<p>আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে দলীয় ক্ষমতাকে ব্যবহার করে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান দখল, ভাঙচুর ও চাঁদা আদায়ের অভিযোগে সাতক্ষীরার গাজী গোলাম মোস্তফা ওরফে বাংলা ভাইকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক নয়ন কুমার বড়াল উভয় পক্ষের শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।</p> <p>গাজী গোলাম মোস্তফা শ্যামনগর উপজেলার বংশীপুর গ্রামের আজাদ আলী গাজীর ছেলে ও শ্যামনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক।</p> <p>মামলার বিবরণ থেকে জানা গেছে, শ্যামনগরের পাতড়াখোলা গ্রামের আব্দুল গফুর সরদারের ছেলে এস এম আরাবুজ্জামান দীর্ঘদিন ধরে বংশীপুর বাসস্ট্যান্ডে ২০টি দোকান নির্মাণ করে মাছের সেট, ব্যাংক ও বিমাসহ বহুমুখী ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনা করছেন। ২০১৪ সালের ৫-১০ মার্চ পর্যন্ত গোলাম মোস্তফা ও তার ভাই এবং অ্যাডভোকেট জি এম শুকুর আলী, আব্দুল কাদেরসহ ৯ জনের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান রক্ষায় চাঁদা দাবি করেন। ২০১৪ সালের ১০ মার্চ সকালে গোলাম মোস্তফা ও শুকুর আলীর নেতৃত্বে আরাবুজ্জামানের কাছে ২০ লাখ টাকা চাঁদা না পেয়ে তাকে বিতাড়িত করা হয়। </p> <p>২০১৫ সালের ২০ জুন ওই আসামিরা বাদীর কাছ থেকে চার লাখ টাকা চাঁদা আদায় করেন। তাতেও বাদী আরাবুজ্জামান রক্ষা পাননি। ৩ আগস্ট বাদী তার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান দখলে নেওয়ার চেষ্টা করলে গোলাম মোস্তফাসহ সব আসামিরা ভাঙচুর চালিয়ে পাঁচ লাখ টাকার মালামাল নষ্ট করেন। এ সময় আবারও আরাবুজ্জামানের নিকট ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন তারা। টাকা না দেওয়ায় তাকে আবারও বিতাড়িত করা হয়। </p> <p>আরাবুজ্জামান ৪ সেপ্টেম্বর সাতক্ষীরার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন। মামলায় গাজী গোলাম মোস্তফা, তার ভাই জিএম শুকুর আলী, আব্দুল কাদেরসহ ৯ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ১৬ জনকে আসামী করা হয়। বিচারক নয়ন কুমার বড়াল মামলাটি এফআইআর হিসেবে গণ্য করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য শ্যামনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন। </p> <p>শ্যামনগর থানার উপপরিদর্শক আব্দুল মালেক তদন্তভার পেয়ে ২৮ সেপ্টেম্বর এজাহারভুক্ত ৯ জনের নাম উল্লেখ করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। মামলায় অন্য আসামীরা জামিনে মুক্তি পেলেও ১ নম্বর আসামি গাজী গোলাম মোস্তফা বাংলা ভাই পলাতক ছিলেন। </p> <p>আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানার পাশাপাশি ৪ নভেম্বর তার মালামাল ক্রোকের নির্দেশ দেন। এরই মধ্যে বাংলা ভাই মঙ্গলবার আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক নয়ন কুমার বড়াল তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।</p> <p>বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মিজানুর রহমান বাপ্পি। আসামি পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আবু বক্কর ছিদ্দিকি সাংবাদিকদের কাছে গোলাম মোস্তফার জামিন আবেদন নামঞ্জুর হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।</p>