সিনেমা হল সংস্কার ও নির্মাণে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে (১৭ জানুয়ারি) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক হাজার কোটি টাকার তহবিল গঠনের ঘোষণা দেন। সে অনুযায়ী গত ২৬ জানুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সভায় এই তহবিল গঠনসংক্রান্ত প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়। এই তহবিল থেকে বিদ্যমান সিনেমা হলগুলো সংস্কার ও আধুনিকায়ন এবং নতুন সিনেমা হল নির্মাণে সাড়ে ৪ শতাংশ থেকে ৫ শতাংশ সুদে দীর্ঘমেয়াদি ঋণ পাবেন সংশ্লিষ্টরা। তবে হল মালিকরা বলছেন, রুগ্ণ চলচ্চিত্রশিল্পকে টেনে তুলতে ঋণ দিয়ে তেমন সফলতা আসবে না।
কিভাবে বাঁচবে চলচ্চিত্রশিল্প
হল নির্মাণে ঋণ নয়, অনুদান দাবি
- চলচ্চিত্রশিল্পকে টেনে তুলতে এক হাজার কোটি টাকার পুনরর্থায়ন তহবিল গঠন বাংলাদেশ ব্যাংকের
ফারজানা লাবনী

চলচ্চিত্রসংশ্লিষ্টরা বলছেন, নব্বইয়ের দশকে দেশে প্রায় দেড় সহস্র সিনেমা হল চালু ছিল। বিভিন্ন সংকটে বন্ধ হতে হতে বর্তমানে মাত্র ১৫০টি হল চালু আছে। তবে এসব হলেও তেমন দর্শক মিলছে না।
জানতে চাইলে বাংলাদেশ ফিল্ম সোসাইটির সাবেক সভাপতি আতিউর রহমান লিটন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘সারা দেশে আমার ২০টির বেশি সিনেমা হল ছিল। এখন চালু আছে আটটি। আমার দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা বলে, চলচ্চিত্র ভয়াবহ সংকটে পড়েছে। আমাদের মূল প্রতিযোগিতা ভারতের সিনেমার সঙ্গে।
চলচ্চিত্রসংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশীয় সিনেমা এখন বিশ্ববাজারের সঙ্গে কঠিন প্রতিযোগিতায় পড়েছে। তা ছাড়া নেটফ্লিক্স, অ্যামাজন প্রাইম, জি ফাইভ, হৈচৈ, বায়োস্কোপের মতো ওটিটি প্ল্যাটফর্ম সিনেমা হলকে নতুন চ্যালেঞ্জে ফেলেছে। এ পরিস্থিতিতে হলে দর্শক টানতে হলে ভালো হলের পাশাপাশি মানসম্পন্ন সিনেমা দেখাতে হবে। তা না হলে মোবাইল-টিভি-কম্পিউটার ছেড়ে হলে সিনেমা দেখবেন না দর্শকরা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজধানীতে একসময় ১৬টি সিনেমা হল ছিল। থাকলেও টিকতে না পেরে বন্ধ হয়ে গেছে বেশির ভাগই, বর্তমানে চালু আছে মাত্র পাঁচটি। এগুলো হচ্ছে—চিত্রামহল, গীত, সৈনিক ক্লাব, আনন্দ ও বিজিবি।
আর বিভাগীয় ও জেলা শহরে বন্ধ হতে হতে কোথাও একটি বা দুটি হল টিকে আছে কোনো রকমে। পাঁচ বছর আগেও খুলনায় সোসাইটি, পিকচার প্যালেস, শঙ্খ, সংগীতা ও স্টার সিনেমা হলে দর্শকের আনোগোনা দেখা যেত। সেখানকার হল মালিকরা বলছেন, ভালো সিনেমা নেই, হলে দর্শক আসে না। হলের অবকাঠামোগত পরিস্থিতিও খারাপ হয়ে গেছে। ক্রমাগত লোকসানে বন্ধ হয়ে এখন কোনোমতে সংগীতা ও শঙ্খ চলছে। করোনা মহামারিতে প্রায় আট মাস বন্ধ থাকার পর এই দুই হলের আর্থিক সংকট আরো বেড়েছে।
বগুড়া শহরে মাধু, মেট্রো, মেরিনা, উত্তরা, বাম্বি ও মধুবন হল একসময় চুটিয়ে ব্যবসা করত। এখন শুধু মধুবন ও সোনিয়া টিকে আছে করুণ দশায়। বাকিগুলো বন্ধ। সোনিয়া সিনেমা হলের মালিক হেলাল উদ্দিন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘মোবাইল ইন্টারনেটে ঘরে বসেই ইচ্ছামতো সিনেমা দেখা যায়। দেশে ভালো সিনেমা নেই, আর্থিক সংকটে হলগুলোর অবস্থাও আরামদায়ক না। কিভাবে দর্শক টানব আর ব্যবসা করব?’
