গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর বলেন, যে লঙ্কায় যায় সেই রাবণ হয়। দেশের মানুষ আর এই রাজনীতি চায় না। মানুষ দেশের উন্নয়ন চায়। কাজেই দেশের উন্নয়নের জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কার প্রয়োজন।
শুক্রবার (১১ এপ্রিল) সন্ধ্যায় মানিকগঞ্জের সিংগাইর গণঅধিকার পরিষদ আয়োজিত সিংগাইর সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এক জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
ভিপি নুর বলেন, জুলাই-আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। এই গণ-অভ্যুত্থান নিয়ে কেউ চেতনার ব্যবসা করবেন না। গণ-অভ্যুত্থান কোনো রাজনৈতিক দল কিংবা ব্যক্তি বা একক কোনো প্রতিষ্ঠানের জন্য হয়নি।
এই অভ্যুত্থান হয়েছে দল, মত নির্বিশেষে ছাত্র-জনতা ও সাধারণ মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে। কাজেই এই অভ্যুত্থানকে বিফল হতে দেওয়া যাবে না।
তিনি বলেন, দেশে ৫৩ বছরের রাজনীতিতে বহু সরকার দেখেছে, বহু প্রধানমন্ত্রী দেখেছে জনগণ। নির্বাচনের আগে বহু আশা-আকাঙ্ক্ষার কথা বললেও ক্ষমতায় গিয়ে সব ভুলে যায়।
রাষ্ট্র সংস্কারের পরেই নির্বাচন হবে। নির্বাচন ও সংস্কারকে মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে একটি মহল রাজনৈতিক সুবিধা আদায়ের চেষ্টা করছে।
তিনি আরো বলেন, দেশের মানুষের উন্নয়নের জন্য নির্বাচিত সরকার যেমন প্রয়োজন। আবার সংস্কারও প্রয়োজন। রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য আত্মসুদ্ধি ও আত্মসংযমের সময় এখন।
সাধারণ মানুষের কাছে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরার সময় এখন। কাজেই জাতীয় নির্বাচনের আগে প্রয়োজনীয় সংস্কার করা জরুরি।
ভিপি নুর বলেন, বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, গণঅধিকার পরিষদসহ দেশে প্রায় ৫০টির মতো নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল রয়েছে। আমরা যখন নির্বাচন চাইব তখনই নির্বাচন হবে। তাছাড়া প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ইতিমধ্যে নির্বাচনের সম্ভাব্য তারিখ ঘোষণা করেছেন, আগামী ডিসেম্বর অথবা পরের বছরের জুন মাসের মধ্যে নির্বাচন হবে। আশা করছি সংস্কার শেষে নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই দেশে নির্বাচন হবে। আমার মতে দলীয় প্রধান ও রাষ্ট্রের প্রধান এক ব্যক্তি হতে পারবেন না। সরকারের মেয়াদ হতে হবে ৪ বছর।
সিংগাইর উপজেলা গণধিকার পরিষদের সভাপতি আলামিন দেওয়ানের সভাপতিত্বে জনসভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খান। তিনি বলেন, আমাদের দল থেকে তিনটি দাবি জানিয়েছি, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা, গণহত্যার বিচার ও প্রয়োজনীয় সংস্কারের পর নির্বাচন।
সিংগাইর উপজেলা গণধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান হাবুর সঞ্চালনায় জনসভায় অন্যন্যের মধ্যে বক্তব্য দেন, গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক জাহিদুর রহমান বিশ্বাস, শ্রমিক অধিকার পরিষদের সভাপতি আব্দুর রহমান, যুব অধিকারের সাধারণ সম্পাদক নাদিম হাসন, ছাত্র অধিকার পরিষদের যুগ্ম-সম্পাদক সবুজ হোসেন ও দপ্তর সম্পাদক মো. তোহা। এসময় গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ সদস্য হাবিবুর রহমান রিজু, মাহফুজুর রহমান খান ও গণধিকার পরিষদের ঢাকা বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. তোফাজ্জল হোসেন, মানিকগঞ্জ জেলা গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি হাসান আলী, সিংগাইর যুব অধিকার পরিষদের সভাপতি শহিদুল ইসলাম, সিংগাইর ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি মনির হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক খায়রুল ইসলাম মুরাদসহ গণঅধিকার পরিষদ কেন্দ্রীয় জেলা এবং স্থানীয় বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।