<p>হজের কর্মগত ভুল তিন ধরনের—</p> <p>১. হজের ফরজ তিনটি। ইহরাম পরিধান করা। আরাফায় অবস্থান করা। তাওয়াফে জিয়ারত।</p> <p>আরাফায় অবস্থান হজের অন্যতম বিশেষ ফরজ। তা ছুটে গেলে পরবর্তীতে আবার হজ করা ছাড়া এর ক্ষতিপূরণ হবে না। ইহরামবিরোধী কাজ করে ফেললে ফিদিয়া আদায় করবে। আর তাওয়াফে জিয়ারত ছুটে গেলে পরে আদায় করে নেবে এবং ‘দম’ দেবে।</p> <p>২. হজের কোনো ওয়াজিব সম্পূর্ণ ছুটে যাওয়া। এ ক্ষেত্রে ক্ষতিপূরণ হিসেবে ‘দম’ দিতে হবে।</p> <p>হজের ওয়াজিব কাজ হলো—</p> <p>* সামান্য সময়ের জন্য হলেও মুজদালিফায় অবস্থান করা। এর সময় হলো জিলহজ মাসের ১০ তারিখ সুবহে সাদিক থেকে সূর্যোদয় পর্যন্ত। (সুরা বাকারা, আয়াত : ১৯৮, তিরমিজি, হাদিস : ৮১৫)</p> <p>* সাফা-মারওয়ায় সাত চক্কর লাগানো। এটাকে ‘সাঈ’ বলা হয়। চক্কর লাগানো শুরু হবে সাফা থেকে, আর শেষ হবে মারওয়ায়। (মুসলিম, হাদিস : ২১৩৭)</p> <p>* ১০ জিলহজ বড় জামারায় এবং ১১, ১২ ও ১৩ তারিখ তিন জামরায় কংকর নিক্ষেপ করা। (শয়তানকে পাথর মারা) (মুসলিম, হাদিস : ২২৮৬)</p> <p>* তামাত্তু ও কিরান হজকারীরা দমে শোকর তথা হজের কোরবানি করা।</p> <p>* হারামে কোরবানির দিনগুলোতে মাথা মুণ্ডানো বা চুল ছোট করা। (মুসলিম, হাদিস : ২২৯৮, বুখারি, হাদিস : ১৬১৩)</p> <p>* মক্কাবাসী ছাড়া অন্যরা তাওয়াফে সদর তথা তাওয়াফে ‘বিদা’ করা। (মুসলিম, হাদিস : ২৩৫০)</p> <p>এই ছয়টি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ওয়াজিব। হজের আরো কিছু ওয়াজিব আছে। তার মধ্যে কয়েকটি নিম্নরূপ</p> <p>* ১২ জিলহজ সূর্যাস্তের আগে তাওয়াফে জিয়ারত (ফরজ তাওয়াফ) সম্পন্ন করা। (মুসলিম, হাদিস : ২৩০৭, সুনানে কুবরা, হাদিস : ৯৯২৮)</p> <p>* সূর্য হেলার পর থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত আরাফায় অবস্থান করা।</p> <p>* তাওয়াফ অবস্থায় (হাদসে আকবার ও আসগার তথা অজু বা গোসল ফরজ হয় এমন অবস্থা থেকে) পবিত্র ও পরিচ্ছন্ন থাকা। (নাসায়ি, হাদিস : ২৮৭৩, মুসলিম, হাদিস : ২১৭৩)</p> <p>* প্রত্যেক তাওয়াফের পর দুই রাকাত নামাজ আদায় করা। (বুখারি, হাদিস : ১৫১১)</p> <p>* কিরান ও তামাত্তু হজকারী ধারাবাহিকতা বজায় রেখে তিনটি কাজ করা (ক) রমি (খ)  কোরবানি এবং (গ) হলক। (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ১৯৮, উমদাতুল কারি : ১০/৫৮)</p> <p>* সতর ঢাকা। (বুখারি)</p> <p>* তাওয়াফের সূচনা হাজরে আসওয়াদ থেকে করা। (দারাকুতনি ২/২৮৯, মুসলিম ৮/১৭৪, মারাকিল ফালাহ ৭২৯)</p> <p>উল্লেখ্য যে দম কোরবানির তিন দিনসহ বছরের যেকোনো সময় আদায় করতে পারবে। তবে হারাম শরিফের চৌহদ্দিতেই আদায় করতে হবে। জবাই করার পর প্রাণীর রশি, লাগাম ও গোশত মিসকিনদের সদকা করে দেবে। হজের ভুলত্রুটির জন্য যে দম ওয়াজিব হয়, তা দমদাতা নিজে ভক্ষণ করতে পারবে না। এভাবে কোনো ধনী মানুষও তা থেকে ভক্ষণ করবে না। এটি গরিব-মিসকিনদের মধ্যে বণ্টন করে দিতে হবে। (ফাতহুল কাদির ৩/১৬১, ৩/১৬২, রদ্দুল মুহতার, ২/৬১৬, আল বাহরুর রায়েক, ৩/৭৮)</p> <p>৩. হজের কোনো সুন্নত-মুস্তাহাব ছুটে গেলে দম জবেহ করে কোনো ক্ষতিপূরণ দিতে হবে না। তবে অবজ্ঞা অবহেলা করে কোনো সুন্নত তরক করা উচিত নয়। হজে যেকোনো ধরনের ভুল হলেই দম দিতে হবে, এমন কথা ঠিক নয়।</p>