হল মালিকরা জানাচ্ছেন, ২০২০ সালের মার্চে করোনা সংক্রমণ শুরু হলে দেশের সব সিনেমা হল বন্ধের সরকারি নির্দেশ দেওয়া হয়। দীর্ঘদিন হল বন্ধ থাকলেও বিদ্যুৎ বিল, কর্মীদের বেতন-ভাতা সবই দিতে হয়েছে। অনেক মালিক ভাড়া করে হল চালান, তাঁদের প্রতি মাসে উচ্চমূল্যের ভাড়া গুনতে হয়েছে। করোনার মধ্যেই কিছুদিন পরে দেশের সব পর্যটনকেন্দ্র খুলে দিলেও প্রায় সাত মাস পর ১৬ অক্টোবর ৫০ শতাংশ দর্শক খালি রেখে হল চালুর নির্দেশ দেয় সরকার। সব মিলিয়ে হলগুলো ভয়াবহ আর্থিক সংকটে পড়েছে।
চলচ্চিত্রশিল্পের রুগ্ণ দশা কাটাতে বাংলাদেশ ব্যাংক যে এক হাজার কোটি টাকার তহবিল গঠন করেছে, তার নীতিমালায় বলা হয়েছে, দেশের সিনেমাপ্রেমী দর্শকদের সুস্থ ধারার বিনোদন উপহার দেওয়ার লক্ষ্যে বিদ্যমান সিনেমা হলগুলো সংস্কার এবং আধুনিক মানের নতুন সিনেমা হল নির্মাণ করা প্রয়োজন। এ ক্ষেত্রে সিনেমা হল মালিকদের স্বল্প সুদে দীর্ঘমেয়াদি ঋণ প্রদান করা হলে সিনেমা হল মালিকরা নতুন নতুন সিনেমা হল নির্মাণের পাশাপাশি বিদ্যমান হলগুলো সংস্কার ও আধুনিক যন্ত্রপাতি সংযোজন করতে সক্ষম হবেন। সার্বিক বিষয় বিবেচনায় সিনেমা হল মালিকদের অনুকূলে ঋণ বিতরণের জন্য এক হাজার কোটি টাকার পুনরর্থায়ন স্কিম গঠন করা হয়েছে।
এই স্কিমের আওতায় অংশগ্রহণকারী তফসিলি ব্যাংক বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে দেড় শতাংশ সুদে পুনরর্থায়ন সুবিধা গ্রহণ করতে পারবে। তবে গ্রাহক পর্যায়ে মেট্রোপলিটন এলাকায় ৫ শতাংশ এবং মেট্রোপলিটন এলাকার বাইরে সাড়ে ৪ শতাংশ হারে সুদ ধার্য করতে পারবে তফসিলি ব্যাংক। পুনরর্থায়ন ঋণ এক বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ ত্রৈমাসিক কিস্তিতে সর্বোচ্চ আট বছর মেয়াদে গ্রাহককে পরিশোধ করতে হবে।
এ তহবিল প্রসঙ্গে প্রযোজক সমিতির সভাপতি খোরশেদুল আলম খসরু বলেন, ‘দীর্ঘদিন লোকসানে থাকায় এক হাজার কোটি টাকার বিশেষ তহবিল থেকে ঋণ নিয়ে সুদ দিয়ে পরিশোধের সক্ষমতা বেশির ভাগেরই নেই।’ নিখাদ বাস্তবতার নিরিখে ওই অর্থ বিনা সুদে প্রণোদনা বা অনুদান হিসেবে দেওয়া উচিত বলে তিনি মনে করেন।
চলচ্চিত্র নিয়ে আছে দাপ্তরিক জটিলতাও। বর্তমানে চলচ্চিত্র তথ্য মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন হলেও অনেক বিষয় সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় দেখভাল করে। আবার শিল্প হিসেবে সুবিধা পেতে হলে শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতায় পরিচালিত হওয়া জরুরি। চলমান এ জটিলতা নিরসনের দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। তাঁরা এ-ও বলছেন, চলচ্চিত্রকে শিল্প হিসেবে ঘোষণার ৯ বছরেও তা বাস্তবায়ন না করায় খাতটি আরো সংকটে পড়েছে। শিল্প হিসেবে দাপ্তরিক মর্যাদা পেলে পণ্য বিক্রি, কাঁচামাল আমদানি ও রপ্তানিতে রাজস্ব ছাড় মিলবে। সিনেমা বানানো, হল নির্মাণসহ সিনেমাসংশ্লিষ্ট সব কাজে স্বল্প সুদে নিয়মিত ব্যাংক ঋণ, আর্থিক অনুদান ও প্রণোদনা নিশ্চিত হলে আবারও সুদিন ফিরবে।
