হাদিসের কথা

রমজানে স্ত্রীর সঙ্গে শয্যাযাপন করলে যা করণীয়

ইসলামী জীবন ডেস্ক
ইসলামী জীবন ডেস্ক
শেয়ার
রমজানে স্ত্রীর সঙ্গে শয্যাযাপন করলে যা করণীয়

রমজান মাসে রোজা রাখা একটি ফরজ বিধান। এ সময় সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত পানাহার ও স্ত্রী সম্ভোগ থেকে বেঁচে থাকা কর্তব্য। এমনকি কেউ ইচ্ছাকৃত এসব কাজ করে রোজা ভঙ্গ করলে তাকে কাফফারা দিতে হবে। এর কাফফারা হলো, দাসমুক্তি বা লাগাতার দুই মাস রোজা রাখা বা ৬০ জন অভাবীকে খাবার দেওয়া।

হাদিস শরিফে এসেছে,

- أنَّ رجلًا أفطر في رمضانَ في زمنِ النبيِّ صلَّى اللهُ عليهِ وسلَّمَ فأمره رسولُ اللهِ صلَّى اللهُ عليهِ وسلَّمَ أن يُكفِّر بعتقِ رقبةٍ أو صيامِ شهرين متتابعين أو إطعامِ ستين مسكينًا فقال لا أجدُ فأُتيَ رسولُ اللهِ صلَّى اللهُ عليهِ وسلَّمَ بعَرَقٍ فيه تمرٌ فقال خُذ هذا فتصدقْ به فقال يا رسولَ اللهِ إني لا أجدُ أحدًا أحوجَ إليه مني فضحِك رسولُ اللهِ صلَّى اللهُ عليهِ وسلَّمَ حتى بدت أنيابُه ثم قال كُلْهُ

আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেছেন, এক ব্যক্তি রাসুল (সা.)-এর কাছে এসে বলল, আমি ধ্বংস হয়ে গেছি। তিনি বললেন, তোমার কী হয়েছে? ওই ব্যক্তি বলল, আমি রমজান মাসে আমার স্ত্রীর সঙ্গে সহবাস করেছি। তিনি বলেন, তুমি কি একজন দাস মুক্ত করতে পারবে? ওই ব্যক্তি বলল, না। তিনি বলেন, তাহলে তুমি কি দুই মাস লাগাতার রোজা রাখতে পারবে? ওই ব্যক্তি বলল, না।

তিনি বলেন, তুমি কি ষাটজন অভাবীকে খাবার খাওয়াতে পারবে? ওই ব্যক্তি বলল, না। তখন রাসুল (সা.) বলেন, তাহলে তুমি বসো। ওই ব্যক্তি বসে থাকে। এরপর রাসুল (সা.)-এর কাছে একটি ঝুড়ি আসে যেখানে খেজুর ছিল।
রাসুল (সা.) বলেন, এটাও না এবং সদকা কোরো। ওই ব্যক্তি বলল, আমার চেয়ে বেশি অভাবীর কাছে? তখন রাসুল (সা.) হেসে ফেলেন। এমনকি তার মাড়ির দাঁত দেখা যায়। অতঃপর রাসুল (সা.) বলেন, ‘তুমি তা তোমার পরিবারকে খাওয়াবে।’ (বুখারি, হাদিস : ৬৭০৯)

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

নতুন টাকা কেনাবেচা কি জায়েজ?

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
নতুন টাকা কেনাবেচা কি জায়েজ?
সংগৃহীত ছবি

এসেছে ঈদ। আনন্দ আর সুখময়তায় মুখর হবে পরিবেশ। যারা রোজা রেখেছে তাদের আনন্দ সবচেয়ে বেশি। তারা দয়াময় আল্লাহর থেকে ঈদের দিন আজর বা প্রতিদান পাবেন।

ঈদ উপলক্ষে নতুন টাকা কেনাবেচার প্রচলন রয়েছে আমাদের দেশে। ঈদ ছাড়াও আমাদের দেশে নতুন টাকা কেনাবেচা হয়। বেশিভাগ মানুষ ঈদে ছোটদের সালামি দেওয়ার জন্য নতুন নোট কিনে থাকেন। নতুন এ নোট কেনার জন্য অনেক সময় অতিরিক্তি টাকা দিতে হয়।
ইসলামে এ কেনাবেচার বিধান কী? যেহেতু কাগজের নোট পণ্য নয়, তাই ইসলামে এই ব্যবসার অনুমোদন নেই। 

