<p>৩৭ বছর বয়সেই ৩১০ কোটি ডলারের মালিক নিখিল কামাথ একজন স্কুল ড্রপ-আউট। দশম শ্রেণির গণ্ডি পেরোননি। ভারতীয় উপমহাদেশে দারিদ্র্য বা মাদকের ছোবলে অনেকেই পড়াশোনা থেকে ছিটকে যায়। তবে নিখিলের ক্ষেত্রে এই দুটোর কোনোটাই ঘটেনি। স্কুলে যাওয়ার চেয়ে পুরনো মোবাইল বেচাকেনায় বেশি মনোযোগী ছিলেন। স্কুলে উপস্থিতি কম ছিল বলে বোর্ড পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেননি। বাবা ছিলেন ব্যাংকার। মা একজন বিনাবাদক। সন্তান পড়াশোনা ছেড়ে দেবে বিষয়টা ভাবাও মধ্যবিত্ত পরিবারের অভিভাবকদের জন্য কষ্টকর। তবে প্রাতিষ্ঠানিক ডিগ্রি না থাকলেও ক্ষুরধার মেধা ছিল নিখিলের। মায়ের আগ্রহে মাত্র চার বছর বয়স থেকেই দাবা খেলতেন তিনি। ফলে না বুঝে মুখস্থ করার বিদ্যাকে পাশ কাটিয়ে কৌশলগত চিন্তা করতে শেখেন নিখিল।</p> <p> </p> <p><strong>কম্পানির মূল্য ৩০ হাজার কোটি রুপি</strong></p> <p>পড়াশোনা ছাড়ার পর বাড়ি থেকেও চলে যান তিনি। খরচ মেটানোর জন্য একটি কল সেন্টারে মাসিক আট হাজার রুপিতে চাকরি নেন। বিকেল ৪টা থেকে রাত ১টা পর্যন্ত কল সেন্টারে কাজ করতেন। এরপর সকালে শেয়ার কেনাবেচা করতেন স্টক মার্কেটে। চাকরির চেয়ে স্টক মার্কেট থেকেই তাঁর বেশি আয় হতো। ২০০৬ সালে তিনি সাব-ব্রোকার হিসেবে ব্রোকারেজ কম্পানি ‘কামাথ অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটস’ প্রতিষ্ঠা করেন। পাবলিক মার্কেটে অতি সম্পদশালী ব্যক্তিদের সম্পদ ব্যবস্থাপনা করত তাঁর কম্পানি। এরপর ২০১০ সালে ভাই নিতিন কামাথের সঙ্গে মিলে ব্যাঙ্গালুরুতে প্রতিষ্ঠা করেন ফিনটেক কম্পানি জেরোধা। অনলাইনে শেয়ার, বন্ড, মিউচুয়াল ফান্ড ও কারেন্সি কেনাবেচার প্ল্যাটফরম এটি। এখানে কোনো ব্রোকার বা দালালের অস্তিত্ব নেই। প্রতিদিন এই প্ল্যাটফরমে লাখ লাখ শেয়ার বেচাকেনা হয়। কম্পানিটির বাজারমূল্য এখন ৩০ হাজার কোটি রুপি। শুধু চলতি বছরেই কম্পানিটি আয় করে আট হাজার ৩২০ কোটি ডলার। ব্যাঙ্গালুরুসহ ৯টি আলাদা শহরে জেরোধার অফিস রয়েছে। জেরোধার পাশাপাশি অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কম্পানি ‘ট্রু বেকন’ (২০২০) ও প্রপটেক কম্পানি ‘গৃহাস’ (২০২১) প্রতিষ্ঠা করেন। ২০২৩ সালের মার্চ থেকে ইউটিউবে ‘ডাব্লিউটিএফ ইজ’ নামের একটি পডকাস্ট অনুষ্ঠানও উপস্থাপনা করছেন তিনি। একই বছর বিল গেটস ও ওয়ারেন বাফেট প্রতিষ্ঠিত দাতব্য সংস্থা ‘দ্য গিভিং প্লেজ’-এ নিজের সম্পদের অর্ধেক দান করার ঘোষণা দেন তিনি। ছয় মাস আগে মাইক্রোসফটের প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটসের সঙ্গে একটি পডকাস্টের আয়োজন করেন কামাথ। ৩১ মিনিটের পডকাস্টটি দেখা হয়েছে ১৪ লাখ বার।</p> <p> </p> <p><strong>উদ্যোক্তাদের জন্য পরামর্শ</strong></p> <p>নতুন উদ্যোক্তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আগামী এক দশক পর কোন খাত পাঁচ থেকে ১০ গুণ বড় হবে সেটা খুঁজে বের করতে হবে। সেই খাত নিয়ে বিস্তর পড়াশোনা করতে হবে। এরপর কী নিয়ে ব্যবসা করবেন সেটা ঠিক করতে হবে। ব্যবসা করতে গেলে ধৈর্য ও খাপ খাইয়ে নেওয়ার মানসিকতা থাকতে হবে। ব্যবসার আইডিয়াটি কতটা বাস্তবসম্মত সেটা যেমন গুরুত্বপূর্ণ, ঠিক তেমনি গুরুত্বপূর্ণ ধৈর্য ধারণ করা। ব্যবসা যদি প্রথম দিকেই সফল না হয়, তবে আগামী বছরগুলোতেও সেটা ব্যর্থ ফলাফলই হাজির করবে। যে প্রকল্পে লোকসান হচ্ছে তা দ্রুত বন্ধ করে দিন। এতে সময় ও অর্থ বাঁচবে। মানসিক চাপও কমবে। ব্যবসায় সফল হওয়ার জন্য হিসাব করে সময় খরচ করা জরুরি। সূত্র : বিজনেস ইনসাইডার</p> <p> </p>