প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার পরও চলচ্চিত্র শিল্প হিসেবে সুবিধা না পাওয়ায় আক্ষেপ প্রকাশ করে প্রযোজক সমিতির সভাপতি খোরশেদুল আলম খসরু বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণাই নির্দেশ। আমরা সরকারের বিভিন্ন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে চলচ্চিত্রকে শিল্প হিসেবে বিভিন্ন সুবিধা দিতে অনুরোধ করেছি, দাবি জানিয়েছি। নানারকম আশ্বাস মিললেও বাস্তবায়ন আর হয়নি।’
শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘সরকার চলচ্চিত্রশিল্পকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে সকল সমস্যা সমাধানে কাজ করছে।’

মডেল মেঘনা আলম কারাগারে
নিজস্ব প্রতিবেদক

মিস আর্থ বাংলাদেশ-২০২০ বিজয়ী মডেল মেঘনা আলমকে ৩০ দিনের কারাগারে আটক রাখার আদেশ দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) রাতে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. সেফাতুল্লাহের আদালত এ আদেশ দেন। আদালত সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
জানা গেছে, ১৯৭৪ সনের বিশেষ ক্ষমতা আইনের ২ (এফ) ধারার জননিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা পরিপন্থী ক্ষতিকর কার্য থেকে নিবৃত্ত করার জন্য এবং আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখার স্বার্থে আবশ্যক অনুভূত হওয়ায় ১৯৭৪ সনের বিশেষ ক্ষমতা আইনের ৩(১) ধারায় অর্পিত ক্ষমতাবলে মেঘনা আলমকে কর্তৃপক্ষের অনুমোদনক্রমে এই আটকাদেশ স্বাক্ষরের তারিখ থেকে ৩০ দিন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে আটক রাখার আদেশ দেওয়া হয়েছে।
এর আগে, গত বুধবার সন্ধ্যায় ফেসবুকে মেঘনা আলমের লাইভ চলার মধ্যেই তার অভিযোগ অনুযায়ী বাসার ‘দরজা ভেঙে’ পুলিশ পরচয়ধারীরা ভেতরে প্রবেশের পরপরই লাইভটি বন্ধ হয়ে যায়। ১২ মিনিটের বেশি সময় ধরে চলা লাইভটি এরপর ডিলিটও হয়ে যায়।

দুই কোটির ঘরে ‘দুই চাক্কার সাইকেল’
বিনোদন প্রতিবেদক

বর্তমান সময়ের জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী সৈয়দ অমি। গানে কণ্ঠ দেওয়ার পাশাপাশি তিনি একজন মডেলও। একের পর এক হিট গান উপহার দিয়ে তিনি ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করে চলছেন। তার গাওয়া গানগুলোর মধ্যে গত বছরের ডিসেম্বরে মুক্তি পাওয়া ‘দুই চাক্কার সাইকেল’ গানটির ভিউয়ার ইতিমধ্যে দুই কোটি ছাড়িয়েছে।
