ব্যবসা গোটাচ্ছে নোভার্টিসও, বৈচিত্র্য হারাচ্ছে দেশের ওষুধ খাত

শেয়ার
ব্যবসা গোটাচ্ছে নোভার্টিসও, বৈচিত্র্য হারাচ্ছে দেশের ওষুধ খাত
সংগৃহীত ছবি

পশ্চিমা বহুজাতিক ওষুধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান গ্ল্যাক্সোস্মিথক্লাইন, নুভিস্তা ও সানোফির পর এবার বাংলাদেশ ছাড়ছে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক নোভার্টিস এজি। নোভার্টিস বাংলাদেশ লিমিটেডে (এনবিএল) নিজেদের মালিকানাধীন শেয়ার শীর্ষস্থানীয় দেশীয় ওষুধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান রেডিয়েন্ট ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের কাছে হস্তান্তর করবে। নোভার্টিস চলে যাওয়ার পর বাংলাদেশে স্থানীয় কারখানা থাকা একমাত্র বিদেশি ওষুধ প্রস্তুতকারক কম্পানি হবে ভারতীয় সান ফার্মার সহযোগী প্রতিষ্ঠান সান ফার্মা বাংলাদেশ।

বাজারজাতকরণে অসুস্থ প্রতিযোগিতায় টিকতে না পেরে বাংলাদেশ থেকে ব্যবসা গুটিয়ে নেওয়ার কথা জানিয়েছিল একটি বহুজাতিক ওষুধ কম্পনি।

একের পর এক বিদেশি ওষুধ কম্পানি দেশ থেকে ব্যবসা গুটানোয় বৈচিত্র্য হারাচ্ছে দেশের ওষুধ খাত, সেই সঙ্গে গবেষণালব্ধ ওষুধ প্রাপ্তির ব্যাপ্তিও কমে যাচ্ছে। তবে বাংলাদেশ ওষুধশিল্প মালিক সমিতির নেতারা দাবি করছেন, বিদেশি ওষুধ কম্পানিগুলোই এ দেশে অনৈতিক বিপণন ব্যবস্থা চালু করেছে।

বেশ কয়েক বছর আগেই ফাইজার, ফাইসন্স, স্কুইবসহ বড় বড় কয়েকটি বিদেশি ওষুধ কম্পানি বাংলাদেশ থেকে তাদের বিনিয়োগ গুটিয়ে নিয়েছে। ২০১৮ সালের জুলাই মাসে বাংলাদেশ ছাড়ে যুক্তরাজ্যভিত্তিক ওষুধ কম্পানি গ্লক্সোস্মিথক্লাইন।

গত বৃহস্পতিবার রাজধানীর একটি হোটেলে নোভার্টিস সুইজারল্যান্ড ও রেডিয়েন্ট ফার্মাসিউটিক্যালসের মধ্যে শেয়ার হস্তান্তর চুক্তি স্বাক্ষর হয়।

চুক্তি অনুযায়ী নোভার্টিস বাংলাদেশ লিমিটেডের ৬০ শতাংশ শেয়ার অধিগ্রহণ করেছে স্থানীয় ওষুধ কম্পানি রেডিয়েন্ট ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড। বাকি ৪০ শতাংশ শেয়ার যথারীতি বাংলাদেশ সরকারের হাতেই থাকবে। সরকারের পক্ষে প্রতিষ্ঠানটিতে প্রতিনিধিত্ব করছে বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশন (বিসিআইসি)।

সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান নোভার্টিস এজি তাদের ব্যবসার বৈশ্বিক কৌশলের অংশ হিসেবে বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের ব্যবসা স্থানীয় প্রতিষ্ঠানের কাছে হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সে পরিপ্রেক্ষিতে এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।

নোভার্টিসের এশিয়া অঞ্চলের প্রধান কেভিন জো ও রেডিয়েন্ট ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক লে. জে. সিনা ইবনে জামালী (অব.) নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। এ সময় রেডিয়েন্ট ফার্মাসিউটিক্যালসের চেয়ারম্যান মো. নাসের শাহরিয়ার জাহেদী, বিজনেস কনসোর্টিয়াম লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবু শাহরিয়ার জাহেদী, রেডিয়েন্ট ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদ সদস্য ও ফার্মাসিল লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুসাওয়াত শামস জাহেদী, রেডিয়েন্ট কেয়ার লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. এ কিউ এম মহিউদ্দিন ও উপব্যবস্থাপনা পরিচালক তাসফিয়া জাহেদী উপস্থিত ছিলেন। নোভার্টিস সুইজারল্যান্ডের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন সায়মন ইয়াং, এরিক ক্যারিও ও ড্যানিয়েল চে।

বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশনের পরিচালক (অর্থ) ও যুগ্ম সচিব মো আব্দুর রাজ্জাকসহ রেডিয়েন্ট ফার্মাসিটিক্যালসের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারাও এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

চুক্তির বিষয়ে রেডিয়েন্ট ফার্মাসিউটিক্যালসের চেয়ারম্যান মো. নাসের শাহরিয়ার জাহেদী বলেন, এই চুক্তির মাধ্যমে বাংলাদেশের ওষুধ খাতে এক নতুন দিগন্তের সূচনা হলো। যাত্রার শুরু থেকেই রেডিয়েন্ট গুণগত মানসম্পন্ন ওষুধ মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে কাজ করে চলেছে। এই চুক্তি রেডিয়েন্টের সেই প্রচেষ্টাকে আরো শক্তিশালী করবে। রেডিয়েন্ট ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড দেশের শীর্ষস্থানীয় ওষুধ প্রস্তুতকারী এবং রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে অন্যতম। রেডিয়েন্ট ফার্মার সাড়ে ছয় হাজারেরও বেশি কর্মী রয়েছে।

এ ছাড়া প্রতিষ্ঠানটির পোর্টফলিওতে ১০০-এর বেশি নিবন্ধিত ব্র্যান্ড এবং ১২টি আন্তর্জাতিক অংশীদার রয়েছে। এই মালিকানা স্থানান্তর দীর্ঘমেয়াদে উভয় প্রতিষ্ঠানের টেকসই উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে এবং ভবিষ্যৎ প্রবৃদ্ধির শক্তিশালী ভিত্তি হিসেবে কাজ করবে।

রেডিয়েন্টের ছয় হাজার ৫০০-এরও বেশি কর্মী রয়েছে এবং এর পোর্টফোলিওতে ১০০টির বেশি নিবন্ধিত ব্র্যান্ড ও এক ডজন আন্তর্জাতিক অংশীদার রয়েছে।

নোভার্টিস বাংলাদেশ এবং এর সহযোগী প্রতিষ্ঠান স্যান্ডোজ বাংলাদেশের বার্ষিক টার্নওভার প্রায় ৪০০ কোটি টাকা। ৭৫ শতাংশ রাজস্ব স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত পণ্য থেকে আসে, বাকি ২৫ শতাংশ আসে আমদানি করা পণ্য থেকে।

মন্তব্য

প্রতিদ্বন্দ্বী ভার্সাচিকে ১.৩৭ বিলিয়ন ডলারে কিনে নিচ্ছে প্রাদা

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
প্রতিদ্বন্দ্বী ভার্সাচিকে ১.৩৭ বিলিয়ন ডলারে কিনে নিচ্ছে প্রাদা
সংগৃহীত ছবি

বিখ্যাত ইতালিয়ান বিলাসবহুল ফ্যাশন ব্র্যান্ড ‘প্রাদা’ এবার তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী ‘ভার্সাচি’কে কিনতে সম্মত হয়েছে। এ জন্য প্রায় ১.৩৭৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার গুনতে হচ্ছে প্রাদাকে। যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১৬ হাজার ৭১০ কোটি টাকা। 

এই চুক্তিকে ধরা হচ্ছে সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে আলোচিত বিলাসপণ্য অধিগ্রহণ হিসেবে।

বৃহস্পতিবার প্রাদা জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক লাক্সারি প্রতিষ্ঠান ক্যাপরি হোল্ডিংসের কাছ থেকে ভার্সাচিকে তারা অধিগ্রহণ করছে। যার মাধ্যমে এক ছাদের নিচে আসছে ইতালির দুটি প্রভাবশালী ফ্যাশন ব্র্যান্ড।

আরো পড়ুন
দুর্নীতিমুক্ত পরিবেশসহ বিদেশি বিনিয়োগকারীদের একগুচ্ছ প্রস্তাব জামায়াতের

