<p>সংগীতশিল্পী মাইনুল আহসান নোবেল বিগত সময়ে বিতর্কের শিরোমণি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন নিজেকে। একের পর এক বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে খ্যাতি অর্জনের আগেই তা হারিয়ে বসেন এই গায়ক। নোবেলের ওপর থেকে মুখ ফিরিয়ে নেন তার ভক্ত ও শ্রোতারাও। তবে নিজের অধঃপতনের কারণ হিসেবে গায়ক দায়ী করলেন অল্প সময়ে পাওয়া নিজের তারকাখ্যাতিকে।</p> <p>সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে এই গায়ক জানিয়েছেন, মূলত অল্প সময়েই তারকাখ্যাতি-অর্থ একসঙ্গে তার ক্যারিয়ারে ক্ষতি ডেকে এনেছে। নোবেলের ভাষায়, ‘আমার সব অভিযোগ নিজের ওপরই। আমি আমাকে যত্ন করতে পারিনি। তাই শ্রোতাদের অসম্ভব ভালোবাসা পেয়েও তা ধরে রাখতে পারিনি। এই দোষ শুধুই আমার। কারণ তারকাখ্যাতি এবং অর্থ একসঙ্গে পেয়ে গিয়েছিলাম, যা আমাকে পথভ্রষ্ট করে দেয়। আমি কোনো কিছুকেই তোয়াক্কা করতাম না, যা মন চাইত তাই করতাম। কোনো কাজকে আমি গুরুত্ব দিতাম না। যাকে-তাকে অপমান করে কথা বলতাম। কিন্তু এমনটা করা আমার উচিত হয়নি।’</p> <p>তবে নিজেকে সামলে আবারও গানের জগতে ফিরছেন এই গায়ক। প্রায় চার বছর পর ফিরছেন কাজে। এ প্রসঙ্গে নোবেল বলেন, ‘চার বছর বিরতির পর আবারও ফিরে আসার চেষ্টা করছি। প্রতিনিয়ত নিজেকে গড়ার চ্যালেঞ্জ নিচ্ছি। সেই চ্যালেঞ্জে সফল হতে নিজের সঙ্গেই যুদ্ধ করে যাচ্ছি। আশা করছি, এবার দর্শকদের ভালোবাসা ধরে রাখতে পারব। কারণ এই ভালোবাসা যদি ধরে না রাখতে পারি, তাহলে কালের গর্ভে আমি হারিয়ে যাব একদিন। যেমন হারিয়ে ছিলাম এই চার বছর। দীর্ঘ এ সময়টিতে আমি একটি বিষয় উপলব্ধি করেছি। কাজ ছাড়া আমাকে কেউ মনে রাখবে না, মনে রাখেনি। তাই এবারের ফিরে আসার যুদ্ধ শুধুই আমার একার। কারণ শাস্তি যা পাওয়ার আমি পেয়েছি। এখন এই ভুলগুলো শুধরে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়াই আমার মূল লক্ষ্য।’</p> <p>দেশের ব্যান্ড সংগীতের জীবন্ত কিংবদন্তি নগর বাউল জেমসের সঙ্গে তুলনাই তার ক্যারিয়ারের কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে উল্লেখ করে নোবেল বলেন, “রিয়্যালিটি শো আমাকে তারকাখ্যাতি এনে দেয়। এরপর আমার ভক্তরা আমাকে ভালোবাসা দিয়ে মাথায় তুলে দেয়। এ বিষয়ে আমি তাদের দোষ দিচ্ছি না, কিন্তু আমি বিষয়টি উপভোগ করে নিজেকে তখন হারিয়ে ফেলি। পরে বুঝতে পারি, জেমস ভাইয়ের সঙ্গে তুলনাই আমাকে সে সময় শেষ করে দিয়েছিল। কারণ জেমস ভাই ভিন্ন বিষয়। তিনি দেশের ব্যান্ড সংগীতের একটি স্তম্ভ। আমি কেন— বিশ্বের কেউই সংগীতে তার সমতুল্য হতে পারবেন না। গানে তার আলাদা দর্শন রয়েছে। সেই দর্শনের সঙ্গে কারোরই মিলবে না। এ ছাড়া জেমস ভাই এখন পর্যন্ত শত শত গান গেয়েছেন। মৌলিক গানের দিক থেকে আমি তার ধারেকাছেও নেই। অর্জনের সব দিক থেকেই তিনি আমাদের থেকে শত শত মাইল দূরে। তাই শ্রোতাদের একটা কথাই বলব। যারা আমার গান পছন্দ করেন, তারা আমাকে কারো সঙ্গে তুলনা করবেন না প্লিজ। কারণ সংগীতে আইয়ুব বাচ্চু, এন্ড্রু কিশোর ও আসিফ আকবর ভাইদের অর্জন আমাদের ধরাছোঁয়ার বাইরে। কেউই জীবনভর চাইলেও তাদের মতো হতে পারবে না।”</p> <p>নোবেলের হাতে বর্তমানে কিছু গান ও সিনেমা রয়েছে, যা ওটিটি প্ল্যাটফরমের জন্য নির্মাণ হবে। এর মধ্যে একটিতে খলনায়ক চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা যাবে তাকে। গানের পাশাপাশি পর্দায় খলনায়ক চরিত্র নিয়েই ফিরতে চান এই গায়ক।</p>