দুপুর ৩টায় শুনলাম পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ভারত। ৪টার মধ্যে দেখলাম বাজারে পেঁয়াজের দাম বেড়ে গেল। অথচ পেঁয়াজের আমদানি শুল্ক প্রত্যাহারের ৯ দিন পরে এসে দাম কমেছে ১০ টাকা। দেখার কেউই নেই!— শুক্রবার বাজার করতে এসে এমনটিই বলছিলেন বেসকারি চাকরিজীবী আশরাফুল আলম।
শুল্ক প্রত্যাহারের ৯ দিন পর কিছুটা কমল পেঁয়াজের দাম
নিজস্ব প্রতিবেদক

পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণে আনতে গত ৬ নভেম্বর আমদানির ওপর থেকে শুল্ক-কর সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। তবে ৯ দিন পেরিয়ে গেলেও এর প্রভাব সামান্যই।
রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ভারত থেকে ব্যাপকভাবে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হওয়ায় গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম কিছুটা কমেছে। গত সপ্তাহে দেশি পেঁয়াজ প্রতি কেজি মানভেদে ১৪০ থেকে ১৬০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়।
এদিকে দাম না বাড়লেও চড়া মূল্যেই বিক্রি হচ্ছে রসুন।
বাজারে পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকার পরও বেশ কিছু শীতের সবজির দাম এখনো চড়া। প্রতিটি ফুলকপি ও বাঁধাকপি ৫০ থেকে ৬০ টাকা, শিম প্রতি কেজি ১২০ থেকে ১৪০ টাকা, ঢেঁড়স ৭০ থেকে ৮০ টাকা, টমেটো ১৫০ থেকে ১৮০ টাকা, পটোল ৬০ টাকা, শসা ৭০ থেকে ৮০ টাকা। লাউ প্রতি পিস ৬০ থেকে ৭০ টাকা। বেগুন মানভেদে প্রতি কেজি ৮০ থেকে ১২০ টাকা, চিচিঙ্গা ৭০ থেকে ৮০ টাকা, করলা ৯০ থেকে ১০০ টাকা, ঝিঙা ৮০ থেকে ১০০ টাকা। নতুন আলু প্রতি কেজি ১২০ টাকা, পুরনো আলু ৭০ থেকে ৭৫ টাকা, বরবটি ১০০ থেকে ১২০ টাকা, কাঁচা মরিচ ১৬০ থেকে ২০০ টাকা, লতা ৮০ টাকা। মিষ্টি কুমড়ার কেজি ৭০ থেকে ৮০ টাকা।
সম্পর্কিত খবর

অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান
অনিশ্চয়তার মধ্যে আমাদের বিনিয়োগ-কর্মসংস্থান
অনলাইন ডেস্ক

বাংলাদেশে কর্মসংস্থান ও বিনিয়োগ একটা অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছে বলে জানিয়েছেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের সম্মানীয় ফেলো ও খ্যাতনামা অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান।
সম্প্রতি বেসরকারি টেলিভিশন নিউজ টোয়েন্টিফোরকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন তিনি।
