রংপুরের মিঠাপুকুরের বালুয়া মাসিমপুর ইউনিয়নের বেলকোলা-বড়বাড়ি ও চাঁদপাড়া থেকে নজরুল ইসলামে বাড়ি পর্যন্ত সড়কে হেরিং বন্ডের কাজ করছেন চেয়ারম্যান ময়নুল ইসলাম।
এলজিএসপি-৩ প্রকল্পের আওতায় ২৭৬ মিটার করে দুটি কাজে বরাদ্দ রয়েছে ছয় লাখ টাকা। কিন্তু ওই ইউপি চেয়ারম্যান দুই লাখ টাকায় কাজ দুটি শেষ করেছেন বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। অভিযোগ উঠেছে অনিয়ম ও দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে নামমাত্র কাজ করে টাকা আত্মসাৎ করেছেন চেয়ারম্যান ময়নুল ইসলাম।
সরেজমিনে দেখা যায়, চেয়ারম্যানের ঠিক করা রাজমিস্ত্রি ও শ্রমিকরা কাজ করছেন হেরিং বন্ডের। স্থানীয় কাজল মিয়া বলেন, 'দুটি রাস্তার হেরিং বন্ডের কাজে ফার্স্ট ক্লাস ইটের বদলে থার্ড ক্লাস ইট দিয়ে করা হচ্ছে। এজন্য আমরা কাজ থামিয়ে দিয়েছিলাম। কিন্তু চেয়ারম্যান তারপরও কাজটি শেষ করেছেন।
'
চাঁদপাড়া গ্রামের জহুরুল ইসলাম বলেন, 'খারাপ ইট দিয়ে রাস্তার কাজ করা হয়েছে। এতে কয়েকদিন পরই ভেঙে যাবে রাস্তাটি।' একই গ্রামের নজরুল ইসলাম বলেন, 'দীর্ঘদিন ধরে রাস্তাটি খারাপ অবস্থায় রয়েছে। শেষ পর্যন্ত চেয়ারম্যান কাজটি করলেও এলাকাবাসীর তেমন সুফল আসবে না।
কারণ কয়েকদিন পরই নিম্নমানের ইটগুলো ভেঙে যাবে।'
কাজে নিয়োজিত রাজমিস্ত্রি লাল মিয়া বলেন, 'আমাকে কাজটি করার জন্য ২০ হাজার টাকা চুক্তি করা হয়েছে, আমি শুধু কাজ করছি।' তবে থার্ড ক্লাস নয়, সেকেন্ড ক্লাস ইট দিয়ে কাজ করা হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, স্থানীয় একটি ইটভাটা হতে থার্ড ক্লাস ইটগুলো কিনেছেন চেয়ারম্যান ময়নুল ইসলাম। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই ভাটার ব্যবস্থাপক জানান, দুটো রাস্তার কাজ করার জন্য চেয়ারম্যান ৪০ হাজার থার্ড ক্লাস ইট কিনেছেন।
প্রতি হাজার ইট চার হাজার টাকায় বিক্রি করা হয়েছে। হেরিং বন্ডের কাজগুলো দেখভালের দায়িত্ব স্থানীয় সরকার প্রকৌশল দপ্তরের (এলজিইডি)। কিন্তু এলাকায় কাউকে পাওয়া যায়নি।
অভিযুক্ত বালুয়া মাসিমপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ময়নুল হক বলেন, 'ভাটাগুলোতে ইট পাওয়া যাচ্ছে না। তাই ওই ইট দিয়ে কাজটি করা হয়েছে।'
উপজেলা প্রকৌশলী আক্তারুজ্জামান বলেন, 'ফার্স্ট ক্লাস ইট দিয়ে কাজটি করার নিয়ম। চেয়ারম্যান যদি থার্ড ক্লাস ইট দিয়ে করে থাকেন তাহলে তাঁকে পুনরায় কাজটি করতে হবে।'
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মামুন ভূঁইয়া বলেন, 'নিয়মানুযায়ী কাজ না হয়ে থাকলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'