ঈদ যাত্রায় পরিবহনের অগ্রিম টিকিটের জন্য যুদ্ধ পুরনো হলেও চাহিদা অনুযায়ী টিকিট পাওয়া কঠিন। ট্রেনের টিকিটের অনেক চাহিদা থাকলেও সে তুলনায় পাওয়া যায় না। এমন চাহিদার মধ্যেই বিশেষ ব্যবস্থাপনায় আন্ত নগর ট্রেনের আসনের টিকিট অগ্রিম বিক্রি করছে বাংলাদেশ রেলওয়ে।
গতকাল রবিবার বিশেষ ব্যবস্থায় টিকিট বিক্রির তৃতীয় দিনে আগামী ২৬ মার্চের টিকিট বিক্রি করা হয়।
প্রথম ৩০ মিনিটে রেলওয়ে ই-টিকেটিং ওয়েবসাইট ও মোবাইল অ্যাপে মোট ৯৮ লাখ হিট করেছে টিকিট প্রত্যাশীরা। এ সময় সারা দেশে বিক্রি হয়েছে প্রায় ২৬ হাজার আসনের টিকিট। রবিবার সকালে বিষয়টি জানায় বাংলাদেশ রেলওয়ে সূত্র।
দেখা গেছে, সকাল ৮টা থেকে টিকিট বিক্রি শুরু হয় রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চলের ট্রেনগুলোর।
এতে আসনসংখ্যা ১৩ হাজার ৩৬৩টি। এর মধ্যে প্রথম ৩০ মিনিটেই বিক্রি হয় ১১ হাজার ৩০০টি। আর সারা দেশে বিক্রি হয় ১৪ হাজার ৪৪৪টি।
প্রথম ৩০ মিনিটে ঢাকাসহ সারা দেশে মোট টিকিট বিক্রি হয় ২৫ হাজার ৭৪৪টি।
২৬ মার্চের জন্য ঢাকা থেকে ট্রেনের মোট আসন ২৬ হাজার ৬৫১টি এবং সারা দেশের সব ট্রেনের মোট আসন এক লাখ ৪০ হাজার ৮৫৬টি।
প্রত্যাশা অনুযায়ী টিকিট নেই
রেলের টিকিট বিক্রির ব্যবস্থাটির নাম বাংলাদেশ রেলওয়ে ইন্টিগ্রেটেড টিকেটিং সিস্টেম (বিআরআইটিএস)। এই ব্যবস্থা চালুর পর ট্রেনের টিকিট পেতে হলে জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে প্রথমে নিবন্ধন করতে হয়। এরপরই অনলাইনে (মোবাইল অ্যাপ ও ওয়েবসাইট) টিকিট কাটা যায়।
সূত্র জানায়, টিকিট পেতে গত অক্টোবর পর্যন্ত ৫২ লাখ ৫৫ হাজার ৯১০ জন নিবন্ধন করেছে।
প্রায় ১৭ কোটি জনসংখ্যার হিসাবে মাত্র ৩.০৯ শতাংশ মানুষ ট্রেনের টিকিট কাটতে পারবে। তাই বিপুল সংখ্যায় মানুষ ট্রেনসেবার আওতার বাইরে থেকে যাচ্ছে।
কিছু ক্ষেত্রে ব্যবস্থাপনা না বুঝার কারণেও অনেকে প্রত্যাশিত টিকিট কাটতে পারে না। এ ক্ষেত্রে ইন্টারনেট সেবা থাকা এবং এই বিষয়ে জ্ঞান থাকা জরুরি।
প্রতারণা এড়াতে রেল কর্তৃপক্ষের পরামর্শ
আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ট্রেনযাত্রায় যাত্রী হয়রানি ও প্রতারণা এড়াতে বাংলাদেশ রেলওয়ের নির্ধারিত অ্যাপ ব্যবহার করে অথবা সরাসরি কাউন্টার থেকে যাত্রীদের টিকিট ক্রয়ের পরামর্শ দিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ। গতকাল রেলপথ মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
কেউ কোনো সমস্যায় পড়লে বাংলাদেশ রেলওয়ের হটলাইন ১৩১ নম্বরে ডায়াল করে এ ব্যাপারে অভিযোগ জানানোর ব্যবস্থা রয়েছে। সব ক্ষেত্রে অভিযোগকারীর পরিচয় গোপন রাখা হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঈদ যাত্রায় (২৪ থেকে ৩০ মার্চ পর্যন্ত) একটি আইডি থেকে সর্বোচ্চ চারটি টিকিট ক্রয় করা যাবে। এ ক্ষেত্রে আইডিধারী ব্যক্তির সহযাত্রীদের নামও ইনপুট দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। ঈদ যাত্রার শতভাগ টিকিট অনলাইনে বিক্রি করা হবে।
বাস মালিকরা ঈদ যাত্রা শুরুর অপেক্ষায়
রাজধানীর গাবতলী, সায়েদাবাদ, মহাখালী, আরামবাগ বাস টার্মিনালে গিয়ে দেখা যায়, ঈদের অগ্রিম টিকিট কিনতে যাত্রীদের তেমন ভিড় নেই। যদিও বাংলাদেশ বাস-ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের পূর্বঘোষিত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গত শুক্রবার সকাল থেকে অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয় টার্মিনালগুলোতে।
সায়েদাবাদ টার্মিনাল থেকে ছেড়ে যাওয়া তিশা প্লাস বাসের এক মালিক রাজন বলেন, ‘আমাদের বেশির ভাগ যাত্রী টিকিট কেটে বাসে উঠে যান। পর্যাপ্ত বাস থাকায় অগ্রিম টিকিট কাটার চাপ কম।’
আরেক বাসের মালিক জানান, বাসের অগ্রিম টিকিটের ক্ষেত্রে যাত্রীদের যে চাহিদা আছে, সেটিও শেষের তিন-চার দিনের। এ ছাড়া তেমন চাপ নেই।
দেখা যায়, বেশি ভাগ বাসের ক্ষেত্রেই অর্ধেকের বেশি টিকিট কাউন্টারে রাখা হয়েছে। অনলাইনেও রয়েছে টিকিট কাটার অপশন। তবে সেখানেও চাপ কম। টার্মিনালগুলোতে এখনো ভিড় দেখা যায়নি যাত্রীদের।