দুর্নীতিমুক্ত পরিবেশসহ বিদেশি বিনিয়োগকারীদের একগুচ্ছ প্রস্তাব জামায়াতের

 

এর আগে ২০১৮ সালে ক্যাপরি হোল্ডিংস প্রায় ২ দশমিক ১৫ বিলিয়ন ডলারে ভার্সাচিকে কিনেছিল। পাঁচ বছর পর তারা যে দামে বিক্রি করছে, তা আগের দামের তুলনায় অনেকটাই কম।

প্রাদা গ্রুপের চেয়ারম্যান প্যাট্রিজিও বেরতেল্লি বলেন, ‘আমরা ভার্সাচির সাহসী ও সময়কে ছাপিয়ে যাওয়া কাজগুলোকে সম্মান জানিয়ে সেটিকে নতুনভাবে তুলে ধরতে চাই। একই সঙ্গে আমরা ব্র্যান্ডটিকে একটি শক্ত ভিত্তি দিতে চাই। যা দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ ও সম্পর্কের ওপর দাঁড়িয়ে।’

গত কিছু সময় ধরে ‘কোয়ায়েট লাক্সারি’ ট্রেন্ডের সঙ্গে তাল মেলাতে হিমশিম খাচ্ছিল ভার্সাচি।

আর সেই সুযোগে বাজারে বেশ ভালো অবস্থান তৈরি করে নেয় প্রাদা। বিশ্লেষকদের মতে, এই চুক্তির ফলে ফ্রান্সের আধিপত্যে থাকা বিলাসপণ্য বাজারে নতুন করে মাথা তুলে দাঁড়াতে পারবে ইতালি।

এখন দেখার বিষয়, প্রাদা-ভার্সাচির এই জোট কিভাবে বদলে দেয় ইউরোপের ফ্যাশন দুনিয়ার মানচিত্র।

তথ্যসূত্র : রয়টার্স

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

৯ রাষ্ট্রীয় ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ পদে পদোন্নতি

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
৯ রাষ্ট্রীয় ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ পদে পদোন্নতি

রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ব্যাংক, বিশেষায়িত ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ৯ কর্মকর্তাকে মহাব্যবস্থাপক পদ থেকে উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে এতে সই করেছেন যুগ্ম সচিব ফরিদা ইয়াসমিন।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, রাষ্ট্র মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ব্যাংক, বিশেষায়িত ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহের নিম্নবর্ণিত মহাব্যবস্থাপকদের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) পদে (জাতীয় বেতন স্কেল, ২০১৫ অনুযায়ী টাকা ৬৬,০০০-৭৬,৪৯০/-) পদোন্নতি প্রদানপূর্বক তাদের নামের পাশে বর্ণিত কর্মস্থলে পদায়ন করা হলো।

এদের মধ্যে সোনালী ব্যাংকের জিএম রেজাউল করিম, মো. নূরুন নবী ও মোহাম্মদ শাহজাহানকে একই ব্যাংকের ডিএমডি এবং সোনালী ব্যাংকের জিএম মো. রফিকুল ইসলামকে বেসিক ব্যাংকের ডিএমডি করা হয়েছে।

অগ্রণী ব্যাংকের জিএম রূবানা পারভীনকে একই ব্যাংকের ডিএমডি এবং অগ্রণী ব্যাংকের জিএম জিএম নুরুল হুদাকে ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশের ডিএমডি হিসেবে পদায়ন করা হয়েছে। সোনালী ব্যাংকের জিএম মো. নজরুল ইসলামকে জনতা ব্যাংকের ডিএমডি, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের জিএম মোহা. খালেদুজ্জামানকে একই ব্যাংকের ডিএমডি করা হয়েছে। জনতা ব্যাংকের জিএম মো. আশরাফুল আলমকে একই ব্যাংকে ডিএমডি হিসেবে পদায়ন করা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘রাষ্ট্র মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ব্যাংক, বিশেষায়িত ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, উপব্যবস্থাপনা পরিচালক ও মহাব্যবস্থাপক পদে নিয়োগ, পদোন্নতি ও পদায়ন নীতিমালা-২০২’ ও সরকার কর্তৃক সময়ে সময়ে জারীকৃত নীতিমালা/প্রজ্ঞাপন দ্বারা পদোন্নতিপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের চাকরি নিয়ন্ত্রিত ও পরিচালিত হবে।

প্রজ্ঞাপনে আরো বলা হয়েছে, জনস্বার্থে জারি করা এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।