ইসলামী আইন ও ফেকাহশাস্ত্রবিদরা এটাকে নাজায়েজই বলেছেন। ইসলামে এক প্রকারের দুটি জিনিস কমবেশি ক্রয়-বিক্রয় করা নাজায়েজ। কারণ, এ রকম লেনদেনে অতিরিক্ত অংশ সুদ হয়ে যায়।


 
তাই আলেমরা, একে সুদি কারবারের অন্তর্ভুক্ত বলে গণ্য করেন। এ ধরনের ব্যবসায় জড়িত হওয়া কোনোভাবেই জায়েজ হবে না। কারণ টাকা বা কাগজের নোট পণ্য নয়, বরং এটি মূল্য, তাই এ নিয়ে ব্যবসা করার অনুমোদন নেই ইসলামে।

আরো পড়ুন
অভিনেত্রীর ১৪ মিনিটের ভিডিও ফাঁস!

অভিনেত্রীর ১৪ মিনিটের ভিডিও ফাঁস!

 

তবে অনেক উলামায়ে কেরাম নতুন টাকা সংগ্রহের একটা পদ্ধতিকে জায়েজ বলেন অপারগতার ক্ষেত্রে। একেবারে অপারগতার ক্ষেত্রে নতুন টাকা সংগ্রহ করার পরিশ্রম বাবদ কিছু টাকা পারিশ্রমিক হিসেবে দেওয়া যেতে পারে।

শর্ত হলো স্পষ্টভাবে উল্লেখ করে দিতে হবে যে অতিরিক্ত অর্থ দেওয়া হচ্ছে নতুন টাকা সংগ্রহের পারিশ্রমিক হিসেবে, নতুন টাকার মূল্য হিসেবে নয়। শুধু টাকাপয়সা বা সোনা-রুপার ক্ষেত্রেই নয়, যেকোনো বস্তুর ক্ষেত্রেই একই জিনিস কমবেশি করে বেচাকেনা করা বৈধ নয়।

আরো পড়ুন
ঈদ জামাতের জন্য প্রস্তুত শোলাকিয়া

ঈদ জামাতের জন্য প্রস্তুত শোলাকিয়া

 

দেশি মুদ্রা একই প্রকারের হওয়ায় পরস্পর কমবেশিতে বেচাকেনা ইসলামের দৃষ্টিতে নিষিদ্ধ। অতিরিক্ত অংশ সুদ হিসেবে গণ্য হবে। (আদদুররুল মুখতার ৫/১৭১-১৭২, বুহুসুন ফি কাজায়া ফিকহিয়্যা ১/১৬৩)

মন্তব্য

রমজানের শেষ মুহূর্তে আল্লাহর ডাক, আপনি কি প্রস্তুত

আইয়ূব হুসাইন
আইয়ূব হুসাইন
শেয়ার
রমজানের শেষ মুহূর্তে আল্লাহর ডাক, আপনি কি প্রস্তুত

রমজান বিদায়ের পথে, সময়ের চাকা দ্রুত ঘুরে চলছে। কিন্তু এখনো আপনার জন্য দুয়ার খোলা। হয়তো আপনি এখনো গভীরভাবে রমজানের মাহাত্ম্য অনুভব করতে পারেননি, ইবাদতে একাগ্রতা খুঁজে পাননি, অন্তরে প্রশান্তির পরশ লাগেনি। চারপাশে মানুষ ইবাদতে মশগুল, কেউ কোরআন তিলাওয়াতে রত, কেউ লাইলাতুল কদরের সন্ধানে রাত জাগরণে মগ্ন।

অথচ আপনার হৃদয় যেন শূন্য, আবেগহীন, কাঠিন্যে মোড়ানো! তবে সুখবর হলো—আল্লাহর রহমত এতটাই বিশাল যে তিনি মুহূর্তের মধ্যে আপনার অবস্থান বদলে দিতে পারেন। তিনি বলেন, ‘হে আমার বান্দারা! যারা নিজেদের ওপর জুলুম করেছ, তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ সব গুনাহ মাফ করে দেন। তিনি ক্ষমাশীল, দয়ালু।

’ (সুরা : আজ-জুমার, আয়াত : ৫৩)

এই আয়াত কি যথেষ্ট নয় আমাদের জন্য—যেখানে মহান রব নিজেই ডাকছেন, ‘তোমরা নিরাশ হয়ো না!’ তাহলে আমরা কেন তার রহমত থেকে মুখ ফিরিয়ে নেব?

