ঢাকা, রবিবার ১৩ এপ্রিল ২০২৫
৩০ চৈত্র ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৬

ঢাকা, রবিবার ১৩ এপ্রিল ২০২৫
৩০ চৈত্র ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৬

হিজরত পরবর্তী যুগে মদিনার ভূমিব্যবস্থা যেমন ছিল

মাওলানা সাখাওয়াত উল্লাহ
মাওলানা সাখাওয়াত উল্লাহ
শেয়ার
হিজরত পরবর্তী যুগে মদিনার ভূমিব্যবস্থা যেমন ছিল

মহানবী (সা.) যখন হিজরত করে মদিনায় আসেন তখন তিনি ইহুদিদের সঙ্গে বিভিন্ন চুক্তি সম্পাদন করেন। এসবের অন্যতম হলো কেউ কারো বিরুদ্ধে কাউকে সাহায্য করবে না, বরং তিনি কোনো শত্রু দ্বারা আক্রান্ত হলে তারা তাকেই সাহায্য করবে। ভূমিব্যবস্থা নিয়েও সেই সময়ে নানা ধরনের পদক্ষেপ দেখা যায়। হিজরতের পরবর্তী পাঁচ বছরের মধ্যে মদিনা এবং এর আশপাশের সব জমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর অধীনে চলে আসে।

নিম্নে মহানবী (সা.)-এর সময়ে ভূমিব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা করা হলো—

বনু কায়নুকার ভূ-সম্পত্তি : মহানবী (সা.) যখন মদিনায় হিজরত করেন তখন বনু কায়নুকা, বনু নজির ও বনি কুরায়জা নামের তিনটি সম্প্রদায়ের ইহুদিরা মদিনায় বসবাস করত। তারা সবাই মদিনা সনদে স্বাক্ষর করে। পরে তারা সনদের শর্ত ভঙ্গ করে মহানবী (সা.) ও মুসলিমদের সর্বনাশের জন্য মক্কার কাফিরদের সঙ্গে গোপন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়। এ ছাড়া তাদের সুদভিত্তিক অর্থনীতি, যা তারা মদিনায় চালু করে রেখেছিল, তা বন্ধ হওয়ার উপক্রম হওয়ায় তারা ক্ষেপে যায়।

বনু কায়নুকা গোত্র একজন মুসলিম নারীর ইজ্জত নষ্ট করলে মহানবী (সা.) তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণে বাধ্য হন। রাসুলুল্লাহ (সা.) তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন। ১৫ দিন পর্যন্ত দুর্গে পরিবেষ্টিত অবস্থায় থাকার পর বনু কায়নুকা রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর হাতে আত্মসমর্পণ করে। তিনি তাদের দেশ থেকে নির্বাসিত করে গনিমতস্বরূপ তাদের যাবতীয় বিষয়-সম্পত্তি মুসলমানদের মধ্যে বণ্টন করে দেন।

বনু নজিরের ভূ-সম্পত্তি : রাসুলুল্লাহ (সা.) মুহাম্মদ বিন মাসলামাকে নির্দেশ দেন—‘তুমি ইহুদিদের গিয়ে বলো, যেহেতু তোমরা আমাদের সঙ্গে ওয়াদা ভঙ্গ করেছ; তাই আমাদের এলাকা থেকে বেরিয়ে যাও।’ (তাবারি) অতঃপর রাসুলুল্লাহ (সা.) বনু নজিরকে ১৫ দিন ঘেরাও করে রাখেন।...শেষ পর্যন্ত তারা রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর দাবি মেনে নেয় এবং এই শর্তে আপস-মীমাংসা করে যে তাদেরকে হত্যা করা হবে না, অবশ্য বাসগৃহ ও জমিজমা থেকে তাদের বেদখল করে সিরিয়া প্রান্তরে নির্বাসন দেওয়া হবে। (তাবারি)

রাসুলুল্লাহ (সা.) তাদের এই প্রার্থনা মঞ্জুর করেন। ফলে তারা নিজেদের সব অস্থাবর সম্পত্তি উটের পিঠে করে নিয়ে যায়।

তারা তাদের ঘরের দরজা, এমনকি চৌকাঠ পর্যন্ত খুলে নিয়ে গিয়েছিল। (তারিখে তাবারি, পৃষ্ঠা-১৪৫২)

ঐতিহাসিক মাসউদির মতে, উপরোক্ত ঘটনা চতুর্থ হিজরির রবিউল আউয়াল মাসে সংঘটিত হয়েছিল। (মাসউদি, আত তানবিহ ওয়াল আশরাফ)

