পাউন্ডার/ফার্মাসিস্ট একজন; এসএসসি বা সমমান পাস এবং ফার্মাসিস্ট কোর্স সনদপ্রাপ্ত। ড্রাফটসম্যান দুজন; দ্বিতীয় বিভাগ বা সমমানের জিপিএ পেয়ে এইচএসসি বা সমমান পাস এবং ড্রাফটসম্যানশিপে ছয় মাসের সনদধারী। পোস্টাল অপারেটর ১৮০ জন; দ্বিতীয় বিভাগ বা সমমানের জিপিএ পেয়ে এইচএসসি বা সমমান পাস। ড্রাইভার (ভারী) একজন এবং ড্রাইভার (হালকা) পাঁচজন; এসএসসি বা সমমান পাস এবং ভারী বা হালকা গাড়ি চালনায় দুই বছরের অভিজ্ঞতা। কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক (টাইপিস্ট) তিনজন; দ্বিতীয় বিভাগ বা সমমানের জিপিএ পেয়ে এইচএসসি বা সমমান পাস এবং নির্ধারিত কম্পিউটার টাইপিং গতি। অফিস সহকারী-কাম-কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক সাতজন; দ্বিতীয় বিভাগ বা সমমানের জিপিএ পেয়ে এইচএসসি বা সমমান পাস এবং নির্ধারিত কম্পিউটার টাইপিং গতি। কার্পেন্টার একজন; এসএসসি বা সমমান পাসসহ ট্রেড কোর্সধারী ও তিন বছরের অভিজ্ঞতা। পাম্প অপারেটর একজন; এসএসসি বা সমমান পাসসহ ট্রেড কোর্সধারী ও দুই বছরের অভিজ্ঞতা। প্লাম্বার দুজন; এসএসসি বা সমমান পাসসহ ট্রেড কোর্সধারী। মিডওয়াইফ একজন; এসএসসি বা সমমান পাসসহ এক বছরের ট্রেড কোর্সধারী।

সব পদের ক্ষেত্রে বয়সসীমা ১৮ থেকে ৩২ বছর (১১ জানুয়ারি ২০২৫ তারিখ অনুযায়ী)।

বেতন-ভাতা

সব পদই রাজস্ব খাতভুক্ত। তাই নিয়োগপ্রাপ্তরা জাতীয় বেতন স্কেলে (২০১৫) নির্ধারিত গ্রেড অনুসারে বেতন-ভাতা ও অন্যান্য সরকারি সুযোগ-সুবিধা পাবেন।

নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ও আবেদনের লিংক

http://pmgec.teletalk.com.bd

 

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

৭৫১ কর্মী নিয়োগ দেবে কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর

শেয়ার
৭৫১ কর্মী নিয়োগ দেবে কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর
ছবি : এআই দিয়ে তৈরি

নিয়োগ পরীক্ষার ধরন

প্রার্থী বাছাই করা হবে লিখিত, মৌখিক ও ব্যাবহারিক (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে)—এই তিন পরীক্ষার মাধ্যমে। প্রথমেই লিখিত পরীক্ষার জন্য প্রবেশপত্র ইস্যু করা হবে। প্রবেশপত্রে পরীক্ষার কেন্দ্র ও সময়সূচি উল্লেখ থাকবে। এ ছাড়া প্রার্থীর মোবাইল নম্বরে এসএমএসের মাধ্যমেও এই তথ্য জানানো হবে।

পরীক্ষার আগে প্রবেশপত্র ডাউনলোড করতে হবে অধিদপ্তরের ওয়েবসাইট থেকে। লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের মৌখিক ও কিছু পদের ক্ষেত্রে ব্যাবহারিক পরীক্ষা নেওয়া হবে।

 

পরীক্ষার প্রস্তুতি

কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণির বিগত নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে,  এমসিকিউ পদ্ধতিতে পরীক্ষা হয়েছে। পদভেদে প্রশ্নপত্রের নম্বর ছিল ৭০ থেকে ৮০।

