<p>নিয়মিত স্ক্রিনিং পরীক্ষার মাধ্যমে কোলোরেক্টাল ক্যান্সার প্রাথমিক পর্যায়ে ধরা পড়লে সম্পূর্ণ নিরাময় সম্ভব। তাই এই রোগ সম্পর্কে জনগণের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধি খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়।</p> <p><strong>কাদের ঝুঁকি বেশি?</strong></p> <p>৪৫ বছরের ঊর্ধ্বে যেকোনো নারী-পুরুষ, যাঁদের নিকটাত্মীয়ের (মা-বাবা, ভাই-বোন, ছেলেমেয়ে) কোলন ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ইতিহাস আছে এবং ‘আলসারেটিভ কোলাইটিস’, ‘ক্রোন্স ডিজিজ’ নামক ‘ইনফ্লামেটরি বাওয়েল ডিজিজ’ ও ‘ফ্যামিলিয়াল এডিনোমেটাস পলিপোসিসে’ আক্রান্ত ব্যক্তিদের কোলন ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অন্যদের তুলনায় বেশি।</p> <p><strong>প্রি-ক্যান্সারাস পর্যায়</strong></p> <p>সময়ের পরিক্রমায় ‘কোলনিক পলিপ’ নামক কোলনের গায়ে এক ধরনের নির্দোষ অস্বাভাবিক বৃদ্ধি ‘কোলোরেক্টাল ক্যান্সার’-এ রূপান্তরিত হয়। এই ‘কোলনিক পলিপ’ পর্যায়কে কোলোরেক্টাল ক্যান্সারের ‘প্রি-ম্যালিগন্যান্ট’ অবস্থা বলা হয়। ‘পলিপ’ থেকে ‘ক্যান্সার’-এ রূপান্তর হতে দীর্ঘ প্রায় পাঁচ থেকে ১০ বছর সময় লেগে থাকে। সব ক্যান্সারের কিন্তু এমন প্রি-ক্যান্সারাস পর্যায় পার হতে হয় না। যেহেতু কোলনিক পলিপ একটি প্রি-ক্যান্সারাস অবস্থা, তাই প্রি-ক্যান্সার থেকে ক্যান্সারে রূপান্তর হওয়ার আগেই এই পলিপ কোলনোস্কোপির মাধ্যমে কেটে ফেলে দিলে ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।</p> <p><strong>লক্ষণ</strong></p> <p>* মলের সঙ্গে রক্ত যাওয়া, পেটে ব্যথা, পেটে চাকা অনুভূত হওয়া, কোষ্ঠকাঠিন্য, শরীর শুকিয়ে যাওয়া, রক্তশূন্যতা ইত্যাদি উপসর্গ নিয়ে কোলোরেক্টাল ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীরা আসতে পারে।</p> <p>* প্রায়ই আমরা মলের সঙ্গে রক্ত যাওয়া মানেই পাইলস মনে করে ভুল করে থাকি। দীর্ঘ সময় অবহেলার ফলে চিকিৎসার আওতার বাইরে চলে যাওয়া অবস্থায় কোলোরেক্টাল ক্যান্সার ধরা পড়তে পারে। তাই মলের সঙ্গে রক্ত গেলে দ্রুত নিকটস্থ গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।</p> <p>* অনেক সময় কোলোরেক্টাল ক্যান্সার শুধু রক্তশূন্যতা নিয়ে হাজির হতে পারে। রক্ত কমে গেলে শরীরে রক্ত ভরে দেওয়াই শেষ কথা নয়। মনে রাখতে হবে, যতক্ষণ পর্যন্ত রক্তশূন্যতার কারণ আপনি না জানছেন, ততক্ষণ পর্যন্ত আপনার চিকিৎসা অসম্পূর্ণ। শরীরে রক্ত কমে গেলে অথবা রক্ত সঞ্চালনের আগে চিকিৎসককে রক্তশূন্যতার কারণ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করুন।</p> <p><strong>স্ক্রিনিংয়ের গুরুত্ব</strong></p> <p>ক্যান্সারের লক্ষণ প্রকাশের আগেই কোনো ক্যান্সার খুঁজে বের করার পরীক্ষা-নিরীক্ষাকে ‘স্ক্রিনিং’ বলা হয়। যেহেতু কোলোরেক্টাল ক্যান্সার প্রি-ক্যান্সার পলিপ থেকে রূপান্তরিত হয়ে তৈরি হয়, তাই স্ক্রিনিংয়ের মাধ্যমে পলিপ কেটে ফেলে দিলে কোলোরেক্টাল ক্যান্সার সম্পূর্ণ ঠেকানো সম্ভব। কোলোরেক্টাল ক্যান্সার স্ক্রিনিংয়ের জন্য অনেক পরীক্ষার উপায় থাকলেও কোলনোস্কোপিই সর্বোত্তম এবং সর্বাধিক গ্রহণযোগ্য। ৪৫ থেকে ৭৫ বছর বয়স পর্যন্ত সবারই নিয়মিত বিরতিতে কোলনোস্কোপি পরীক্ষার মাধ্যমে কোলন ক্যান্সার স্ক্রিনিং করা উচিত।</p> <p><strong>চিকিৎসা</strong></p> <p>* সার্জারি<br /> * কেমোথেরাপি<br /> * ইমিউনোথেরাপি</p> <p><strong>পরামর্শ দিয়েছেন</strong></p> <p>ডা. মুহাম্মদ সায়েদুল আরেফিন<br /> সহকারী অধ্যাপক<br /> শেখ রাসেল জাতীয় গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, মহাখালী, ঢাকা</p>