তিস্তা নদীর পানির বাংলাদেশের ন্যায্য হিস্যা আদায় ও তিস্তা মেগা প্রকল্প অবিলম্বে বাস্তবায়নের দাবিতে দুই দিনের সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি।
আগামী ১৭ ও ১৮ ফেব্রুয়ারি তিস্তা নদী তীরবর্তী অঞ্চলে এই কর্মসূচি পালন করা হবে। এর উদ্বোধন করবেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং সমাপনী অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি বক্তব্য দেবেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
আজ মঙ্গলবার বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান এসব তথ্য জানিয়েছেন।
কর্মসূচির সার্বিক তত্ত্বাবধান করবেন রংপুর বিভাগের বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক মন্ত্রী আসাদুল হাবিব দুলু।
শায়রুল কবির খান কালের কণ্ঠকে জানান, উত্তরাঞ্চল খরা পিড়িত এলাকায় ১৯৩৭ সাল তিস্তা ব্যারেজ নির্মাণ পরিকল্পনা হয়। কিন্তু দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭৯ সালে বাংলাদেশ অংশে ব্যারেজ নির্মাণ শুরু করেন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। ১৯৮৫ সালে সৌদি উন্নয়ন ও আইডিবির তহবিলে ১৯৯০ নির্মাণ শেষ হয়।
ওই বছরের ৫ আগস্ট ব্যারেজ চালু হয়। এতে উত্তরাঞ্চলের ৫ লাখ ৪০ হাজার হেক্টর জমিতে সেচ সুবিধা পাওয়া যায়।
আসাদুল হাবিব দুলু কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘ভারত উজানে ব্যারেজ নির্মাণ করার ফলে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী পানির ন্যায্য হিস্যা পাচ্ছে না। এতে তিস্তা অঞ্চলে শুষ্ক মৌসুমে পানির অভাবে থাকে।
আর বর্ষা মৌসুমে তিস্তার দুই কূল ডুবে কৃষকের ক্ষতি হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা এটাকে বলছি লাগাতার জনসমাবেশ। কর্মসূচিতে সেমিনার, পদযাত্রা, আমাদের ওই অঞ্চলের হারিয়ে যাওয়া খেলাধুলা, জারিগান, সারি গান থাকবে। যেখানে তিস্তার জীবন কাহিনী ও ঘটনা উঠে আসবে। যা লালমনিরহাট, নীলফামারীসহ পাঁচ জেলার ১১ স্থানে অনুষ্ঠিত হবে।
মূল অনুষ্ঠান হবে তিস্তা ব্রিজ আর রেল সেতুর মাঝের যে চর সেখানে। যেখানে তাঁবু স্থাপন করা হবে।’
জানা গেছে, এই কর্মসূচির মাধ্যমে আগামী দিনে রাজনৈতিকভাবে ভারতকে চাপে রাখা যাবে মনে করেন বিএনপি। তারা বলছেন, চীনের অর্থায়নে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে ভারত চাপে থাকবে।
তবে বিএনপি এটাও মনে করছে, তিস্তা মহাপরিকল্পনায় যদি ভারত অর্থায়ন করে, তাহলে দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্কেরও উন্নয়ন ঘটবে।
এর আগে ২০১৪ সালের ২২ এপ্রিল তৎকালীন বিএনপি ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নেতৃত্বে তিস্তা অভিমুখে লং-মার্চ করেছিল। সেই সময় উত্তরা থেকে লং-মার্চ গাড়িবহর যাত্রা শুরু হয়। যাওয়ার পথে গাজীপুর কালিয়াকৈর, টাঙ্গাইল বাইপাস মোড়, সিরাজগঞ্জ, বগুড়া, গাইবান্ধা গোবিন্দগঞ্জ ও পলাশবাড়ী পথসভা অনুষ্ঠিত হয়।
২২ এপ্রিল রাতে রংপুরে যাত্রাবিরতি করে, পরদিন রংপুরে সমাবেশ করা হয়। পরে নীলফামারীর ডালিয়া ব্যারেজ অভিমুখে লংমার্চের যাত্রা শুরু হয়। ডালিয়ায় সমাবেশের মধ্য দিয়ে দুই দিনের কর্মসূচি শেষ করে বিএনপি।