দেশের অর্থনীতি নিয়ে এক প্রশ্নে জবাবে অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, গত কয়েক বছরে শুধুমাত্র প্রান্তিক মানুষ না, এখানে নিম্ন মধ্যবিত্ত, মধ্যবিত্ত যারা আছেন, তারাও মূল্যস্ফীতির একটা চাপের মধ্যে আছেন। আমাদের কর্মসংস্থান-বিনিয়োগ এগুলোও একটা অনিশ্চয়তার মধ্যে আছে।
তিনি বলেন, আমদানি আরো একটু উদার করা সম্ভব হচ্ছে, যেটা নিয়ন্ত্রিত করতে হয়েছিল বাধ্য হয়ে। ব্যাংকিং সেক্টরকে কিছুটা পুনর্গঠন করা, সংস্কার করা; এগুলো সহজ না এবং এগুলো এই সরকারও পারবে বলে মনে হয় না।
আপনারা তো শ্বেতপত্র করলেন এবং সেখানে আপনি সদস্য ছিলেন। তার মূল্যায়ন বর্তমান সরকার কিভাবে করেছে বা করছে- এমন প্রশ্নে জবাবে এই অর্থনীতিবিদ বলেন, আমাদের ম্যানডেট ছিল ‘স্টেট অব দ্য ইকোনোমি’টা কি? প্রকৃত অবস্থা কি- আমরা সেটা বের করার চেষ্টা করেছি।
তিনি আরো বলেন, আমরা যেরকম আশা করেছিলাম আশানুরূপভাবে হয়নি। এখন প্রত্যেক মন্ত্রণালয়কে বলা হচ্ছে, একটা হলেও সংস্কার যাতে তারা বাস্তবায়ন করেন।

এক পাঞ্জাবির দাম ৪ লাখ, শাড়ি দেড় লাখ টাকা! যা বলছেন বিক্রেতারা
অনলাইন ডেস্ক

রাজধানীর একটি ফ্যাশন আউটলেটে চার লাখ টাকায় বিক্রি করছে একটি পাঞ্জাবি। অন্য একটি ফ্যাশন আউটলেটে শাড়ির দাম দেড় লাখ টাকা। এখন প্রশ্ন উঠছে, পাঞ্জাবি ও শাড়ির কী বিশেষত্ব রয়েছে যে, এত দামে বিক্রি করতে হয়েছে? এ ছাড়া কারা এসব পাঞ্জাবি ও শাড়ির ক্রেতা?
বিক্রেতারা বলছেন, পাঞ্জাবি ও শাড়ির বেশি দাম হওয়ার অন্যতম কারণ উন্নতমানের কাপড় ও দক্ষ কারিগরের নিপুণ কাজ। এ ছাড়া পারসেপশন ভ্যালুকেও কেউ কেউ দাম বেশি হওয়ার কারণ হিসেবে জানিয়েছেন।
তারা জানান, ব্যবসায়ী, চাকরিজীবী নারী-পুরুষ থেকে শুরু করে কলেজ শিক্ষার্থীরাও এসব পাঞ্জাবি ও শাড়ির ক্রেতা। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের আগে দেশের প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতারাই ছিলেন এসব দামি পোশাকের অন্যতম ক্রেতা। সরকার পতনের পর এসব দামি পোশাকের বিক্রিতে ভাটা পড়েছে।
রাজধানীর বনানীর কয়েকটি ফ্যাশন আউটলেট ঘুরে বেশি দামি পাঞ্জাবি ও শাড়ি এ তথ্য জানা গেছে।
প্রিমিয়াম ফ্যাশন ব্র্যান্ড আনজারায় চার হাজার টাকা থেকে শুরু করে ৯৫ হাজার টাকার পাঞ্জাবি রয়েছে। তাদের আউটলেটে কাফতান শাড়ির দাম ১৪ হাজার ৮০০ থেকে ১৬ হাজার ৮০০ টাকা।
একই এলাকায় আরেকটি ব্র্যান্ড জেকে ফরেন পাঞ্জাবি ও থ্রি-পিস বিক্রি করছে সর্বোচ্চ ৬০ হাজার টাকায়। এই দোকানে ৩৫ হাজার থেকে দেড় লাখ টাকায় বিক্রি হচ্ছে শাড়ি।
আনজারার জনসংযোগ ব্যবস্থাপক নওশিন নাওয়ার জানিয়েছেন, তাদের কাপড়ে হাতের মাধ্যমে এমব্রয়ডারির কাজ করা হয়। এ ছাড়া ভালো মানের ফেব্রিক, নিখুঁত ডিজাইন ও ডায়িংয়ের কারণে দাম বেশি।