বুধবার এই সংবাদটি গায়ক নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে পোস্ট করে জানান দিয়েছেন। গানটির কথা লিখেছেন সালাউদ্দিন সাগর এবং সুর দিয়েছেন অমি নিজেই। প্রকাশের পর সপ্তাহের বেশি সময় ধরে গানটি ট্রেন্ডিংয়ে ১ নম্বরে ছিল। দেশের জাফলংসহ মালয়েশিয়ার বিভিন্ন দর্শনীয় লোকেশনে চিত্রায়িত গানটিতে মডেল হিসেবে সৈয়দ অমির সঙ্গে জুটি বেঁধেছেন তার স্ত্রী জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা আঁচল আঁখি।
এই প্রথমবারের মতো ভারতের পশ্চিমবঙ্গের একটি সিনেমায় প্লেব্যাক করছেন বাংলাদেশি এই গায়ক। ওপার বাংলার নির্মাতা জিৎ চক্রবর্তী পরিচালিত ‘আড়ি’ সিনেমায় ‘মরুভূমি’ শিরোনামের গানে কণ্ঠ দিয়েছেন তিনি। গানটির কথা ও সুর করেছেন লিংকন রায় চৌধুরী, আর মিউজিক প্রগ্রামিংয়ে ছিলেন কেডি।
সৈয়দ অমি বলেন, “শ্রোতা এবং দর্শকদের ভালোবাসায় আমার ‘দুই চাক্কার সাইকেল’ গানটির ভিউ দুই কোটি ছাড়িয়েছে।
উল্লেখ্য, সৈয়দ অমির ‘মাতাল’ গানটি ভিউয়ের দিক থেকে ২০২৪ সালের সেরা ১০ গানের তালিকায় জায়গা করে নিয়েছিল। সে বছরই তার আরেক গান ‘দুই চাক্কার সাইকেল’ বেশ জনপ্রিয়তা পায়।

‘এড়িয়ে যেতে শিখেছি’, আমিরের সঙ্গে প্রেমের প্রসঙ্গে ফাতিমা
বিনোদন ডেস্ক

বলিউড অভিনেত্রী ফাতিমা সানা শেখ। ‘দঙ্গল’ দিয়ে জনপ্রিয়তার তুঙ্গে পৌঁছে যান এ অভিনেত্রী। নিজের প্রথম সিনেমায় আমির খানের সঙ্গে রীতিমতো ছক্কা হাঁকান। তবে তা কাল হয়ে দাঁড়িয়েছিল তার জীবনে।
২০২১ সালে দ্বিতীয় স্ত্রী কিরণ রাও-এর সঙ্গে দাম্পত্যে ইতি টানেন আমির। যৌথভাবে বিচ্ছেদ ঘোষণা করেছিলেন তারা। সেই বিচ্ছেদের পরেই ফাতিমার সঙ্গে নাম জড়িয়েছিল অভিনেতার।
যদিও আমিরের সঙ্গে প্রেমের গুঞ্জন নিয়ে অভিনেত্রী প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন একাধিকবার। তবে সম্প্রতি আমির খান নিজের তৃতীয় ভালোবাসার মানুষকে প্রকাশ্যে আনায় অনেকটা দায়মুক্তি পেলেন ফাতিমা। একসময় এই গুঞ্জন তার জন্য দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে গিয়েছিল, এমনটাই জানিয়েছিলেন ফাতিমা।
এক সাক্ষাৎকারে ফাতিমা বলেছিলেন, ‘হঠাৎ দেখলাম, এক দল মানুষ যারা আমাকে চেনে না, তারা আমাকে নিয়ে লেখালিখি করছে। তারা জানেই না, যা লিখছে তা ঠিক, নাকি ভুল।
আমিরের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্কের জল্পনা মোটেই ভালোভাবে গ্রহণ করেননি অভিনেত্রী। সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, ‘আমার সত্যিই বিরক্তি লাগে। আমি চাই না, আমার ব্যাপারে ভুল ধারণা গড়ে উঠুক মানুষের মনে। কিন্তু এখন আমি এড়িয়ে যেতে শিখে গিয়েছি। তবে কোনো কোনো দিন আমার খুবই খারাপ লাগে।’
সম্প্রতি নিজের নতুন প্রেমিকাকে প্রকাশ্যে এনেছেন আমির খান। গত ১৪ মার্চ নিজের ৬০ তম জন্মদিনের বিশেষ চমক হিসেবে সবাইকে পরিচয় করিয়ে দেন নতুন প্রেমিকার সঙ্গে। গৌরী স্প্র্যাট বেঙ্গালুরুর বাসিন্দা। বেঙ্গালুরুতে একটি সেলুনের মালিক রীতা স্প্রেটের মেয়ে গৌরী প্রায় সারা জীবন এই শহরেই থেকেছেন। তার লিঙ্কডইন প্রফাইল বলছে, বর্তমানে তিনি মুম্বাইয়ে একটি বিব্লান্ট সেলুন চালাচ্ছেন। গৌরীর ছয় বছরের একটি সন্তান রয়েছে এবং তিনি আমিরকে ২৫ বছর ধরে চেনেন। আমিরের প্রডাকশন হাউসের সঙ্গেও জড়িত ছিলেন গৌরী।

