<p style="text-align:justify">দিনাজপুরের বীরগঞ্জে সংঘর্ষ ও ফুলবাড়ীতে বিএনপির বর্ধিতসভায় নেতাকর্মীদের মধ্যে হট্টগোল ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। বীরগঞ্জে সংঘর্ষে ৫ জন আহত হয়েছেন। বর্তমানে পরিস্থিতি প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।</p> <p style="text-align:justify">জানা যায়, বীরগঞ্জ উপজেলার ৫ নম্বর সুজালপুর ইউনিয়নে জগদল বাজারে শনিবার বিকেলে যুবদলের কর্মী সমাবেশের আয়োজন করে ইউনিয়ন বিএনপি। যুবদল ইউনিয়ন কমিটির সভাপতি ইউপি মেম্বার সেলিম রেজা বিকেল ৪টার দিকে বর্ষা থেকে জগদল সভাস্থলে যাচ্ছিল। এসময় বলাকা মোড়স্থ কোমর রাইস মিলের নিকট পৌঁছালে তাকে বিএনপির অপর একটি গ্রুপের ১৫-২০ জন সদস্য তাকে আটক করে এলোপাথাড়ি মারপিট করে। </p> <p style="text-align:justify">এসময় বাঁধা প্রদান করতে গেলে উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব তানভীর চৌধুরী ও উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী আকাশের নেতৃত্বে পৌর কমিটির সহ-সভাপতি হাবিবুর রহমান হাবলু, ছাত্রদল নেতা মাহফুজুর রহমান বাবু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সুজন আলী, স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য বাবু ও একরাম আলীকে মারধর করে আহত করে।</p> <p style="text-align:justify">এ খবর ছড়িয়ে পড়লে বিএনপির উপজেলা কমিটির অপর গ্রুপের দুই শতাধিক যুবদল নেতাকর্মী লাঠিসোটাসহ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে তাদেরকে পাল্টা ধাওয়া করে। এতে আলহাজ্ব তানভীর চৌধুরী ও আকাশ চৌধুরী নামের দুজন নেতাকর্মী আহত হয়।</p> <p style="text-align:justify">আহতদের বীরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও দিনাজপুরের এম আব্দুর রহিম মেডিক্যাল কলেজ হাসাপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানা গেছে।</p> <p style="text-align:justify">উপজেলা বিএনপির নেতারা জানায়, বীরগঞ্জে সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জু ও সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন ধলুর আলাদা আলাদা গ্রুপ রয়েছে। তাদের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।</p> <p style="text-align:justify">বীরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফজলে এলাহী ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল গফুর ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন।</p> <p style="text-align:justify">অপরদিকে, দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলা বিএনপির বর্ধিতসভা ঘিরে দলটির দুই পক্ষের নেতাকর্মীদের মধ্যে হট্টগোল ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। শনিবার সকাল ১১টার দিকে উপজেলা চত্বর-সংলগ্ন রাবেয়া কমিউনিটি সেন্টারে এ ঘটনা ঘটে। এতে কয়েকজন আহত হয়েছেন।</p> <p style="text-align:justify">বিএনপির নেতাকর্মী ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলা বিএনপির দুটি পক্ষ আছে। একটি পক্ষের নেতৃত্বে আছেন জেলা বিএনপির উপদেষ্টা ও উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি অধ্যক্ষ খুরশিদ আলম (মতি)। অপর পক্ষের নেতৃত্বে আছেন পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শাহাজুল ইসলাম। </p> <p style="text-align:justify">বর্ধিতসভা ঘিরে শনিবার সকাল থেকে উপজেলা চত্বর ও শহরের নিমতলা মোড় এলাকায় নেতাকর্মীরা জড়ো হতে থাকেন। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে খুরশিদ আলমের পক্ষের নেতাকর্মীরা নিমতলা মোড় থেকে একটি মিছিল নিয়ে বর্ধিত সভাস্থলে আসেন। আগে থেকেই সভাস্থলে ছিলেন শাহাজুল ইসলামের পক্ষের নেতাকর্মীরা। এ সময় দুই পক্ষের নেতাকর্মীরা পরস্পরবিরোধী স্লোগান দিতে থাকেন। এতে কথা-কাটাকাটি থেকে হট্টগোল তৈরি হয়। একপর্যায়ে দুই পক্ষের নেতাকর্মীদের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে সেনাবাহিনীর একটি টহল দল ঘটনাস্থলে গেলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।</p> <p style="text-align:justify">বর্ধিতসভায় উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির রংপুর বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল খালেক, দলটির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য এ জেড এম রেজওয়ানুল হক, জেলা বিএনপির সভাপতি মোফাজ্জল হোসেন দুলাল, সাধারণ সম্পাদক বখতিয়ার আহমেদ কচি, সিনিয়র সহসভাপতি মোকাররম হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক আনিছুর রহমান বাদশা প্রমুখ।</p> <p style="text-align:justify">এ বিষয়ে জেলা বিএনপির সভাপতি মোফাজ্জল হোসেন বলেন, দীর্ঘ সময় পরে কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতিতে বর্ধিতসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। নেতাকর্মীদের মধ্যে অনেক কষ্ট ও ক্ষোভ জমা আছে। আজ এ সভাকে কেন্দ্র করে একটু হইহুল্লোড় হয়েছে। তবে কোনো বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়নি। শান্তিপূর্ণভাবে সভা পরিচালনা করা হয়েছে।</p> <p style="text-align:justify">২০২০ সালের ডিসেম্বরে ফুলবাড়ী উপজেলা বিএনপির সভাপতি খুরশিদ আলমকে দলীয় শৃঙ্খলাপরিপন্থী কাজের অভিযোগে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। খুরশিদ ফুলবাড়ী উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান। পরে ২০২১ সালের ৭ অক্টোবর বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে স্বপদে বহাল করা হয়। পরে তিন দিনের মাথায় সভাপতি পদ স্থগিত করে তাকে সাধারণ সদস্যপদ দেওয়া হয়। ২০২২ সালের নভেম্বরে জেলা বিএনপির সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে তিনি জেলা বিএনপির উপদেষ্টা মনোনীত হন।</p>