তবে এবারের পরীক্ষাও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের নিয়োগবিধি অনুসারে এমসিকিউ পদ্ধতিতে হতে পারে। বিগত পরীক্ষায় বাংলা, ইংরেজি, গণিত ও সাধারণ জ্ঞান—এই চার বিষয়েই প্রশ্ন করা হয়েছে। বেশির ভাগ প্রশ্ন এসেছে অষ্টম, নবম ও দশম শ্রেণির পাঠ্যবই থেকে। অষ্টম থেকে দশম শ্রেণির বাংলা ব্যকরণ, গদ্য ও পদ্য অংশ ভালোভাবে পড়তে হবে।
ইংরেজি গ্রামারের গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়গুলোর ওপর ভালো দখল থাকতে হবে। অষ্টম শ্রেণির পাটিগণিতের গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়, নবম-দশম শ্রেণির বীজগণিত, জ্যামিতি ও পরিমিতির অধ্যায়গুলো নিয়মিত অনুশীলন করতে হবে। সাধারণ জ্ঞানে জাতীয়-আন্তর্জাতিক সমসাময়িক বিষয়সহ শিক্ষা অধিদপ্তরের সার্বিক কার্যক্রম বিষয়ে সাধারণ ধারণা থাকতে হবে। এসব বিষয়ে প্রশ্ন থাকে। বাজারে নিয়োগসংশ্লিষ্ট সহায়ক বই পাওয়া যায়।
প্রশ্নের প্যাটার্ন সম্পর্কে ভালো ধারণা পেতে ও প্রস্তুতিতে বইগুলো বেশ কাজে দেবে।

 

পদভিত্তিক সংখ্যা ও যোগ্যতা

সাঁটলিপিকার-কাম-কম্পিউটার অপারেটর পদ ১টি, লাইব্রেরিয়ান ৬৫টি, সাঁট মুদ্রাক্ষরিক-কাম-কম্পিউটার অপারেটর ২টি, হিসাবরক্ষক ২৮টি, ইউডিএ-কাম-অ্যাকাউনটেন্ট ৪টি, এলডিএ-কাম- স্টোরকিপার ১৭টি, সহকারী-কাম-স্টোরকিপার ১১টি, অফিস সহকারী-কাম-স্টোরকিপার ৪৬টি, এলডিএ-কাম-টাইপিস্ট ২টি, সহকারী-কাম-টাইপিস্ট ২টি, অফিস সহকারী-কাম-ডাটা এন্ট্রি/কন্ট্রোল অপারেটর ২৭টি, কেয়ারটেকার ৭৪টি, ড্রাইভার-কাম-মেকানিক ২টি, এলডিএ-কাম -ক্যাশিয়ার নেবে ৭৯টি, ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টর (সপ) ৭টি, ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টর (ল্যাব) ১৫টি, অফিস সহায়ক/নিরাপত্তা প্রহরী ৪৭টি, অফিস সহায়ক ৩১৭টি ও অফিস সহায়ক/গার্ডেনার ৫টি। পদভেদে যোগ্যতা এসএসসি/সমমান থেকে স্নাতক/সমমান। প্রার্থীদের বয়স হতে হবে ১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ তারিখ অনুযায়ী ১৮ থেকে ৩২ বছর। সাঁটলিপিকার-কাম-কম্পিউটার অপারেটর এবং সাঁট মুদ্রাক্ষরিক-কাম-কম্পিউটার অপারেটর পদের কর্মরত বিভাগীয় প্রার্থীদের ক্ষেত্রে বয়সসীমা সর্বোচ্চ ৪০ বছর। নতুন বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, যারা আগের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী ইতোপূর্বে আবেদন করেছেন, তাদের পুনরায় আবেদনের দরকার নেই। 

 

♦ আবেদনের শেষ তারিখ : ২৪ মার্চ ২০২৫। 

♦ আবেদন : http://dtev.teletalk.com.bd

♦ সাজিদ মাহমুদ

 

মন্তব্য
২৭তম বিসিএস

১৭ বছর পর চাকরি!

    সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের রায়ে চাকরি পাওয়ার পথ সুগম হলো ২৭তম বিসিএসের নিয়োগবঞ্চিতদের। ফলে ১৭ বছরের অপেক্ষার অবসান ঘটতে যাচ্ছে এক হাজার ১৩৭ চাকরিপ্রত্যাশীর। তাঁদেরই একজন মোহাম্মদ আবু সালেহ সোহাগ। তিনি হিসাব ও নিরীক্ষা ক্যাডারে পঞ্চম হয়েছিলেন। তাঁর বিসিএস যাত্রা, অভিজ্ঞতা ও ক্যারিয়ারে চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার গল্প শুনেছেন হাবিব তারেক
শেয়ার
১৭ বছর পর চাকরি!
মোহাম্মদ আবু সালেহ সোহাগ

২৭তম বিসিএস আপনার কততম বিসিএস ছিল? আর কয়টি বিসিএসে অংশ নিয়েছিলেন? পড়াশোনা কিসে?