প্রাপ্তবয়স্ক যে ছবিগুলো গল্পেও নজর কেড়েছে দর্শকের
বিনোদন প্রতিবেদক

প্রাপ্তবয়স্ক ছবি বলতে আমরা বুঝি এমন কিছু ছবি যা সাধারণ বিনোদনের গণ্ডি পেরিয়ে যৌনতার সংবেদনশীল দিকগুলো খোলামেলাভাবে তুলে ধরে। প্রাপ্তবয়স্ক ছবিগুলো শুধু খোলামেলা দৃশ্যের জন্য আলোচিত হয়। তবে আজ এমন পাঁচটি ছবি নিয়ে প্রতিবেদন, যেগুলো প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য হলেও এর গল্প মানুষের আবেগ, আকাঙ্ক্ষা এবং সম্পর্কের জটিল দিক নিয়ে ভাবতে শেখায়। এই ছবিগুলো প্রমাণ করে যে, যৌনতা ও সম্পর্ক নিয়ে পরিপক্ব আলোচনা করতে হলে সাহসী গল্প বলা জরুরি।
আইস ওয়াইড শাট (১৯৯৯)
ডাক্তার বিল হারফোর্ড (টম ক্রুজ) এবং তার স্ত্রী অ্যালিস হারফোর্ড (নিকোল কিডম্যান) নিউ ইয়র্ক শহরের উচ্চবিত্ত সমাজের সুখী দম্পতি। এক পার্টির রাতে কিছুটা মাতাল অবস্থায় অ্যালিস স্বীকার করেন, একসময় তিনি অন্য একজন অপরিচিত নৌবাহিনীর অফিসারের জন্য তীব্র আকর্ষণ অনুভব করেছিলেন এবং স্বামীর সব কিছু ছেড়ে চলে যাওয়ারও মানসিকতা ছিল। অ্যালিসের এই অকপট স্বীকারোক্তি বিলকে মানসিকভাবে আলোড়িত করে তোলে।
এই মনস্তাত্ত্বিক প্রাপ্তবয়স্ক থ্রিলারটি শুধুমাত্র যৌনতার উপর ভিত্তি করে নয়, বরং মানুষের সম্পর্ক, কামনা এবং অবচেতনের জটিল দিকগুলোর অন্বেষণ করেছে। স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কের মধ্যে লুকিয়ে থাকা সন্দেহ, কৌতূহল এবং ইচ্ছার সংঘাত সিনেমাটিতে চমৎকারভাবে ফুটে উঠেছে।
ব্লু ইজ দ্য ওয়ার্মেষ্ট কালার (২০১৩)
অ্যাডেল নামের এক কিশোরীর গল্প, যে নিজের যৌন পরিচয় এবং ভালোবাসা খুঁজে পাওয়ার যাত্রায় এগিয়ে যায়। অ্যাডেল একটি সাধারণ উচ্চবিদ্যালয়ের ছাত্রী। প্রথমদিকে সে নিজের অনুভূতি নিয়ে দ্বিধায় থাকে, কারণ তার ছেলেবন্ধুর সঙ্গে সম্পর্কটা যেন কোথাও আটকে আছে।
এটি শুধুমাত্র একটি প্রেমের গল্প নয়, বরং আত্ম-আবিষ্কারের একটি সংবেদনশীল যাত্রা। সাহসী, খোলামেলা এবং বাস্তবধর্মী। সিনেমার দীর্ঘ এবং স্পষ্ট যৌন দৃশ্য অনেক বিতর্কের জন্ম দিলেও, এটি মূলত চরিত্রের গভীর সংযোগ এবং আবেগের পরিপূর্ণতা তুলে ধরার মাধ্যম। আব্দেললতিফ কেচিচের পরিচালনায় এতে অভিনয় করেছেন লি সিডক্স, অ্যাডেল এক্সারচপোলস, জেরেমি লাহের্ত প্রমুখ।
বেসিক ইন্সটিংক্ট (১৯৯২)