মন্তব্য

আসন্ন বাজেটে যৌক্তিকভাবে কর বৃদ্ধি করা হবে : এনবিআর চেয়ারম্যান

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
আসন্ন বাজেটে যৌক্তিকভাবে কর বৃদ্ধি করা হবে : এনবিআর চেয়ারম্যান

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান খান জানিয়েছেন, ‘দেশের উন্নয়নের জন্য রাজস্ব আহরণের চাপ বাড়ছে। আমাদের যৌক্তিকভাবে কর বাড়াতে হবে। বাজেট লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ে, এবার তেমনটি হবে না। সিগনিফিকেন্ট বাজেট হবে।

বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) চট্টগ্রামে প্রাক-বাজেট আলোচনায় ব্যবসায়ীদের এক সভায় তিনি এ কথা বলেন। দুপুরে চিটাগং চেম্বার অব কমার্স ইন্ডাস্ট্রি আয়োজিত আলোচনাসভায় সভাপতিত্ব করেন চেম্বার প্রশাসক মুহাম্মদ আনোয়ার পাশা।

প্রাক-বাজেট আলোচনায় অংশ নিয়ে ব্যবসায়ী নেতারা বলেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর সরকারের নানামুখী পদক্ষেপ ও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের ফলে স্থিতিশীল হচ্ছে দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি। একই সঙ্গে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে কার্যকরী ভূমিকার কারণে নাগালে এসেছে দ্রব্যমূল্য পরিস্থিতিও।

কিন্তু বিভিন্ন সেবা সংস্থায় সাধারণ মানুষ ও ব্যবসায়ীদের হয়রানি কমেনি।’

ব্যবসায়ীরা আসন্ন বাজেটে আমদানি-রপ্তানি পণ্যের ক্ষেত্রে শুল্ক হ্রাস এবং ভ্যাট ট্যাক্স কমিয়ে ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগবান্ধব অর্থনীতি গড়ে তোলার ক্ষেত্রে এনবিআরের সহযোগিতা কামনা করেন।

এনবিআর চেয়ারম্যান ব্যবসায়ীদের আশ্বস্ত করে বলেন, ‘বাজেট যে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ে এবং গতানুগতিক যে বাজেট হয়, এবার তা হবে না।’ ব্যবসায়ীদের ভ্যাট, ট্যাক্স প্রদানের ক্ষেত্রে হয়রানি দূর করে ভ্যাটের রিটার্ন ফ্রিকোয়েন্সি কমিয়ে দেওয়ার আশ্বাসও দেন তিনি।

ভারত বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্য তৃতীয় দেশে পাঠানোর ক্ষেত্রে দীর্ঘদিনের ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এটা আমার দেখার বিষয় নয়। এই নিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কাজ করছে। দীর্ঘদিনের একটা সমস্যা। আমাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্র নিশ্চয়ই এই বিষয় বিবেচনা করবে।’

যারা ব্যবসা-বাণিজ্য করছেন, দেশের জন্য কর্মসংস্থান করছেন—তাদের রিয়েল হিরো বলেও অভিহিত করেন এনবিআর চেয়ারম্যান।

তিনি বলেন, ‘সরকার ১৫ লাখ মানুষকে চাকরি দিয়েছে। বাকি চাকরি বেসরকারি খাতে।’

তিনি বলেন, ‘দীর্ঘদিন অনিয়ম হওয়ায় জটিল হয়েছে। দফায় দফায় জীবন দিতে হয়, এমন জাতি কম আছে। জুলাই অভ্যুত্থান আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়েছে। আমাদের দেশকে সুশৃঙ্খল করতে হবে। বড় বড় ভুল শুধরে নিতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘সহজীকরণের নামে আরো কঠিন করে ফেলছি। অটোমেশনে অনেকে আসতে চাইছে না। এবার অনলাইনে আয়করে ব্যাপক সাড়া পেয়েছি। ১৫ লাখ ৩০ হাজার অনলাইন রিটার্ন পেয়েছি। বন্ডে ব্যাপক সমস্যা আছে। আমরা পুরোপুরি অটোমেশন করতে চাই। কাউকে সরকারি অফিসে যেতে হবে না।’

