<p style="text-align:justify">মিথ্যা ঘোষণায় অন্তত ২ কোটি টাকার শুল্ক ফাঁকি দিয়ে আনা ফেব্রিক্সের একটি চালান জব্দ করেছে বেনাপোল কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। গত ১৭ ডিসেম্বর চালানটি বেনাপোল স্থলবন্দরের ৪২ নম্বর শেড থেকে আটক করা হয়। বন্ডের (গার্মেন্টেসের পণ্য, যেগুলোর শুল্ক পরিশোধ করা লাগে না) নামে ঘোষণা দেওয়া হলেও আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানটি ফেব্রিক্স (শার্টিং-স্যুটিংয়ের কাপড়, এর শুল্ক অনেক) নিয়ে আসছিল।</p> <p style="text-align:justify">ঢাকার গাজীপুর এলাকার শিশির নিটিং নামের একটি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান ৬৮১ প্যাকেজ, যার ওজন ২৮ হাজার ৩০০ কেজি (২৮ টন)। যার শুল্ক আসে অন্তত ২ কোটি টাকা। যার বিল অব এন্ট্রি নম্বর ১১০৭৬৯। ভারতের এস জে ফেব্রিক্স নামের প্রতিষ্ঠান থেকে মাল আমদানি করা হয়েছে। এই পণ্য চালানটি ছাড়করণের দায়িত্ব ছিল জারিন এন্টারপ্রাইজ সি এন্ড এফ এজেন্ট।</p> <p style="text-align:justify">কাস্টমস সূত্রে জানা যায়, ওই ফেব্রিক্স বেনাপোল স্থলবন্দরের ৪২ নম্বর শেডে প্রবেশ করার সঙ্গে সঙ্গে গোপন সংবাদে তা জানতে পারে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। এরপর তারা পণ্য চালানটি জব্দ করে।</p> <p style="text-align:justify">বন্দর ব্যবহারকারী সূত্রে জানা যায়, বেনাপোল স্থলবন্দরে অসাধু এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার যোগদানের পর তারই সহায়তায় কয়েকজন সিঅ্যান্ডএফ ব্যবসায়ী এবং ভারতের কয়েকটি রফতানিমুখি প্রতিষ্ঠানের যোগসাজশে একটি সিন্ডিকেট গড়ে ওঠে। তারা বিভিন্ন সময়ে ভারত থেকে আনা উন্নতমানের শার্টিং-স্যুটিংয়ের কাপড়, শাড়ি, থ্রিপিস ইত্যাদিকে বন্ডের নামে ঘোষণা দিয়ে সেগুলোকে শুল্কমুক্ত করে কোটি কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছে এই চক্রটি। এর মাধ্যমে তারা নিজেরা অবৈধভাবে হাতিয়ে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকা।</p> <p style="text-align:justify">যোগাযোগ করা হলে ৪২ নম্বর শেডের ইনচার্জ আমিনুল ইসলাম বলেন, প্রথমদিন এক ট্রাক এবং পরেরদিন দুই ট্রাক ফেব্রিক্সের চালান আনলোড হয়েছে। কাস্টমস কর্তৃপক্ষ সেগুলো পরীক্ষণ করেছেন। মাল শেডেই রয়েছে।</p> <p style="text-align:justify">বেনাপোল সিএন্ড এফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি মফিজুর রহমান সজন জানান, দীর্ঘদিন ধরে বেনাপোলের একটি চক্র সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে ভারত থেকে জাল কাগজপত্রের মাধ্যমে ভারতীয় পণ্য এনে সরকারের কোটি কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে আসছে।</p> <p style="text-align:justify">বেনাপোল স্থলবন্দরের আমদানি- রফতানিকারক সমিতির সভাপতি মহাসিন মিলন বলেন, একটি অসাধু চক্র বেনাপোল বন্দরকে অস্থিতিশীল করতে নানামুখী অপকর্ম করছে। তারই ধারাবাহিকতায় বেশ কিছুদিন ধরে তারা মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে পণ্য আমদানির নামে সরকারের কোটি কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছে। সম্প্রতি বেনাপোল স্থলবন্দরে বন্ডের নামে ফেব্রিক্সের চালানের একটি ঘটনার কথা শুনেছি। এই ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হলে পরবর্তীতে আর এমন ঘটনা ঘটবে না।</p> <p style="text-align:justify">বেনাপোল কাস্টমস হাউসের কমিশনার মো. কামরুজ্জামান জানান, মিথ্যা ঘোষণায় শতভাগ পলিয়েস্টার ঘোষণা দিয়ে ২৮ টন ৩০০ কেজি উন্নতমানের ফেব্রিক্স আনা হয়েছে। এই মাল জব্দ করা হয়েছে। মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে আনা কাউকেই ছাড় দেয়া হবে না।</p>