কয়েকটি দোকানের বিক্রয়কর্মীরা জানান, ঈদকে ঘিরে ভারত ও পাকিস্তানি পোশাকের ব্যাপক চাহিদা থাকে। ক্রেতাদের এই চাহিদা মেটাতে ব্র্যান্ডগুলো প্রতিবেশী দেশগুলো থেকে প্রিমিয়াম পোশাক আমদানি করে মজুত রেখেছিল।
তারা জানান, রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর দামি পোশাকের বিক্রিতে ভাটা পড়েছে।
বনানীর আবায়া অ্যান্ড গাউন ব্র্যান্ডের ম্যানেজার মোহাম্মদ আবু সাঈদ সাদ্দাম বলেন, আমরা নিজেরাই এসব পণ্য তৈরি করি। পাশাপাশি কিছু পণ্য দুবাই ও চীন থেকে আনা হয়।
নিখুঁত ডিজাইন ও ভালো ফেব্রিক শুধু নয় পারসেপশন ভ্যালুকে দাম বেশি হওয়ার অন্যতম কারণ হিসেবে দেখছেন দেশীয় ব্র্যান্ড কে ক্রাফটের পরিচালক খালিদ মাহমুদ খান। তিনি বলেন, বেশি দামের পেছনে অন্যতম একটি কারণ হলো পারসেপশন ভ্যালু। এটা একটা মনস্তাত্ত্বিক বিষয়। এখানে শুধু উৎপাদন খরচ কত সেটা বিষয় নয়।
জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কার্যক্রম ও গবেষণাগার বিভাগের পরিচালক ফকির মুহাম্মদ মুনাওয়ার হোসেন বলেন, বিশ্বের কোথাও মুক্ত বাজার অর্থনীতিতে দাম নির্ধারণের লিগ্যাল ফ্রেম নেই। যদিও বাংলাদেশে সরকার কিছু নিত্যপণ্যের ক্ষেত্রে দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে।
তিনি বলেন, যদি কোনো ক্রেতা মনে করেন তিনি দামের ক্ষেত্রে প্রতারিত হয়েছেন, তাহলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ভুক্তভোগী জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরে অভিযোগ করতে পারেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক সেলিম রায়হান বলেন, বাংলাদেশে বিক্রি হওয়া উচ্চমূল্যের পণ্য নিয়ে যথেষ্ট প্রশ্ন রয়েছে। এই দামগুলো আদৌ ন্যায্য কি না, সেই প্রশ্ন রয়েছে এবং বিক্রেতারা সবসময় এর স্পষ্ট ব্যাখ্যা দিতে পারেন না। সরকারের যথাযথ নজরদারির অভাবে কিছু ব্যবসায়ী এর সুযোগ নিচ্ছেন।

স্টার্টআপের আওতায় সর্বোচ্চ এক কোটি টাকা ঋণ দিতে পারে ব্যাংক
মো. জয়নাল আবেদীন

বেকার সমস্যা সমাধানে উদ্ভাবনী ও নতুন উদ্যোগের কোনো বিকল্প নেই। তবে নতুন উদ্যোগ বা ব্যবসা শুরুর জন্য সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধকতা তহবিল সংকট। বিনিয়োগের জন্য গঠিত স্টার্টআপ ফান্ডে এক হাজার কোটি টাকার বেশি পড়ে থাকলেও তা কাজে লাগানো হচ্ছে না। বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী, এই ফান্ড থেকে গত সাড়ে চার বছরে বিনিয়োগ হয়েছে মাত্র ৪৩ কোটি টাকা।