তিনি আরো বলেন, ‘ভ্যাটের রিটার্ন ফ্রিকোয়েন্সি কমিয়ে দেব। অনলাইনে দিলে সিল আনার পদ্ধতি বাতিল করেছি। ভ্যাট ও আয়করে অডিট সিলেকশনে ব্যক্তি জড়িত থাকবে না। কেউ প্রতারণা করতে পারবে না।’

তিনি আরো বলেন, ‘কর প্রদান অনেক সহজ। কর দিতে কোনো ব্যাংকে যেতে হয় না। সরকারি কোষাগারে টাকা জমা সরাসরি হওয়া উচিত। ১৯৯১ সালে ভ্যাট চালু হয় তখন যে মূল শক্তি ছিল তা কেটে দেওয়া হয়েছিল।’

এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ‘দেশের উন্নয়নের জন্য রাজস্ব আহরণের চাপ বাড়ছে। জনগণের দাবি সঠিক জায়গায় ব্যয় করা। প্রান্তিক জনগণের কাছে সরকারের সেবা পৌঁছাতে পেরেছি। দেশটা পরিবারের মতো। আমাদের যৌক্তিকভাবে কর বাড়াতে হবে। বাজেট লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ে, এবার তেমনটি হবে না। সিগনিফিকেন্ট বাজেট হবে।’

তিনি বলেন, ‘রিফান্ড দেওয়া-নেওয়ার মধ্যে হয়রানি আছে। আমরা এটা অটোমেশন করতে চাই।’

চট্টগ্রাম চেম্বারের প্রশাসক মুহাম্মদ আনোয়ার পাশা সভাপতির বক্তব্যে বলেন, চেম্বারের সুষ্ঠু সুন্দর নির্বাচনের লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি। চেম্বারের পক্ষ থেকে এনবিআরকে আয়কর বিষয়ে ১৯টি, ভ্যাটের ওপর ৪০টি ও শুল্ক সংক্রান্ত ৫৫টি প্রস্তাব দেন তিনি।

সভায় মেট্রোপলিটন চেম্বার সভাপতি খলিলুর রহমান, বিজিএমইএর সাবেক প্রথম সহসভাপতি নাসির উদ্দিন চৌধুরী, চট্টগ্রাম চেম্বারের সাবেক সভাপতি সরওয়ার জামাল নিজাম, চেম্বারের সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি এরশাদ উল্লাহ, রাঙামাটি চেম্বারের নেতা মামুনুর রশিদ ও কক্সবাজার চেম্বার সভাপতি বক্তব্য দেন।

মন্তব্য

ট্রাম্পের শুল্কারোপের পাল্টা প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ নেবে না আসিয়ান

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
ট্রাম্পের শুল্কারোপের পাল্টা প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ নেবে না আসিয়ান
সংগৃহীত ছবি

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত ২ এপ্রিল বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ওপর যে পাল্টা শুল্কারোপ করেছেন তার প্রতিক্রিয়ায় কোনো প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ নেবে না আসিয়ানভুক্ত দেশগুলো।

বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) মালয়েশিয়ায় আসিয়ানভুক্ত দেশগুলোর অর্থমন্ত্রী পর্যায়ের এক বৈঠকের পর দেওয়া যৌথ বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়। আসিয়ানভুক্ত অর্থমন্ত্রীদের বিশেষ এ সভায় সভাপতিত্ব করেন মালয়েশিয়ার বিনিয়োগ, বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রী জাফরুল আজিজ।  

যৌথ বিবৃতিতে জানানো হয়, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘোষিত পাল্টা শুল্কের ফলে আসিয়ান দেশগুলো অপ্রত্যাশিতভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

এমতাবস্থায় ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে দেশগুলো যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে গঠনমূলক আলোচনা চালিয়ে যাবে। 

এতে বলা হয়, বাণিজ্য-সম্পর্কিত উদ্বেগ মোকাবেলায় আমরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে গঠনমূলক সংলাপে অংশগ্রহণের জন্য মতামত ব্যক্ত করেছি। একটি সুষম এবং টেকসই সম্পর্ক নিশ্চিত করার জন্য উন্মুক্ত যোগাযোগ এবং সহযোগিতা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ হবে। মূলত আসিয়ান মার্কিন শুল্কের প্রতিক্রিয়ায় কোনো প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা আরোপ না করার বিষয়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

