<p>সিরাজগঞ্জের তাড়াশে উর্বর কৃষি জমিতে গড়ে উঠেছে অবৈধ ইটভাটা। কৃষি ও পরিবেশের নানামাত্রিক ক্ষতির পরও বহাল তবিয়তে এসব ভাটার মালিকরা তাদের কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছেন। পরিবেশ অধিদপ্তর বছরে দু-একবার অভিযান চালিয়ে কোনো কোনো ইটভাটা আংশিক ভেঙে ও আর্থিক জরিমানা করলেও, অদৃশ্য কারণে তারা আবারও তাদের কাজ পুরোদমে চালিয়ে যাচ্ছেন।</p> <p>ভাটার মালিকরা বলছেন, তারা পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্রের জন্য আবেদন করেছেন। এ ছাড়া জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে লাইসেন্সের জন্যও আবেদন করা হয়েছে।</p> <p>প্রায় এক দশক ধরে এসব ইটভাটার মালিকরা একই ধরনের বয়ান দিয়ে অবৈধভাবে ইট তৈরি করলেও একটি অসমর্থিত সূত্র বলছে, এলআর ফান্ডই তাদের অবৈধ ইটভাটা পরিচালনার মূল শক্তি। মাঝে মাঝে অভিযান লোক দেখানো। তা না হলে বছরের পর বছর এসব অবৈধ ইটভাটা চলছে কিভাবে?</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগে দুজনকে গ্রেপ্তার" height="66" src="https://asset.kalerkantho.com/public/news_images/2024/12/22/1734847239-6fd33470dea458ab90e18c964caa6eb9.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগে দুজনকে গ্রেপ্তার</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/country-news/2024/12/22/1460071" target="_blank"> </a></div> </div> <p>সূত্র বলছে, চলনবিল অধ্যুষিত তাড়াশ উপজেলার তিন ইউনিয়নে মোট সাতটি ইট ভাটা রয়েছে। এরমধ্যে সাদিয়া ও এমএমবি পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র থাকলেও দুই বছর ধরে তা নবায়ন করা হয়নি। অন্যগুলোর কোনো প্রকার পরিবেশের ছাড়পত্র নেই। সাতটি ইটভাটার কোনোটির জেলা প্রশাসনের লাইসেন্সও নেই। অর্থাৎ সাতটি ইট ভাটাতে এখন অবৈধভাবে ইট তৈরি করা হচ্ছে। এ তথ্য কালের কণ্ঠকে নিশ্চিত করেছেন পরিবেশ অধিদপ্তরের সিরাজগঞ্জ জেলা কার্যালয়ের সদ্য বদলিকৃত সহকারী পরিচালক মো. আব্দুল গফুর।</p> <p>সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, এসব অবৈধ ইটভাটা গড়ে উঠেছে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় উর্বর কৃষিজমিতে। এবং এলজিইডি ও সড়ক ও জনপথ বিভাগের রাস্তার পাশে। স্কুল ও ক্লিনিক রয়েছে ইটভাটার পাশেই। বর্ষায় এসব ইটভাটায় উৎপাদিত সালফার চলনবিলের পানিতে গিয়ে মিশে যায়।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="বোচাগঞ্জে শিক্ষকের কমলার বাগানে ঝুলছে থোকায় থোকায় কমলা" height="66" src="https://asset.kalerkantho.com/public/news_images/2024/12/22/1734845750-d82319912041449cd31bdb7e7569d171.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>বোচাগঞ্জে শিক্ষকের কমলার বাগানে ঝুলছে থোকায় থোকায় কমলা</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/country-news/2024/12/22/1460067" target="_blank"> </a></div> </div> <p>বিশেষ করে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের ধারক ক্ষুদ্র নৃ-তাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর লোকজন বসবাস করে এমন এলাকায় বেশি করে এসব অবৈধ ইটভাটা গড়ে তোলা হয়েছে। যা সম্পূর্ণ বেআইনি।</p> <p>বাংলাদেশের পরিবেশ ও জীববৈচিত্র সংরক্ষণ ও উন্নয়নের স্বার্থে ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন সংক্রান্ত কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রণের জন্য ২০১৩ সালে প্রণয়ন করা হয়- ‘ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন’ এবং ২০১৯ সালে এটি সংশোধন করা হয়।