রাসুলুল্লাহ (সা.) বনু নজিরের ভূ-সম্পত্তির নিরঙ্কুশ মালিক হলেন বটে, কিন্তু তা নিজের দখলে না রেখে মুহাজিরদের মধ্যে বণ্টন করে দিলেন। ওই জমি থেকে তিনি আবুবকর, আবদুর রহমান বিন আউফ, আবু দাজানা প্রমুখকে জায়গির প্রদান করেছিলেন। (ফুতুহল বুলদান, পৃষ্ঠা-১৮)

বনু কুরায়জা : বনু কুরায়জা মদিনার ইহুদিদের মধ্যে একটি শক্তিশালী গোত্র ছিল। এরা খুবই বেঈমান ও বিশ্বাসঘাতক ছিল। খন্দকের যুদ্ধের সময় এরা আক্রমণকারী কাফির কুরাইশদের সমর্থন করে। অতঃপর বনু কুরায়জার সম্পত্তি রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর অধীনে আসে। তারা খন্দকের যুদ্ধে মুসলমানদের বিরুদ্ধে কুরাইশকে সাহায্য করেছিল বলে রাসুলুল্লাহ (সা.) তাদের ওপর আক্রমণ পরিচালনা করেন। ১৫ দিন পর্যন্ত মুসলমানদের দ্বারা পরিবেষ্টিত থাকার পর তারা সাদ বিন মুআজ (রা.)-এর ওপর তাদের ফয়সালার ভার দিয়ে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর হাতে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়। সাদ বিন মুআজ (রা.) শেষ পর্যন্ত ফয়সালা করেন যে বনু কুরায়জার সব পুরুষকে হত্যা করা হবে এবং তাদের স্ত্রীলোক ও ছেলেমেয়েদের ক্রীতদাসে পরিণত করে তাদের স্থাবর-অস্থাবর সব সম্পত্তি মুসলমানদের মধ্যে বণ্টন করে দেওয়া হবে।(বালাজুরি, ফুতুহুল কুলদান; (তাবারি, পৃষ্ঠা-১৪৯২)

এবং রাসুলুল্লাহ (সা.) সেগুলো সমানুপাতিক হারে মুসলমানদের মধ্যে বণ্টন করে দিয়েছিলেন। (কিতাবুল আমওয়াল, পৃষ্ঠা-২৮২ ও ৬৯৩)

মোট কথা, হিজরতের পরবর্তী পাঁচ বছরের মধ্যে মদিনা এবং এর আশপাশের সব জমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর অধীনে চলে আসে। যেসব জমি যুদ্ধ মারফত দখল করা হয়েছিল, তিনি সেগুলো মুসলমানদের মধ্যে বণ্টন করে দেন এবং যেগুলো যুদ্ধ ছাড়াই অধিকৃত হয়েছিল সেগুলো রাষ্ট্রের সম্পত্তিতে পরিণত হয়। রাসুলুল্লাহ (সা.) নিজ অধিকারবলে মুহাজির ও নিঃস্ব আনসারদের এ থেকে ভূমিদান করেছিলেন। (কিতাবুল আমওয়াল, পৃষ্ঠা-২৮২ ও ৬৯৩)

খায়বরের ভূ-সম্পত্তি : হিজরতের সপ্তম বর্ষের প্রথম দিকে খায়বরের উর্বর অঞ্চল এবং তার খেজুরের বাগানগুলো রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর অধীনের আসে। খায়বরের অধিবাসীরা বেশ কিছুদিন মুসলমানদের দ্বারা পরিবেষ্টিত থাকার পর এই শর্তে আত্মসমর্পণ করে যে তাদের ক্ষমা করে দেওয়া হবে এবং তাদের ছেলেমেয়েদেরও বন্দি করা হবে না। অবশ্য তারা জমি, সোনা, রুপা ও অন্যান্য মাল-সম্পদ মুসলমানদের হাতে সোপর্দ করে দেশ ছেড়ে চলে যাবে। তারা শুধু ওই সব সম্পদ সঙ্গে করে নিয়ে যাবে, যা তাদের দেহের সঙ্গে আছে। (ফুতুহল বুলদান, চতুর্থ অধ্যায়, পৃষ্ঠা-২৩)