লাইলাতুল কদর—এক রাতের ইবাদতে ৮৪ বছরের সওয়াব

এখন রমজানের শেষ দশকের গুরুত্বপূর্ণ রাতগুলো পার হচ্ছে। হতে পারে, এটাই লাইলাতুল কদর! যে রাত সম্পর্কে আল্লাহ ঘোষণা করেছেন : ‘নিশ্চয়ই আমি কদরের রাতে কোরআন নাজিল করেছি। আর তুমি কী জানো কদরের রাত কী? কদরের রাত হলো এক হাজার মাসের চেয়েও উত্তম!’ (সুরা : আল-কদর, আয়াত : ১-৩)

ভাবুন, এই রাতে যদি আপনি নফল নামাজ পড়েন, একটি তাসবিহ বলেন, একটি দোয়া করেন—আপনার আমলনামায় ৮৪ বছরের ইবাদতের সওয়াব লেখা হবে! এমন সুবর্ণ সুযোগ আর কোথায় পাওয়া যাবে?

তাওবার দরজা এখনো খোলা

হয়তো আপনি ভাবছেন—‘আমি অনেক গুনাহ করে ফেলেছি, আল্লাহ কি আমাকে মাফ করবেন?’ রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন—‘যে ব্যক্তি অন্তর থেকে খাঁটি মনে তাওবা করে, আল্লাহ তার গুনাহ এমনভাবে মাফ করে দেন, যেন সে কখনো সেই পাপ করেনি।’ (ইবন মাজাহ, হাদিস : ৪২৫০)

সুতরাং, আপনি যতই পাপ করে থাকুন না কেন, এই মুহূর্তে যদি আল্লাহর দরবারে ফিরে আসেন, তিনি আপনাকে ক্ষমা করবেন।

শেষ সময়ে বিজয়ীর মতো ছুটুন

আমাদের পূর্বসূরিরা রমজানের শেষ দশকে নিজেদের আরো বেশি ইবাদতে ডুবিয়ে দিতেন। আয়েশা (রা.) বলেন, ‘নবী (সা.) যখন রমাদানের শেষ দশকে প্রবেশ করতেন, তখন তিনি রাত জাগতেন, পরিবারের সবাইকে জাগাতেন এবং ইবাদতে অধিক মনোযোগী হতেন।’ (বুখারি, হাদিস : ২০২৪)

আমরা কি সেই সুন্নাহকে অনুসরণ করব না?

এখনো সময় আছে—আল্লাহর কাছে ফিরে যান। অনেকেই মনে করেন, ‘আরেকটা বছর আসবে, তখন ভালোভাবে ইবাদত করব।’ কিন্তু আপনি কি নিশ্চিত যে আপনি আরেকটি রমজান পাবেন?

রাসুল (সা.) বলেছেন : ‘সুযোগ থাকতেই পাঁচটি জিনিসকে গ্রহণ করো—(১) বৃদ্ধ হওয়ার আগে তোমার যৌবনকে, (২) অসুস্থ হওয়ার আগে তোমার সুস্থতাকে, (৩) দরিদ্র হওয়ার আগে তোমার সম্পদকে, (৪) ব্যস্ত হওয়ার আগে তোমার অবসরকে, (৫) মৃত্যুর আগে তোমার জীবনকে।

’ (হাকিম, হাদিস : ৭৮৪৬) 

এখনো সময় আছে! আল্লাহর দিকে ফিরে যান, তাহাজ্জুদের মিহরাবে দাঁড়ান, হাত তুলে দোয়া করুন, অশ্রু ঝরান, কোরআনে মনোযোগ দিন।
এই রমজান হতে পারে আপনার জীবনের শ্রেষ্ঠ রমজান

রমজান শেষ হয়ে যাচ্ছে, কিন্তু এই শেষ সময়ে আপনি যে আমল করবেন, সেটাই হতে পারে আপনার জান্নাতের চাবিকাঠি। হাদিসে আছে, ‘যে ব্যক্তি শেষ সময়ে ভালো আমল নিয়ে মৃত্যুবরণ করে, সে ভালো পরিণতি লাভ করবে।’ (তিরমিজি, হাদিস : ২১৪১)

এখনো সময় আছে—নিজেকে বদলানোর, আল্লাহর দিকে ফিরে যাওয়ার, কদরের রাতের সর্বোচ্চ ফায়দা নেওয়ার।

উঠুন, ফিরে আসুন! রমজান চলে যাচ্ছে, কিন্তু আপনার সুযোগ এখনো শেষ হয়নি। ইতিহাসে অনেক মানুষ জীবনের শেষ সময়ে আমল বাড়িয়ে বিজয়ী হয়েছেন। আপনি কি সেই তালিকায় থাকতে চান না?