উদ্ভাবনী উদ্যোগকে উৎসাহিত করতে তিন বছর আগে ২০২১ সালের মার্চে বিনা জামানতে মাত্র ৪ শতাংশ সুদে ঋণ দেওয়ার উদ্যোগ নেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। কর্মসংস্থান ও উৎপাদন বাড়াতে ‘স্টার্টআপ ফান্ড’ নামে ৫০০ কোটি টাকার একটি পুনরর্থায়ন তহবিল গঠন করা হয়। একই সঙ্গে প্রতি ব্যাংকের নিট মুনাফা থেকে ১ শতাংশ আলাদা রেখে নিজস্ব স্টার্টআপ তহবিল গঠন করতে বলা হয়। ব্যাংকগুলো সব মিলিয়ে ৫০৫ কোটি টাকার ফান্ড গঠনও করেছে।
দুটি মিলিয়ে গত আগস্ট পর্যন্ত স্টার্টআপে ঋণ দেওয়ার জন্য গঠিত তহবিলের আকার দাঁড়িয়েছে এক হাজার পাঁচ কোটি টাকা। অথচ গত সাড়ে চার বছরে ঋণ বিতরণ হয়েছে মাত্র ২৭ কোটি টাকা।
স্টার্টআপ বলতে বাজারজাত করার জন্য নতুন পণ্য, সেবা, প্রক্রিয়া বা প্রযুক্তির উদ্ভাবন ও অগ্রগতিকে বোঝায়। এ পর্যন্ত শেয়ারট্রিপ, চালডালের মতো হাতে গোনা কয়েকটি প্রতিষ্ঠান স্টার্টআপের বিশেষ কর্মসূচির আওতায় কম সুদের ঋণ পেয়েছে।
বর্তমানে যেকোনো উদ্যোগে ঋণ নিতে যেখানে প্রায় সাড়ে ১৬ শতাংশ সুদ গুনতে হচ্ছে। আবার ঋণের বিপরীতে জমি বা অন্য কোনো স্থাবর সম্পত্তি জামানত রাখা লাগে। স্টার্টআপ তহবিল থেকে শুধু ব্যক্তিগত গ্যারান্টি, শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ কিংবা কারিগরি প্রশিক্ষণের সনদ ব্যাংকের কাছে জামানত রেখে মাত্র ৪ শতাংশ সুদে ঋণ নেওয়া যায়।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, স্টার্টআপ তহবিল থেকে ঋণ নেওয়ার জন্য আগ্রহী অনেকে বিভিন্ন সময় বাংলাদেশ ব্যাংকে যোগাযোগ করেছেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, স্টার্টআপ একেবারে নতুন উদ্যোগ হওয়ায় ব্যাংকগুলো ঋণ দেওয়াকে ঝুঁকিপূর্ণ মনে করে। আবার এ ধরনের কর্মসূচি থেকে ঋণ দিতে গেলে অনেক ধরনের নিয়ম মানতে হয়। বাংলাদেশ ব্যাংক কেস ধরে ধরে পরিদর্শন করে। এ ছাড়া কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মসূচির আওতায় বিতরণ করা ঋণ গ্রাহক থেকে আদায় হোক বা না হোক, নির্ধারিত সময় শেষে বাংলাদেশ ব্যাংক তার অ্যাকাউন্ট থেকে কেটে নেয়। এসব কারণে উদ্ভাবনী উদ্যোগের জন্য গঠিত তহবিল দীর্ঘদিন ধরে পড়ে আছে।’
প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী গত আগস্ট পর্যন্ত ৫২টি ব্যাংক নিট মুনাফার ১ শতাংশ হারে দিয়ে ৫০৫ কোটি ৪৩ লাখ টাকার তহবিল গঠন করেছে। এর মধ্যে ২৭টি ব্যাংক ১৫৩টি প্রকল্পে দিয়েছে মাত্র ৪৩ কোটি টাকা। যদিও গত ডিসেম্বরে এর পরিমাণ ছিল ২৬ কোটি ৯০ লাখ। ২৫টি ব্যাংক এক টাকার ঋণও দেয়নি। ফলে ব্যাংকের নিজস্ব তহবিলেই ৪৬২ কোটি টাকা পড়ে আছে। অন্যদিকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক গঠিত ৫০০ কোটি টাকার পুরোটাই পড়ে আছে।