২৭তম বিসিএস আমার তৃতীয় ও সর্বশেষ বিসিএস পরীক্ষা। এর আগে আরো দুটি বিসিএস (২৪তম ও ২৫তম) পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলাম। এই দুই বিসিএসে প্রিলিমিনারি ও লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নিয়েছি, কিন্তু চূড়ান্ত ফলাফলে উত্তীর্ণ হইনি। ২৭তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফলাফলে আমি পিএসসি কর্তৃক সুপারিশপ্রাপ্ত হই এবং ‘হিসাব ও নিরীক্ষা’ ক্যাডারে পঞ্চম স্থান অধিকার করে নিয়োগের জন্য মনোনীত হই।

পড়াশোনা করেছি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজবিজ্ঞানে (স্নাতক ও স্নাতকোত্তর)। পরে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট (বিআইজিএম) থেকে পলিসি অ্যানালিসিস কোর্স ও স্ট্র্যাটেজিক ম্যানেজমেন্ট কোর্স সম্পন্ন করি।

 

২৭তম বিসিএসে ভাইভা দুবার হয়েছিল, দ্বিতীয়বার অংশ নিয়েছিলেন? বাদ পড়ার প্রেক্ষাপট নিয়ে কিছু বলুন।

২৭তম বিসিএসের ফলাফল বের হয় ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে।

পিএসসির দুর্নীতি, পক্ষপাতদুষ্টতা ও স্বজনপ্রীতি নিয়ে ১৯৭৩ সাল থেকে সব আমলেই কমবেশি আলোচনা-সমালোচনা আছে। সরকারি চাকরিতে কোটাপ্রথার জেরে গত ৫ আগস্ট ২০২৪ একটা সরকার পরিবর্তন হয়ে গেল। ২৭তম বিসিএসের ফলাফল প্রকাশের আগে-পরে গণমাধ্যমে পিএসসির নিয়োগপ্রক্রিয়া নিয়ে নেতিবাচক সংবাদ প্রকাশ হয়। ফলে তৎকালীন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে খামখেয়ালিভাবে এক নির্বাহী আদেশে পুরো ২৭তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফলাফল বাতিল করা হয়।
এর প্রতিবাদে এই বিসিএসের বঞ্চিত প্রার্থীরা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ১৪৩ দিন আমরণ অনশন করে। তখনকার এই বিষয়টি গণমাধ্যমে উঠে এলে দেশের খ্যাতনামা বুদ্ধিজীবী, রাজনীতিবিদ, সমাজকর্মী ও প্রায় সব মিডিয়াব্যক্তিত্ব আন্দোলনে আমাদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে। পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য তৎকালীন পিএসসির চেয়ারম্যান ড. সা’দত হুসাইসনকে সরকার দায়িত্ব দেয়। কিন্তু তিনি বিষয়টি সুরাহা করতে ব্যর্থ হন। খোদ তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. হোসেন জিল্লুর রহমান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক ড. এস এম এ ফায়েজ আমাদের আন্দোলনরত ছাত্রদের পক্ষে বলিষ্ঠ ভূমিকা নেওয়ার পরও সা’দত হুসাইনকে তাঁর অবস্থান থেকে সরাতে পারেননি।
সা’দত হুসাইন আমাদের প্রথম শ্রেণির নন-ক্যাডারের চাকরির প্রস্তাব দেন, কিন্তু আমরা প্রত্যাখ্যান করি। এরপর পুনরায় মৌখিক পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু দেখা গেল প্রথম মৌখিক পরীক্ষার ফলাফলে সুপারিশকৃতদের বেশির ভাগকেই বাদ দেওয়া হয়েছে। দ্বিতীয়বার মৌখিক পরীক্ষার মাধ্যমে আরেকটা ব্যাচকে তড়িঘড়ি করে সুপারিশ করে নিয়োগ দেয়। আমাদের আন্দোলনের কারণে বিদ্বেষপ্রসূত হয়ে প্রতিহিংসামূলকভাবে আমাদের বাদ দেওয়া হয়েছে, এমনটাই ধারণা আমাদের।

 

আপিল বিভাগের রায়ের পর নিয়োগে আইনি বাধা কেটেছে। নিয়োগের ক্ষেত্রে পরবর্তী করণীয় বা প্রক্রিয়া কী?

করণীয় হচ্ছে—সর্বোচ্চ আদালতের রায় পরবর্তী তিন মাসের মধ্যে কার্যকর করা। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ও সরকারি কর্মকমিশন জ্যেষ্ঠতা ও আর্থিক সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করে নিয়োগপ্রক্রিয়া সম্পন্ন করবে। সর্বোচ্চ আদালতের সর্বশেষ ধাপের এই রায় পরবর্তী তিন মাসের মধ্যে কার্যকর করা না হলে আদালত অবমাননার সম্মুখীন হবে নির্বাহী বিভাগ।

 

গত ১৭ বছরে কোথায় কোথায় চাকরি করেছেন বা অন্য কী করেছেন? এই সময়ে কী চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করেছেন? কেমন অভিজ্ঞতা হয়েছে?