আল্লাহ আপনাকে ডাকছেন। আপনি কি সাড়া দেবেন?

মন্তব্য
কোরআন থেকে শিক্ষা

দ্বিন পালনে অনীহা মুমিনের বৈশিষ্ট্য নয়

ইসলামী জীবন ডেস্ক
ইসলামী জীবন ডেস্ক
শেয়ার
দ্বিন পালনে অনীহা মুমিনের বৈশিষ্ট্য নয়

আয়াতের অর্থ : ‘আমি সুস্পষ্ট নিদর্শন অবতীর্ণ করেছি, আল্লাহ যাকে ইচ্ছা সরল সঠিক পথ প্রদর্শন করেন। তারা বলে, আমরা আল্লাহ ও রাসুলের প্রতি ঈমান আনলাম এবং আমরা আনুগত্য স্বীকার করলাম। কিন্তু তারপর তাদের একদল মুখ ফিরিয়ে নেয়; বস্তুত তারা মুমিন নয়... যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের আনুগত্য করে, আল্লাহকে ভয় করে এবং তাঁর অবাধ্যতা থেকে সাবধান থাকে তারাই সফলকাম।’ (সুরা : নুর, আয়াত : ৪৬-৫২)

আয়াতগুলোতে মুনাফিকের বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করা হয়েছে।

শিক্ষা ও বিধান

১. কোরআন অনুধাবনের জন্য ব্যক্তির বুদ্ধিমত্তা ও বিচক্ষণতা যথেষ্ট নয়, এ জন্য আল্লাহর দয়া ও অনুগ্রহ আবশ্যক।

২. যারা মুখে নিজেকে মুসলিম দাবি করে কিন্তু অন্তরে কুফরি বিশ্বাস ও মতবাদ লালন করে কোরআনের ভাষায় তারা মুমিন নয়।

৩. নিফাকের একটি প্রমাণ হলো যাপিত জীবনে দ্বিন পালনে অনীহা এবং মানবজীবনের যেকোনো স্তরে শরিয়তের বিধান ও সমাধান গ্রহণে অস্বীকৃতি।

৪. দ্বিন-শরিয়তের ওপর অন্য কিছুকে প্রাধান্য দেওয়া এবং কোনো কিছুকে ইসলামের চেয়ে উত্তম মনে করা নিফাকের নিদর্শন।

৫. মুসলিম শাসক যদি দ্বিন ও শরিয়তের বিরুদ্ধাচরণ না করে তবে তার আনুগত্য করা উচিত এবং অবাধ্য হওয়া অনুচিত। তারা আল্লাহর অবাধ্য হলে তাদেরও অবাধ্য হওয়া যাবে। (তাফসিরে ইবনে কাসির : ৪৬-৫২)
 

মন্তব্য
প্রতিদিনের আমল

আমল কবুল হওয়ার দোয়া

ইসলামী জীবন ডেস্ক
ইসলামী জীবন ডেস্ক
শেয়ার
আমল কবুল হওয়ার দোয়া

মহান আল্লাহ মুমিনের সব আমলের উত্তম প্রতিদান দেন। তবে ওই আমল অবশ্য আল্লাহর কাছে কবুল হতে হয়। এ জন্য আল্লাহর কাছে আমল কবুল হওয়ার দোয় করা উচিত। মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন,

رَبَّنَا تَقَبَّلُ مِنَّا إِنَّكَ أَنْتَ السَّمِيعُ الْعَلِيمُ

অর্থ : ‘হে আমাদের রব, আমাদের (ভালো কাজ) কবুল করুন।

নিশ্চয়ই আপনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞানী।’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ১২৭)

অন্য আয়াতে ইরশাদ হয়েছে, মহান আল্লাহ বলেন,

رَبَّنَا آتِنَا فِي الدُّنْيَا حَسَنَةً وَ فِي الْآخِرَةِ حَسَنَةً وَقِنَا عَذَابَ النَّارِ

অর্থ: ‘হে আমাদের রব, আমাদের দুনিয়া ও আখিরাতে কল্যাণ দান করুন এবং আমাদের জাহান্নামের শাস্তি থেকে রক্ষা করুন।’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ২০১)

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