খায়বরের জমিকে ৩৬ অংশে বিভক্ত করা হয়, যার প্রতিটি অংশ আবার শত অংশে বিভক্ত ছিল। ১৮টি অংশ মুসলমানদের ভাগে পড়ে, যা তারা সমানুপাতিক হারে নিজেদের মধ্যে বণ্টন করে নেয়। এর একটি সাধারণ অংশ রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর ছিল। বাকি ১৮ অংশ অতিথি-মেহমান ও রাষ্ট্রদূতদের ব্যয়ভার বহন এবং রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর অন্য যেসব প্রয়োজন দেখা দিত সেগুলো পূরণের জন্য নির্দিষ্ট করে রাখা হয়। (ফুতুহুল বুলদান, পূর্বোক্ত, পৃষ্ঠা-২৬)

জমিগুলো যখন রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর অধীনে আসে তখন শ্রমিকের অভাব থাকায় তিনি সেগুলো আধি হিসেবে (অর্ধেক উৎপাদন মালিকের এবং অর্ধেক শ্রমিকের) ইহুদিদের দিয়ে দেন। এই কর্মধারা আবু বকর (রা.)-এর খিলাফতকালেও বহাল থাকে। ওমর (রা.) যখন খলিফা হন তখন যেহেতু মুসলমান শ্রমিকের অভাব ছিল না তাই তিনি ইহুদিদের সিরিয়ার দিকে নির্বাসিত করে তাদের সব ভূ-সম্পত্তি মুসলমানদের মধ্যে বণ্টন করে দেন। (আবু উবায়েদ কাসিম বিন সালাম, কিতাবুল আমওয়াল, পৃষ্ঠা-৫৬; ফুতুহুল বুলদান পৃষ্ঠা-২৬)

এই ইহুদিদের বিতাড়িত করার পেছনে আরো অনেক কারণ ছিল, সেগুলোর মধ্যে তাদের গাদ্দারি এই বিতাড়নের পেছনে প্রধান কারণ।

ওয়াদিউল কুরার ভূ-সম্পত্তি : রাসুলুল্লাহ (সা.) খায়বর থেকে প্রত্যাবর্তনের সময় ওয়াদিউল কুরায় পদার্পণ করে সেখানকার অধিবাসীদের ইসলামের দাওয়াত দেন। কিন্তু তারা এ দাওয়াত অস্বীকার করে তাঁর বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত হয়। শেষ পর্যন্ত রাসুলুল্লাহ (সা.) জয়ী হন এবং ওয়াদিউল কুরার সব ধন-সম্পদ গনিমত হিসেবে লাভ করেন। তিনি এ থেকে এক-পঞ্চমাংশ গ্রহণ করেন এবং শস্যক্ষেত ও খেজুরবাগানগুলো তাদের হাতেই রেখে দেন। তিনি তাদের সঙ্গে সেরূপ সমঝোতা করেন যেরূপ খায়বরবাসীদের সঙ্গে করেছিলেন। (ফুতুহুল বুলদান, পৃষ্ঠা-৩৪)

মক্কায় ভূ-সম্পত্তি : মক্কা বিজয়ের পর রাসুলুল্লাহ (সা.) মুহাজির সাহাবাদের মক্কায় তাদের যেসব ভূ-সম্পত্তি এবং ঘরবাড়ি ছিল তা দখল করে নেওয়ার অনুমতি দেন; তিনি (সা.) সব জমি ও ঘরবাড়িকে মালে গনিমতের অন্তর্ভুক্ত করেননি। (মাসউদি, আত তানভিহ ওয়াল আশরাফ)

তায়েফের ভূ-সম্পত্তি : মক্কা বিজয়ের পর রাসুলুল্লাহ (সা.) তায়েফ ঘেরাও করেন। অতঃপর ঘেরাও প্রত্যাহার করেন। কয়েক মাস পর ইসলাম গ্রহণের উদ্দেশ্যে বনু সাকিফের একদল প্রতিনিধি মদিনায় আগমন করলে তারা তাদের ভূ-সম্পত্তি এবং বিষয়-আশয় সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছ থেকে একটি প্রতিশ্রুতিপত্র লিখিয়ে নেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করে। রাসুলুল্লাহ (সা.) তাদের প্রতিশ্রুতিপত্র লিখিয়ে দেন। ফলে তারা তাদের ভূ-সম্পত্তির ওপর দখলদার থাকে।

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

প্রতিদিনের আমল

ঘুম থেকে উঠে মহানবী (সা.) যে দোয়া পড়তেন

ইসলামী জীবন ডেস্ক
ইসলামী জীবন ডেস্ক
শেয়ার
ঘুম থেকে উঠে মহানবী (সা.) যে দোয়া পড়তেন