২৭তম বিসিএস পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের (২০০৭ সালে) পর অনেকেই তাদের চাকরি ছেড়ে দেয়। পরবর্তীতে তাদের অনেকেই মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে আর ক্যারিয়ারের মূলধারায় ফিরতে পারেনি। কর্মজীবনের বেশির ভাগ সময় আমি কাজ করেছি বহুজাতিক টেলিযোগাযোগ প্রতিষ্ঠান রবি আজিয়াটায়। ২০১৯ সালে আমি স্বেচ্ছায় চাকরি ছেড়ে দিয়ে একটি ই-লার্নিং প্ল্যাটফর্ম গড়ে তুলি। এখান থেকে আমরা শিক্ষার্থীদের তথ্য-প্রযুক্তিতে দক্ষতা উন্নয়ন ও পেশাজীবীদের জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করি। এরপর ২০২২ সালে লাইটহাউস নামে একটি গবেষণা ও পরামর্শ সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করি। পাশাপাশি আমি সাহিত্য ও ইতিহাস বিষয়ে লেখালেখি করি। নিজেকে গবেষণার সঙ্গেও সম্পৃক্ত রেখেছি।

 

আপনার প্রিলিমিনারি, লিখিত ও ভাইভায় প্রস্তুতি কৌশল নিয়ে বলুন। কোন বিষয়গুলোর প্রতি বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন?

বিসিএস প্রিলিমিনারির জন্য বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক বিষয়ে সাধারণ জ্ঞান ও মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের বাংলা, ইংরেজি, গণিত ও বিজ্ঞান বিষয়ে প্রস্তুতি নিতে হয়েছে। লিখিত পরীক্ষার সিলেবাস বড়। তাই পড়াশোনাও করতে হয়েছে বিস্তৃত পরিসরে। আমি নোট করে পড়তাম। তিনজন মিলে গ্রুপ স্টাডি করতাম। বিসিএস লিখিত পরীক্ষা দিয়েছি ইংরেজি মাধ্যমে।

 

বাংলাদেশের বাস্তবতায় ক্যারিয়ার নিয়ে নতুন প্রার্থীদের ব্যাপারে আপনার পরামর্শ কী?

তরুণদের ক্যারিয়ার নিয়ে তিন-চারটা অপশন রাখা উচিত। কারণ প্রতিবছর যত শিক্ষার্থী স্নাতক ডিগ্রি নিয়ে বের হয়, সরকারি চাকরিতে তার প্রায় হাজার ভাগের এক ভাগ নিয়োগের সুযোগ থাকে। সুতরাং তরুণদের শুধু সরকারি চাকরির আশায় না থেকে বেসরকারি চাকরির দিকেও ঝুঁকতে হবে। বিসিএসের প্রস্তুতি নিলে বাংলাদেশ ব্যাংক, রাষ্ট্রায়ত্ত সরকারি ব্যাংক, নন-ক্যাডার চাকরি ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নিয়োগ পরীক্ষায় ভালো করার সম্ভাবনা থাকে। কাঙ্ক্ষিত চাকরির জন্য ব্যাপক পড়াশোনা করতে হবে। বেসরকারি চাকরির প্রস্তুতিটা আবার ভিন্ন রকম। সেখানে দক্ষতাকে বেশি মূল্যায়ন করা হয়। পড়াশোনার ফাঁকে চাহিদাসম্পন্ন বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করতে হবে। আইসিটি বিভাগের হিসাব মতে, দেশে ফ্রিল্যান্সিংয়ের মাধ্যমে সাড়ে ছয় লাখ রেজিস্টার্ড তরুণ প্রতিবছর প্রায় ১০০ মিলিয়ন ডলার আয় করছে। নিয়োগদাতা এখন বিশ্বের যেকোনো প্রতিষ্ঠানই হতে পারে, যদি যোগ্যতা ও দক্ষতা থাকে। দেশেই চাকরি খুঁজতে হবে, এমন নয়।

 

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য
ভাইভা অভিজ্ঞতা

ভাইভা কি এআইয়ের মাধ্যমে নেওয়া যাবে?

    বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে ইইই বিভাগে পড়াশোনা করেছেন তানভীর হোসেন জয়। তিনি ৪৩তম বিসিএসে প্রশাসন ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন। ভাইভা হয়েছিল ২০২৪ সালের ১২ সেপ্টেম্বর। তাঁর ভাইভা অভিজ্ঞতা শুনেছেন নাহারুল আলম
শেয়ার
ভাইভা কি এআইয়ের মাধ্যমে নেওয়া যাবে?
তানভীর হোসেন জয়

চেয়ারম্যান : বিল ও আইনের মধ্যে পার্থক্য কী?

—বিল হচ্ছে আইনের খসড়া, যা সংসদে প্রস্তাব হিসেবে উত্থাপন করা হয়। আর সংসদে পাস হলে সেই বিল আইনে পরিণত হয়।

ভারত ও বাংলাদেশের সরকারব্যবস্থার মধ্যে পার্থক্য কী?