এই সিনেমাটি ইরোটিক থ্রিলারের এক কালজয়ী ক্লাসিক। ডগলাস এবং স্টোনের দুর্দান্ত রসায়ন এবং গল্পের টানটান উত্তেজনা সিনেমাটিকে আলাদা মর্যাদা দিয়েছে। লস অ্যাঞ্জেলেসের এক প্রখ্যাত রকস্টারকে নৃশংসভাবে হত্যা করার মাধ্যমে সিনেমার গল্পের শুরু। তদন্তের দায়িত্ব পড়ে গোয়েন্দা নিক কারান (ডগলাস)-এর ওপর। খুনের ধরন এতটাই ঠাণ্ডা মাথায় ঘটানো যে, সন্দেহের তীর দ্রুতই ঘুরে যায় নিহত ব্যক্তির প্রেমিকা এবং রহস্যময় লেখিকা ক্যাথরিন ট্রামেল (শ্যারন স্টোন)-এর দিকে।
রহস্যময় লেখিকা ক্যাথরিন ট্রামেলের চরিত্রে শ্যারন স্টোন এক অনন্য ছাপ ফেলেছেন। সিনেমার বিখ্যাত সেই ‘ইন্টারোগেশন সিন’ আজও আলোচনার বিষয়। চিত্রনাট্য এবং পটভূমির গা ছমছমে পরিবেশ দর্শককে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আটকে রাখে। পল ভারহোভেন পরিচালনায় এতে অভিনয় করেছেন মাইকেল ডগলাস এবং শ্যারন স্টোন।
দ্য ড্রিমারস (২০১৩)
১৯৬৮ সালের গল্প। সিনেমাপ্রেমী এক আমেরিকান তরুণ ম্যাথিউ, পড়াশোনার জন্য প্যারিসে এসেছে। সেখানেই তার পরিচয় হয় জমজ ভাইবোন থিও এবং ইসাবেল-এর সঙ্গে। তারা দুজনও চলচ্চিত্র এবং শিল্প-সাহিত্যের প্রতি গভীরভাবে অনুরক্ত। একদিন ম্যাথিউ জানতে পারে, থিও ও ইসাবেলের বাবা-মা শহরের বাইরে যাচ্ছেন। তারা ম্যাথিউকে আমন্ত্রণ জানায় তাদের বাসায় কয়েকদিন থাকার জন্য। এই সুযোগেই তিনজনের মধ্যে তৈরি হয় এক অদ্ভুত, অন্তরঙ্গ এবং অনন্য বন্ধন। ধীরে ধীরে তাদের কথোপকথন, উষ্ণতা আর চলচ্চিত্র নিয়ে আলোচনা এক প্রকার সাহসী এবং পরীক্ষামূলক সম্পর্কের দিকে মোড় নেয়। তিন তরুণ-তরুণী তাদের যৌবনের কৌতূহল ও স্বাধীনতার খোঁজে যৌনতা, ভালোবাসা এবং পরিচয়ের সীমা পেরিয়ে যায়।
পরিচালক বার্তোলুচ্চি তাঁর নান্দনিক পরিচালনার মাধ্যমে যৌনতা ও মুক্তচিন্তার সংমিশ্রণ ঘটিয়েছেন অনন্যভাবে। এতে অভিনয় করেছেন ইভা গ্রিন, লুইস গ্যারেল ও মাইকেল পিট।
নিম্ফোম্যানিয়াক (২০১৩)
যৌনতা আর বাস্তবতার গল্পকে নির্মাতা বেঁধেছেন এক সূতায়। গল্পের প্রধান চরিত্র জো ধীরে ধীরে তার জীবনের সব অধ্যায় বলতে শুরু করে। শৈশব থেকে কৈশোর, তারপর প্রাপ্তবয়স্ক জীবনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার প্রতিটি ধাপেই যৌনতা তার জীবনের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে দাঁড়ায়। ছোটবেলা থেকেই সে বুঝতে পারে, সে সাধারণ নয়— তার মধ্যে আছে তীব্র যৌন আকর্ষণ। জো’র প্রথম যৌন সম্পর্ক, বন্ধুদের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে অধিক সংখ্যক পুরুষের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করার খেলা— এসবের মধ্যে দিয়ে গল্প এগোতে থাকে।
পর্দায় যৌনতার সব সীমারেখা পার করা এ সিনেমা নিছক কোনো যৌনতার সিনেমা নয়, বরং এটি এক নারীর যৌন-আবিষ্কারের গভীর আত্মজৈবনিক উপাখ্যান। গল্পের গাঁথুনি এবং দার্শনিক কথোপকথন সিনেমাটিকে প্রাপ্তবয়স্ক সিনেমার চেয়েও বেশি কিছুতে পরিণত করেছে। লার্স ভন ট্রিয়ায়ের পরিচালনায় এতে অভিনয় করেছেন চারলট গেইনসবর্গ, মিয়া গথ, লেসি মার্টিন, উইলিয়াম ড্যাফো প্রমুখ।