ঢাকা, রবিবার ১৩ এপ্রিল ২০২৫
৩০ চৈত্র ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৬

ঢাকা, রবিবার ১৩ এপ্রিল ২০২৫
৩০ চৈত্র ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৬

কারখানা খুলে দেওয়ার দাবিতে সাভারে শ্রমিকদের বিক্ষোভ

সাভার (ঢাকা) সংবাদদাতা
সাভার (ঢাকা) সংবাদদাতা
শেয়ার
কারখানা খুলে দেওয়ার দাবিতে সাভারে শ্রমিকদের বিক্ষোভ
ছবি: কালের কণ্ঠ

সাভারে বকেয়া বেতন পরিশোধ এবং বন্ধ কারখানা খুলে দেওয়ার দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন তৈরি পোশাক শ্রমিকরা। শ্রম আইন অনুযায়ী ক্ষতিপূরণসহ পাওনা পরিশোধের দাবি জানিয়েছেন তারা।

আজ সোমবার (৭ এপ্রিল) সকালে পৌর এলাকার উলাইলে অবস্থিত প্রাইড গ্রুপের এইচ.আর টেক্সটাইল মিলস লিমিটেড এবং ফ্যাশন নিট গার্মেন্টস লিমিটেড কারখানার সহস্রাধিক শ্রমিক এই বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে। এর আগে সকালে কারখানা দুটির শ্রমিকরা ঈদের ছুটি শেষে কাজে যোগ দিতে এসে কারখানার মূল ফটকে লে-অফের নোটিশ দেখতে পেয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন।

আরো পড়ুন
ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে কাভার্ড ভ্যানের ধাক্কায় নারীর মৃত্যু

ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে কাভার্ড ভ্যানের ধাক্কায় নারীর মৃত্যু

 

বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা জানান, কারখানা কর্তৃপক্ষ কোনো ধরনের নোটিশ ছাড়াই লে-অফ ঘোষণা করেছে। আজ সোমবার সকালে কারখানায় কাজে যোগদান করতে এসে শ্রমিকরা নোটিশ দেখতে পান। পরে তারা কারখানা খুলে দেওয়াসহ বকেয়া পাওনা পরিশোদের দাবিতে বিক্ষোভ করতে থাকেন। এ সময় দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা বিক্ষোভ অব্যাহত থাকবে বলে জানান।

খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ এবং সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে আসেন। এ সময় তারা শ্রমিকদের বুঝিয়ে মালিক পক্ষের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি সমাধানের আশ্বাস দেন। 

আরো পড়ুন
সমালোচনার মুখে ক্ষমা চাইলেন ড্যাফোডিলের সেই শিক্ষিকা

সমালোচনার মুখে ক্ষমা চাইলেন ড্যাফোডিলের সেই শিক্ষিকা

 

এর আগে শনিবার (৫ এপ্রিল) কারখানা দুটির মূল ফটকে সাটানো কারখানা দুটির মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন ও কম্পলায়েন্স) মনিরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত পৃথক দুটি নোটিশে ৭ এপ্রিল থেকে আগামী ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত দুই কারখানার গার্মেন্টস শাখায় লে-অফ ঘোষণা করা হয়। তবে প্রশাসন (আংশিক) ও নিরাপত্তা বিভাগ এই লে-অফ ঘোষণার আওতামুক্ত থাকবে বলে জানানো হয়।

 

বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ এর ১২ ধারা অনুযায়ী প্রতিষ্ঠান দুটির মধ্যে এইচ.আর টেক্সটাইল মিলস লিমিটেড এবং ফ্যাশন নিট গার্মেন্টস লিমিটেডের গার্মেন্টস বিভাগের সব শাখার কাজ বন্ধ রাখার কথা জানিয়ে টানানো নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে, আকস্মিক অর্থনৈতিক বিপত্তি, তীব্র কাঁচামাল এবং জ্বালানি সংকট এবং কার্যাদেশের অভাবসহ মালিকের নিয়ন্ত্রণ বহির্ভূত বহুবিধ কারণে ৭ এপ্রিল তারিখ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত বাংলাদেশ শ্রম আইন-২০০৬ এর ১২ ধারা অনুযায়ী গার্মেন্টস বিভাগের সব শাখার (সুইং, ফিনিশিং, কাটিং, প্রিন্টিং, স্যাম্পল, স্টোর, আই.ই. মার্চেন্টডাইজিং) কাজ বন্ধ এবং সংশ্লিষ্ট সব স্তরের শ্রমিক, কর্মচারী এবং কর্মকর্তাকে লে-অফ ঘোষণা করা হলো। প্রশাসন (আংশিক) ও নিরাপত্তা বিভাগ এই লে-অফ ঘোষণার আওতামুক্ত থাকবে।

আগামী ৩ মে থেকে কারখানার উৎপাদন কার্যক্রম পুনরায় চালু হবে। তবে সংকট যদি অব্যাহত থাকে তবে কর্তৃপক্ষ প্রয়োজন মনে করলে বাংলাদেশ শ্রম আইন-২০০৬ এর শর্ত সাপেক্ষে কারখানা বন্ধ এবং লে-অফের সময়সীমা বৃদ্ধি করতে পারবেন। লে-অফ চলাকালীন সময় লে-অফ কৃত সব শ্রমিক, কর্মচারী এবং কর্মকর্তাকে প্রত্যেকদিন কারখানায় হাজিরা দেওয়া হতে অব্যাহতি প্রদান করা হলো।

মার্চ-২০২৫ মাসের অবশিষ্ট সমুদয় বেতন-ভাতাদী নির্ধারিত সময়েই পরিশোধ করা হবে এবং যার যার ব্যাংক একাউন্টে যথারীতি প্রদান করা হবে।

তবে লে-অফ থাকাকালীন সময়ে কর্মীরা বাংলাদেশ শ্রম আইন-২০০৬ এর ১৬ ধারা অনুযায়ী সাপ্তাহিক বন্ধের দিন ব্যতীত অন্যান্য দিনের জন্য মূল মজুরির ৫০ শতাংশ এবং ১০০ শতাংশ হারে আবাসন ভাতা প্রাপ্য হবেন। এ ছাড়া বাংলাদেশ শ্রম আইনের ১৬ ধারা অনুসারে এক বছরের কম সময় চাকরি করা কর্মীরা উক্ত ক্ষতিপূরণ প্রাপ্য হবেন না।

আরো পড়ুন
অবিলম্বে ইসরায়েলকে গণহত্যা-জবরদখল থামাতে হবে : সাদা দল

অবিলম্বে ইসরায়েলকে গণহত্যা-জবরদখল থামাতে হবে : সাদা দল

 

বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যান্ড শিল্প শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি রফিকুল ইসলাম সুজন বলেন, ‘কারখানায় কাজ না থাকাসহ বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই প্রাইড গ্রুপের দুটি কারখানায় লে-অফের নোটিশ লাগানো কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা বলে মনে করছি। যদি কাজ না থাকে এবং মালিকপক্ষ কারখানা না চালাতে পারেন তাহলে শ্রম আইন অনুযায়ী ক্ষতিপূরণসহ বকেয়া পাওনা পরিশোধের দাবি জানাচ্ছি।’

প্রাইড গ্রুপের প্রতিষ্ঠান দুটির মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন ও কম্পলায়েন্স) মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘মূলত অর্থনৈতিক সংকটের কারণেই কারখানা দুটিতে লে-অফ ঘোষণা করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রথমে কভিডের সময় আমরা বড় একটা ধাক্কা খাই। সেটি কাটিয়ে ওঠার পরবর্তীতে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের সময় আমাদের প্রধান বায়ার (পোল্যান্ড, রাশিয়া, ইউক্রেন) হারিয়ে আবারও ধাক্কা খেলে আমাদের ব্যাংক এবং অর্থনৈতিক সক্ষমতা নষ্ট হয়। এরপরও কাজের অর্ডার পেতে কষ্ট হচ্ছিল। এখন আবার জ্বালানি সমস্যা।’