—ভারতে যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকারব্যবস্থা প্রচলিত। সেখানে পুরো দেশকে কিছু প্রদেশে ভাগ করা হয়েছে।

প্রদেশে প্রাদেশিক সরকার ও কেন্দ্রে থাকে কেন্দ্রীয় সরকার। অন্যদিকে বাংলাদেশে এককেন্দ্রিক সরকারব্যবস্থা প্রচলিত। এখানে রাষ্ট্রের সব ক্ষমতা কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে ন্যস্ত থাকে।

ভারতের মণিপুরের জাতিগত সংঘাত নিয়ে কিছু বলুন।

—ভারতের মণিপুরে মেইতেই জাতিগোষ্ঠীকে ‘তফসিলি উপজাতি’ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার নির্দেশনা দিয়ে হাইকোর্টের এক রায় নিয়ে মেইতেই এবং কুকি ও নাগা জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে সংঘাত শুরু হয়। মেইতেই সম্প্রদায় মূলত সমতলে বসবাস করে এবং দেশটির ৫৩ শতাংশ জনসংখ্যা নিয়ে গঠিত হলেও মোট জমির ১০ শতাংশ তাদের অধীন। অন্যদিকে কুকি ও নাগা সম্প্রদায় পাহাড়ে বাস করে এবং রাজ্যের ৯০ শতাংশ জমি তাদের অধীন। তফসিলি উপজাতি না হওয়ায় মেইতেই সম্প্রদায়ের পাহাড়ে বাসস্থান স্থাপনের অনুমতি নেই এবং চাকরির ক্ষেত্রেও কোনো কোটা সুবিধা পায় না।

সরকারের ১০টি উদ্যোগের কথা বলুন।

—একটি বাড়ি একটি খামার (বর্তমানে আমার বাড়ি আমার খামার), আশ্রয়ণ, ডিজিটাল বাংলাদেশ, শিক্ষা সহায়তা কর্মসূচি, নারীর ক্ষমতায়ন, ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ, কমিউনিটি ক্লিনিক, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি, বিনিয়োগ বিকাশ এবং পরিবেশ সুরক্ষা ইত্যাদি।

 

এক্সটার্নাল-১ : কম্বাইন্ড সাইকল সম্পর্কে বলুন।

—বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষেত্রে কম্বাইন্ড সাইকল পাওয়ার প্লান্টে সাধারণত দুটি চক্র থাকে। একটি গ্যাস টারবাইন চক্র ও অন্যটি স্টিম টারবাইন চক্র।

প্রথমে প্রাকৃতিক গ্যাস পুড়িয়ে গ্যাস টারবাইন চালানো হয় এবং গ্যাস টারবাইন থেকে নির্গত গরম গ্যাসকে সংগ্রহ করে সেই তাপে পানি বাষ্পে পরিণত হয়, যা স্টিম টারবাইন চালায় এবং বিদ্যুৎ উৎপাদন করে।

ট্রিপ কী?

—ট্রিপ বলতে স্বাভাবিক বিদ্যুৎ প্রবাহ বন্ধ হয়ে যাওয়াকে বোঝায়। অতিরিক্ত লোড, শর্টসার্কিট বা বৈদ্যুতিক কোনো ত্রুটির কারণে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সার্কিট বন্ধ হয়ে যাওয়াকে ট্রিপ বলে। এ ক্ষেত্রে সার্কিট ব্রেকার বা ফিউজের মাধ্যমে ট্রিপের কাজ সংগঠিত হয়।

বাংলাদেশে কত ফ্রিকোয়েন্সিতে ট্রিপ করে?

—৪৭.৫ হার্জ।

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুেকন্দ্রের খরচ কত?

—১,১৩,০০০ কোটি টাকা।

বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন কত?

—২৫ হাজার মেগাওয়াটের বেশি।

ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টকে এত সম্মান দেখানোর কারণ কী?

—ফ্রান্স ইউরোপীয় ইউনিয়নের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হলে জিএসপি প্লাস সুবিধা পেতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক বজায় রাখতে হবে। সে ক্ষেত্রে ফ্রান্স একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হতে পারে।

ইউক্রেন যুদ্ধে জাতিসংঘের ভূমিকা কী?

—জাতিসংঘ উভয় দেশের মধ্যকার যুদ্ধ বন্ধের জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করছে। গুরুত্বপূর্ণ দেশগুলোর সঙ্গে বৈঠক করেছে। যদিও আশানুরূপ ফল পাওয়া যায়নি। তবু জাতিসংঘের উদ্যোগেই রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাব পাস হয়েছে।

রোহিঙ্গা ইস্যুকে কেন্দ্র করে ভবিষ্যতে কী কোনো সমস্যা হবে এই অঞ্চলে?

