<p>সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সাইনবোর্ড থেকে মেঘনা সেতু পর্যন্ত দাবড়ে বেড়াচ্ছে থ্রি-হুইলার, সিএনজি ও অটোরিকশা। হাইওয়ে পুলিশকে 'ম্যানেজ' করেই মহাসড়কে সরকারের নিষিদ্ধ এসব যানবাহন চলাচল করছে বলে দাবি চালকদের।</p> <p>২০১৫ সালের ১ আগস্ট থেকে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় দেশের ২২টি মহাসড়কে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, অটোটেম্পো, নসিমন, করিমনসহ সব ধরনের অযান্ত্রিক পরিবহন চলাচল নিষিদ্ধ করে। তিন চাকার এসব যানবাহনকে মহাসড়কে দুর্ঘটনার জন্য দায়ী করে উচ্চ আদালতও বন্ধের নির্দেশ দেন। আদালত জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, হাইওয়ে পুলিশকে এসব অবৈধ যানবাহন যেন মহাসড়কে চলতে না পারে সে জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করতে নির্দেশ দেন। উচ্চ আদালত ও মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার পরও কিছুদিন হাইওয়ে থানা পুলিশ এসব অবৈধ যান চলাচল কঠোরভাবে বন্ধ করলেও বর্তমানে তারা কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করছেন না। এতে সড়ক দুর্ঘটনা দিন দিন বেড়েই চলেছে। অকালে ঝরে যাচ্ছে তাজা প্রাণ। পঙ্গুত্ববরণ করছেন অনেকেই। </p> <p>জানা গেছে, সরকার দেশের গুরুত্বপূর্ণ যে কয়েকটি মহাসড়কে তিন চাকার যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ করে তার মধ্যে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অন্যতম। মন্ত্রণালয়ের নিষেধাজ্ঞা জারির পর মহাসড়কে সিএনজি অটোরিকশার চলাচল কিছুটা বন্ধ হয়। তখন ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সাইনবোর্ড থেকে মেঘনা সেতু পর্যন্ত এলাকায় দুর্ঘটনার হার অনেকটাই কমে আসে। তবে হঠাৎ আবার হাইওয়ে পুলিশকে 'ম্যানেজ' করে মহাসড়কের চলাচল করছে সরকার নিষিদ্ধ যানবাহন সিএনজি, অটোরিকশা ও থ্রি-হুইলার। এর ফলে আবারো বাড়ছে দুর্ঘটনা। খালি হচ্ছে অনেক মায়ের বুক। </p> <p>নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন সিএনজি ও অটোরিকশাচালক কালের কণ্ঠকে জানান, মহাসড়কের সাইনবোর্ড থেকে মেঘনা সেতু পর্যন্ত মহাসড়কে চলাচলের জন্য প্রতিটি সিএনজি ও অটোরিকশা থেকে প্রতি মাসে দুই হাজার করে টাকা দিতে হয় হাইওয়ে পুলিশকে। টাকা না দিলে গাড়ি ধরে মামলা দিয়ে দেওয়া হয়। তাই বাধ্য হয়েই পুলিশকে টাকা দিয়ে মহাসড়কে সিএনজি ও অটোরিকশা চালাতে হচ্ছে।</p> <p>কুমিল্লাগামী যাত্রী সোবহান শিকদার জানান, পুলিশের নাকের ডগায় শিমড়াইল মোড় থেকে কাঁচপুর সেতুর ওপর দিয়ে যেভাবে সিএনজি অটোরিকশা চলাচল করছে, এতে আমাদের ভাবিয়ে তুলেছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে মহাসড়কে কোন অবস্থাতেই দুর্ঘটনা থামানো যাবে না। </p> <p>এক যাত্রীবাহী যাত্রী কাজী ইয়াকুব উল্লাহ কালের কণ্ঠকে জানান, সরকারি ও উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মহাসড়কে যেভাবে নিষিদ্ধ যানবাহন চলাচল করছে তা কোনো অবস্থাতেই মেনে নেওয়া যায় না। এ বিষয়ে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্যরা নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছেন। </p> <p>স্কুলশিক্ষিকা আয়েশা আক্তার জানান, এসব নিষিদ্ধ পরিবহন মহাসড়কে চলাচল বন্ধ করতে না পারলে কোনো অবস্থাতেই দুর্ঘটনা কমানো যাবে না। তিনি বলেন, মহাসড়কের ওপর নিষিদ্ধ থ্রি-হুইলার পরিবহনের স্ট্যান্ড বানিয়ে চলাচল করায় ঈদে ঘরমুখো মানুষের দুর্ভোগ পোহাতে হবে। </p> <p>কাঁচপুর হাইওয়ে পুলিশের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর (টিআই) মোহাম্মদ ইব্রাহিম কালের কণ্ঠকে জানান, সরকার ও উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী মহাসড়কে যাতে নিষিদ্ধ থ্রি-হুইলার চলাচল করতে না পারে সে জন্য আমরা দিন-রাত কাজ করছি। অনেক পরিবহন মালিক ও চালকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণসহ অনেক পরিবহন ড্যাম্পিং করছি প্রতিদিন। তবে জনবল বেশি থাকলে মহাসড়কে এসব পরিবহন কোনো অবস্থায়ই চলতে দেওয়া হবে না। আমরা অভিযান পরিচালনা করার সময় পুলিশ দেখলেই পালিয়ে যায় চালকরা। পরবর্তী সময়ে আবারও আমাদের চোখ ফাঁকি দিয়ে চলাচল করে নিষিদ্ধ যানবাহনগুলো। <br />  </p>