তিনি আরো বলেন, ‘সব মিলিয়ে আরো ৩ মাস আগে থেকেই আমরা সমস্যার কারণে ৭ তারিখে বেতন দিতে না পেরে ১০ থেকে ১৫ তারিখে বেতন দিচ্ছিলাম। ঈদের আগে যাতে শ্রমিকদের সমস্যা না হয় সেজন্য আমাদের অন্য ব্যবসা থেকে প্রাইডের শো-রোম এবং শাড়ি এবং কিছু সম্পত্তি বিক্রি করেও আমরা শ্রমিকদের বেতন-বোনাস পরিশোধ করেছি। শ্রমিকরাও জানে আমাদের হাতে ২ মাস ধরে কাজ নেই, তারা কারখানায় এসে বসে থাকত। তবে আমরা আশাবাদী ব্যাংক এবং বায়াদের সঙ্গে কথা হচ্ছে এই মাসের ২০-২২ তারিখে একটা সেটেলমেন্ট হয়ে গেলে তখন হয়ত আমরা লে-অফ থেকে বের হয়ে আসতে পারব।’

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

বিদ্যালয়ের টিনের ঘর ভেঙে বসতঘর বানাচ্ছেন প্রধান শিক্ষক!

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
শেয়ার
বিদ্যালয়ের টিনের ঘর ভেঙে বসতঘর বানাচ্ছেন প্রধান শিক্ষক!
ছবি: কালের কণ্ঠ

অবসরের চার দিন মাত্র বাকি। এর মধ্যে নিজের স্ত্রীকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব দেওয়াসহ আনুষাঙ্গিক কাজকর্ম গুছিয়ে বিদ্যালয়ে থাকা ৬৬ হাত লম্বা একটি টিনের ঘর (শ্রেণি কক্ষ) ভেঙে নিয়ে নিজবাড়িতে বসতঘর তৈরি করছেন। ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার আব্দুল হোসেন উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এনায়েত হোসেন ভূঁইয়া রতনের বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ উঠেছে।

আরো পড়ুন
পদত্যাগে বাধ্য হওয়া শিক্ষকদে স্বপদে বহালের দাবি

পদত্যাগে বাধ্য হওয়া শিক্ষকদে স্বপদে বহালের দাবি

 

গতকাল শনিবার (১২ এপ্রিল) দুপুরে সরেজমিনে নান্দাইল উপজেলার খারুয়া ইউনিয়নের রাজাবাড়িয়া গ্রামে অবস্থিত ওই বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, ঘরের টিনের চাল, বেড়া ও অন্যান্য উপকরণ প্রধান শিক্ষক মো. এনায়েত হোসেন ভূঁইয়ার নতুন বাড়ি ভিটার আশপাশে জড়ো করে রাখা হয়েছে।

বিদ্যালয় মাঠের দক্ষিণ দিকে ছিল ৬৬ হাত দৈর্ঘ্য ও নয় হাত প্রস্থ বিশিষ্ট টিনের ঘরটি।

বিদ্যালয়ের একটি সূত্র জানায়, প্রধান শিক্ষক মো. এনায়েত হোসেন ভূঁইয়া জানান, গত ৩১ মার্চ তিনি অবসরে গেছেন। তার স্ত্রী শামছুন্নাহার এখন বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বপালন করছেন। 

বিদ্যালয়ের ঘর ভেঙে ব্যক্তিগত বাড়ি নির্মাণকাজে ব্যবহারের অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে এনায়েত হোসেন ভুইয়া রতন বলেন, ‘গত ২৭ মার্চ তিনি বিদ্যালয়ের টিনের ঘরটি নিলামে তুলেছেন।