রোহিঙ্গারা মায়ানমারের আরাকান (রাখাইন) রাজ্যের অধিবাসী। বর্তমানে ১০ লাখ রোহিঙ্গা বাস্তুচ্যুত হয়ে বাংলাদেশে শরণার্থী হিসেবে বসবাস করছে। তাদের এই সমস্যার আশু সমাধান না হলে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ভূ-রাজনৈতিক অবস্থা উত্তপ্ত হয়ে উঠতে পারে।

 

এক্সটার্নাল-২ : রোবটিকসে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারের কাজ কী?

—রোবটিকস একটি সমন্বিত ইঞ্জিনিয়ারিং ব্যবস্থা। এখানে রোবটের বাহ্যিক অবয়বের কাজটুকু মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের অংশ।

এক্সকাভেটর ও রোবটিকসের সম্পর্ক কী?

—এক্সকাভেটরও এক ধরনের রোবট।

আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) ও রোবটিকস একই সঙ্গে ব্যবহার করতে কী কী দরকার?

—এআই একটি ডাটানির্ভর ব্যবস্থা, স্যার। রোবটকে কোনো রকম বাহ্যিক নিয়ন্ত্রণ ছাড়া অপারেট করতে হলে এআই ব্যবহার করতে হবে। এর জন্য ডাটা ও ডাটা প্রেডিকশন মডেলের প্রয়োজন হবে।

ভাইভা কি এআইয়ের মাধ্যমে নেওয়া যাবে?

—নেওয়া যাবে স্যার। কিন্তু সে ক্ষেত্রে মনস্তাত্ত্বিক যে ব্যাপারগুলো রিয়েল ভাইভায়  বোঝা যায়। আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের মাধ্যমে ভাইভা নিলে সেই ব্যাপারগুলো নির্ধারণ করা সম্ভব হবে না।

বোয়েসেল কী? কাদের নিয়ে কাজ করে?

বিদেশে দক্ষ শ্রমিক পাঠানোর জন্য বোয়েসেল কাজ করে।

শ্রম মন্ত্রণালয় ও প্রবাসী মন্ত্রণালয়ের মধ্যে কোনটি আগে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে?

—দুঃখিত স্যার, এটি আমার জানা নেই।

আপনার বিষয়ের সঙ্গে এসডিজির কোনো গোল (লক্ষ্য) মিলে?

—৭ নম্বর গোল ‘নবায়নযোগ্য ও ব্যয়সাধ্য জ্বালানি’, এটা মিলে।

গ্রিন সিটি কোন গোলের মধ্যে পড়ে?

—১১ নম্বর গোলের মধ্যে।

(‘আপনার বিএসসির রেজাল্ট কী?’ বলে চেয়ারম্যান স্যার নিজেই সার্টিফিকেট দেখে বললেন, ‘ভালোই! যাও, তুমি আসতে পারো।’ স্যারদের সালাম দিয়ে বের হয়ে এলাম।)

মন্তব্য

এসএসসি পাসে সারা দেশে কনস্টেবল নেবে পুলিশ

    ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পদে এসএসসি পাস পুরুষ ও নারী কর্মী নিয়োগ দেবে বাংলাদেশ পুলিশ। জেলাভিত্তিক শূন্যপদের ভিত্তিতে এসব কর্মী নিয়োগ দেওয়া হবে। অনলাইনে আবেদন করা যাবে ১৮ মার্চ ২০২৫ পর্যন্ত। বাছাই পদ্ধতি, পরীক্ষার প্রস্তুতি, প্রশিক্ষণ ও সুযোগ-সুবিধা নিয়ে বিস্তারিত জানাচ্ছেন সাজিদ মাহমুদ
শেয়ার
এসএসসি পাসে সারা দেশে কনস্টেবল নেবে পুলিশ

যা যা খেয়াল রাখতে হবে

বাংলাদেশ পুলিশে বিগত বছরগুলোতে নিয়োগপ্রাপ্ত কনস্টেবলদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অনলাইনে যথাযথভাবে আবেদন জমা দেওয়ার পর ট্রেকিং নম্বর ও জমাকৃত আবেদন রঙিন প্রিন্ট করে রাখতে হবে। পরবর্তী কার্যক্রমে এই কপি দরকার হবে। বাছাই পরীক্ষার নির্ধারিত তারিখে পুলিশ লাইনসে সময়মতো উপস্থিত থাকতে হবে। দরকারি পোশাকও সঙ্গে রাখতে হবে।