মুমিনের সব কাজ ইবাদতের অংশ। তাই ঘুম ও সজাগ সর্বাবস্থায় মহান আল্লাহর স্মরণ জরুরি। ঘুমানোর সময় ও ঘুম থেকে উঠার পর কী দোয়া পড়তে হবে রাসুল (সা.) তা শিখিয়েছেন।

হুজাইফা বিন আল ইয়ামান (রা.) বলেছেন, নবী করিম (সা.) যখন বিছানায় ঘুমাতে যেতেন তখন তিনি বলতেন, 

«باسْمِكَ اللَّهُمَّ أمُوتُ وأَحْيَا» 

উচ্চারণ : বিসমিকা আল্লাহুম্মা আমুতু ওয়া আহইয়া।

অর্থ : ‘হে আল্লাহ, তোমার নামেই আমি মারা যাব এবং জীবিত হব। ’

এবং যখন তিনি ঘুম থেকে জাগ্রত হতেন তখন তিনি পড়তেন, 

 «الْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِيْ أَحْيَانَا بَعْدَ مَا أَمَاتَنَا، وَإِلَيْهِ النُّشُوْرُ»

উচ্চারণ : ‘আলহামদু লিল্লাহিল্লাজি আহইয়ানা বাদা মা আমাতানা ওয়া ইলাইহিন নুশুর। ’ 
‘সব প্রশংসা আল্লাহর জন্য যিনি (ঘুমের মতো) মৃত্যুর পর আমাদেরকে জীবিত করলেন, আর তাঁরই কাছে আমাদের সবার পুনরুত্থান। ’ (বুখারি, হাদিস নম্বর : ৬৩২৪)
 

মন্তব্য

কিয়ামতের দিন যে আমলের ওজন সবচেয়ে বেশি হবে

উম্মে আহমাদ ফারজানা
উম্মে আহমাদ ফারজানা
শেয়ার
কিয়ামতের দিন যে আমলের ওজন সবচেয়ে বেশি হবে

ইসলামে উত্তম চরিত্রের বিশেষ গুরুত্ব ও ফজিলত রয়েছে। মুমিনদের জন্য বিভিন্ন গুণে চরিত্রকে সৌন্দর্যমণ্ডিত করা ঈমানের দাবি। কেননা উত্তম চরিত্র ছাড়া একজন মুমিনের ঈমান পরিপূর্ণ হতে পারে না। ঈমানের পরিপূর্ণতার জন্য উত্তম চরিত্র অর্জন করা অপরিহার্য।

এ সম্পর্কে আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ওই মুমিন ঈমানে পরিপূর্ণ, যার চরিত্র সর্বোত্তম। (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস : ৪৬৮২)

আমাদের সমাজে মানুষের সর্বোত্তম হওয়ার বিভিন্ন মাপকাঠি আছে। বিভিন্নজনের কাছে ভিন্ন মাপকাঠিতে ভিন্ন ধরনের মানুষ সর্বোত্তম। কিন্তু ইসলামের দৃষ্টিতে সর্বোত্তম হওয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ মাপকাঠি হচ্ছে উত্তম চরিত্র।

এ ব্যাপারে আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) বলেন, নবী (সা.) অশ্লীলভাষী ও অসদাচরণের অধিকারী ছিলেন না। তিনি বলতেন, তোমাদের মধ্যে সেই ব্যক্তিই সর্বোত্তম, যার চরিত্র সর্বোত্তম। (বুখারি, হাদিস : ৩৫৫৯)

রাসুল (সা.) ছিলেন সর্বোত্তম চরিত্রের অধিকারী। তিনি কখনো কারো সঙ্গে খারাপ আচরণ করেননি।

চরিত্রবান মানুষকে তিনি ভালোবাসতেন। তাই রাসুল (সা.)-এর প্রিয় মানুষদের কাতারে শামিল হতে চাইলে উত্তম চরিত্রের অধিকারী হওয়া আবশ্যক। উত্তম চরিত্রের সর্বোত্তম নমুনা ছিলেন রাসুল (সা.)। আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) জন্মগতভাবে বা ইচ্ছাপূর্বক অশ্লীলভাষী ছিলেন না। তিনি বলেছেন, তোমাদের মধ্যে ওই ব্যক্তি আমার কাছে সবচেয়ে প্রিয়, যে সর্বোত্তম চরিত্রের অধিকারী।
(বুখারি, হাদিস : ৩৭৫৯)