তিনজন ডাককারী নিলামে অংশ নিয়েছেন। সর্বোচ্চ ডাককারী হিসেবে হিমেল মিয়া ৩২ হাজার টাকায় টিনের ঘরটি কিনে নেন। আমি সেই ক্রেতার কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকায় ঘরটি কিনে নিয়েছি।’

আরো পড়ুন
দুর্নীতির মামলায় খালাস পেলেন ফালু

দুর্নীতির মামলায় খালাস পেলেন ফালু

 

কীভাবে নিলাম ডাক অনুষ্ঠিত হয়েছে জানতে চাইলে এনায়েত হোসেন ভুইয়া বলেন, ‘নান্দাইলের তৎকালীন ইউএনও অরুন কৃষ্ণ পালের নির্দেশে এ কমিটি গঠন করা হয়েছিল।

ওই কমিটিতে তাঁর স্ত্রী (ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক) ও বিদ্যালয়ের তিনজন শিক্ষক ছিলেন।’

তবে এ বিষয়ে নান্দাইলের সাবেক ইউএনও অরুন কৃষ্ণ পাল বলেন, ‘গত ডিসেম্বর মাসে নান্দাইল থেকে অন্যত্র বদলি হয়ে যান। তিনি বদলি হওয়ার আগে এ ধরনের কোনো নির্দেশ দেননি। প্রধান শিক্ষক মিথ্যা তথ্য দিচ্ছেন।’

হিমেল নামে একজনকে দিয়ে ঘরটি কিনিয়েছেন বলে দাবি করেন প্রধান শিক্ষক।

জানতে চাইলে ওই হিমেল বলেন, ‘আমাকে কাগজে-কলমে রেখেছেন, এ ছাড়া আর কিছুই জানি না।’

জানতে চাইলে বিদ্যালয় পরিচালনা এডহক কমিটির আহ্বায়ক আজিজুল হক বলেন, ‘প্রধান শিক্ষক তো আমাকে বলেছেন সবই নিয়মের মধ্যে হয়েছে। এখন কেন প্রশ্ন উঠছে। বিষয়টি জানতে হবে।’

আরো পড়ুন
মোংলায় অজ্ঞাত নারীর মরদেহ উদ্ধার

মোংলায় অজ্ঞাত নারীর মরদেহ উদ্ধার

 

নান্দাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সারমিনা সাত্তার কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘নিজের ইচ্ছা মতো প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ের কোনো ঘর বিক্রি করতে পারেন না। এই জন্য উপজেলায় একটি কমিটি রয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’

মন্তব্য

লক্ষ্মীপুরে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে প্রাণ গেল যুবকের

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি
লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি
শেয়ার
লক্ষ্মীপুরে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে প্রাণ গেল যুবকের
ছবি: কালের কণ্ঠ

লক্ষ্মীপুরে করাতকলের মোটর দিয়ে পানি তুলতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে কাউছার হোসেন (২৪) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে।

আজ রবিবার (১৩ এপ্রিল) সকালে সদর উপজেলার শাকচর ইউনিয়নের হাজিরবাজারে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত কাউছার শাকচর গ্রামের হাজী আলী হোসেনের বাড়ির ওমর ফারুকের ছেলে। 

আরো পড়ুন
মহিষ লুটের মামলায় বিএনপির ১১ নেতাকর্মী কারাগারে

মহিষ লুটের মামলায় বিএনপির ১১ নেতাকর্মী কারাগারে

 

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হাজিরবাজার এলাকায় কাউছারদের করাতকল রয়েছে।

সেখানে সকালে পানি উঠানোর জন্য মোটর চালু দেয়। এতে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে কাউছার ঘটনাস্থলেই মারা যান। পরে তার মরদেহ বাড়িতে নিয়ে যান স্বজনরা। 

লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানার ওসি আব্দুল মোন্নাফ বলেন, ‘ঘটনাটি শুনে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।

পরিবার থেকে কোন অভিযোগ নেই। পরিবারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

মন্তব্য

৭ সন্তানকে নিয়ে এক মায়ের আকুতি

আল নোমান শান্ত, দুর্গাপুর
আল নোমান শান্ত, দুর্গাপুর
শেয়ার
৭ সন্তানকে নিয়ে এক মায়ের আকুতি
ছবি: কালের কণ্ঠ

স্বামী মারা গেছেন দুই বছর আগে। এরপরই জীবনে নেমে সীমাহীন কষ্ট। এখন সাত সন্তান ও শাশুড়ি নিয়ে ছোট্ট একটি ঘরে বসবাস। সকালে দুমুঠো খেলেও দুপুরে মেলে না।

রাতে সন্তান-শাশুড়িকে কি খেতে দেবেন এই চিন্তায় এখানে-ওখানে দৌড়ঝাঁপ। অর্থের অভাবে বিদ্যালয়ে যেতে পারছে না সন্তানরা। কথাগুলো বলেন এক অসহায় মা সুলেমা খাতুন।

নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলার চন্ডিগড় ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের মউ গ্রামের বাসিন্দা সুলেমা খাতুন।

ওই গ্রামের মৃত সাদত আলীর স্ত্রী তিনি।

আরো পড়ুন
ধুনটে ঘর থেকে শিশু শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার

ধুনটে ঘর থেকে শিশু শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার

 

গতকাল শনিবার (১২ এপ্রিল) বিকেলে সরেজমিনে দেখা যায়, সন্তানদের পেটে ক্ষুধা, মা সুলেমার চোখে মুখে চিন্তার ভাঁজ। দুপুরে খাওয়া হয়নি কারোই। ঘরে আছে অল্প চাল কিন্তু তরকারি নেই কিছুই, রাতে কি খাবে এই ভেবে বসে আছেন ঘরের সামনে।

বড় ছেলে আইসক্রিম বিক্রিতে বের হয়েছে। কিছু টাকা পেলে যদি কিছু আনতে পারে সবার অপেক্ষা যেন সেদিকে।

সুলেমা খাতুন জানান, বেঁচে থাকতে স্বামীও ভিক্ষা করতেন। তিনিও অন্যের বাড়ি কাজ করতেন। তখনও কষ্টে দিন কেটেছে তাদের।

সংসারে ছিল পাঁচ ছেলে ও তিন মেয়ে এবং শাশুড়ি। স্বামীর মৃত্যুর পর খাবার জোগাতে সুলেমাও হাত পাততে হচ্ছে মানুষের কাছে। হাত পেতে কয়দিন চলে, কখনো মানুষের বাড়িতে কাজ করে যা মিলে তা দিয়েই সন্তানদের নিয়ে কোনোমতে খেয়ে না খেয়ে জীবন চালাচ্ছেন। এরই মধ্যে এক মেয়েকে গত এক সপ্তাহ আগে আশপাশের মানুষের সহায়তায় ও ঋণ করে বিয়ে দিয়েছেন। বর্তমানে সাত সন্তান নিয়ে বসবাস, সঙ্গে অসুস্থ শাশুড়িও। উপার্জন উপযুক্ত বড় ছেলে কাজ পেলে কাজ করে তা নাহলে তারও হাত পাততে হয় মানুষের কাছে। এভাবেই দুঃখে কষ্টে বেঁচে আছেন।

আরো পড়ুন
ঐতিহ্যের সাক্ষী গাংগাটিয়া জমিদার বাড়ি

ঐতিহ্যের সাক্ষী গাংগাটিয়া জমিদার বাড়ি

 