সভায় সংলাপের প্রাথমিক প্ল্যাটফরম হিসেবে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার প্রতি আস্থা রেখেছে আসিয়ান। ক্রমবর্ধমান বাণিজ্য সংকট রোধ মোকাবেলা এবং সহযোগিতামূলক ও আইনি সমাধানে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার গুরুত্ব তুলে ধরা হয়েছে সভায়।

আরো পড়ুন
পাল্টাপাল্টি উসকানি চলতে থাকলে ভোট সম্ভব নয় ৩ বছরেও

পাল্টাপাল্টি উসকানি চলতে থাকলে ভোট সম্ভব নয় ৩ বছরেও

 

এতে আসিয়ান দেশগুলো জানায়, তারা ‘আসিয়ান বাণিজ্য চুক্তি’ এবং ‘আসিয়ান ডিজিটাল ইকোনমি ফ্রেমওয়ার্ক অ্যাগ্রিমেন্ট’ নবায়নের মাধ্যমে আঞ্চলিক বাণিজ্য আরো বৃদ্ধি করার ওপর মনোনিবেশ করবে।

বিবৃতিতে বলা হয়, আমরা আসিয়ানের বাইরের অংশীদারদের সঙ্গেও অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদার ও সম্প্রসারিত করব এবং নতুন অংশীদারদের সঙ্গে অর্থনৈতিক সহযোগিতার উপায় খুঁজব।

বৈঠকে ভার্চুয়ালি অংশ নিয়ে সিঙ্গাপুরের উপপ্রধানমন্ত্রী গাং কিম ইয়ং বলেন, চলমান বাণিজ্য যুদ্ধ বিশ্ব অর্থনীতিতে তীব্র ভাঙনের ইঙ্গিত দিচ্ছে, আগামীর জন্য অনিশ্চয়তা তৈরি করছে। যা সিঙ্গাপুরসহ এই অঞ্চলের অন্য দেশগুলোর ওপর বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে। আসিয়ানভুক্ত দেশগুলোর সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ থেকে সিঙ্গাপুর এই চ্যালেঞ্জিং সময় পাড়ি দিতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।

সভার পর পৃথক আরেকটি বিবৃতি দিয়েছে মালয়েশিয়ার বিনিয়োগ, বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়। এতে জানানো হয়, মার্কিন-চীন ক্রমবর্ধমান বাণিজ্য উত্তেজনায় আশিয়ান উদ্বিগ্ন।

এতে বড় ধরনের ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। এর ফলে বিশ্বব্যাপী দীর্ঘ মেয়াদে প্রকৃত মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) প্রায় ৭ শতাংশ হ্রাস হতে পারে।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে ভূ-রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় একটি আঞ্চলিক নীতিমালা প্রণয়নে আলোচনা করার জন্য একটি ভূ-অর্থনীতি টাস্কফোর্স প্রতিষ্ঠায় সম্মত হয়েছে আসিয়ান। 

এদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে শুল্ক আরোপে যে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মালয়েশিয়ার সোসিও-ইকোনমিক রিসার্স সেন্টারের নির্বাহী পরিচালক মি. লি হেং গুই। তিনি বলেন, আপাতত শুল্ক স্থগিত করা হলেও ব্যাবসায়িক ঝুঁকি রয়ে গেছে। এই ধরনের অনিশ্চয়তার উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ীরা সঠিকভাবে তাদের ব্যবসার পরিকল্পনা কিভাবে প্রণয়ন করবেন? 

তিনি বলেন, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় রপ্তানিমুখী বাণিজ্যে অনিশ্চয়তা দেশীয় অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলবে, যার ফলে মন্দার আশঙ্কা রয়েছে। ট্রাম্পের শুল্ক স্থগিতাদেশেও আমি সন্দিহান।

এর আগে গত ২ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্রে আমদানি পণ্যের ওপর ব্যাপক শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন ট্রাম্প। যার ফলে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পণ্যের ওপর ১০ শতাংশ থেকে সর্বোচ্চ ৪৯ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করা হয়। পরে ৯ এপ্রিল থেকে এ শুল্ক কার্যকর হয়। কিন্তু কয়েক ঘণ্টা পরে তা ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করা হয়। শুধু চীনের পণ্যে ১২৫ শতাংশ হারে শুল্ক কার্যকর থাকে। এর পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসা পণ্যের ওপর ৮৪ শতাংশ পাল্টা শুল্কারোপ করে বেইজিং।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