উত্তম চরিত্রের সওয়াব এত বেশি, যা আমরা কল্পনাও করতে পারি না। কিয়ামতের দিন মানুষের সওয়াব ও গুনাহ পরিমাপের জন্য দাঁড়িপাল্লায় ওজন করা হবে। সেদিন যে আমলের ওজন সবচেয়ে বেশি ভারী হবে তা হলো উত্তম চরিত্র। এ সম্পর্কে আবু দারদা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, কিয়ামতের দিন মুমিনের দাঁড়িপাল্লায় উত্তম চরিত্রের চেয়ে বেশি ওজনের আর কোনো জিনিস হবে না। কেননা আল্লাহ অশ্লীল ও কটুভাষীকে ঘৃণা করেন। (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ২০০২)

উত্তম চরিত্রের সওয়াব ওজনে সবচেয়ে বেশি ভারী হওয়ার রহস্য আরেকটি হাদিস থেকে জানা যায়। এক ব্যক্তি সারা দিন সাওম পালন করে এবং সারা রাত নফল সালাত পড়ে যেরূপ সওয়াব পায়, মহান আল্লাহ উত্তম চরিত্রের বদৌলতে সেরূপ সওয়াব দান করেন। আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসুল (সা.)-কে বলতে শুনেছি, নিশ্চয়ই মুমিন ব্যক্তি তার ভালো চরিত্রের মাধ্যমে (দিনে) সাওম পালনকারী ও (রাতে) নামাজ আদায়কারীর মর্যাদা লাভ করতে পারে। (আবু দাউদ, হাদিস : ৪৭৯৮)

জান্নাতে মানুষের আমল অনুযায়ী সম্মানজনক জায়গায় অধিষ্ঠিত করা হবে। যার আমল যত ভালো হবে, সে তত বেশি সম্মানিত হবে। রাসুল (সা.) নিজে উত্তম চরিত্রবানদের জন্য জান্নাতের সর্বোচ্চ স্থানে ঘর বরাদ্দের জিম্মাদারি নিয়েছেন। এ বিষয়ে আবু উমামা (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি ন্যায়সংগত হওয়া সত্ত্বেও ঝগড়া পরিহার করবে, আমি তার জন্য জান্নাতের বেষ্টনীর মধ্যে একটি ঘরের জিম্মাদার। আর যে ব্যক্তি তামাশার ছলেও মিথ্যা বলে না, আমি তার জন্য জান্নাতের মাঝখানে একটি ঘরের জিম্মাদার এবং যে ব্যক্তি তার চরিত্রকে সৌন্দর্যমণ্ডিত করেছে, আমি তার জন্য জান্নাতের সর্বোচ্চ স্থানে অবস্থিত একটি ঘরের জিম্মাদার।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ৪৮০০)

মন্তব্য

আজকের নামাজের সময়সূচি, ১৩ এপ্রিল ২০২৫

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
আজকের নামাজের সময়সূচি, ১৩ এপ্রিল ২০২৫

আজ রবিবার ১৩ এপ্রিল ২০২৫, ৩০ চৈত্র ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৬

ঢাকা ও এর পার্শ্ববর্তী এলাকার নামাজের সময়সূচি নিম্নরূপ—

জোহর সময় শুরু- ১২টা ৩ মিনিট। 

আসরের সময় শুরু - ৪টা ৩০ মিনিট।

মাগরিব- ৬টা ২৩ মিনিট।

এশার সময় শুরু - ৭টা ৩৯ মিনিট।

আগামীকাল ফজর শুরু - ৪টা ২৩ মিনিট।

আজ ঢাকায় সূর্যাস্ত - ৬টা ১৯ মিনিটে এবং আগামীকাল সূর্যোদয়- ৫টা ৪০ মিনিটে।

সূত্র : ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার, বসুন্ধরা, ঢাকা।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য
প্রশ্ন-উত্তর

মৃত ব্যক্তির আকিকা দেওয়া জায়েজ আছে কি?

ইসলামী জীবন ডেস্ক
ইসলামী জীবন ডেস্ক
শেয়ার
মৃত ব্যক্তির আকিকা দেওয়া জায়েজ আছে কি?

প্রশ্ন : মৃত ব্যক্তির আকিকা দেওয়া জায়েজ আছে কি?

-আতিক, মিরপুর

উত্তর : আকিকা জীবিত ব্যক্তির জন্য মুস্তাহাব। মৃত ব্যক্তির আকিকা করা মুস্তাহাবের অন্তর্ভুক্ত নয়, তাই তাতে আকিকার সওয়াব পাওয়া যাবে না। (রদ্দুল মুহতার : ৬/৩৩৬, ফয়জুল বারি : ৪/৩৩৭)

সমাধান : ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার বাংলাদেশ, বসুন্ধরা, ঢাকা

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