বাছাই পর্বের পরীক্ষার ধাপগুলোতে সাবলীলভাবে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে পরীক্ষা নিতে হবে। লিখিত পরীক্ষার জন্য ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণির বাংলা, ইংরেজি ও গণিত পাঠ্যবই পড়ে প্রস্তুতি নিতে হবে। সাধারণ জ্ঞান সম্পর্কিত তথ্য সম্পর্কেও জানাশোনা থাকতে হবে। এর জন্য নিয়মিত পত্রিকার পাশাপাশি সাধারণ জ্ঞানের বইও পড়তে হবে।

 

বাছাই পরীক্ষায় যা যা সঙ্গে রাখবেন

বাছাই পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার সময় প্রার্থীকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সঙ্গে রাখতে হবে। শারীরিক পরীক্ষার (ফিজিক্যাল টেস্ট) সময় প্রবেশপত্রের ডাউনলোডকৃত দুই কপি, শিক্ষাগত যোগ্যতা পরীক্ষার মূল বা সাময়িক সনদ, সর্বশেষ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধান কর্তৃক চারিত্রিক সনদের মূল কপি, স্থায়ী নাগরিকত্ব সনদের মূল কপি, অভিভাবকের সম্মতিপত্র সঙ্গে রাখতে হবে। একই সঙ্গে জাতীয় পরিচয়পত্রের মূল কপি, সরকারি গেজেটেড কর্মকর্তার সত্যায়িত তিন কপি পাসেপোর্ট আকারের ছবি, মুক্তিযোদ্ধা ও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী কোটার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সনদ, শারীরিক প্রতিবন্ধীদের ক্ষেত্রে সুবর্ণ নাগরিক কার্ডের মূল কপি, তৃতীয় লিঙ্গের ক্ষেত্রে সিভিল সার্জন কর্তৃক সনদ এবং চাকরিজীবী প্রার্থীদের প্রয়োজনীয় সনদ দেখাতে হবে।

 

বাছাই পদ্ধতি ও পরীক্ষা

প্রার্থী বাছাই করা হবে সাতটি ধাপে।

প্রথমেই নেওয়া হবে প্রিলিমিনারি স্ক্রিনিং টেস্ট। এরপর শারীরিক মাপ, কাগজপত্র যাচাই ও ফিজিক্যাল এনডোরেন্স বা পিইটি পরীক্ষা। এরপর প্রার্থীদের ৪৫ নম্বরের লিখিত পরীক্ষা নেওয়া হবে। লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের ১৫ নম্বরের ভাইভা ও মনস্তাত্ত্বিক পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে। পরীক্ষার ফল অনুসারে মেধাক্রম ও সরকারের প্রযোজ্য নিয়ম অনুযায়ী প্রাথমিক প্রার্থী নির্বাচন করা হবে।
প্রাথমিক নির্বাচিতদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও পুলিশ ভেরিফিকেশনের মাধ্যমে চূড়ান্তভাবে বাছাই করা হবে। সব শেষে বাছাইকৃত প্রার্থীদের প্রশিক্ষণের জন্য নির্বাচিত করা হবে। প্রশিক্ষণ শেষে শিক্ষানবিশ হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হবে।

 

লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতি

লিখিত পরীক্ষা হবে রচনামূলক পদ্ধতিতে ৪৫ নম্বরে। সময় দেড় ঘণ্টা। এই পরীক্ষার প্রশ্ন হবে মাধ্যমিক পর্যায়ের বাংলা, ইংরেজি, সাধারণ গণিত ও সাধারণ জ্ঞান বিষয়ের ওপর। বিগত কয়েক বছরের প্রশ্নপত্রে দেখা গেছে, বাংলায় ১৫, ইংরেজিতে ১৫ এবং গণিত ও সাধারণ জ্ঞানে ১৫ নম্বরের পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে। বাংলায় রচনা লিখন, রিপরীত শব্দ, বাক্য রচনা ও বাগধারা, সমোচ্চারিত শব্দ, সন্ধিবিচ্ছেদ, প্রবাদ-প্রবচন বিষয়বস্তুর ওপর প্রশ্ন এসেছে। এর বাইরে পত্রলিখন/দরখাস্ত অথবা ভাবসম্প্রসারণ আসতে পারে। তাই সমসাময়িক বিষয়ে রচনা ও ব্যাকরণের উল্লিখিত অধ্যায়গুলো খুব গুরুত্ব দিয়ে পড়তে হবে। ইংরেজিতে প্যারাগ্রাফ, ট্রান্সলেশন, আর্টিকেল, ফিল ইন দ্য ব্ল্যাংকস, প্রিপজিশন অধ্যায় থেকে প্রশ্ন থাকে।

