পিরোজপুরের নাজিরপুরের দীর্ঘা ইউনিয়নের দীর্ঘা বাজার উন্নয়নের কাজ দীর্ঘদিন পড়ে আছে। কিন্তু ঠিকাদার পুরোপুরি কাজ না করে বিল হাতিয়ে নিয়েছেন। নাজিরপুরের মাহামুদকান্দা এলাকার এসএস এন্টারপ্রাইজ (প্রপাইটর সাইফুল ইসলাম) নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাজ হলেও কাজটি করছেন পিরোজপুর শহরের জাহিদুল ইসলাম অংশু নামের এক ঠিকাদার।
যিনি নিজেকে সাবেক এমপি ও মন্ত্রী মো. রেজাউল করিমের ভাগ্নে বলে পরিচয় দিতেন।
তবে রেজাউল করিমের এক ঘনিষ্ঠজন জানিয়েছেন জাহিদুল ইসলাম অংশু নামে তার কোনো ভাগ্নে নেই।
জানা যায়, পিরোজপুর এলজিইডির তত্ত্বাবধায়নে নাজিরপুর উপজেলার দীর্ঘা বাজার উন্নয়নের জন্য পিরোজপুর উন্নয়ন প্রকল্পে ২০২৩ সালে দরপত্রের আহ্বান করা হয়। এসএস এন্টারপ্রাইজ ১ কোটি ১৮ লাখ ৭৬ হাজার টাকায় কাজটি পায়। ২০২৩ সালের ১৩ এপ্রিল কাজটি শুরু হয়ে ২০২৪ সালের ১২ এপ্রিল শেষ হওয়ার কথা।
কাজের মধ্যে রয়েছে দীর্ঘা বাজারের রাস্তা, টিউবয়েল, টলঘর ও বাজারের ঘাটলা নির্মাণ।
সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি অল্প কিছু পাথর এনেছে, আর একটি নলকূপ বসিয়েছে। পিরোজপুর এলজিইডি সূত্রে জানা যায়, ইতোমধ্যে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ৮৩ লাখ ৮৩ হাজার টাকা উত্তোলন করে নিয়েছেন। কাজের অগ্রগতি মাত্র ৫ ভাগ।
নাজিরপুরের সাবেক উপজেলা প্রকৌশলী জাকির হোসেন মিয়া ও পিরোজপুর এলজিইডির সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুস সাত্তার হাওলাদার এ বিল পরিশোধ করেছেন।
এ বিষয়ে দীর্ঘা বাজার কমিটির সভাপতি আশিষ চঁন্দ্র হালদার জানান, দীর্ঘদিন ধরে বাজার উন্নয়নের কাজ ফেলে রাখায় জনদুর্ভোগের শেষ নেই। রাস্তার ইট তুলে ফেলে রেখেছে, ফলে বালু উড়ে দোকানের ভেতরে যাচ্ছে; এতে দোকানের মালামাল নষ্ট হচ্ছে। একপাশে একটি টিউবয়েল বসিয়েছে তার ফ্লোরও পাকা করেনি। ফলে সেখানে স্যাঁতসেতে হয়ে গেছে।
কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন, যাতে অতিদ্রুত এ বাজার উন্নয়নের কাজ শেষ হয়।
দীর্ঘা ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সুজন দেউড়ী বলেন, আমরা পরিষদ থেকে বাজারের ভেতরের রাস্তায় ইট সলিং করেছিলাম প্রায় ১ বছর আগে। সেই রাস্তার ইট তুলে ফেলে রাখছে, মানুষের উপকারের বদলে ভোগান্তি হচ্ছে। কোনো কাজই করছে না। দ্রুত এ বাজার উন্নয়নের কাজ শেষ করা দরকার।
নাজিরপুর উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব মো. আবু হাসান খান কালের কণ্ঠকে বলেন, এই অংশু নাজিরপুরের উন্নয়নের ১২টা বাজিয়ে দিয়েছে। প্রায় কাজেরই বিল নিয়েছে, কিন্তু কাজ করেনি। এরা দেশের, জনগণ ও জাতির শত্রু। এদের আইনের আওতায় এনে কঠোর বিচার দাবি করছি।
এ ব্যাপারে এসএস এন্টারপ্রাইজ (প্রোপাইটর সাইফুল ইসলাম) ও জাহিদুল ইসলাম অংশুর সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাদের ব্যবহৃত ফোন নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।