</p> <p>এ আইনে বলা হয়, জেলা প্রশাসকের কাছ থেকে লাইসেন্স গ্রহণ ব্যতীত কেউ ইটভাটায় ইট প্রস্তুত করতে পারবেন না। কিন্তু বাস্তবে কোনো প্রকার আইনের তোয়াক্কা না করে তারা প্রকাশ্যে ইট প্রস্তুত অব্যাহত রেখেছেন।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে ১০ গাড়ির সংঘর্ষ" height="66" src="https://asset.kalerkantho.com/public/news_images/2024/12/22/1734843764-7151184986aed9f8f418938930271d37.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে ১০ গাড়ির সংঘর্ষ</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/country-news/2024/12/22/1460064" target="_blank"> </a></div> </div> <p>তাড়াশ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, কৃষি জমির টপ সয়েল ইটভাটায় যাওয়ায় কৃষিজমি অনুর্বর হয়ে পড়ছে। এতে করে ফসল উৎপাদনেও পড়ছে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।</p> <p>খালকুলা এলাকায় নির্মিত দুটি ইট ভাটার সালফারে ফসল বিনষ্ট হওয়ায় ইতোপূর্বে তাড়াশ থানায় একাধিক অভিযোগও দায়ের করেছেন স্থানীয় কৃষক। কিন্তু ইটভাটার মালিকরা প্রভাবশালী হওয়ায় তারা কোনো বিচার পাননি বলে অভিযোগ করেন মাটিয়ামালিপাড়া গ্রামের কৃষক মো. রফিকুল ইসলাম।</p> <p>এ ছাড়াও তাড়াশ-নিমগাছি সড়কের যৌতুক মোড় হতে ঝুরঝুরি পর্যন্ত এলজিইডির রাস্তায় ভাটার মাটি ও ইট বহনকারী ড্রাম ট্রাকের কারণে প্রতি বছরই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। রাস্তার দুপাশে ছয়টি গ্রামে যারা বসবাস করেন, তাদের ঘরবাড়ি ধূলায় ধূসরিত হয়ে আছে।</p> <p>নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক আদিবাসী পরিবারের লোকজন বলছেন, এখানে বায়ু দূষণে তারা টিকে থাকতে পারছেন না। অসংখ্য মানুষ ধূলা ও ভাটার কালো ধোঁয়ার কারণে শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন রোগে ভুগছেন। ভাটার মালিকরা এমনই প্রভাবশালী যে কেউ প্রতিবাদ করলেই তাদের ওপর নেমে আসে নির্যাতন। যার ফলে ভয়ে তারা কিছুই বলতে পারেন না। এর ফলে অনেকেই এখান থেকে বাস্তুচ্যূত হয়েছেন।</p> <p>চলনবিল বাচাঁও আন্দোলনের নেতা ও সাপ্তাহিক চলনবিলবার্তার সম্পাদক মো. আব্দুর রাজ্জাক রাজু কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘ভাটা মালিকরা কোনো প্রকার আইনের তোয়াক্কা না করে প্রশাসনের নাকের ডগায় তাদের এসব অবৈধ কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে আসছে। যার ফলে চলনবিল অঞ্চলে কৃষি, জনজীবন ও জীববৈচিত্র হুমকির সম্মুখীন। পরিবেশ-প্রতিবেশের স্বার্থেই পরিবেশ বান্ধব নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করতে জন সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। সেই সঙ্গে প্রশাসনকেও উদ্যোগ নিতে হবে কেউ যেন এ ধরনের অবৈধ কর্মকাণ্ড চালাতে না পারে।’</p> <p>এস.এম ব্রিকসের সত্ত্বাধিকারী মো. শাহ আলমের কাছে তাদের এ ধরনের বেআইনি কর্মকাণ্ড সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রত্যেকটি ভাটার লাইসেন্স রয়েছে। তবে নবায়ন নেই। জেলা প্রশাসন নবায়ন করলেই আমারা তা করে নেব। সরকারও রাজস্ব পাবে।’</p> <p>সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, ‘ভাটা মালিকদের এ দাবি সত্য নয়। ইটভাটার লাইসেন্স পাওয়ার প্রধান শর্ত পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র। এ ছাড়পত্র না থাকলে কাউকে লাইসেন্স দেওয়ার সুযোগ নেই।’</p>