তিনি বলেন, ‘মাঝে মধ্যে আশেপাশের বাড়িতে কাজ পেলে করি। যা পাই তাই সন্তানদের লইয়া খাই। কিন্তু সব সময় কাজ থাকে না। দুই-তিন আগে পাশের বাড়ির মাসুদের মা কিছু চাউল দিছিল, ওগুলো সন্তানদের খাওয়াচ্ছি। বড় ছেলে আইসক্রিম বিক্রি করতে বের হয়েছে, যদি কয়ডা টাকা পায় তাহলে কিছু যদি আনে নইলে তো এভাবেই থাকতে হবে।’

প্রতিবেশী হাসিনা বেগম বলেন, ‘সুলেমা সন্তানদের নিয়ে এখন খুবই কষ্টে দিনাতিপাত করছে। আমরা প্রতিবেশী যতুটুকু পারি সাহায্য করি কিন্তু সব সময় তো আমরাও পারি না, তখন শুনি তারা না খেয়ে আছে। ছোট ছোট পোলাপানগুলোরে মাদরাসায় ভর্তি করাই তো সবার কাছে সাহায্য চাইতেছে। পাইলে ভর্তি করাতে পারবো নইতো পারতো না। ঘরেও খাওন নাই, এমনেই কষ্টে বেঁচে আছে। কেউ যদি তার জন্য এগিয়ে আসতো তাহলে ভালো হত।’

মো. আকবর আলী নামের আরেকজন বলেন, ‘সুলেমার জামাইও অসুস্থ আছিলো ভিক্ষা করতো, তখনও কষ্টে গেছে। এখনও কষ্টই করতাছে পোলাপানগুলোরে নিয়ে। খাইতে পারলে খা, না পাইলে না খাইয়া থাকে। খুবই কষ্ট করতেছে তারা।’

আরো পড়ুন
সম্প্রীতি ধরে রাখতে সেনাবাহিনী সব করতে প্রস্তুত

সম্প্রীতি ধরে রাখতে সেনাবাহিনী সব করতে প্রস্তুত

 

সুলেমার আকুতি ছোট সন্তানদের অল্পস্বল্প পড়াশোনা করানোর আর পেট ভরে দুবেলা খাওয়ানোর। কিন্তু অর্থের অভাবে বিদ্যালয়ে যেতে পারছে না সন্তানরা। অভাব অনটনে যেখানে দুবেলা মুখে খাবার তুলে দিতে পারছে না, ক্ষুধা পেটে দিন কাটে সেখানে পড়াশোনা যেন দুঃস্বপ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। পূরণ হবে কি তার এই ইচ্ছা!

মন্তব্য

মোংলায় অজ্ঞাত নারীর মরদেহ উদ্ধার

মোংলা প্রতিনিধি
মোংলা প্রতিনিধি
শেয়ার
মোংলায় অজ্ঞাত নারীর মরদেহ উদ্ধার
ছবি: কালের কণ্ঠ

মোংলা নদী থেকে অজ্ঞাত এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ রবিবার (১৩ এপ্রিল) দুপুরে স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহটি উদ্ধার করে নৌ পুলিশ।

মোংলা নৌ পুলিশের ইনচার্জ মো. লুৎফুল কবির জানান, আজ রবিবার দুপুরে মোংলার পানির ঘাট এলাকায় নদীতে অর্ধগলিত একটি মরদেহ ভাসতে দেখে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেন। খবর পেয়ে নারীর লাশটি উদ্ধার করেছে নৌ পুলিশ।

আরো পড়ুন
রাজধানীতে সক্রিয় সংঘবদ্ধ ‘বমি পার্টি’!

রাজধানীতে সক্রিয় সংঘবদ্ধ ‘বমি পার্টি’!

 

তিনি আরো জানান, অজ্ঞাত মরদেহটি শনাক্তে মরদেহের আঙুলের ছাপ নিয়েছে পিবিআই। ময়নাতদন্তের জন্য দুপুরেই মরদেহটি বাগেরহাট সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