ঋণের জন্য যারা উপযুক্ত
সম্পূর্ণ নতুন ও সৃজনশীল উদ্যোগের জন্য ঋণ আবেদন করা যায়। বয়স যদি ২১ থেকে ৪৫ বছরের মধ্যে হয়, তাহলে ব্যাংকের শাখায় আবেদন করতে পারেন উদ্যোক্তারা। যে কাজের জন্য তাঁরা ঋণ নিতে আগ্রহী, সেই ব্যবসা পরিচালনা, বাজারজাতসহ কারিগরি বিষয়ে প্রশিক্ষণের সনদ থাকতে হবে। একজন গ্রাহককে সর্বোচ্চ এক কোটি টাকা ঋণ দেওয়া যাবে। তবে পুরো ঋণ একবারে বিতরণ করা যাবে না। প্রকল্পের অগ্রগতি পর্যালোচনা করে কমপক্ষে তিন কিস্তিতে বিতরণ করতে হবে। একই গ্রাহককে একাধিক ব্যাংক বা একের বেশি প্রকল্পের জন্য ঋণ দেওয়া যাবে না।
ঋণ বাড়াতে যা ভাবা হচ্ছে
স্টার্টআপের আওতায় ঋণ বাড়াতে নীতিমালায় শিথিলতাসহ বিভিন্ন বিষয় ভাবছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এ ক্ষেত্রে বিদ্যমান বয়সসীমা ২১ থেকে ৪৫ বছরের শর্ত শিথিল করে ৫০ বছর পর্যন্ত বয়সী ব্যক্তিকে ঋণ দেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে। আবার একজন উদ্যোক্তার ঋণ নেওয়ার সর্বোচ্চ সীমা এক কোটি টাকা থেকে বাড়িয়ে দুই কোটি টাকা করা হতে পারে। এ ছাড়া অন্তত তিন কিস্তিতে ঋণ বিতরণের যে শর্ত রয়েছে, তা তুলে দিয়ে ব্যাংকার-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে কিস্তি অথবা এককালীন বিতরণের সুযোগ রাখা হচ্ছে। স্টার্টআপের সংজ্ঞা পরিবর্তনের মাধ্যমে আরো কিছু বিষয় ঋণের আওতায় আনা হতে পারে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) সভাপতি ও ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সেলিম আর এফ হোসেন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘স্টার্টআপে বিনিয়োগ করা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। কারণ ১০ স্টার্টআপের মধ্যে ৯টাই ফেল করে। তাই ব্যাংকগুলো এখানে বিনিয়োগ করতে চায় না। এসব জায়গায় বিনিয়োগ করার কথা বিভিন্ন ভেঞ্চার ক্যাপিটালের। তারা পুঁজিতে বিনিয়োগ করতে পারে। আর ব্যাংক মূলত ঋণ দেয় বা চলতি ব্যবসায় বিনিয়োগ করে। তাই স্টার্টআপে বিনিয়োগের এই উদ্যোগ সফলতার মুখ দেখেনি। ভবিষ্যতেও দেখবে কি না তাতে সন্দেহ আছে।’

ঈদের কেনাকাটা
অভিজাত বিপণিবিতানের ৮০ শতাংশই ডিজিটাল পেমেন্ট
মো. জয়নাল আবেদীন

আলোয় আলোয় সেজেছিল শহরের বিভিন্ন সড়ক, বিপণিবিতান আর সুপারশপ। হেসেছে কৃত্রিম চাঁদ আর তারা। লাল-নীল বাতির ঝলমলে আলো মার্কেটগুলোতে তৈরি করেছিল আলাদা আকর্ষণ। ঈদের আগেই যেন ঈদের আমেজ ফুটে উঠেছিল রাজধানীজুড়ে।