এ ছাড়া লেটার রাইটিংও আসতে পারে। ইংরেজিতে উক্ত অধ্যায়গুলোতে গুরুত্ব দিতে হবে। গণিত বিষয়ে পাটিগণিতের শতকরা, ঐকিক, সুদকষা এবং বীজগণিতের উৎপাদকের বিশ্লেষণ, সেট অধ্যায় থেকে প্রশ্ন করা হয়। তাই পাটিগণিত ও বীজগণিতের সহজ ও গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়গুলোতে প্রস্তুতি নিতে হবে। সাধারণ জ্ঞান প্রশ্নে সমসাময়িক বিষয়ের ওপর ‘এককথায়’ কমপক্ষে পাঁচটি প্রশ্ন থাকতে পারে। এই অংশে ভালো করতে হলে সমসাময়িক সংবাদ, তথ্য ও গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা সম্পর্কে জানাশোনা থাকতে হবে। টিআরসি পদের লিখিত পরীক্ষার প্রশ্ন অন্যান্য নিয়োগ পরীক্ষার তুলনায় সহজ করা হয়। প্রশ্নপত্র সম্পর্কে ভালো ধারণা পেতে বিগত বছরের প্রশ্নগুলো অনলাইন থেকে দেখে নিন। তবে ভালো প্রস্তুতির জন্য প্রস্তুতিমূলক সহায়ক বই সংগ্রহ করতে পারেন। এসব বইয়ে বিগত প্রশ্নপত্র (উত্তরসহ), সাজেশন ও বিষয়ভিত্তিক গুরুত্বপূর্ণ টপিকস গোছানো থাকে।

 

প্রশিক্ষণ ও সুযোগ-সুবিধা

নির্বাচিত প্রার্থীদের পুলিশ প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) হিসেবে ছয় মাসের মৌলিক প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। প্রশিক্ষণ চলাকালীন বিনামূল্যে পোশাক, থাকা-খাওয়াসহ মাসিক প্রশিক্ষণ ভাতা দেওয়া হবে। সফলভাবে প্রশিক্ষণ শেষ করলে শিক্ষানবিশ কনস্টেবল হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হবে। শিক্ষানবিশ কনস্টেবল পদধারীদের বেতন জাতীয় বেতন স্কেল-২০১৫ অনুযায়ী ১৭তম গ্রেডে ৯,০০০-২১,৮০০ টাকা। ন্যূনতম দুই বছর শিক্ষানবিশ কনস্টেবল হিসেবে চাকরির পর কনস্টেবল পদে চাকরি স্থায়ী করা হবে। কনস্টেবল পদের কর্মীরা বেতনের পাশাপাশি বিনামূল্যে পোশাক, ঝুঁকিভাতা, বাসস্থান, খাওয়া ও চিকিৎসা ভাতা পাবেন। এ ছাড়া থাকছে স্বল্পমূল্যে পারিবারিক রেশন সুবিধা, পদোন্নতি ও জাতিসংঘের শান্তি রক্ষা মিশনে কাজের সুযোগ। চাকরি থেকে অবসরের পর যথারীতি পেনশন সুবিধাও পাবেন।

 

প্রার্থীর যোগ্যতা

এসএসসি বা সমমানের পরীক্ষায় ন্যূনতম জিপিএ ২.৫০ থাকলেই আবেদন করা যাবে। প্রার্থীদের জন্মসূত্রে বাংলাদেশি নাগরিক (পুরুষ অথবা মহিলা) এবং অবিবাহিত হতে হবে। পুরুষ প্রার্থীদের বেলায় মেধা কোটার ক্ষেত্রে উচ্চতা ৫ ফুট ৬ ইঞ্চি। মুক্তিযোদ্বা ও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী কোটার ক্ষেত্রে প্রার্থীর উচ্চতা ৫ ফুট ৪ ইঞ্চি। বুকের মাপ—মেধা ও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী কোটার ক্ষেত্রে স্বাভাবিক অবস্থায় ৩১ ইঞ্চি, সম্প্রসারণে ৩২ ইঞ্চি। মুক্তিযোদ্বা কোটার ক্ষেত্রে স্বাভাবিক অবস্থায় ৩০ ইঞ্চি, সম্প্রসারণে ৩১ ইঞ্চি। মহিলা প্রার্থীদের বেলায় মেধা কোটার ক্ষেত্রে উচ্চতা ৫ ফুট ৪ ইঞ্চি। মুক্তিযোদ্বা ও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী কোটার ক্ষেত্রে উচ্চতা ৫ ফুট ২ ইঞ্চি। ওজন বয়স ও উচ্চতা অনুসারে এবং চোখের দৃষ্টি ৬/৬। ১৮ মার্চ ২০২৫ তারিখ অনুযায়ী প্রার্থীর বয়স হতে হবে ১৮ থেকে ২০ বছর।

 

আবেদন লিংক

আবেদন করতে হবে police.teletalk.com.bd ওয়েবসাইটে। আবেদনের দরকারি তথ্য পাওয়া যাবে পুলিশের অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে (http://police.gov.bd)।

 

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