<p>দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার সুজালপুর ইউনিয়নের চাকাই গ্রামের ৫৪ বছর বয়সী আব্দুল আলম জীবনের প্রতিকূলতাকে জয় করে আজ এক সফল স্বাবলম্বী মানুষ। শারীরিক প্রতিবন্ধকতা ও দারিদ্র্যতার বিরুদ্ধে লড়াই করে তিনি আজকের অবস্থানে এসেছেন।</p> <p>জন্ম থেকেই শারীরিক প্রতিবন্ধী আব্দুল আলম দরিদ্র পরিবারে বড় হয়েছেন। হাঁটাচলার ক্ষমতা না থাকলেও দৃঢ় মনোবল আর আদম্য ইচ্ছাশক্তিকে কাজে লাগিয়ে তিনি নিজের ভাগ্যকে বদলে ফেলেছন। ৩৫ বছর ধরে চারকলের ব্যবসা করছেন, যা এখন তার প্রধান আয়ের উৎস। এলাকায় তিনি ‘চারকল আলম’ নামেই পরিচিত।</p> <p>প্রতিদিন তিনি একটি ভ্যানে করে চায়ের দোকান, হোটেল ও বাজারগুলোতে চারকল সরবরাহ করেন। গড়ে প্রতিদিন ১৫ থেকে ২০ মণ চারকল বিক্রি করেন। এতে তার দৈনিক লাভ প্রায় ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা। বর্তমানে তার মাসিক আয় ১৫ থেকে ১৮ হাজার টাকা। এই আয়ে তিনি স্ত্রী ও চার সন্তানের সংসার পরিচালনা করছেন। নিজ বাড়ির ১০ শতক জমি কিনে তাতে পাকা বাড়িও নির্মাণ করেছেন।</p> <p>আব্দুল আলম জানান, শারীরিক প্রতিবন্ধী হওয়ার কারণে সমাজের অনেকের চোখে তিনি অবজ্ঞার পাত্র ছিলেন। কিন্তু তিনি কখনো হাল ছাড়েননি। ৩৫ বছর আগে সরকারের কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা অনুদান পেয়ে তিনি চারকল ব্যবসা শুরু করেন। তেরোমাইল গড়েয়া থেকে পাইকারি দরে চারকল কিনে বীরগঞ্জ পৌর শহরে বিক্রি করতে শুরু করেন। পরে কঠোর পরিশ্রম আর ধৈর্যর মাধ্যমে তিনি ব্যবসায় সফলতা অর্জন করেন।</p> <p>আব্দুল আলম এখন বীরগঞ্জ পৌর শহরের উল্লাস সিনেমা হলসংলগ্ন একটি চারকল দোকানের মালিক। সেখান থেকে তিনি চারকল বিক্রি করেন। তার মতে, ‘শারীরিক প্রতিবন্ধকতা কোনো বাধা নয়। আদম্য ইচ্ছাশক্তি আর দৃঢ় মনোবল থাকলে দারিদ্র্যতাকে জয় করা সম্ভব।’ </p> <p>২০১৯ সাল থেকে তিনি শারীরিক প্রতিবন্ধী সরকারি ভাতা পাচ্ছেন।</p>