নতুন পোশাকে নিজেকে সাজাতে প্রতিটি মার্কেটে ভিড় করেছে শিশু, নারী, তরুণ, যুবকসহ নানা বয়সের মানুষ। শপিংয়ের আনন্দ দ্বিগুণ করেছে ডিজিটাল পেমেন্টে হরেক রকম অফার। তাই তো এক বছরের ব্যবধানে অভিজাত বিপণিবিতানগুলোতে ডিজিটাল লেনদেন বেড়ে ৮০ শতাংশ পর্যন্ত পৌঁছেছে।
ঈদুল ফিতর সামনে রেখে ক্রেতারা কার্ড ও মোবাইল ফিন্যানশিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) ব্যবহার করে কেনাকাটা বাড়িয়েছেন।
কর্মকর্তারা বলছেন, ক্যাশলেস পেমেন্টের বিভিন্ন সুবিধা ও নিরাপত্তা, সেই সঙ্গে ব্যাংক ও এমএফএসগুলোর দেওয়া ডিসকাউন্ট ও অফার ক্রমেই বাড়তে থাকাসহ বেশ কয়েকটি কারণে ক্যাশলেস লেনদেন বাড়ছে। তাঁরা বলছেন, করোনা মহামারির সময় থেকেই নগদবিহীন লেনদেন বেড়েছে আগের থেকে অনেক বেশি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে এটিএম, পিওএস, সিআরএম ও ই-কমার্সভিত্তিক লেনদেন ছিল ৪০ হাজার ৮৩৯ কোটি টাকা। গত জানুয়ারিতে সেটি বেড়ে ৪৩ হাজার ৫৯৪ কোটি টাকায় পৌঁছেছে।
অন্যদিকে গত জুলাই মাসে মোবাইল ফিন্যানশিয়াল সার্ভিস বা এমএফএসের মাধ্যমে মোট এক লাখ ২২ হাজার ৯২৩ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছিল। কিন্তু সাত মাসের ব্যবধানে তা ৩৯.৬৫ শতাংশ বেড়ে মোট লেনদেন এক লাখ ৭১ হাজার ৬৬৪ কোটি টাকায় পৌঁছেছে।
ব্যাংকগুলো এখন ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে ঈদের পোশাক, জুতা, গয়নাসহ বিভিন্ন পণ্য কেনাকাটায় ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় দিচ্ছে।
রাজধানীর বেইলি রোডে অবস্থিত ইনফিনিটি, রিচম্যান ও লুবনান শোরুমের ক্যাশিয়ার ফয়সাল আহমেদ কালের কণ্ঠকে জানান, এখানে বেশির ভাগ গ্রাহকই কার্ডে পেমেন্ট করেছেন। কেউ কেউ বিকাশ বা নগদে। ক্যাশ পেমেন্টের পরিমাণ খুবই কম। ৮০ শতাংশের বেশি গ্রাহক এখানে ডিজিটাল পেমেন্ট করেছেন।
একই এলাকায় অবস্থিত আরেক অভিজাত বিপণিবিতান আর্টিসান। কাপড়ের দোকান হিসেবে দেশজুড়ে খ্যাতি আছে তার। আর্টিসানের ম্যানেজার শাকিল খান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমাদের শোরুমে ৮০ শতাংশ গ্রাহকই ডিজিটাল পেমেন্ট করেছেন। যদিও আগের বছর এই হার আরো কম ছিল।’
রাজধানীর তেজগাঁও এলাকার জুলফিকার শাহীন বলেন, ‘কার্ডের কোনো বিকল্প নেই। নগদ টাকা বহনের ঝক্কি ঝামেলা করার চেয়ে কার্ডে পেমেন্ট করাই ভালো।’
তেজগাঁওয়ের আড়ংয়ের একজন বিক্রয় প্রতিনিধি জানান, ‘আমাদের এখানে ৭০ শতাংশের বেশি অনলাইন পেমেন্ট হয়েছে।